26/07/2025
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস হলে সমস্যা কী
আসুন— বিষয়টা খতিয়ে দেখি, আসলেই কোনো সমস্যা আছে কিনা।
আসুন দেখি— জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার মানে কী?
জাতিসংঘের মানবাধিকারের ভিত্তি হল Universal Declaration of Human Rights (UDHR)। এর বেশ কিছু ধারা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। অনেকেই এর সমালোচনা করেছেন।
এমনকি, এর বিপরীতে মানবাধিকারের একটা ইসলামিক ফ্রেমওয়ার্ক দিয়েছে OIC, যা Cairo Declaration on Human Rights in Islam (CDHRI) নামে পরিচিত। জাতিসংঘের মানবাধিকার আর OIC প্রস্তাবিত মানবাধিকার এক নয়। একটা উদাহরণ দিলেই বিষয়টা সহজে বুঝতে পারবেন।
কেউ ধর্ম অবমাননা করলে, আল্লাহ তা'আলা ও রসূল ﷺ কে কটুক্তি করলে জাতিসংঘের মানবাধিকার (UDHR article 19) বলবে এটা তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা।
কিন্তু OIC প্রস্তাবিত মানবাধিকার অনুযায়ী (CDHRI article 22) ধর্ম অবমাননা, আল্লাহ তা'আলা ও রসূল ﷺ কে কটুক্তি ইত্যাদি ইসলামি শ*র য়ী সীমা অতিক্রম করে, তাই এগুলো অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।
ফলে দেশ জাতিসংঘের মানবাধিকারকে ভিত্তি ধরে নিলে শাহ ভাগী শাটিমরা যা ইচ্ছা তা-ই লিখতে পারবে, বলতে পারবে। তা অপরাধ তো বলা হবে না, বরং রাষ্ট্রই তাকে নিরাপত্তা দেবে। এই হল তাদের নীতি।
সমঝোতা স্মারক সংক্রান্ত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ আছে— এই মিশন বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেবে..
কারিগরি সহায়তা বলতে তারা আসলে কী বোঝায়?
Office of the High Commissioner for Human Rights (OHCHR) -এর ওয়েবসাইটে কারিগরি সহায়তা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:
"ভোগান্তি (suffering), বৈষম্য (discrimination), বঞ্চনা (marginalisation), সংঘর্ষ (conflict)... এগুলো প্রতিরোধের একটা মাধ্যম হল কার্যকর কারিগরি সহায়তা।"
তারা suffering, discrimination, marginalisation, conflict —এজাতীয় শব্দগুলোকে সাধারণত কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
বিভিন্ন প্রকাশনা ও গবেষণাপত্রে দেখবেন— জাতিসংঘ discrimination শব্দটাকে নারীবাদের সাথে, marginalisation-কে সম*কা*মিতা, এলGটিভি ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ত করে। conflict শব্দটাকে ব্যবহার করে ওয়ার অন টেরর প্রকল্পের গঙগি নাটকে। এগুলোর ভুরিভুরি উদাহরণ আছে, কারন তারা এটাতে কোনো লুকোছাপা করে না।
তার মানে কি— ওয়ার অন টেরর, এলGটিভি .. এসব প্রকল্প এদেশে বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা দেবে তারা?
কীভাবে সাহায্য করবে?
তাদের সাহায্য করা নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিতর্ক আছে। যেমন:
- দেশের সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে পরা
- অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ
- পশ্চিমা সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া
- পক্ষপাতিত্ব বা রাজনৈতিক পক্ষ নেয়া
- সুশীল নামের সমাজের একটা এলিট গ্রুপকে ক্ষমতায়ন
- ডাবল স্ট্যান্ডার্ড অর্থাৎ পাশ্চাত্যপন্থী হলে একভাবে, আর না হলে ভিন্নভাবে মূল্যায়ন
- অশ্লীলতার প্রসার ইত্যাদি।
এছাড়াও সারা পৃথিবীতে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশনারের কার্যালয় রয়েছে ১৮ টি। এই ১৮ টি কার্যালয় কোথায় কোথায় তা খেয়াল করলে দেখা যায়, এদের অধিকাংশই আফ্রিকার যুদ্ধ বিদ্ধস্ত অথবা পশ্চিমাদের পরোক্ষভাবে শাসিত অঞ্চলে যেখানে তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রেখেছে; হোক সেটা রাজনৈতিক বা আর্থ সামাজিক। আর বাকিগুলো মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ এবং ল্যাটিন অ্যামেরিকায় (যেখানকার রাজনীতি C আই A দ্বারা নিয়ন্ত্রিত)।
যেসব দেশের অফিস রয়েছেঃ
আফ্রিকার দেশ সমূহ- বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, চাদ, গুয়েতামালা, গিনি, হন্ডুরাস, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, নাইজার, সুদান, তিউনিসিয়া।
ল্যাটিন অ্যামেরিকা - কলম্বিয়া, মেক্সিকো।
মধ্য প্রাচ্য - প্যালেস্টাইন (গাজা ও রামাল্লা), সিরিয়া (অফিস লেবাননের বৈরুতে), ইয়েমেন।
উপরের দেশ গুলোর সাথে বাংলাদেশকে তুলনা করুন।
~সম্পাদিত
মূল লেখাঃ তারিক বিন মুত্তালিব
পরিমার্জন ও সম্পাদনাঃ সাহেদ হাসান রূপম