07/10/2025
রোগী নিজের ভাষায় তার চিকিৎসার দীর্ঘ পথের গল্পটা যখন বলেন... তার লুপাস পজিটিভ, জরায়ুমুখের দূর্বলতা, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ছিল। আলহামদুলিল্লাহ, এখন এক কন্যার মা ❤️❤️❤️। তখন একসাথে কয়েকজন রিকারেন্ট প্রেগন্যান্সি লসের রোগী প্রেগন্যান্ট ছিল। ভালবেসে এদের নাম দিয়েছিলাম " জ্বালাইন্যা গ্রুপ"...
ম্যাম, আস্সালামুআলাইকুম
আশা করি ভালো আছেন,,,
আমারো খুব ইচ্ছা ছিল, একদিন আমিও আমার গল্পটা আপনার পেইজে শেয়ার করবো,,, আলহামদুলিল্লাহ,,,আল্লাহ সুবহানা তায়ালা আমার সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন।
২০২০ এর শেষের দিকে শ্রদ্ধেয় আনোয়ারা
ম্যামের আন্ডারে আমি প্রথম কনসিভ করি কিন্তু সেটি ব্লাইটেড ওভাম হয়, তখন ম্যাম আমাকে শান্তা ম্যামের কাছে রেফার করেন। ম্যাম এর কাছে যাওয়ার পর, ম্যামের আন্তরিকতা এবং ট্রিটমেন্টের ধরন আমার খুব ভালো লাগে,, ম্যাম আমার সকল ধরনের টেস্ট করান এবং টেস্টে তেমন কোন সমস্যা ধরা পড়ে নাই.... শুধু পলিসিস্টিক ওভারি ছাড়া.....তারপর ২০২১ সালের শেষ দিকে আমি ম্যামের ট্রিটমেন্টে ওভুলেশন ইন্ডাকশনে আবার কনসিভ করি এবার বাচ্চার হার্টবিট ও আসে কিন্তু তের সপ্তাহে আমার ইউরিন ইনফেকশন থাকার কারণে পানি ভেঙ্গে যায়..... যার কারণে আমার বাচ্চাটাকে এবরশন করতে হয়... যেটা আমার জন্য অনেক কষ্টদায়ক ছিল... তার তিন মাস পরেই আমি আবারো ওভুলেশন ইনডাকশন এর মাধ্যমে কনসিভ করি কিন্তু এবারও ১৭ সপ্তাহে এসে পানি ভেঙ্গে যায়.... হয়তো আল্লাহ তাআলার অন্যরকম ইচ্ছা ছিল...
অনেকেই আমাকে বলেছিল ডক্টর চেঞ্জ করতে কিন্তু আমি করি নাই কারণ আমার বিশ্বাস ছিল আমি সফল হলে ম্যামের হাতেই সফল হব... কারণ সন্তান দান করার ক্ষমতা কেবল আল্লাহ তায়ালার..
তারপর ছয় মাস পর আমি ম্যামের কাছে আবারো যাই এবং ম্যাম আমাকে ল্যাপেরোস্কপি এবং হিস্টোরোসকপি করার কথা বলে.... ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমি ম্যামের কাছে ল্যাপরোস্কোপি এবং হিস্টোরোস কপি করি এবং তাতে আমার জরায়ু মুখের দূর্বলতার কথা ম্যাম আমাকে জানায় এবং পরবর্তীতে কনসিভ করলে স্টিচ দেয়ার কথা
বলেন।
তারপর ২০২৩ সালের শেষের দিকে আমার আরো একবার কনসিভ হয় কিন্তু সেটাও ব্লাইডেড ওভাম হয়... আমার কাছে শুধু মনে হচ্ছিল আমার পরীক্ষা আল্লাহ তাআলা যেন শেষই করছে না....তারপরও আমি নিরাশ হইনি আমি আমার আল্লাহর কাছে একটি সন্তান চাইতেই থাকি,...
তারপর ২০২৪ সালের শেষের দিকে আমি আলহামদুলিল্লাহ আবারও কনসিভ করি কিন্তু কোনরকম সিমটম না থাকার কারণে আমার মনে হয় এবারও ব্লাইটেড ওভাম হবে কিন্তু আমার পিরিয়ড মিস হবার ১৫ দিন পর যখন আমি আল্ট্রা করি তখন আমি আমার সন্তানের হার্টবিট শুনতে পাই আলহামদুলিল্লাহ...
তারপর শুরু হয় আমার নতুন যুদ্ধ.....আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম আমার সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখানোর জন্য আমার যত চেষ্টা করতে হয় আমি করব। তারপর আমি ম্যামের কাছে যাই ম্যাম আমাকে ১৩ সপ্তাহে স্টিচ দেয়ার কথা বলে কিন্তু ম্যাম ওমরা হজে যাওয়ার কারণে এবং 10 সপ্তাহে আমার লেন্থ কম দেখানোর কারণে আমি ম্যামের পরামর্শে কামরুন্নেসা ম্যামের কাছে জরায়ু মুখে সেলাই নেই... এবং পুরোপুরি বেড রেস্টে থাকি.....
তারপর থেকে যেকোনো সমস্যার কারণে আমি ম্যামকে পেইজে নক করতাম এবং সাথে সাথে ম্যাম আমাকে সমস্যার সমাধান করে দিত.... এভাবেই আমি আল্লাহতালার উপর বিশ্বাস এবং ম্যামের উপর আস্থা রেখে আমি আমার পুরো প্রেগনেন্সি জার্নি কমপ্লিট করতে পারি আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৭ সপ্তাহে ম্যামের হাতে সি সেকশনের মাধ্যমে আমার কোলজুড়ে কন্যা সন্তান আসে আলহামদুলিল্লাহ.....
আমার পুরো প্রেগনেন্সিতে ম্যামের অনেক সাপোর্ট পেয়েছি যা হয়তো অন্য ডক্টরের কাছে আমি পেতাম না.... ম্যাম এত ব্যস্ত থাকার পরও আমার যে কোন সমস্যার কথা পেইজে বলার সাথে সাথে ম্যাম আমাকে সমাধান দিতেন আমি ম্যামের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব কারণ এত ব্যস্ততার পরও ম্যাম কখনো বিরক্ত হননি..... আমি আল্লাহতালার কাছে ম্যামের জন্য অনেক অনেক দোয়া করি....আল্লাহ তাআলা যেন ম্যামকে নেক হায়াত দান করেন এবং আমার মত যেসব মায়েরা একজন সন্তানের মুখ দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে সেসব মায়েদের পাশে যেন ম্যাম সব সময় থাকতে পারেন....
সর্বশেষ আল্লাহতালার কাছে আমার হাজার হাজার শুকরিয়া যে ম্যামের হাত ধরে আমি আমার সন্তানকে পেয়েছি,,,,🤲🤲