13/11/2025
পরকীয়া: এক নিষিদ্ধ নেশা, যার শেষ শুধু শূন্যতা:
পরকীয়া—শব্দটা শুনলেই একটা গোপন উত্তেজনা, একটা নিষিদ্ধ আকর্ষণ কাজ করে।
অন্যের স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক... বাইরে থেকে এই বিষয়টা অনেকের কাছে রোমাঞ্চকর মনে হয়।
কিন্তু ভেতরে কী আছে জানেন? অন্ধকার, মিথ্যা, প্রতারণা আর আত্মার ক্ষয়।
আমরা সবাই জানি, পরকীয়া কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। এটা এক ধরণের চরিত্রের রোগ—ধীরে ধীরে মানুষের ভেতরটা পচিয়ে দেয়।
এই রোগের জন্য সমাজ সবসময় তৃতীয় কাউকে দোষ দেয়—
“ওই মেয়েটা ঘর ভাঙিয়েছে”, “ওই ছেলেটা পরের বউকে ফুসলিয়েছে।”
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন—যে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ, সেটা বাইরে থেকে কেউ খুলতে পারে?
চোর ঘরে ঢোকে তখনই, যখন ঘরের মালিক নিজেই দরজা খুলে দেয়।
তাহলে আসল দোষী কে?
যে সুযোগ নিয়েছে, না যে সুযোগ দিয়েছে?
যে মানুষ নিজের জীবনসঙ্গীকে ঠকাতে পারে, সে আসলে প্রথমে নিজের বিবেককেই হত্যা করে।
আজ সে অন্য কারো সঙ্গে প্রতারণা করছে, কাল ঠিক একইভাবে আপনাকেও ঠকাবে—
কারণ প্রতারণা একবার রক্তে ঢুকে গেলে, সেটা চরিত্রের অংশ হয়ে যায়।
আসলে পরকীয়ার উদ্দেশ্য কী?
সত্যি বলতে কি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সম্পর্কের পেছনে থাকে শরীরের আকর্ষণ।
নতুনত্বের নেশা, নিষিদ্ধ সম্পর্কের উত্তেজনা—এগুলোই চালিকাশক্তি।
অনেক পুরুষের কাছে এটা “দায়িত্বহীন আনন্দ”,
আবার অনেক নারীর কাছে এটা “একঘেয়ে জীবনে একটু রোমাঞ্চ”।
কিন্তু এই সম্পর্কের কোনো ভিত্তি নেই।
যেখানে মিথ্যা দিয়ে শুরু, সেখানে সত্যিকারের ভালোবাসা টেকে না।
এটা হয় সাময়িক উষ্ণতা, তারপর আসে ঠান্ডা নিরবতা।
যখন আপনি জানতে পারেন—সে আসলে কখনোই আপনাকে নিজের জীবনে চায়নি,
বরং ব্যবহার করেছে নিজের স্বার্থে—তখন ভেতরটা হু হু করে ভেঙে পড়ে।
যে আগুনে আপনি উষ্ণতা খুঁজেছিলেন, সেই আগুনই একসময় সব পুড়িয়ে দেয়।
দোষ কার?
এই প্রশ্নটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দোষ একা কারও নয়—তিনজনই ভাগাভাগি করে নেয়।
1️⃣ প্রথম দোষী সেই প্রতারক মানুষ, যে নিজের সঙ্গীকে ঠকিয়েছে।
2️⃣ দ্বিতীয় দোষী সেই ব্যক্তি, যে জেনেশুনে এই সম্পর্কে জড়িয়েছে।
3️⃣ আর তৃতীয় দোষী সমাজ, যে ভাঙা সম্পর্ক ঠিক করার বদলে দোষারোপের খেলায় মেতে থাকে।
শেষ পরিণতি
পরকীয়ার শেষ কখনো সুখে হয় না।
আজ যাকে ভালোবেসে আপনি নিজের সময়, আত্মসম্মান আর শান্তি হারাচ্ছেন,
কাল সেই মানুষটাই হয়তো ফিরে যাবে নিজের নিরাপদ সংসারে।
তখন আপনি থাকবেন একা—
হাতে থাকবে শুধু লজ্জা, কষ্ট আর একরাশ আফসোস।
সমাজ তখন আপনাকে আঙুল তুলবে, গালমন্দ করবে,
আর যে আপনাকে ব্যবহার করেছে, সে দিব্যি ভালো মানুষের মতো বাঁচবে।
ভাবার সময় এখনই
অন্যের ঘর ভাঙিয়ে নিজের সুখ গড়া যায় না।
যে মানুষ নিজের নয়, সে কখনোই আপনার হতে পারে না।
পরকীয়া হয়তো কিছু সময়ের জন্য আনন্দ দেয়,
কিন্তু শেষমেশ সেটা রেখে যায় শুধু বেদনাই আর লজ্জা।
তাই ভেবে দেখুন—
আজ যে আগুনে আপনি নিজের মন গরম করছেন,
কাল সেই আগুনেই আপনার স্বপ্ন, সম্মান, আর শান্তি পুড়ে ছাই হবে না তো?
উত্তরটা আপনি জানেন—
শুধু আয়নায় তাকিয়ে একবার নিজের চোখে চোখ রাখুন।
゚