27/11/2025
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেক রোগীই একটি বিশেষ ধরনের কাঁধের ব্যথায় ভোগেন, যাকে “Frozen Shoulder” (Adhesive Capsulitis) বলা হয়। এটি ধীরে ধীরে কাঁধের নড়াচড়া কমিয়ে দেয়, ব্যথা বাড়ায় এবং দৈনন্দিন কাজকে কঠিন করে তোলে। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে এই সমস্যা সাধারণ মানুষের তুলনায় ২–৪ গুণ বেশি দেখা যায়।
কাঁধে ব্যথার প্রধান কারণ
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরে Glycation প্রক্রিয়া বাড়ে। এতে কাঁধের চারপাশের টিস্যু শক্ত হয়ে যায়, ফলে ব্যথা, জড়তা ও নড়াচড়া কমে যায়।
এছাড়া—
রক্তসঞ্চালন কমে যাওয়া
নরম টিস্যুর প্রদাহ
স্নায়ুর চাপ
ফ্যাট জমে কাঁধের টেন্ডন দুর্বল হওয়া
—এসব কারণে ব্যথা আরও বেড়ে যায়। অনেক সময় হাতে অসাড়তা, ঘুমের মধ্যে ব্যথা বাড়া এবং শীতকালে সমস্যা তীব্র হয়।
প্রতিকার ও করণীয়
১. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করলে কোনো চিকিৎসাই দীর্ঘমেয়াদে কাজ করবে না। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত হাঁটা, ওষুধ বা ইনসুলিনের মাধ্যমে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি।
২. হালকা ব্যায়াম:
Towel stretch
Pendulum exercise
Wall climbing
এসব ব্যায়াম প্রতিদিন ১০–১৫ মিনিট করলে কাঁধ ধীরে ধীরে নরম হয় এবং ব্যথা কমে।
৩. গরম সেঁক:
গরম পানির ব্যাগ দিয়ে দিনে ২–৩ বার সেঁক দিলে রক্তসঞ্চালন বাড়ে এবং ব্যথা কমে।
৪. Ayurvedic & Natural Support:
ড্যাশমূল ক্বাথ, রসনাদি ক্বাথ, নিরগুণ্ডি তেল দিয়ে কাঁধে হালকা মাসাজ ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৫. ফিজিওথেরাপি:
উন্নত পর্যায়ের ফিজিওথেরাপিতে আল্ট্রাসাউন্ড, TENS বা মোবিলাইজেশন অত্যন্ত কার্যকর।
৬. কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন:
ব্যথা ৩–৪ সপ্তাহেও না কমলে, হাত তুলতে না পারলে বা ঘুমে ব্যথা বেড়ে গেলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নিয়মিত ব্যায়ামে ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধের ব্যথা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।