02/09/2025
“কুন” হলো আহ্বান—শূন্যতা ভেদ করে আল্লাহর নূরকে প্রতিফলিত করা। “ফায়াকুন” হলো সেই আহ্বানের অবিলম্বে সাড়া—সমস্ত Being-এর জন্ম ও ক্রমাগত উপস্থিতি। এই ধ্বনিতে সময় (Zama) ও স্থান (Makan) একসাথে ভেঙে যায়; প্রতিটি মুহূর্তই সেই একক নূরের প্রকাশ।
◾ কুন-ফায়াকুন◾
অস্তিত্বের শুরু ও প্রেমের চূড়ান্ত আহ্বান...
পবিত্র কুরআন যখন ঘোষণা করে—“যখন তিনি কোনো কিছুর ফয়সালা করেন, তখন কেবল বলেন ‘হও’, আর তা হয়ে যায়” (সূরা ইয়াসীন, ৮২) —তখন এ আয়াত শুধু একটি শব্দগুচ্ছ নয়; এটি সমগ্র সৃষ্টির রহস্য, মহাবিশ্বের অস্তিত্বের চাবিকাঠি, আর প্রেমের চূড়ান্ত আহ্বান।
“কুন ফায়াকুন”—এই দুটি শব্দে নিহিত আছে সমগ্র মহাবিশ্বের উৎপত্তি, জীবনের অর্থ এবং আল্লাহর অসীম মাহাত্ম্যের প্রতিফলন। এখানে মানুষের দৃষ্টির সীমা ভেঙে যায়, আর আত্মার অন্তর্লীন আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে। এটি কেবল সৃষ্টির প্রক্রিয়া নয়; বরং মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর প্রেমের সাড়া জাগানো এক অনন্ত আহ্বান।
এই গ্রন্থে আমরা প্রবেশ করবো সেই রহস্যের দরজায়, যেখানে মহাবিশ্বের প্রতিটি কণায় আল্লাহর নামের বারাকাহ প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা খুঁজব— মহান আল্লাহর মাহাত্ম্যের সীমাহীন প্রতিচ্ছবি, তাঁর প্রেমের মধুর আহ্বান, এবং তাঁর নামগুলোর অলৌকিক রহস্য, যা মানুষের জীবনকে রূপান্তরিত করে দেয়। এখানে আলোচিত হবে আল্লাহর সৌন্দর্য (জামাল) ও মহিমা (জালাল), রহস্য ও প্রেম, মহাবিশ্ব ও মানুষের অন্তর—সব মিলিয়ে এক সমন্বিত যাত্রা।
“কুন” হলো আহ্বান—শূন্যতা ভেদ করে আল্লাহর নূরকে প্রতিফলিত করা। “ফায়াকুন” হলো সেই আহ্বানের অবিলম্বে সাড়া—সমস্ত Being-এর জন্ম ও ক্রমাগত উপস্থিতি। এই ধ্বনিতে সময় (Zama) ও স্থান (Makan) একসাথে ভেঙে যায়; প্রতিটি মুহূর্তই সেই একক নূরের প্রকাশ।
ওয়াহদাতুল উজুদ বলে, মানুষ ও মহাবিশ্ব আলাদা সত্তা নয়। মানুষের আত্মা হলো এক নূরের ক্ষুদ্র অংশ, যা নিজের অস্তিত্বের গভীরে মহান আল্লাহর আহ্বান শুনতে পারে। আত্মা যখন কুন ফায়াকুন অনুভব করে, তখন তা এক অনন্ত সৃষ্টির সঙ্গে মিলিত হয়। শূন্যতা আর সত্তার বিভাজন মুছে যায়; প্রতিটি শ্বাস, প্রতিটি দৃষ্টি, প্রতিটি অভিজ্ঞতা আল্লাহর নূরের প্রতিধ্বনি হয়ে ওঠে।
এই উপলব্ধি আত্মাকে এক নতুন দিকনির্দেশ দেয়—এটি মানুষকে অনন্ত প্রেম ও জ্ঞান-অন্বেষণের পথে পরিচালিত করে। কারণ ওয়াহদাতুল উজুদ-এর আলোকে দেখা যায়, জীবন মানে আল্লাহর আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং নিজের সীমিত অস্তিত্বকে চিরন্তন Being/Wujud-এর অংশ হিসেবে উপলব্ধি করা।
অতএব, “কুন ফায়াকুন” কোনো অতীতঘটিত বাক্য নয়; এটি প্রতিটি মুহূর্তে, প্রতিটি সত্তায় ঘটছে। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি চিন্তা, প্রতিটি অনুভূতি—সবই আল্লাহর একক নূরের প্রকাশ। আত্মার পূর্ণতা আসে তখন, যখন মানুষ তার সীমিত অস্তিত্বকে (Fana) ভেঙে অসীম নূরে (Baqa) মিলিয়ে নেয়।
আমার পরবর্তী গ্রন্থ ▪️কুন-ফায়াকুন▪️ পাঠককে সেই অভ্যন্তরীণ যাত্রার দিকে আহ্বান জানাবে।
এখানে মানুষ শেখাবে—
▪️অস্তিত্ব ও আত্মার এককতা
▪️শূন্যতা থেকে অনন্ত Being/Wujud -এ উত্তরণ
▪️সময় ও অনন্তকাল, দুনিয়া ও আখিরাতের অন্তর্নিহিত সম্পর্ক
▪️এবং আত্মার চূড়ান্ত দায়িত্ব: প্রভুর আহ্বানে সর্বদা সাড়া দেওয়া।
“কুন ফায়াকুন: অস্তিত্বের শুরু ও প্রেমের চূড়ান্ত আহ্বান”—এই গ্রন্থ পাঠককে অনন্তের দিকে দিক নির্দেশ করবে, যেখানে ওয়াহদাতুল উজুদ-এর আলোকে মানুষ নিজেকে খুঁজে পাবে প্রভুর নূরে বিলীন হয়ে, প্রেম ও Being-এর এক অমর যাত্রায় নিমজ্জিত হয়ে।
▪️▪️
আগামী বইমেলায় আসতে পারে ইনশাআল্লাহ
▪️▪️
#খাজা_ওসমান_ফারুকী
#আত্মার_নকশা
#সুফি_মেডিটেশন
#আত্মার_বিজ্ঞান
#সুফি_সেন্টার