21/10/2025
আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকে - কিভাবে মানুষকে ঔষধমুক্ত, সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যায়। মাঝেমধ্যে কিছু মানুষ আসেন, যাদের আদতে কোনো রোগই নেই। তাদেরকে অবশ্য Hypochondriasis বা আত্মরোগপ্রবণতাগ্রস্ত রোগীও বলা যাবে না।
এই বিষয়ে দুটি মজার ঘটনা বলছি—
১.
বাচ্চা বিছানায় প্রস্রাব করে, এজন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। তথ্য নিয়ে বুঝতে পারলাম, আহামরি কোনো সমস্যা নেই। জাস্ট রাতে পানি-টানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
বাচ্চার বাবাকে বললাম, 'মাঝরাতে বাচ্চাকে একবার উঠিয়ে প্রস্রাব করিয়ে নিন, তাহলেই তো হলো।' ব্যাস, সহজ সমাধান! বাচ্চার বাবা যদিও বারবার ঔষধ নিতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু কোনো ঔষধেরই প্রয়োজন হয়নি, আলহামদুলিল্লাহ!
যেহেতু এই বিষয়ে বললাম, তাই চলুন অল্প করে কিছু তথ্যও জেনে নিই—
বাচ্চাদের ঘুমের মধ্যে বিছানায় প্রস্রাব করাকে কিতাবি ভাষায় 'Nocturnal Enuresis' বলে।
বাচ্চা যদি ৫ বছরের নিচে হয়, তাহলে তেমন সমস্যা নয়। কিন্তু ৫ বছর পার হওয়ার পরও নিয়মিত বিছানায় প্রস্রাব করলে সেটি রোগ হিসেবে ধরা হয়।
শারীরিক ও মানসিক নানা কারণে এই সমস্যা হতে পারে। সাধারণত ঘুমানোর আগে বাচ্চাকে প্রস্রাব না করানো, রাতে অতিরিক্ত পানি বা দুধ পান করানো, টয়লেট ট্রেনিং ঠিকভাবে না হওয়া — এসব কারণ খেয়াল রাখতে হবে।
এসব ঠিক থাকলেও যদি সমস্যা অব্যাহত থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
কখন চিকিৎসা প্রয়োজন —
যদি বয়স ৫ বছরের বেশি হয়, সপ্তাহে ২–৩ বার বা তার বেশি ঘটে, দিনে ও রাতে প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারে, কিংবা প্রস্রাবের সময় ব্যথা, জ্বালা বা ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা থাকে— তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২.
এক ভাই বিয়ে করবেন— খুব ভয় পাচ্ছেন। বুঝতেই পারছেন, কিসের ভয়! বন্ধুরা ভয় দেখিয়েছে, আর আমাদেরই স্বজাতীয় একজন চিকিৎসক সেই ভয়কে পুঁজি করে 'পুরুষ থেকে মহাপুরুষ' তৈরির চিকিৎসা চালাচ্ছেন।
সব শুনে বুঝলাম— উনার আসলে কোনো সমস্যাই নেই, শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন। আমি বললাম, আপনি তো পানিতে না নেমেই ডুবে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন! তাহলে কিভাবে হবে? নাকি আপনার আগে সাঁতরানোর অভিজ্ঞতা আছে?
তিনি বললেন, না না, ওরকম কিছু নাই।
সবকিছু বুঝিয়ে বললাম, কিছু দিকনির্দেশনাও দিলাম।
বিয়ের কিছুদিন পর তিনি হাদিয়া নিয়ে চেম্বারে এলেন, খুব সম্ভবত মিষ্টি ছিল। মুখে আনন্দের ঝিলিক!
কারণ, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ।
ভালো কথা, এমন ভাইদের কথা কিন্তু মোটেও কম নয়। একটু সাহস ও সু পরামর্শই যথেষ্ট তাদের জন্য।
লেখার কলেবর বড় হয়ে যাওয়া এবং পাঠকের ধৈর্যচ্যুতির আশঙ্কায় ভার্চুয়াল কলম এখানেই থামিয়ে দিচ্ছি।
- Dr. Sujan Ahmed
চেম্বার:
আরোগ্যকানন হোমিও ক্লিনিক
কান্দিপাড়া, সদর ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
01763 58 24 38 (WhatsApp)