16/10/2025
প্রাচীন গ্রিসে নারীদের মেডিকেল পড়া নিষিদ্ধ ছিল। খ্রিস্ট পূর্বাব্দ ৩০০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন একজন নারী, নাম তার অ্যাগনোডিস। ছোটবেলা থেকেই তার ডাক্তার হওয়ার শখ ছিল। তিনি চুল কেটে পুরুষ বেশে আলেকজান্দ্রিয়া মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হন।
ডাক্তারি শিক্ষা শেষ করে অ্যাগনোডিস একদিন এথেন্সের রাস্তায় হাঁটছিলেন। সেসময় তিনি প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক নারীর কান্না শুনতে পান। নারীটি প্রচণ্ড ব্যথায় মরে গেলেও চাননি কোনো পুরুষ তাকে স্পর্শ করুক!
অ্যাগনোডিস ভেতরে গিয়ে ডেলিভারি করাতে চাইলে মহিলাটি কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না, কারণ সে ভেবেছিল অ্যাগনোডিস একজন পুরুষ। সেদিন অ্যাগনোডিসকে জামাকাপড় খুলে প্রমাণ করতে হয়েছিল যে তিনি একজন নারী। তারপর তিনি সফলভাবে ওই নারীর সন্তান প্রসব করান।
গল্পটি শীঘ্রই গ্রিসের নারী মহলে মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং সমস্ত অসুস্থ নারীরা অ্যাগনোডিসের কাছে ভিড় জমাতে শুরু করে। পুরুষ চিকিৎসকরা ঈর্ষান্বিত হয়ে অ্যাগনোডিসকে অভিযুক্ত করে বলেছিলেন, অ্যাগনোডিস একজন চরিত্রহীন পুরুষ, সে বিভিন্নভাবে নারীদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে।
বিচারে অ্যাগনোডিসকে আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয়বার প্রমাণ করতে হয়েছিল যে তিনি একজন নারী। কিন্তু এবার তাকে মেডিসিন অধ্যয়ন করা এবং একজন নারী হিসেবে চিকিৎসা শাস্ত্র অনুশীলন করার জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
সাথে সাথে গ্রিসের নারীরা এই দণ্ডের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, বিশেষ করে সেই সব বিচারকদের স্ত্রীরা যারা মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছিলেন। কেউ কেউ বলেছিলেন, যদি অ্যাগনোডিসকে হত্যা করা হয় তবে তার সাথে তাদেরকেও মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। অবশেষে নারীদের চাপ সহ্য করতে না পেরে বিচারকরা অ্যাগনোডিসের সাজা তুলে নেন। তারপর থেকে গ্রীসে নারীদের চিকিৎসা শাস্ত্র অধ্যয়ন করার অনুমতি দেওয়া হয়, তারা শুধুমাত্র নারীদের চিকিৎসা করবে এই শর্তে।
অ্যাগনোডিস প্রথম গ্রীক নারী চিকিৎসক এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইতিহাসে তার চিহ্ন রেখে গিয়েছিলেন। এই মহীয়সী নারীর প্রতি শ্রদ্ধা।
(সংগৃহীত)