15/11/2025
বিশ্ব যেথা এগিয়ে চলে,
আমরা যাই পিছে....
#বাঁচতে_হলে_জানতে_হবে
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে কিছু সেন্টার চালু হয়েছে, যারা দাবী করছে যে তারা EECP নামের এক বিশেষ পদ্ধতিতে রিং বা বাইপাস ছাড়া শরীরের সকল রক্তনালীর ব্লক খুলে দেন। যেটা ১০০% ভুয়া এবং অবৈজ্ঞানিক।
তাদের ব্যানারে দেখা যায়, তারা EECP কে বলেছে রিং,বাইপাস ছাড়া হৃদরোগের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি।
প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে,হার্টের কিছু রোগী থাকে যাদের হার্টের রক্তনালী ব্লকের পর পর্যাপ্ত ঔষুধ,রিং বা বাইপাস করার পরও তাদের ব্যথা যায় না।ঔষধ,রিং,বাইপাসের পরও এই ব্যথা যদি তিনমাসের বেশি থাকে তবে তাদের জন্য কিছু থেরাপীর ট্রায়াল বিশ্বজুড়ে চলছে।
যেগুলোর কোনটাই এখনও পুরোপুরি সর্বজন কার্যকর না। তার মধ্যে একটা হচ্ছে এই EECP।
★তাহলে EECP কি দরকার নাই? থাকলে কাদের কে দিব?
দরকার আছে,যাদের আর কিছুই করার নাই।"নানীকে মা ডেকে দিন কাটানোর" মত তাদেরকে EECP দেয়া যেতে পারে।
✴️কাদের কে দিব?
-যাদের হার্টে ব্লক আছে
-তিনমাস কোন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মত সঠিকভাবে ঔষধ খেয়েছে,
-হার্টে রিং বা বাইপাস করা হয়েছে,
-অথবা হার্টে ব্লক থাকার পরও তার অন্যান্য জটিলতা যেমন কিডনী ফেইল,হার্টে ব্লক এতই বেশি যে রিং বা বাইপাস করা যাচ্ছে না।
-এতকিছুর পরও হার্টের ব্যথা যাচ্ছে না।
তাদের জন্য যখন কিছুই করার নাই তখন এই EECP।
কিন্তু এসব সেন্টারের প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে মানুষ হার্টের ঔষুধ,রিং,বাইপাস বাদ দিয়ে EECP এর দিকে ঝুঁকছে।
যে রোগীর রিং দরকার,যার বাইপাস দরকার সে এগুলো না করে EECP নেয়া হবে খুনের শামিল।
যে সব রোগীকে তারা এই থেরাপী দিচ্ছে,আসলে কি তাদের এই থেরাপীর প্রয়োজন আছে কিনা সেটা কে নির্ধারণ করবে?
এটা অবশ্যই একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে হতে হবে।
এসব সেন্টারের কি কোন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আছে?
ইন্ডিয়াতে EECP এর অনেক সেন্টার আছে কিন্তু কোনটাই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শের বাইরে চলে না।
ওখানে এসব চিন্তায় করা যায় না।কারো মন চাইলো আর রাস্তার মোড়ে নামকাওয়াস্তে একটা হার্ট সেন্টার বানিয়ে ফেলল।
EECP এর খরচ,১ লাখ ২০ হাজার টাকা অথচ এর চেয়ে কম টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে উন্নত মানের রিং বা বাইপাস অপারেশন করা যায়।সুতরাং সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি।
কোন সেন্টার কে যদি EECP চালাতে হয়, তবে
১/ তাদের বিভ্রান্তিকর প্রচারনা বন্ধ করতে হবে
২/ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব্যতীত কাউকে EECP দেয়া যাবে না।
৩/ EECP দিতে গিয়ে কোন ইমার্জেন্সী হলে তা ম্যানেজের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, মানুষের অজ্ঞনতাকে কাজে লাগিয়ে এই জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন নাই এমন রোগীকেও তারা EECP দিচ্ছে।
বিষয়টি বিবেচনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়,
সিভিল সার্জন অফিস,বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির হস্তক্ষেপ আশা করছি।
EECP কখনোই হার্টের ঔষধ, রিং বাইপাসের বিকল্প নয়। এটা সিলেকটিভ কিছু রোগীর জন্য হার্টের চিকিৎসার একটা পদ্ধতি যেটা শুধুমাত্র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে নেয়া উচিত। কারা এই থেরাপী থকে উপকৃত হবেন তা আমি লিখেছি।
না জেনে বিভ্রান্ত হবেন না, টাকাও যাবে জীবন ও হারাবেন।
লেখা : ডা. ইকবাল মাহমুদ
এমবিবিএস,বিসিএস
এমডি (কার্ডিওলজি)
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।
https://www.facebook.com/share/v/1CZX78v5SS/