21/11/2025
নিউরোডেভেলোপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য স্পেশাল স্কুল অতীব প্রয়োজনীয় একটি বিষয় কারণ এই স্কুলগুলো একটি বিশেষায়িত এবং সহায়ক পরিবেশ সরবরাহ করে যা তাদের চাহিদা পূরণের জন্য ডিজাইন করা হয়। এই স্কুলগুলিতে সাধারণত কাঠামোগত রুটিন, চাক্ষুষ সহায়তা এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা থাকেন যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিশেষ চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে এবং সমাধান করতে পারেন।
অনেক অভিভাবক বা পরিবারের সদস্য মনে করেন বাচ্চা নরমাল স্কুলে থাকলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে এবং বাচ্চার জন্য চ্যালেঞ্জিং বিষয় গুলো আদৌ বুঝতে চেস্টা করেন না। চলুন আজকে স্পেশাল বা বিশেষ স্কুলের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে জেনে নেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
*বিশেষায়িত শিক্ষা:* এই স্কুলগুলো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শেখার পদ্ধতি এবং প্রয়োজনের উপর অধিক মনোযোগ দেয়। এখানে তাদের জন্য উপযোগী শিক্ষাদান পদ্ধতি, যেমন চাক্ষুষ উপকরণ (visual aids) এবং নির্দিষ্ট নির্দেশাবলী ব্যবহার করা হয়।
*সামাজিক ও আবেগিক সহায়তা:* এই স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষিত কর্মীরা শিশুদের সামাজিক দক্ষতা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল শেখাতে সাহায্য করেন। এটি তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে এবং ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
*কাঠামোগত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবেশ:* একটি নিয়মিত স্কুলের তুলনায়, বিশেষ স্কুলগুলো একটি কাঠামোগত এবং স্থিতিশীল পরিবেশ প্রদান করে। এই ধরনের পরিবেশ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক এবং কম চাপযুক্ত হয়।
*ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষা পরিকল্পনা:* প্রতিটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রয়োজন ভিন্ন, তাই স্পেশাল স্কুলগুলোতে প্রতিটি শিশুর জন্য ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। এটি তাদের নিজস্ব গতিতে শিখতে এবং তাদের মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে সহায়তা করে।
*বিশেষায়িত সহায়তা:* এই স্কুলগুলোতে সংবেদনশীলতা সংক্রান্ত সরঞ্জাম, শান্ত করার কৌশল (calming strategies) এবং অন্যান্য বিশেষ সাহায্যমূলক সরঞ্জাম উপলব্ধ থাকে যা শিশুদের দৈনন্দিন জীবনে সহায়তা করে।
*বিশেষ শিশুদের অক্ষমতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা:* অনেক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু সাধারণ স্কুলের পরিবেশকে সহ্য করতে অক্ষম হতে পারে, যার ফলে তাদের স্কুলে যেতে অনীহা দেখা দিতে পারে। স্পেশাল স্কুলগুলো এই ধরনের সমস্যা সমাধান করে তাদের শিক্ষাজীবন সহজ করতে পারে।
শুধুমাত্র স্কুলে দিলেই আপনার বাচ্চা সুস্থ্য হয়ে উঠবে ব্যাপারটি এমন নয়। যে বিষয়টি উপলব্ধি করা ও লক্ষণীয় তা হলো আপনার বাচ্চার সক্ষমতা অনুযায়ী প্রয়োজন একটি সুন্দর কর্মপরিকল্পনা যা তাকে দেরিতে হলেও সঠিক ভাবে সামনে এগুতে সহায়তা করবে এবং একাডেমিক দক্ষতার উদ্দীপনা তৈরি ও দৈনন্দিন কর্মকান্ডে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথকে অধিকতর সহজ করে তুলবে। একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর সাথে আরেক জন শিশুর তুলনা করা কখনোই সমীচিন নয় এতে করে পারিবারিক অস্থিরতা বেড়ে যাওয়া, মানসিক চাপ তৈরি হওয়া এবং পরিশেষে শিশুর পারফরম্যান্স কমে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন
সিনিয়র কনসালটেন্ট, অকুপেশনাল থেরাপি
জিআরটিসি