09/05/2021
যারা হস্তমৈথুন করেছেন তারা তো ইতিমধ্যে যা ক্ষতি করার করেই ফেলেছেন। এত অল্প বয়সে যারা এই গোপন গুনাহে জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে যারা এখন বিবাহিত,তারা বুঝছেন নিশ্চয়ই নিজেদের কতটা ক্ষতি করেছেন।
হস্তমৈথুনের ফলে যে ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে:
১. অকাল বীর্যপাত(Premature Ejaculation)। অর্থাৎ খুব অল্প সময়ে বীর্যপাত ঘটে। ফলে স্বামী তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম হয়। বৈবাহিক সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয় না।
২. বীর্য পাতলা হয়ে যায় (Temporary Oligospermia)- Oligospermia হলে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। তখন বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ২০ মিলিয়নের কম। যার ফলে Male infertility দেখা দেয়। অর্থাৎ সন্তান জন্মদানে ব্যর্থতা দেখা দিতে পারে। একজন পুরুষ যখন স্ত্রীকে রমন করেন তখন তার পুরুষাঙ্গ থেকে যে বীর্য বের হয় সেই বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ৪২ কোটির মত।
৩. বিজ্ঞান বলে, কোনও পুরুষের থেকে যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয় তাহলে সে পুরুষ কোনও সন্তানের জন্ম দিতে পারেন না। অতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌনাঙ্গকে দুর্বল করে দেয়।
4. নার্ভাস সিস্টেম, হার্ট, ডাইজেস্টিভ সিস্টেম, ইউরিনারি সিস্টেম এবং আরও অন্যান্য সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয় । পুরো শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীর রোগ-বালাইয়ের যাদুঘর হয়ে যায়।
৫. চোখের ক্ষতি হয়।
৬. স্মরণ শক্তি কমে যায়।
৭. মাথা ব্যথা হয় ইত্যাদি আরও অনেক সমস্যা হয় হস্তমৈথুনের কারণে।
৮. আরেকটি সমস্যা হল Leakage of semen। অর্থাৎ সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বের হওয়া।
শারীরিক ব্যথা এবং মাথা ঘোরা।
৯. যৌন ক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হওয়া অথবা ঠিক মত কাজ না করার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া।
১০. শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন: হজম প্রক্রিয়া এবং প্রসাব প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে। দ্রুত বীর্যস্থলনের প্রধান কারণ অতিরিক্ত হস্তমৈথুন।
১১. হস্তমৈথুনের ফলে অনেকেই কানে কম শুনতে পারেন।
কিভাবে বাঁচবেনঃ-
১. খুব দ্রুত বিয়ে করে ফেলা,সেটা সম্ভব না হলে নিজের নফসকে কষ্ট দিতে রাসূল(সাঃ)এর আদেশ অনুযায়ী সাওম পালন করা।
২. বেশি বেশি আল্লাহকে ভালোবাসা, দ্বীনি খেদমতে সময় ব্যয় করা এবং নামাজে মনোযোগী হওয়া।
৩. নিজেকে যথাসম্ভব ব্যস্ত রাখা এবং দৃষ্টি হেফাজত করা।কোন ব্যক্তি বা অশ্লীল ছবির দিকে দৃষ্টিপাত করা, সেটা জীবিত মানুষের হোক কিংবা আঁকা হোক, বাঁধহীন দৃষ্টি ব্যক্তিকে হারামের দিকে নিয়ে যায়।
৪. কোন কোন সময় হস্তমৈথুন বেশি করেন, সেই সময়গুলো চিহ্নিত করুন। বাথরুম বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন, বা হঠাৎ কোনও সময়ে যদি এমন ইচ্ছে হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কোনও শারীরিক পরিশ্রমের কাজে লাগে যান। যেমন কোনও ব্যায়াম করতে পারেন। যতক্ষণ না শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ হস্তমৈথুন করার মত আর শক্তি না থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই কাজ বা ব্যায়াম করুন। গোসল করার সময় এমন ইচ্ছে জাগলে শুধু ঠাণ্ডা জল ব্যবহার করুন এবং দ্রুত বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসুন।ল
৫. ধৈর্য ধরতে হবে। একদিনেই নেশা থেকে মুক্তি পাবেন, এমন হবে না। একাগ্রতা থাকলে ধীরে ধীরে যে কোন নেশা থেকেই বের হয়ে আসা যায়। মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যাবে। তখন হতাশ হয়ে সব ছেড়ে দেবেন না। চেষ্টা করে যান।
৬. হস্তমৈথুনে চরমভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা থাকবেন না, ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন। জগিং করতে পারেন, সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ছাত্র হলে ক্লাসমেটদের সাথে একসাথে পড়াশুনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি শপে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন।
৭. বেশি রাত জাগা যাবেনা। এশার নামাজ পড়েই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে হবে।ঘুমানোর সময় ইসলামী আদবগুলো মেনে চলা। যেমন- ঘুমানোর দোয়াগুলো পড়া, ডান পার্শ্বে কাত হয়ে শোয়া, পেটের উপর ভর দিয়ে না-ঘুমানো; যেহেতু এ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিষেধ আছে।
৮. সেক্সুয়াল ব্যাপারগুলো একেবারেই এড়িয়ে চলবেন। এধরনের কোনও শব্দ বা মন্তব্য শুনবেন না।
৯. নিজের সাথে সবসময় ইসলামিক সাইন নিয়ে চলুন। যেমন আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের স্ক্রীনে লিখে রাখুন আল্লাহ আমাকে দেখছেন।
১০. ছোট ছোট টার্গেট সেট করুন। ধরুন প্রথম টার্গেট টানা দুইদিন হস্তমৈথুন করবেন না। দুইদিন না করে পারলে ধীরে ধীরে সময় বাড়াবেন।
১১. যখন তখন বিছানায় যাবেন না। কোথাও বসলে অন্যদের সঙ্গ নিয়ে বসুন।
১২. বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সবার সাথে বেশি সময় কাটান।
১৩. ধ্যান বা মেডিটেশন করতে পারেন। যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
১৪. যে মেয়ে বা মহিলা আপনার জন্য লা-মাহরাম বা যাদের সাথে দেখা করা নিষেধ তাদের সাথে কথা না বলুন।
১৫. বিকেলের পরে উত্তেজক ও গুরুপাক খাবার খাবেন না।
★ যে পরিমান ক্যালরী হস্তমৈথুনে খরচ হয়,তাতে শরীর খুব দ্রুত ভেঙে যায়৷ একারনে যে ছেলে অলরেডি হস্তমৈথুন থেকে ফিরে এসেছেন,তার জন্য নিয়মিত বিভিন্ন ফল, ডিম, দুধ, ছোলা খাওয়ার পরামর্শ রইলো।।এবার আসা যাক, যারা হস্ত-মৈথুন ছেড়ে দিয়েছেন কিছুদিন হল, বা বেশ অনেকদিনই হল তাদের ক্ষেত্রে কি করা যেতে পারে। এই বিষয় টা নিয়ে বেশি ভাববেন না, কারণ আমাদের শরীর নিজে থেকেই এই ক্ষতি পুরন করে নেয়। কিন্তু তারপর ও আরও বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। পুষ্টিকর বলতে বেশি করে ফল খান, এর সাথে দুধ, ডিম, মাছ, চিকেন, মধু এসব বেশি করে খান।
কেউ যদি এই গুনাহটি করে ফেলে তাহলে তার উচিত অনতিবিলম্বে তওবা করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, নেকীর কাজ করা এবং ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে হতাশ না হওয়া। কেননা এ পাপটি একটি কবিরা গুনাহ্।