25/02/2020
আমি এও দেখেছি পা থেকে জুতো খুলে দিতে নিজের বাচ্চার আরেকটি অনাথ কাজের মেয়ে নামের যে বাচ্চাটি থাকে তাকে দিয়ে। আর আমরা মুসলমান অহংকার করি।একবার চা বাগানে গেছি বড় বয়সে (internee time) আব্বার সাথে।জাফ্লং চা বাগান।আব্বা বড় অফিসার ব্যংক থেকে বাগান দেখতে এসেছেন। দুজন লোক এসে বাগানের মালিক এর জুতো খুলে নিলো।আমি অবাক ভাবছিলাম উনি নিজের জুতার ফিতা খুলতে পারেন না এতো বড় হয়েও?😀এরপর আমার জুতো খুলে দিবে বলে যেই এলো আমি তো বাঁধা দিলাম। জোর করছিলো। পারেনি। রাত এ আমাদের অনেক খাবার দিলো। আমার মাথায় একটা ব্যাপার ঘুরছে।জুতো খুলে দেয়া। সবাই রুমে চলে গেলো আমি আমার রুম থেকে বের হলাম। নিরবতা আমাকে টানে। সামনের বারান্দায় বসে আছি আর পাতার শব্দ,দুএকবার করকশ স্বরে কে ডাকছে হয়তবা রাতজাগা কোনো পাখি।অনেক রাত না তবে চা বাগান বলে গভীর রাত মনে হচ্ছিলো। তখন তো হেডফোন ছিলো না তাই প্রকৃতির আওয়াজটাই শুনতে পাচ্ছিলাম।সেই জন্য এখন ধন্য মনে করি নিজেকে।কানে এলো টুং টাং শব্দ আর নিচুস্বরে কথা। আশপাশ টা তো খোলা। আওয়াজ টা কোথা থেকে আসছে চেষ্টা করছি বুঝার।সময়টা ছিলো এই মাসেই। পাতা ঝরার শব্দ খুব বেশি শোনা যায় খুব নিরবতায়। কিন্তু এ শব্দ তো অন্যরকম। উঠে শব্দ অনুসরণ করে হাটছি।আলো খুব বেশি না। একটা হারিকেন এর আলোর মত।দেখলাম হল ঘর এর পাশ থেকেই আসছে। ঢুকলাম সেখানে। পার হলাম। আমাকে দেখে সব হা হা করে উঠলো। আমি কেনো ওদের ডাক দেয়নি আমার কি লাগবে। এখন তো বড়বাবু রাগ করবেন।কেনো আমি কষ্ট করে এতো টা এলাম।এইসব আর কি।বল্লাম পানি খাবো যদিও রুম এ পানি দেয়া ছিলো। যা দেখলাম তা তে আমাদের শিক্ষিত আর মুসলমান বলে নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করছিলো। ওরা যেনো মানুষ না।আমরাই মানুষ!! ওদের পাতে তো ভালো খাবার জুটবেনা। ওরা খাবে চা পাতার ভরতা বা আলুভর্তা। এটা ১৯৯১ সন এর কথা।আজও যখন দেখি আমাদের শহরের ধনী বাচ্চাদের জুতো খুলে দেয় অন্য একটি গরিব বাচ্চা আর খাবার এর পাতে জুটে ধনী বাচ্চার না খাওয়া খাবার খুব বেশি হলে একটা হাড্ডি বা মাছ এর টুকরা! আমার মনে পড়ে সেই দিনের কথা। আমাদের ধর্ম কি শিক্ষা দিয়েছে আমাদের। আমাদের শিক্ষা কি আলো দিয়েছে।আমি জানতে চাই না আর। বলতে চাই এবার।
Prof. Afroza Momen
Head of the department,
Department of Pharmacology,
Brahmanbaria Medical College.