21/07/2025
#যে_নারী_গলার_বেড়ি
কোন কোন নারী পুরুষের জন্য বেড়িসরূপ। নারী তাকে এক জায়গায় বন্দি ক'রে রাখে, নড়তে-চড়তে দেয় না। নিজের ভুবন-ভোলানো রূপে অভিভূত ক'রে বাড়ির বাইরে যেতে বাধা দেয়। আয়-উপার্জন করতে বাধা দেয়, সময়মতো আল্লাহর ইবাদতে বাধা দেয়, আল্লাহর পথে অর্থ ও সময় ব্যয় করতে বাধা দেয়। পিতামাতার সেবা করতে প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে, ভাইদের সাহায্য-সহযোগিতা করার পথে অন্তরাল সৃষ্টি করে। ভালো কাজে অগ্রসর হতে গেলে সে যেন তার পায়ে বা ঘাড়ে ধরে আটকে রাখে, যাতে সে কোন প্রকার উপায়ন্তর না পায়।
এমন নারী স্বামীর উন্নয়নের পথে বাধা হয়, হক আদায়ের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, ফরয আদায়ের সম্মুখে পাহাড় খাড়া করে, কর্তব্য পালনের মুখে দেওয়াল তৈরি করে।
এমন নারী নিজ যাদুময়ী প্রেম-ডোরে স্বামীকে বেঁধে রেখে সকল উন্নতি ও কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে। স্বামী পড়াশোনা করলে, সে পথে সে বেড়িসরূপ তার গলায় বা পায়ে জড়িয়ে বাধা সৃষ্টি করে।
হিন্দ বিন্তে উতবা থেকে বর্ণিত, তিনি পুরুষদেরকে সতর্ক ক'রে বলেছেন,
إنّما النساءُ أغلال؛ فليختر الرجل أخفّهنّ عليه।
অর্থাৎ, নারীরা হলো বেড়ি। সুতরাং পুরুষের উচিত, তার জন্য সবচেয়ে হাল্কা বেড়ি নির্বাচন করা।
হ্যাঁ, বিবাহ হলো একটি দায়িত্ব, একটি বোঝা। একটি অতিরিক্ত ভারী কর্তব্য। এই জন্য বিবাহের ব্যাপারে বলা হয়, তা হলো (উট বা ঘোড়ার মতো) নাকে শিকল বা লাগাম বাঁধা, কাঁধে (গরুর মতো গাড়ি বা হালের) জোঁয়াল নেওয়া। বিবাহে যে আংটি বা হার পরানো হয়, সেটা আসলে সংসারের শিকলে বাঁধা পড়া।
বলা হয়, 'বিবাহ একটি অনুষ্ঠানের নাম, যাতে কনের আঙ্গুলে আংটি এবং বরের নাকে লাগাম পরানো হয়। স্ত্রীর গলায় হার এবং স্বামীর গলায় বেড়ি পরানো হয়।'
'পুরুষ মানুষ বিয়ের আগেও বাঘ, বিয়ের পরেও বাঘ। তবে বিয়ের পরে তার উপরে দুর্গা বসে যায়!'
জিজ্ঞাসাঃ 'আচ্ছা বলুন তো? একজন বিবাহিত পুরুষ এবং জেলখানার বন্দির মধ্যে পার্থক্যটা কী?' উত্তরঃ 'জেলবন্দি মানুষের সাজা তো কিছু দিনে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বিবাহিত পুরুষের সাজা শেষ হতে সাড়া জীবন লেগে যায়।'
এক স্ত্রী তার স্বামীকে বলল, 'দেখো আমাদের বিয়ে হওয়া ১৬ বছর পার হয়ে গেল, অথচ কিছু বোঝাই গেল না।' স্বামী বলল, 'সাজার কথা কারাবন্দি অনুভব করে, কারাধ্যক্ষ নয়।'
কোন কোন ছলনাময়ী নিজ ছলনাবলে কলে-কৌশলে স্বামীকে বেঁধে তার নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করে। ইচ্ছামতো স্বামীর সংসারে স্বেচ্ছাচারিতা চালায়।
এই জন্য সাহাবিয়া পুরুষকে যথাসাধ্য হাল্কা বোঝ বা বেড়ি বেছে নিতে উপদেশ দিয়েছেন।
এ মর্মে দ্বিতীয় খলীফা উমার বিন খাত্ত্বাব (রায্বিয়াল্লাহু আনহু)-এর একটি উক্তি পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন, 'নারী হলো তিন প্রকার।
(এক) সরলমতি, সহজ-সাদা, সতী, মুসলিমা, প্রেমময়ী সন্তানবতী।
সে নিজ পরিবারকে কঠিন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা করে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পরিস্থিতিকে সাহায্য করে না। অর্থাৎ, কোন বিপদকেই তাদের জন্য বড় ক'রে তোলে না। আর এমন নারী বিরল।
(দুই) মুসলিমা সতী নারী। সে কেবল সন্তানের আধার।
(তিন) উকুন-ওয়ালা বেড়ি। মহান আল্লাহ যার গলায় ইচ্ছা পরিয়ে দেন এবং তিনি ছাড়া অন্য কেউ সেই বেড়িমুক্ত করতে পারে না। (ইবনে আবী শাইবা ১৭১৪৭, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৮৩৫১নং, তারীখে দিমাশক, ইবনে আসাকির ৪৪/৩৬২)
সে যুগে লোমবিশিষ্ট চামড়ার বেড়ি হতো। গলায় পরানোর পর সেই বেড়ির লোমে আবার উকুন জন্ম নিতো। ফলে বেড়ির বন্ধন-কষ্টের উপরে উকুনের জ্বালাতন সহ্য করতে হতো। তার মানে যেমন বলা হয়, 'গোদের উপর বিষফোঁড়া'!
এমন নারী, সে হলো গলার বেড়ি, আবার তার উপর উকুনজ্বলুনি! এমন নারী থেকে পরিত্রাণ পাওয়া বিশাল কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এমন স্ত্রী মাছের কাঁটার মতো গলায় আটকে যায়; না পারে গিলতে, আর না পারে ফেলতে। বহু প্রকার চেষ্টা করা সত্ত্বেও এমন সঙ্গিনী থেকে মুক্তির বৈধ পথ পাওয়া যায় না। মহান আল্লাহর কাছে দুআর মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছা ছাড়া এমন বউ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব হয় না। ফাল্লাহুল মুস্তাআন।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক নারী নিজ পুরুষের কাছে বন্দিনী। আর এ কথা হাদীসে এসেছে, মহানবী ﷺ বিদায়ী হজ্জের ভাষণে বলেছেন,
((أَلَا وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا فَإِنَّمَا هُنَّ عَوَانٍ عِنْدَكُمْ))।
“শোনো! তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার করো। কেননা, তারা তোমাদের নিকট কয়েদী।” (তিরমিযী ১১৬৩, নাসাঈর কুবরা ৯১৬৯নং)
যেহেতু নারীকে স্বামীগৃহে গিয়ে তারই সঙ্গে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। তারই স্বামীত্বে থেকে তার কথামতো চলতে হয়, তার অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হয়, তার সেবাযত্ন করতে হয়, তার আদেশ নিজ পিতামাতার আদেশ অপেক্ষা অধিক পালনীয় হয় ইত্যাদি।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ বিষয়ে কোন কোন স্বামী বা তার পরিবারের লোক ভীষণভাবে বাড়াবাড়ি করে। যার সুবাদে তারা বাড়ির বউকে সেবাদাসী অথবা ক্রীতদাসী ধারণা করে। গাধীর মতো খাটিয়ে পরিশ্রান্ত করে। অকারণে মারধর করে। বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা বা যৌতুক আনতে বাধ্য করে। সে বউ সময়ে খেতে পায় না, ভালো খাবার তার পাতে পড়ে না, ভালো পরন তার দেহে শোভনীয় হতে পারে না। ভালোবাসার কথা তার কর্ণকুহরে ধ্বনিত হয় না। বন্দিদশাই তার ভাগ্য হয়। গালিমন্দ, বকাঝকা ও কড়া কথাই তার নিত্য শ্রাব্য হয়।
এই জন্য কোন কোন সালাফ বলেছেন,
النّكَاحُ رِقّ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ عِنْدَ مَنْ يُرِقّ كَرِيمَتَهُ।
অর্থাৎ, বিবাহ হচ্ছে এক প্রকার দাসত্ব। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকের দেখা উচিত, সে তার আদরের কন্যাকে কার দাসী বানাচ্ছে।
বলাবাহুল্য, অভিভাবকের উচিত, দেখেশুনে মেয়ের বিয়ে দেওয়া। কোন রকমে কন্যাদায় থেকে মুক্তি পাওয়াই যেন তার নিয়ত না থাকে। নচেৎ তার ভুলের জন্য কোন কারাগারের বন্দিদশাই কন্যার নিয়তি হতে পারে। জামাই দ্বীনদার কি না, সালাফী কি না, বাড়ির পরিবেশ কেমন, উপযুক্ত পাত্র কি না ইত্যাদি যাচাই করেই মেয়ের বিয়ে দেওয়া উচিত। নচেৎ তার আমানতে খিয়ানত হবে এবং তার জন্য তাকে কিয়ামতে জবাবদিহি করতে হবে।
✍️(সংগ্রহেঃ প্রিয় শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী হাফিজাহুল্লাহ