Russell Homeo Care

Russell Homeo Care The physician’s high and only mission is to restore the sick to health, to cure, as it is termed

03/05/2023

হোমিও সমীক্ষা, হোমিওপ্যাথিক ত্রৈমাসিক
একাদশ বর্ষ, তৃতীয় ও চতুর্থ সংখ্যা, ১০/০১/১৯৯১
“রোগীর চিকিৎসা” বা “হোমিওপ্যাথি”
ডাঃ অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়, ডি এম এস

হোমিওপ্যাথি একটি সম্পূর্ণ সরল চিকিৎসাশাস্ত্র। ইহা সর্বদাই নীতি নির্ভর। নীতি বলতে সদৃশ্তত্ব বা সদৃশবিধান। চিকিৎসা জগতে সদৃশ বিধানই প্রাকৃতিক নিয়ম। মহান হিপোক্রেটিস বি-সদৃশ নীতির (Law of Contraria) সঙ্গে এই সদৃশ নীতির (Law of Similars) কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর অনুগামী প্যারাসেলসাসও এই নীতির কথা বলেছেন। তবে একথা ঠিক যে , “সদৃশ নীতিই প্রাকৃতিক রোগ নিরাময়ের একমাত্র স্বাভাবিক পদ্ধতি।“

ডাঃ হ্যানিম্যানের আগে কেউ একথা বলেননি, প্রয়োগের জন্য গবেষণা ইত্যাদি তো দূরের কথা।

হোমিওপ্যাথি সুস্থ মানুষের দেহে শক্তিকৃত অবস্থায় ওষুধ প্রয়োগ ও পরীক্ষা করার শিক্ষা দেয়। সুস্থ দেহে ওষুধ রোগ সৃষ্টি করে। যে বস্তু রোগ উৎপাদনে সক্ষম , তাই ওষুধ। আবার একটা ওষুধ কোন ধরণের রোগীতে কাজ করবে এই পরীক্ষায় সুনিশ্চিত করে জানা যায়। অর্থাৎ ওষুধের আরোগ্যকারী শক্তিকে জানার এটি একটি পদ্ধতি। বিভিন্ন বয়স এবং লিঙ্গের মানুষের শরীরে পরীক্ষার পর একটা বস্তুকে ওষুধ বলে গ্রহণ করা হয়। ওষুধের ক্রিয়ার বিরুদ্ধে নীরোগ মানুষের সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায়।আর এই প্রতিক্রিয়ার প্রমাণই হ’ল মানসিক ও দৈহিক লক্ষণসমষ্টি। কোন বিশেষ রোগীর যে লক্ষণসমষ্টি পাওয়া যাবে সে অনুসারে এমন একটি ভেষজ নির্বাচন করতে হবে যেটি সুস্থ মানুষের দেহে প্রয়োগ করলে অতিসদৃশ লক্ষণসমষ্টি তৈরী হবে।

রোগীলিপি প্রস্তুত করার পর ওষুধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কেউ প্রাধান্য দেয় সামগ্রিক লক্ষণের উপর, কেউ বা মানসিক লক্ষণের উপর, আবার কেউ কেউ ওষুধ নির্বাচন করেন মায়াজমের ভিত্তিতে, কেউ বা লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধির ভিত্তিতে, কেউ বা কারণ-তত্ত্বের ভিত্তিতে। দৃষ্টিভঙ্গির এই পার্থ্ক্য হেতু একই রোগীচিত্রে বিভিন্ন চিকিৎসকের নির্বাচিত ওষুধ ভিন্ন ভিন্ন হয়। যার নির্বাচন সঠিক হবে তাঁর রোগী আরোগ্য হবেই। এই ওষুধ নির্বাচনের একটা সুনির্দিষ্ট নীতি ও পথ নির্দেশ আমাদের সামনে রেখে গেছেন মহাত্মা হ্যানিম্যান। এই নীতি ও পথকে ঠিকভাবে অনুধাবন করতে গেলে চাই চিকিৎসকের পর্যবেক্ষন শক্তি, লক্ষণের তাৎপর্য বিশ্লেষণের ক্ষমতা, ধৈর্য, আগ্রহ, গভীর মনোযোগ, আত্মবিশ্বাস ও অভিজ্ঞতা। মোট কথা অতি সন্তর্পনে করতে হবে রোগী স্বাতন্ত্রীকরণ । কারণ হোমিওপ্যাথি রোগের নয় রোগীর চিকিৎসা করে।যে লক্ষণ বা লক্ষণসমষ্টি রোগী স্বাতন্ত্রীকরণে সাহায্য করবে সেই লক্ষণ বা লক্ষণ সমষ্টিই ওষুধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। হোমিওপ্যাথির মূল কথা হলো – রোগীর সামগ্রিক চিকিৎসা করা রোগের নাম ধরে নয় (Treat the patient as a whole and not on the basis of nosological classification of diseases )।

এই কারণেই রোগী স্বাতন্ত্রীকরণ ছাড়া হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সম্ভব নয়। এক ভদ্রলোকের প্রতিদিন অম্বল ও পেটে প্রচন্ড বায়ু সঞ্চার হয়, যা বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা অবধি বৃদ্ধি হয়, ক্ষুধা ভাল কিন্তু দু-এক গাল খেলেই পেট ভরে গেল মনে হয়, লালচে প্রস্রাব, গরম পানীয় ও গরম খাদ্য পছন্দ করে।এই রোগীকে লাইকোপোডিয়াম দেওয়ায় কোন ফল হয়নি। রোগী অতি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, সামান্যতম নোংরাও সহ্য করতে পারে না। সবকিছু সাজানো পছন্দ করে, প্যান্ট জামার ইস্ত্রি ঠিকঠাক থাকা চাই—এই মানসিক লক্ষণ রোগী স্বাতন্ত্রীকরণে সাহায্য করলো। আর্সেনিক অ্যালবাম দেওয়ায় রোগী আরোগ্য হোল। এর থেকে বোঝা গেল যে হোমিওপ্যাথিতে রোগীর চিকিৎসা হয়, রোগের নয়। এবং এই রোগী চিকিৎসা হয় সামগ্রিকভাবে।

রোগী স্বাতন্ত্রীকরণের ব্যাপক লক্ষণের মধ্যে মানসিক লক্ষণের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইচ্ছা বা প্রবৃত্তির (will) সহিত সম্বন্ধ বিশিষ্ট লক্ষণগুলিই প্রথম ও সবচেয়ে উচ্চশ্রেণীর মানসিক লক্ষণের অন্তর্ভূক্ত। লক্ষণ সমষ্টি যাই হোক না কেন সঙ্গে যদি নিদারুন মানসিক অস্থিরতা ও মৃত্যু ভয় থাকে, অত্যন্ত শঙ্কিত হয়ে পড়ে, মনে করে এ যাত্রায় তার নিষ্কৃতি নেই, বুঝি এই তার শেষ, সে নিশ্চয়ই মারা যাবে, মনে করে ওষুধ খাবার দরকার নেই, ডাক্তার কিছুই করতে পারবে না—তবে এই ক্ষেত্রে আর্সেনিক আল্ব্যামই হবে নির্বাচিত ওষুধ কারণ এই মানসিক লক্ষণগুলিই রোগী স্বাতন্ত্রীকরণের সহায়ক আর আমরাও সামগ্রিকভাবে রোগীর চিকিৎসা করি, রোগের নয়। রোগীর চিকিৎসা করি বলেই যদি কোন রোগীতে দেখা যায় যে, তার মৃত্যুভয় ও অস্থিরতা এমন পর্যায়ে যে সে একবার উঠে, একবার বসে, একবার কাঁদে, একবার আত্মীয়স্বজনকে ডাকিয়া পাঠায়, একবার ভগবানের নাম করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারকে পাইতে চায় তবে যে রোগেই সে ভুগুক না কেন—একোনাইট ন্যাপেলশাসই তার নির্বাচিত ওষুধ হবে কারণ ঐরূপ মানসিক লক্ষনগুলিই ঐ রোগীর স্বাতন্ত্রীকরণে সহায়ক।

রোগী চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগী স্বাতন্ত্রীকরণে অসাধারণ (uncommon ) বা অদ্ভূত ( peculiar) ব্যাপক লক্ষণগুলির গুরুত্ব অপরিসীম।আমাশয়ে ভুগছে এমন রোগীতে যদি দেখা যায় মলত্যাগের পরই ঠান্ডা জলের প্রবল পিপাসা, জলপানের পরই কম্প উপস্থিত হয় তবে ক্যাপ্সিকাম হবে আরোগ্যকারী ওষুধ তা যেকোন ধরণের আমাশয়ই হোক না কেন। আমরা তো আর রোগ ধরে চিকিৎসা করি না। কোন রোগীতে যদি দেখা যায় যে রোগীর প্রায়ই রাতে ঘুম ভাঙ্গে ও প্রচন্ড ক্ষিদে পায়—সোরিনাম হবে নির্বাচিত ওষুধ। একটি জ্বরের রোগী – রোজ বিকেল ৪টায় জ্বর আসে ১০৪ ০ফ্যাঃ পর্যন্ত উঠে রাত্রি ৮টার পর থেকে কমতে কমতে ১০টায় অল্প ঘাম দিয়ে ছেড়ে যায়। পিপাসা, মল মূত্র স্বাভাবিক। প্রবল জ্বরের সময়েও রোগীকে কি কষ্ট প্রশ্ন করলে বলে কোন কষ্ট নেই। লাইকোপোডিয়াম, সিড্রন প্রভৃতি ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ লক্ষণটির ভিত্তিতে আর্নিকা দিতেই রোগী আরোগ্য লাভ করে। আবার আর একটি জ্বরের রোগী যার জ্বরের লক্ষণ একই। তবে স্বাতন্ত্রীকরণের সহায়ক মানসিক লক্ষণটি নেই। কিন্তু জিহ্ববার উপর লাল লম্বা দাগ আছে। এক্ষেত্রে ভেরেট্রাম ভিরিডি দিতে রোগী আরোগ্য লাভ করে। দুইটি একই ধরণের জ্বরের রোগী কিন্তু স্বাতন্ত্রীকরণের লক্ষণ দুটি ক্ষেত্রে দুই রকম হওয়ায় নির্বাচিত ওষুধও ভিন্ন হল কারণ হোমিওপ্যাথি রোগের চিকিৎসা করে না, রোগীর চিকিৎসা করে। মূত্রথলীতে পাথর হয়েছে এবং আপাত দৃষ্টিতে লাইকোপোডিয়াম বলে মনে হচ্ছে এরকম একটি রোগীতে “গভীর রাতে দারুন পিপাসা পাওয়ার ফলে ঘুম ভেঙ্গে যায়”— এই লক্ষ্মণের উপর ভিত্তি করে মেডোরিনাম দেওয়ায় প্রস্রাবের সাথে তিনটি পাথর নির্গত হয়।

চিররোগের ক্ষেত্রে ওষুধ নির্বাচনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হল মায়াজম ভিত্তিক পদ্ধতি। ডাঃ ঘটকের একটি রোগী রক্তস্রাবহীন ক্ষয় রোগে ভুগছিলেন। লক্ষণ সাদৃশ্যে টিউবারকুলিনাম বভিনাম ও সালফার দিয়ে ব্যর্থ হন। রোগীর পিতার গনোরিয়া চাপা দেয়ার পর বাতে ভোগা ও পক্ষাঘাতে মৃত্যুর ইতিহাসের ভিত্তিতে মেডোরিনামের প্রয়োগে আরোগ্য হয়। এক্ষেত্রে রোগীর বংশগত ইতিহাস রোগী স্বাতন্ত্রীকরণের সহায়ক হল। এ ক্ষেত্রেও বুঝতে পারা গেল হোমিওপ্যাথিতে রোগীর চিকিৎসা হয় রোগের নয়। একটি শিশু (বয়স ২ মাস ২৭ দিন) প্রচন্ড উদরাময়ে আক্রান্ত হয়। প্রায় ৭ দিন ধরে দিনে ৮/১০ বার করে জলের ন্যায় পায়খানা করে। লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগে ফল হয় না। পরে জানা যায় শিশুটির পিতার ৮ বছর আগে মারাত্বক ক্ষয়রোগ (ফুস্ফুসে) হয়েছিল—টিউবারকুলিনাম বভিনাম প্রয়োগে শিশুটি আরোগ্য লাভ করে।

রোগসৃষ্টির সম্ভবপর উত্তেজক ও পরিপোষক কারণও ঔষধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। একটি সায়াটিকা রোগীকে লক্ষণ ভিত্তিতে পালসাটিলা ও লিডাম দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর অনুসন্ধানে জানা যায় যে তার স্ত্রী প্রায় পাঁচ বছর আগে অন্য এক পুরুষের সাথে চলে যায় এবং এরপর থেকেই সায়াটিকায় ভুগছে। ইগ্নেসিয়া রোগীটিকে আরোগ্য করে।এর থেকে বুঝতে পারা গেল আমরা সায়াটিকার চিকিৎসা করিনি, সায়াটিকা রোগীটির চিকিৎসা করেছি স্বাতন্ত্রীকরণের মাধ্যমে। একটি ৬ বছরের ছেলের ভীষণ ধরণের খিচুনি (convulsion) হয়। জানা যায় সে মাতৃগর্ভে থাকাকালীন মা অস্বাভাবিক ভয় পায়—ওপিয়াম দেওয়ায় ছেলেটি আরোগ্য হয়। বুঝতে অসুবিধা নেই যে হোমিওপ্যাথিতে রোগের নয়, রোগীর চিকিৎসাই করা হয়।

অনেক সময় অতীত রোগের ঘটনা ওষুধ নির্বাচনে সহায়ক হয়। যেমন—ছেলেবেলায় হুপিংকাশি হয়েছিল এইরূপ একটি ব্রঙ্কিয়াল আ্জমা রোগীতে পারটুসিন দেওয়ায় রোগী আরোগ্যলাভ করে। অস্টিও-আর্থ্রাইটিস এর একটি রোগীরও শৈশবে হুপিংকাশি হয় এবং তখন থেকেই অস্টিও-আর্থ্রাইটিস-এর শুরু—তৎকালীন হুপিংকাশির লক্ষনের ভিত্তিতে ড্রসেরা দিতে বর্তমান অস্টিও-আরথ্রাইটিস সারে। একটি ছেলের নাকের পলিপাসে ছেলেবেলায় হামভোগের ইতিহাস ও হামের পর থেকে পলিপাস শুরু— এই ইতিহাসের ভিত্তিতে মর্বিলিনাম দেওয়ায় পলিপাস সেরে যায়। পরিষ্কার বোঝা গেল আমরা পলিপাস ধরে চিকিৎসা করিনি, পলিপাস রোগীর অতীত রোগের ইতিহাসের উপর নির্ভর করে ঔষধ নির্বাচন করেছি এবং তাতেই বর্তমান পলিপাস সেরে গেছে। অর্থাৎ ঔষধ নির্বাচনের সময় সামগ্রিকভাবে রোগীর চিন্তা করেছি, শুধু পলিপাসের বা রোগের চিন্তা করিনি। কারণ রোগ নয়, রোগীর চিকিৎসা করাই হলো হোমিওপ্যাথির মূলমন্ত্র।

রোগী চিকিৎসায় শুধু ঔষধ নির্বাচন করলেই হবে না । প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রভাবে চিন্তা করতে হবে তার পথ্য, স্নান, জীবনধারা, বিশ্রাম, ব্যায়াম, স্বাস্থ্য সম্পর্কীয় অন্যান্য বিষয়গুলি নিয়েও।

In the homoeopathic system of medicine, the law of Similia is the solid basis of not only selecting the curative remedy but also the most appropriate regimen (diet, bath, rest, exercise, mode of living and other hygienic conditions of the patient) for the particular case in hand।

অপুষ্টিতে ভুগছে এরূপ রোগীর বেলায় দেখতে হবে এই অপুষ্টির কারণটি কি? শরীরে খাদ্যের অভাবটি বেশীমাত্রায় ক্ষয় বা নষ্টের জন্য, না প্রয়োজনের তুলনায় অতি অল্প খাদ্য খাওয়ার জন্য। ক্ষয় বা নষ্ট যদি কারণ হয় তবে লক্ষণসমষ্টির ভিত্তিতে রোগীর চিকিৎসা করে তা বন্ধ করতে হবে এবং তাহলে অপুষ্টির লক্ষণগুলি আস্তে আস্তে চলে যাবে। আর যদি প্রয়োজনের চেয়ে কম খাদ্য পাওয়ার ফলে অপুষ্টির লক্ষণ আসে তবে সেই সব খাদ্য রোগীকে অতিসত্বর দেওয়া দরকার। তবে সে ক্ষেত্রে রোগীর পছন্দ, অপছন্দ, সহ্য এবং অসহ্য খাদ্য ভালোভাবে যাচাই করে খাদ্য দিতে হবে। কারণ আমরা রোগীর চিকিৎসা করি রোগের নয়। সব উচ্চ রক্ত চাপের রোগীতে রুটিনমাফিক লবন বন্ধ অথবা সব ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগীতে রুটিন মাফিক মিষ্টি বন্ধ নিশ্চয়ই যুক্তি যুক্ত নয়। যে রোগীর লবনের প্রতি ভীষণ আসক্তি অথবা যে রোগী মিষ্টি ভীষণ ভালোবাসে তাকে লবন অথবা মিষ্টি হঠাৎ একেবারে বন্ধ করলে রোগী আরোগ্যের পথে নাও যেতে পারে।

সব টক্সিমিয়ার (Toxemia) রোগীকে প্রচুর পরিমানে জল খাওয়ানো, প্রচন্ড জ্বরের রোগীকে বরফ চাপানো, বাতের রোগীকে গরম সেঁক দেওয়া রুটিন মাফিক উচিত নয়। কারণ টক্সিমিয়ার রোগীটি পিপাসাশূন্য হতে পারে অথবা জলপানের প্রতি তাররুচি থাকতে পারে। সেরূপ জ্বরের রোগীটি শীতকাতর হলে তাকে বরফ চাপানো বিজ্ঞান সম্মত হবে না। অথবা তাকে ঠান্ডা জলে স্নান করানো উচিত হবে না। আবার বাতের কোন রোগীর যদি গরমে বৃদ্ধি ঘটে তাকে গরম সেঁক দেয়া উচিত নয়। অর্থাৎরোগীর পছন্দ, অপছন্দ এবং হ্রাস বৃদ্ধিকে উপেক্ষা করে যদি রুটিন মাফিক অবৈজ্ঞানিকভাবে এসব প্রয়োগ করা হয় তবে আরোগ্যের কাজে এসব বাধাস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। শোথ ( Dropsy) রোগীতে জলপান অনেক কমিয়ে আনা দরকার কিন্তু রোগীটির যদি অত্যধিক জলপিপাসা থাকে তবে রুটিন মাফিক জলপান অনেক কমালে রোগীর ক্ষতি হবে। যে কোন রোগীর পথ্য ঠিক করার সময়েও সেই নির্দিষ্ট রোগিটির পছন্দ, অপছন্দ, সহ্য, অসহ্য ইত্যাদি ভালভাবে যাচাই করে তবে তার পথ্য ঠিক করা উচিত কারণ মনে রাখতে হবে আমরা রোগীর চিকিৎসা করি রোগের নয়। নিরামিষাশী রোগীকে মাছ, মাংস খেতে বলা, গোঁড়া হিন্দুকে গোমাংস খাওয়ার উপদেশ দেওয়া আর যাই হোক বিজ্ঞান সম্মত নয়। যে সব রোগীর ধূমপান করা, চা পান করা, মদ খাওয়ার অথবা আফিমের নেশা অত্যধিক তাদের হঠাৎ কঠোর ভাবে নেশা বন্ধ করলে আরোগ্যের কাজে তা বাধা সৃষ্টি করবে। তাদের নেশা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার উপদেশ দেয়াই যুক্তি যুক্ত। হ্যাঁ, তবে যদি কোন নেশা সরাসরি রোগীর রোগের কারণ হয় অথবা রোগীর অবস্থায় মারাত্মক অবনতি ঘটায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই নেশা পুরোপুরি বন্ধ করাতেই হবে। রোগীর ঘন ঘন চা পান, ফ্যারেঞ্জাইটিস রোগীর অত্যধিক ধূমপান অথবা যকৃতের সিরোসিস (cirrhosis) রোগীর মদ্যপান নিশ্চয়ই ক্ষতিকারক। সে সব ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে এগুলি বন্ধ করাতেই হবে।

পরিশেষে একটা মজার গল্প বলে আমার লেখা শেষ করি। অনেক সময় দেখা যায় রোগী এমন কিছু চায় যা সে সহ্য করতে পারে না। বিসদৃশ বিধানের চিকিৎসক রোগীকে ঐসব কিছুতেই দেবেন না। কিন্তু রোগীর ঐ চাওয়া আর সহ্য না হওয়াই সদৃশবিধানের চিকিৎসককে, ওষুধ নির্বাচনের কাজে সাহায্য করে। যেমন ধরুন একটি রোগী ঠান্ডা মেঝেতে গড়াগড়ি দিতে অথবা ঠান্ডা জলে স্নান করতে ভীষণ ভালবাসে কিন্তু ঠান্ডা তার সহ্য হয় না। এই লক্ষণটি সালফার-কে ইঙ্গিত করে। এরূপ রোগীতে সালফার প্রয়োগ করলে (অবশ্যই যদি অন্যান্য লক্ষণ তা ইঙ্গিত করে) রোগীর ঠান্ডার প্রতি অত্যধিক আসক্তিও কমে আবার ঠান্ডা সহ্যও হয়। মিষ্টি প্রিয় রোগীর মিষ্টি সহ্য না হলে আর্জেন্টাম নাইট, ক্যাক্লেরিয়া কার্ব অথবা সালফারের কথা আমরা চিন্তা করতে পারি, লবন প্রিয় রোগীর লবন সহ্য না হলে তেমন আমরা ফসফরাস , কার্বোভেজ বা ক্যাল্কেরিয়া কার্বের কথা ভাবতে পারি। তাহলে দেখুন, হোমিওপ্যথিতে সামগ্রিকভাবে রোগীর চিকিৎসা করা হয়, রোগের নয়—একথা কত সত্য।

Gokul Burman

11/04/2023

আমি বৃথা জন্মগ্রহণ করি নাই।

-স্যামুয়েল হানেমান

11/04/2023

মেডিক্যাল শব্দ কোষ,যা প্রেসক্রিপশনে ব্যবহৃত হয়।
▪LAP = Lower Abdominal Pain. = তলপেটে ব্যথা।
▪LBP = Low Back Pain.= মাজাব্যথা।
▪RA = Rheumatic Arthritis.= বাতজনিত সন্ধিপ্রদাহ।
▪OA = Osteo-arthritis.= অস্থি এবং অস্থিসন্ধিমূলক প্রদাহ।
▪MI = Myocardial Infarction. = একপ্রকার হৃৎপিন্ডের রোগ।
▪DUB = Dysfunctional Uterine Bleeding. = জরায়ু থেকে একাধিকবার, দীর্ঘস্থায়ী, অনিয়মিত রক্তক্ষরন।
▪ PCOS = Poly-Cystic Ovarian Syndrome.=পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম।
▪ DM = Diabetes Mellitus.= ডায়াবেটিস মেলিটাস।
▪ NIDDM = Non- Insulin Dependent Diabetes Mellitus.= ইনসুলিন অনির্ভর ডায়াবেটিস মেলিটাস।
▪ IDDM = Insulin Dependent Diabetes Mellitus.= ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিস মেলিটাস।
▪ CKD = Chronic Kidney Disease.= ক্রনিক কিডনী ডিজিজ।
▪ LVeF = Left Ventricle Failure.= বাম নিলয়ের কার্যকারীতার অভাব।
▪ COPD = Chronic Obstructive Pulmonary Disease.= ফুসফুসের পুরাতন প্রকৃতির প্রতিবন্ধকতামূলক রোগ।
▪ RTI = Respiratory Tract Infection.= শ্বাসতন্ত্রে সংক্রামসজনিত প্রদাহ।
▪ RTA = Road Trafic Accident. = সড়ক দূর্ঘটনা।
▪ UTI = Urinary Tract Infection.= মূত্রনালীর সংক্রামনজনিত রোগ।
▪ GBS = Guillain-Barre Syndrome.= গুলিয়েন-বেরী সিনড্রোম, একধরনের স্নায়ু রোগ।
▪ IBS = Irritable Bowel Syndrome.= অন্ত্রের বিশেষ ধরনের এক রোগ।
▪ IBD = Irritable Bowel Disease. / Inflammatory Bowel Disease.= অন্ত্রের বিশেষ ধরনের এক রোগ।
▪ DU = Duodenal Ulcer.= ডুওডেনামের ক্ষত।
▪ GU = Gastric Ulcer.= পাকস্থলীর ক্ষত।
▪ GU = Ge***al Ulcer.= জননাঙ্গের ক্ষত।
▪ ARI = Acute Respiratory Infection.= সদ্য শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ।
▪ HTN = Hypertension.= উচ্চরক্তচাপ।
▪ VD = Venereal Disease.= যৌনরোগ।
▪ VD = Village Doctor.= পল্লী চিকিৎসক।
▪ STD = Sexually Transmitted Disease.= যৌন সংক্রামক রোগ।
▪ NS = Nephrotic Syndrome.= কিডনী সংক্রান্ত রোগ।
▪ ALL = Acute Lymphocytic Leukemia.= এক ধরনের রক্তরোগ বিশেষ।
▪ AML = Acute Myelogenous Leukemia.= এক ধরনের রক্তরোগ বিশেষ।
▪ CML = Chronic Myeloid Leukemia = এক ধরনের রক্তরোগ বিশেষ।
▪ AAA = Abdominal Aortic Aneurysm. = পেটে অবস্থিত মহাধমনী বেলুনের মতো ফুলে যাওয়া।
▪ TAA = Thoracic Aortic Aneurysm.= বক্ষ গহ্বরে অবস্থিত মহাধমনী বেলুনের মতো ফুলে যাওয়া।
▪ PUO = Pyrexia of Unknown Origin.= যে জ্বরের কারন নির্য়য় করা যায় না।
▪ GERD = Gastro-esophageal Reflex Disease.= পাকস্থলী থেকে অন্ননালীর দিকে খাদ্যকনার রিফ্লেক্স জনিত উপসর্গ।
▪ NSAID = Non-Steroidal Anti-Inflammatory Drugs. = এ্যালোপ্যাথিতে ব্যবহৃত বেদনানাশক ঔষধ।
▪ IHD = Ischemic Heart Disease. = হৃৎপিন্ডে “ইস্কেমিয়া”জনিত রোগ।
▪ P/V = Per Vaginal ....= যোনীপথ, যোনীপথে বা যোনীপথ হতে ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
▪ P/R = Per Re**al ....= মলদ্বার, মলদ্বারে, মলদ্বার হতে ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
▪ IUCD অথবা শুধু CD = Intra-uterine Contraceptive Device অথবা শুধু Contraceptive Device.= জরায়ুর ভেতরে প্রবিষ্ট জন্মবিরতীকরন যন্ত্র বিশেষ। যেমন “কপার-টি।”
▪ A.N = Anxiety Neurosis.= একধরনের মানসিক রোগ। অকারন উদ্বিঘ্নতা।
▪ E.D = Erectile Dysfunction = লিঙ্গোথ্বানজনিত গোলযোগ।
▪ PME = Premature Ejaculation.= সময়ের পূর্বে বীর্যপতন।শীঘ্রপতন।
▪ GIT = Gastro-intestinal Tract.= পরিপাক নালী।
▪ MR = Menstruation Regulation.= ঋতুস্রাব নিয়মিতকরনের জন্য ছোট একধরনের সার্জারী। সাধারনত: ভ্রুন নষ্ট করার পদ্ধতি।
▪ D & C = Dilatation & Curettage.= একধরনের স্ত্রী প্রজননতন্ত্রের সার্জারী।এতে জরায়ু মুখ সম্প্রোসারিত করে জরায়ুর অভ্যান্তর চাঁছা হয়।
▪ VSD = Ventricular Septal Defect.= হৃৎপিন্ডের ব্যবধায়ক পেশীর ক্রুটি।
▪ DNS = Deviation Nasal Septum. = নাকের মাঝখানের নরম অস্থি বাঁকা।
Courtesy-Helal Uddin Ahmed

Address

Islampur
Jamalpur
2020

Telephone

+8801727190310

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Russell Homeo Care posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Russell Homeo Care:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram