23/04/2025
বাংলাদেশের গ্রীষ্মকাল যেন আমের মৌসুমের সুবাসে ভরে থাকে। বৈচিত্র্যময় জাতের সুস্বাদু আম দেশের নানা প্রান্তে গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বাজারে আসে এবং দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের রসনা তৃপ্ত করে। মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়টাই মূলত আমের মৌসুম হিসেবে ধরা হয়, যদিও আবহাওয়ার পার্থক্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে এই সময় কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।
১. রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ (বাংলাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত আম উৎপাদন অঞ্চল)
এলাকার আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এখানে সবচেয়ে বেশি জাতের ও সুস্বাদু আম হয়।
গুটি আম / দেশি আম: মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারে আসে। এগুলো ছোট আকৃতির ও দ্রুত পেকে যায়।
গোপালভোগ: মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাকে। খুব মিষ্টি ও ত fibre কম, তাই সহজেই গলে যায়।
হিমসাগর / ক্ষিরসাপাত: মে মাসের শেষ থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত পাওয়া যায়। এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় জাতগুলোর একটি। খোসা পাতলা, আঁশ নেই, খুব মিষ্টি।
ল্যাংড়া: জুন মাসের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত পাকে। হালকা টক-মিষ্টি স্বাদের, আঁশ কম থাকে।
ফজলি: জুনের শেষ থেকে জুলাই পর্যন্ত বাজারে আসে। বড় আকৃতির, রসালো, ও মিষ্টি আম।
আশ্বিনা / বারি-৪: জুলাইয়ের শেষ থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। এটি দেরিতে পাকা জাত।
---
২. সাতক্ষীরা ও যশোর
এখানকার আবহাওয়ায় আম তুলনামূলক আগে পাকে। তাই সাতক্ষীরার আম আগে বাজারে আসে।
হিমসাগর / ক্ষিরসাপাত: মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই পাওয়া যায়। সাতক্ষীরার হিমসাগর রপ্তানির জন্য বিখ্যাত।
গোপালভোগ ও ল্যাংড়া: মে শেষ থেকে জুনের শুরুতে বাজারে আসে।
ফজলি ও আশ্বিনা: জুনের শেষ থেকে আগস্ট পর্যন্ত।
---
৩. নওগাঁ ও দিনাজপুর
এই অঞ্চলেও অনেক আম হয়, বিশেষ করে ল্যাংড়া ও ফজলি জনপ্রিয়।
ল্যাংড়া: জুন মাসের শুরুতে পাকে। দিনাজপুরের ল্যাংড়া বিখ্যাত।
ফজলি: জুনের শেষ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত। নওগাঁর ফজলি বেশ বড় ও রসালো।
আম্রপালি: জুলাই মাসে পাওয়া যায়। এটি আঁশবিহীন, অনেক মিষ্টি এবং লম্বা সময় সংরক্ষণযোগ্য।
---
৪. মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা
এই অঞ্চলগুলোতেও আম চাষ ব্যাপকভাবে হয়।
গুটি আম: মে মাসের শুরুতেই আসে।
হিমসাগর ও গোপালভোগ: মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে।
ল্যাংড়া ও ফজলি: জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে।
আম্রপালি ও আশ্বিনা: জুলাই মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত।