29/10/2025
রোগমুক্তি মহান আল্লাহ পাকের নিকট, কিন্তু রোগের চিকিৎসা ও সেবা ডাক্তার সাহেবের পরামর্শে।
আধুনিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসালয়, আদমদীঘি, বগুড়া।
প্রয়োজনে: 01705-714171 .01684-908566.
➡️পাইলস কি?
➡️পাইলস বা অর্শ হলো মলদ্বারে এক ধরনের রোগ যেখানে রক্তনালীগুলো বড় হয়ে গিয়ে ভাসকুলার কুশন তৈরি করে। শিশুসহ যে কোন বয়সের লোকই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। অর্শ বা পাইলসঃ কি, কেন, কিভাবে বুঝব, কি করব, কি খাব, চিকিৎসা কি?
➡️পাইলস কত প্রকার ও কি কি?
➡️পাইলস দুই প্রকার। ১. রক্ত অর্শ(Piles because of blood);; ২. বায়ুজনিত অর্শ (Piles because of gass or Air);;
রক্ত অর্শ : রক্ত অর্শের ক্ষেত্রে পায়খানার সঙ্গে রক্ত, হলদে কিংবা লালচে পানির মতো পদার্থ বের হয়।
বায়ুজনিত অর্শ : এক্ষেত্রে পায়খানার সঙ্গে রক্ত কিংবা লালচে বা হলদে পানি দেখা যায় না; কিন্তু মলদ্বারে চুলকানি, অসহনীয় ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকর কারণে মলদ্বারে ফোলা থাকে।
➡️অর্শ বা পাইলস কেন হয় (অর্শের কারণসমূহ):
অর্শের সঠিক কারণ জানা না গেলেও নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্শ হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেঃ
১. দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
২. শাকসব্জী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম খাওয়া
৩. শরীরের অতিরিক্ত ওজন
৪. গর্ভাবস্থা
৫. লিভার সিরোসিস
৬. মল ত্যাগে বেশী চাপ দেয়া
৭. অতিরিক্ত মাত্রায় লেকজেটিভ (মল নরমকারক ওষুধ)ব্যবহার করা বা এনেমা (শক্ত মল বের করার জন্য বিশেষ তরল মিশ্রণ ব্যবহার করা) গ্রহণ করা
৮. টয়লেটে বেশী সময় ব্যয় করা
৯. বৃদ্ধ বয়স
১০. পরিবারে কারও পাইলস থাকা
১১. ভার উত্তোলন, দীর্ঘ সময় বসে থাকা ইত্যাদি।
➡️ অর্শ বা পাইলস কিভাবে বুঝব (অর্শের লক্ষণসমূহ):
i) মলদ্বারের অভ্যন্তরে হলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারেঃ ১. পায়খানার সময় ব্যথাহীন রক্তপাত হওয়া
২. মলদ্বারের ফোলা বাইরে বের হয়ে আসতে পারে, নাও পারে। যদি বের হয় তবে তা নিজেই ভেতরে চলে যায় অথবা হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া যায়। কখনও কখনও এমনও হতে পারে যে, বাইরে বের হওয়ার পর তা আর ভেতরে প্রবেশ করানো যায় না বা ভেতরে প্রবেশ করানো গেলেও তা আবার বের হয়ে আসে
৩. মলদ্বারে জ্বালাপোড়া, যন্ত্রণা বা চুলকানি হওয়া
৪. কোন কোন ক্ষেত্রে মলদ্বারে ব্যথাও হতে পারে।
ii) মলদ্বারের বাইরে হলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারেঃ
১. মলদ্বারের বাইরে ফুলে যাওয়া যা হাত দিয়ে স্পর্শ ও অনুভব করা যায়
২. কখনও কখনও রক্তপাত বা মলদ্বারে ব্যথাও হতে পারে।
➡️পাইলস রোগে করণীয় কি?
১. কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং নিয়মিত মলত্যাগ করা
২. পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসব্জী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং পানি(প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস) পান করা
৩. সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা
৪. প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো
৫. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
৬. টয়লেটে অধিক সময় ব্যয় না করা
৭. সহজে হজম হয় এমন খাবার গ্রহণ করা
৮. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া লেকজেটিভ বেশী গ্রহণ না করা
৯. মল ত্যাগে বেশী চাপ না দেয়া
১০. দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া থাকলে তার চিকিৎসা নেয়া।
➡️পাইলসে কি কি খাওয়া উচিত?
➡️শাকসবজি, ফলমূল, সব ধরণের ডাল, সালাদ, দধি, পনির, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লেবু ও এ জাতীয় টক ফল, পাকা পেপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগীর মাংস, ভূসিযুক্ত (ঢেঁকি ছাঁটা) চাল ও আটা ইত্যাদি।
➡️পাইলসে কোন কোন খাবার বর্জনীয়
➡️খোসাহীন শস্য, গরু, খাসি ও অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার, মসৃণ চাল, কলে ছাঁটা আটা, ময়দা, চা, কফি, চীজ, মাখন, চকোলেট, আইসক্রীম, কোমল পানীয়, সব ধরণের ভাজা খাবার যেমনঃ পরোটা, লুচি, চিপস ইত্যাদি।
➡️কি কি কারনে পাইলস হয়?
➡️পাইলস হওয়ার পিছনে যেসব কারণকে সন্দেহ করা হয় সেগুলো হলো- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া , স্থূলতা, বেশি সময় বসে থাকা, দীর্ঘসময় টয়লেটে বসে থাকা, হেমোরয়েড শিরায় কপাটিকার অনুপস্থিতি ও বার্ধক্য , পুষ্টিকর খাবার খাওয়ায় ঘাটতি, ব্যায়াম না করা , পেটের ভিতরে চাপ বৃদ্ধি , জন্মগত, গর্ভাবস্থায় জরায়ু বড় হতে থাকে।
কোলনের শিরায় চাপ পড়ে বলে শিরা স্ফীত হয়। যে কারণে পাইলস হয়। প্রথম দিকে ওষুধ ও সাবধানতা মেনে চললে এই রোগ সেরে যায়। তবে, জটিল আকার ধারণ করলে অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে।
➡️পাইলস এর লক্ষন সমুহ কি কি?
➡️লক্ষণ : পাইলস হলে সাধারণত যে যে লক্ষণ দেখে বোঝা যায়-
ক) মলের সাথে রক্ত পড়া পাইলসের প্রধান লক্ষণ। এক্ষেত্রে ফেলে না রেখে যখনই দেখবেন আপনার মলের সাথে রক্ত পড়ছে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
খ) মলদ্ধারে ব্যথা হওয়া। ফলে, বসতে অসুবিধা হওয়া।
গ) মলদ্বারের চারপাশে ফুলে যায় ও চুলকানি হয়।
ঘ) পাইলস এ আক্রান্ত হলে মলদ্বারের রক্তনালীতে চাপ বৃদ্ধি পায় বলে মল নির্গমনের সময় ব্যথা হয়।
➡️ সকল প্রকার রোগের জন্য লক্ষণ অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করুন, সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন, শুভ কামনা রইলো সবার জন্য ধন্যবাদ।