https://www.facebook.com/416347774906026/

SuperMom Monalisa, Rajshahi (2025)

05/11/2025

গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই নাক ডাকার (Snoring) সমস্যা দেখা দেয়। এটি সাধারণত দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে বেশি হয়। কারণ, গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তনের ফলে নাকের ভেতরের টিস্যুগুলো ফুলে যায়, ফলে শ্বাসনালী সংকুচিত হয় এবং ঘুমের সময় নাক ডাকার শব্দ তৈরি হয়।

সম্ভাব্য কারণসমূহ:

- হরমোনের প্রভাবে নাক বন্ধ থাকা বা নাক ফোলা।
- ওজন বৃদ্ধি ও গলার চারপাশে অতিরিক্ত চাপ।
- ঘুমের সময় শোবার ভঙ্গি ঠিক না থাকা।
- উচ্চ রক্তচাপ বা গর্ভকালীন প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া।

লক্ষণ:

- ঘুমের সময় জোরে নাক ডাকা।
- বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া।
- সকালে ক্লান্তি বা মাথা ব্যথা।

প্রতিকার:

- পাশ ফিরে (বিশেষ করে বাম পাশে) ঘুমান।
- নাক পরিষ্কার রাখুন, প্রয়োজনে ন্যাজাল স্প্রে ব্যবহার করুন (ডাক্তারের পরামর্শে)।
- ঘুমানোর আগে হালকা হাঁটুন ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং বালিশ একটু উঁচু করে ঘুমান।

👉 মনে রাখবেন, যদি নাক ডাকার সঙ্গে শ্বাস বন্ধ হওয়া বা প্রচণ্ড ক্লান্তি দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

04/11/2025

"বাবা"আমি আর মা' সারারাত জেগে থাকি ।।
তুমি কেন ঘুমাও?

:

:

03/11/2025

প্রায় ৭০ ভাগ গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথায় ভোগেন। তাই জেনে নিন প্রেগনেন্সিতে কোমর ব্যথার কারণ ও ব্যথা কমানোর উপায়:

গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা (Pregnancy Back Pain) এমন একটি সাধারণ সমস্যা যা প্রায় ৭০% গর্ভবতী মায়ের মধ্যে দেখা যায়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে (second and third trimester) এটি বেশি হয়। এর মূল কারণ হলো — শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তন, বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি, ও মায়ের শরীরের ভঙ্গি বা posture পরিবর্তন।

কেন হয় কোমর ব্যথা? (Medical Reasons)
1. হরমোনাল পরিবর্তন:
গর্ভাবস্থায় Relaxin নামে একটি হরমোন নিঃসৃত হয় যা পেলভিক জয়েন্ট ও লিগামেন্ট শিথিল করে। ফলে পিঠ ও কোমরের পেশি চাপ অনুভব করে।

2. ওজন বৃদ্ধি:
শিশুর ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ভারসাম্য (center of gravity) সামনের দিকে চলে আসে। এতে মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

3. শরীরের ভঙ্গির পরিবর্তন:
পেট বড় হওয়ায় মা অনিচ্ছাকৃতভাবে পিঠ বাঁকিয়ে হাঁটেন বা বসেন, যা ব্যথা বাড়ায়।

4. মানসিক চাপ ও ক্লান্তি:
ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত মানসিক চাপও মাংসপেশীতে টান সৃষ্টি করে, যা কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।

কোমর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া ও মেডিকেল টিপসঃ

🪷 ১. সঠিক ভঙ্গিতে বসা ও ঘুমানো

চেয়ারে বসলে পিঠের পেছনে ছোট বালিশ দিন।

সোজা হয়ে বসুন এবং পা দুটো মাটিতে রাখুন।

ঘুমানোর সময় বাম পাশ ঘেঁষে শোওয়া সবচেয়ে ভালো (Left lateral position)।

হাঁটুর মাঝে ছোট বালিশ রাখলে চাপ কমে।

২. হালকা ব্যায়াম ও প্রেনাটাল যোগা

গাইনোকলজিস্ট অনুমতি পেলে Prenatal Yoga ও Pelvic Tilt ব্যায়াম করুন।

নিয়মিত হাঁটা (১৫–২০ মিনিট) কোমরের রক্তসঞ্চালন বাড়ায় ও ব্যথা কমায়।
(সূত্র: American Pregnancy Association & BabyCenter)

৩. হালকা গরম পানির সেঁক (Warm Compress)

দিনে ২–৩ বার ১০–১৫ মিনিট গরম পানির ব্যাগ দিয়ে কোমরে সেঁক দিন।

তবে গর্ভের নিচের অংশে অতিরিক্ত গরম প্রয়োগ করবেন না।

৪. সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করুন

Maternity Support Belt বা Pregnancy Back Support Belt পেট ও পিঠের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৫. ঘুমের গদি (Mattress) ঠিক করুন

খুব নরম বা খুব শক্ত গদি নয়, মাঝারি ফর্ম গদি বেছে নিন।
৬. চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনোই পেইনকিলার খাবেন না।

প্রয়োজনে ডাক্তার Paracetamol (acetaminophen) প্রেসক্রাইব করতে পারেন — এটি সাধারণত নিরাপদ ধরা হয়।

🚫 যেসব জিনিস এড়িয়ে চলবেন

ভারী জিনিস তোলা বা ঝুঁকে কাজ করা

লম্বা সময় দাঁড়িয়ে থাকা

হাই হিল জুতা পরা

নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ খাওয়া

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন যদি—
ব্যথা খুব তীব্র হয়।
ব্যথার সাথে জ্বর, রক্তপাত বা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থাকে।
পা অবশ হয়ে যায় বা নড়াচড়া করতে কষ্ট হয়।

প্রেগনেন্সিতে কোমর ব্যথা সাধারণ হলেও তা অবহেলা করা উচিত নয়। সঠিক ভঙ্গি, হালকা ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম ব্যথা অনেকাংশে কমাতে পারে। মনে রাখবেন—“একজন সুখী মা মানেই একটি সুস্থ শিশু” 💖

02/11/2025

সুস্থ ও বুদ্ধিমান সন্তান প্রসব সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ। তবে গর্ভাবস্থায় সঠিক খাবার গ্রহণ করলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত হয়। এখানে ১০টি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা গর্ভবতী মা ও তার অনাগত শিশুর জন্য প্রচন্ড উপকারী।
১. ডিম: ডিমে কোলিন থাকে, যা মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে।
২. চর্বিযুক্ত মাছ: চর্বিযুক্ত মাছ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে খুব উপকারী।
৩. সবুজ শাক-সবজি: পালংশাক ও ব্রোকলিতে ফলিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শিশুর নিউরাল টিউবের ত্রুটি কমাতে সাহায্য করে।
৪. অ্যাভোকাডো: এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, যা মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সহায়তা করে।
৫. বাদাম: বাদাম, আখরোট ও অন্যান্য বাদামে ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
৬. ফল: ব্লুবেরি এবং স্ট্রবেরিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শিশুর মস্তিষ্কের কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
৭. শস্য: ওটস, ব্রাউন রাইস ও শস্যজাতীয় খাবার শক্তি যোগায় এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সরবরাহ করে।
৮. ডাল: ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রন থাকে, যা রক্তাল্পতা রোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
৯. দই: দইয়ে ক্যালসিয়াম এবং প্রোবায়োটিক থাকে, যা হাড় গঠনে সাহায্য করে এবং মায়ের হজমশক্তি ভালো রাখে।
১০. মিষ্টি আলু: এতে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে, যা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এটি শিশুর চোখ ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য ভালো।
এই খাবারগুলো গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করলে মা ও শিশুর সুস্থ মস্তিষ্কের বিকাশ নিশ্চিত হয়।

30/10/2025

গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা: মা ও শিশুর উপর এর প্রভাব এবং প্রতিকার:

গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনে এক বিশেষ সময়। এই সময়টা যেমন আনন্দের, তেমনই এটি বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। যদিও গর্ভাবস্থাকে সাধারণত সুখের সময় হিসেবে দেখা হয়, তবুও অনেক নারী এই সময় বিষণ্ণতায় ভোগেন। গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা শুধু মায়ের জন্যই নয়, অনাগত শিশুর জন্যও বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা কী?
গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা হল এক ধরনের মেজাজ পরিবর্তনজনিত ব্যাধি, যা গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের ঠিক আগে বা পরে শুরু হতে পারে। এটি কেবল মন খারাপ থাকা নয়, বরং এর সাথে দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে এমন বিভিন্ন উপসর্গ জড়িত থাকে। এর লক্ষণগুলো প্রসবোত্তর বিষণ্ণতার (Postpartum Depression) মতোই হতে পারে, তবে এটি গর্ভাবস্থায় দেখা যায়।

লক্ষণসমূহ:
গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতার লক্ষণগুলো ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণ কিছু লক্ষণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
সবসময় মন খারাপ থাকা বা দুঃখ অনুভব করা।
আগে উপভোগ করতেন এমন কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
ঘুমের সমস্যা (খুব বেশি ঘুমানো বা একেবারেই ঘুম না হওয়া)।
ক্ষুধার পরিবর্তন (খুব বেশি খাওয়া বা একেবারেই খেতে না চাওয়া)।
ক্লান্ত অনুভব করা বা শক্তির অভাব।
নিজেকে মূল্যহীন মনে করা বা অপরাধবোধে ভোগা।
সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হওয়া।
অতিরিক্ত উদ্বেগ বা অস্থিরতা।

মা ও শিশুর উপর প্রভাব:

মায়ের উপর প্রভাব:
স্বাস্থ্যের অবনতি: বিষণ্ণতার কারণে মা নিজের যত্ন নিতে অবহেলা করতে পারেন, যেমন - পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া বা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে না চলা।
গর্ভকালীন জটিলতা: এটি উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের মতো গর্ভকালীন জটিলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
প্রসবোত্তর বিষণ্ণতার ঝুঁকি বৃদ্ধি: গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা থাকলে প্রসবের পর প্রসবোত্তর বিষণ্ণতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অকাল প্রসব: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, গুরুতর বিষণ্ণতা অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

শিশুর উপর প্রভাব:
কম ওজন নিয়ে জন্ম (Low Birth Weight): বিষণ্ণতায় ভোগা মায়েদের শিশুরা প্রায়শই কম ওজন নিয়ে জন্মায়।
অকাল জন্ম (Premature Birth): গবেষণায় দেখা গেছে, বিষণ্ণতা অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়।
শিশুর বিকাশ: গর্ভাবস্থায় মায়ের মানসিক চাপ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে।
আচরণগত সমস্যা: মায়ের বিষণ্ণতা শিশুর ভবিষ্যৎ আচরণগত বা আবেগগত সমস্যার কারণ হতে পারে। শৈশবে বা কৈশোরে শিশুদের মধ্যে বিষণ্ণতা বা উদ্বেগ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
মাতৃদুগ্ধ পানে অনীহা: বিষণ্ণতা মায়ের মাতৃদুগ্ধ পানে আগ্রহ কমিয়ে দিতে পারে, যা শিশুর পুষ্টিতে প্রভাব ফেলে।

প্রতিকার ও চিকিৎসা:
গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতার চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক চিকিৎসা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসে।
চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি আপনি বিষণ্ণতার কোনো লক্ষণ অনুভব করেন, তবে অবিলম্বে আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা মনোচিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
সুস্থ খাদ্যাভ্যাস: পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন।
শারীরিক কার্যকলাপ: হালকা ব্যায়াম, যেমন - হাঁটা বা যোগব্যায়াম, বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করে। তবে, ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করুন।
স্ট্রেস কমানো: মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা প্রকৃতির সাথে সময় কাটানো স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
সামাজিক সমর্থন: পরিবার ও বন্ধুদের সাথে কথা বলুন এবং তাদের সাহায্য নিন। আপনার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের যত্ন: নিজের জন্য সময় বের করুন। এমন কিছু করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়।

পরিবারের ভূমিকা:
পরিবারের সদস্য এবং সঙ্গীর উচিত গর্ভবতী মায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তাকে সব ধরনের মানসিক সমর্থন দেওয়া। তার কথা শোনা, তাকে বুঝতে চেষ্টা করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসকের কাছে যেতে উৎসাহিত করা খুবই জরুরি।

গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা একটি গুরুতর সমস্যা হলেও এটি নিরাময়যোগ্য। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে মা ও অনাগত শিশু উভয়েই সুস্থ থাকতে পারে। মনে রাখবেন, মানসিক স্বাস্থ্য শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আপনার অনুভূতিগুলিকে অবহেলা না করে একজন পেশাদারের সাহায্য নিন।

:

:

29/10/2025

প্রসবের সময় ব্যথা হবেই, কিন্তু জানেন কি — কিছু সহজ কৌশল মানলে এই ব্যথা অনেকটাই সহনীয় করা যায়!

👇 জেনে নিন বাচ্চা প্রসবের সময় ব্যথা কমানোর কিছু কার্যকর টিপসঃ

1️⃣ মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন — ভয় নয়, আত্মবিশ্বাস রাখুন “আমি পারব!” 💪
2️⃣ হালকা হাঁটা ও ব্যায়াম করুন (ডাক্তারের পরামর্শে) — এতে বাচ্চা নিচে নামতে সহজ হয়।
3️⃣ গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন — deep inhale, slow exhale… ব্যথা অনেকটা কম লাগে। 🧘‍♀️
4️⃣ গরম পানিতে স্নান বা সেঁক দিন — শরীর রিল্যাক্স হয়, ব্যথা সহনীয় হয়।
5️⃣ সঠিক পজিশনে থাকুন — পাশ ফিরে বা বসে থাকলে অনেক আরাম লাগে।
6️⃣ পর্যাপ্ত পানি ও হালকা খাবার খান — শরীর ক্লান্ত হয় না।
7️⃣ স্বামীর বা পরিবারের পাশে থাকা — মানসিক সমর্থনই আসল শক্তি ❤️

🩷 মনে রাখবেন, প্রসব বেদনা জীবনের এক পবিত্র মুহূর্তের অংশ।
শান্ত থাকুন, শরীরকে ও মনকে শান্ত রাখুন, নতুন জীবনের আগমনের প্রস্তুতি নিন।

#প্রসববেদনা #গর্ভকাল #নিরাপদপ্রসব

28/10/2025

ছেলে বাবু হলে প্রসব বেদনা বেশি হয় নাকি মেয়ে বাবু হলে? জানুন বাস্তব তথ্য ও চিকিৎসকদের মতামতঃ

গর্ভাবস্থার শেষ দিকে অনেক মায়েরা একটা প্রশ্ন নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকেন —
👉 “ছেলে বাচ্চা হলে কি প্রসব বেদনা বেশি হয়?”
👉 “মেয়ে বাচ্চা হলে কি প্রসব সহজ হয়?”

এই প্রশ্নটি শুধু কৌতূহলের নয়, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা নানা ধারণা ও লোকবিশ্বাসের সঙ্গে জড়িত। আজ চলুন দেখা যাক, বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আসল সত্যিটা কী।

🌼 প্রচলিত বিশ্বাস:
বড়দের মুখে প্রায়ই শোনা যায়—
“ছেলে বাচ্চা হলে নাকি প্রসব বেদনা বেশি হয়, কারণ ছেলেরা একটু ভারি হয়।”
আবার অনেকে বলেন— “মেয়ে হলে প্রসব সহজ হয়, কারণ মেয়ের ওজন কম থাকে।”

কিন্তু বাস্তবতা কি, সত্যিই এমন?
🧠 চিকিৎসাবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা:
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, প্রসব বেদনার তীব্রতা নির্ভর করে না শিশুর লিঙ্গের ওপর, বরং এটি নির্ভর করে নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয়ে —
1. শিশুর ওজন ও অবস্থান (Position):
যদি শিশুর মাথা সঠিকভাবে নিচের দিকে থাকে, তাহলে স্বাভাবিক প্রসব অনেক সহজ হয়।
কিন্তু যদি অবস্থান বাঁকা বা উল্টা হয়, তাহলে বেদনা কিছুটা বেশি হতে পারে।

2. মায়ের শরীরের গঠন ও পেলভিক স্ট্রাকচার:
কিছু মায়ের হাড়ের গঠন এমন যে শিশুটি সহজে জন্মনালিতে নেমে আসে, আবার কারো ক্ষেত্রে একটু সময় লাগে।

3. প্রসবের সময় জরায়ুর সংকোচনের ধরন (Contraction):
কারও জরায়ু খুব জোরে ও নিয়মিত সংকোচন হয়, ফলে বেদনা তীব্র হয়; আবার কারও তুলনায় হালকা হয়।

4. মানসিক অবস্থা ও প্রস্তুতি:
মানসিক চাপ বা ভয় থাকলে শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ব্যথা অনেক বেশি অনুভূত হয়।
তাই মানসিকভাবে প্রস্তুত ও শান্ত থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

👩‍⚕️ গবেষণার তথ্য অনুযায়ী:

🔹 কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ছেলে শিশুরা গড়ে কিছুটা বেশি ওজন নিয়ে জন্মায় (প্রায় ১০০-১৫০ গ্রাম বেশি)।
🔹 কিন্তু এই সামান্য পার্থক্য প্রসব বেদনার তীব্রতা বা সময়কে খুব বেশি প্রভাবিত করে না।
🔹 অর্থাৎ ছেলে না মেয়ে— বেদনা উভয় ক্ষেত্রেই মায়ের শরীরের অবস্থার ওপর নির্ভর করে।

💬 চিকিৎসকদের বাস্তব পরামর্শ:

“শিশুর লিঙ্গ নয়, বরং প্রসবের প্রস্তুতি, নিয়মিত চিকিৎসা, এবং মানসিক শক্তি—
এই তিনটি বিষয়ই ঠিক করে দেয় প্রসব কতটা সহজ বা কঠিন হবে।”
সুতরাং, অযথা ছেলে-মেয়ে ভেবে চিন্তা না করে নিজের যত্নে মন দিন।

🌸 কিছু টিপস যাতে প্রসব সহজ হয়:

1. গর্ভকালীন হাঁটাচলা করুন — প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট।

2. পানি ও তরল খাবার বেশি নিন — শরীর হাইড্রেটেড থাকলে জরায়ুর কার্যক্ষমতা ভালো থাকে।

3. মানসিকভাবে শান্ত থাকুন ।

4. নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন — আল্ট্রাসাউন্ডে শিশুর অবস্থান ও ওজন মনিটর করা জরুরি।

প্রসব বেদনা ছেলে না মেয়ে শিশুর জন্য আলাদা হয় না।
এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া— যেখানে মায়ের শরীর, মানসিক অবস্থা ও চিকিৎসা প্রস্তুতিই মুখ্য ভূমিকা রাখে।

তাই সবচেয়ে বড় বিষয় হলো — নিজেকে মানসিকভাবে শক্ত রাখুন, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, আর মনে রাখুন: আপনি একজন যোদ্ধা মা। ❤️

#প্রেগনেন্সিটিপস

27/10/2025

গর্ভস্থ শিশু ছেলে হলে বেশি নড়ে, নাকি মেয়ে হলে? জানুন সত্য ও প্রচলিত বিশ্বাসের পার্থক্য :

গর্ভাবস্থার সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্তগুলোর একটি হলো—গর্ভস্থ শিশুর নড়াচড়া অনুভব করা। যখন প্রথমবার মা নিজের পেটের ভেতরে সেই হালকা দোলা বা “কিক” অনুভব করেন, তখন যেন এক অজানা ভালোবাসার জন্ম হয়। কিন্তু প্রায় প্রতিটি মা তখনই ভাবেন—“আমার বাচ্চা ছেলে হবে নাকি মেয়ে?” আর এই প্রশ্নের সঙ্গে জুড়ে যায় আরও এক জনপ্রিয় ধারণা—ছেলে বাচ্চা হলে নাকি বেশি নড়ে, আর মেয়ে হলে কম!

এই বিশ্বাস শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা বিশ্বের অনেক সংস্কৃতিতে প্রচলিত। অনেক মায়েরা বলেন, যখন ছেলে সন্তান গর্ভে থাকে তখন তার নড়াচড়া শক্তিশালী, ঘন ঘন ও জোরে হয়। আবার কেউ বলেন, মেয়ে বাচ্চার নড়াচড়া তুলনামূলকভাবে শান্ত, মৃদু ও কোমল হয়। কিন্তু বাস্তবে কি সত্যিই এমন হয়?

চলুন, বিজ্ঞান আর বাস্তব অভিজ্ঞতার দিক থেকে বিষয়টি একটু গভীরভাবে দেখি।

🩺 বিজ্ঞান কী বলে?
বৈজ্ঞানিকভাবে শিশুর নড়াচড়া বা “Fetal Movement” নির্ভর করে অনেক কিছুর ওপর—যেমন শিশুর বিকাশের ধাপ, মায়ের শারীরিক অবস্থা, প্লাসেন্টার অবস্থান, এমনকি মায়ের দৈনন্দিন কাজের ধরনও। কিন্তু কোনও গবেষণাই এখনো পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলেনি যে ছেলে শিশুরা বেশি নড়ে আর মেয়ে শিশুরা কম নড়ে।

প্রত্যেক গর্ভস্থ শিশুর নিজস্ব একটি ছন্দ বা রুটিন থাকে। কেউ খুব সক্রিয়, কেউ আবার একটু শান্ত স্বভাবের। এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। যেমন একেকজন মানুষের ঘুম বা খাওয়ার অভ্যাস আলাদা হয়, তেমনি শিশুর নড়াচড়ার ধরনও আলাদা হয়।
তবে কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন পেশী বিকাশে প্রভাব ফেলে ফলে ছেলে শিশুর নড়াচড়া কিছুটা শক্তিশালী হতে পারে। কিন্তু সেটিও সবক্ষেত্রে এক নয়, কারণ অনেক মেয়ে শিশুর নড়াচড়াও অনেক বেশি সক্রিয় হয়। তাই এটা নিয়ম নয়, কেবল সম্ভাবনা মাত্র।

🌼 নড়াচড়া আসলে কী কারণে পরিবর্তন হয়?
শিশুর নড়াচড়ার পরিমাণ অনেক কিছুতে পরিবর্তিত হতে পারে। মায়ের খাদ্যাভ্যাস, বিশ্রামের ধরন, মানসিক অবস্থা, কিংবা এমনকি আবহাওয়ার পরিবর্তনও এর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
যখন মা খাবার খান, তখন রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গেলে শিশুর শক্তি বাড়ে এবং সে বেশি নড়াচড়া করতে শুরু করে। আবার মা বিশ্রামে থাকলে পেটের নড়াচড়া আরও স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়।
তাছাড়া গর্ভাবস্থার সময় যত বাড়ে, শিশুর নড়াচড়া প্রথমে বাড়তে থাকে, কিন্তু শেষের দিকে একটু কমে যেতে পারে কারণ তখন শিশুর জায়গা কমে যায়।

অন্যদিকে, যদি হঠাৎ এক-দুই দিন দেখেন যে শিশুর নড়াচড়া অনেকটা কমে গেছে, তাহলে সেটা কখনো কখনো বিপদের সংকেতও হতে পারে। কারণ এতে শিশুর অক্সিজেন বা পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। তাই এমন পরিবর্তন টের পেলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উচিত।

💕 ছেলে-মেয়ে নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো শিশুর স্বাভাবিক নড়াচড়া ও বিকাশ:

বিজ্ঞান বলছে—ছেলে বা মেয়ে হওয়া শিশুর নড়াচড়ার প্রধান কারণ নয়। বরং এটি শিশুর স্বাস্থ্যের পরিচায়ক। নিয়মিত নড়াচড়া মানেই শিশুটি সক্রিয় ও সুস্থ আছে।
তাই “বেশি নড়ে মানেই ছেলে” বা “কম নড়ে মানেই মেয়ে”—এই ধারণা শুধু মজার কৌতূহল হিসেবেই নিন, বাস্তব প্রমাণ হিসেবে নয়।

গর্ভের শিশুর প্রতিটি নড়াচড়া আসলে মায়ের প্রতি ভালোবাসার এক নিঃশব্দ ভাষা। সেটা ছেলে হোক বা মেয়ে, প্রতিটি নড়াচড়াই যেন মাকে বলে—
“মা, আমি ভালো আছি, তোমার হৃদয়ের ভেতরে বড় হচ্ছি।”

তাই কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু মনে রাখবেন—সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আপনার ও আপনার শিশুর সুস্থতা।

#গর্ভকালীন_নড়াচড়া #মাতৃত্ব

26/10/2025

গর্ভের শিশুর ঘুম ও নড়াচড়ার মজার রহস্যঃ
গর্ভের ভিতর শিশুর জগৎটা কিন্তু বেশ রহস্যময় ও মজার! মা'রা প্রায়ই বলেন—“আমি একটু বিশ্রাম নিতে গেলেই বেবি পেটে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে!” এটা কি কাকতালীয়? নাকি সত্যিই এমন হয়? চলুন জেনে নেওয়া যাক এই মজার রহস্য।

মা' যখন জেগে কাজ করেন, তখন বাচ্চা ঘুমায়:

দিনের বেলায় যখন মা হাঁটাচলা করেন, কাজ করেন, তখন শরীরের নড়াচড়া এবং হৃদস্পন্দনের ছন্দ শিশুর জন্য একধরনের "ন্যাচারাল দোলনা" হিসেবে কাজ করে।
এতে শিশুটি নিরাপদ ও আরামদায়ক অনুভব করে, ফলে সে ঘুমিয়ে পড়ে।
এই সময় মায়ের শরীর থেকে নিয়মিত অক্সিজেন, উষ্ণতা এবং পুষ্টি পাওয়ায় শিশুর ঘুম আরও গভীর হয়।

মা' যখন ঘুমোতে যান, তখন বাচ্চা খেলা শুরু করে:

রাতে বা যখন মা শুয়ে পড়েন, তখন শরীর স্থির থাকে। এতে রক্তসঞ্চালনের গতি কিছুটা পরিবর্তন হয় এবং মায়ের মন-শরীর একেবারে শান্ত থাকে।
এই নীরব পরিবেশে শিশুটি হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠে—হাত-পা নড়াচড়া, কিক মারা, ঘুরে বেড়ানো—সবই তখন শুরু হয়।

🤔 কেন এমন হয়?

এটার মূল কারণ হলো রিদমিক মুভমেন্ট ও সেন্সরি স্টিমুলেশন।
মায়ের শরীর নড়াচড়া করলে শিশুর মস্তিষ্কে “রিল্যাক্স” সিগন্যাল যায়, তাই সে ঘুমিয়ে পড়ে।

আর যখন মা স্থির থাকেন, তখন শিশুর নিজের সেন্সরগুলো কাজ শুরু করে—এটাই তার শরীরের এক্সারসাইজ ও ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের অংশ।

গর্ভের শিশু প্রায় ২৮ সপ্তাহের পর থেকেই নিয়মিত ঘুম-জাগরণের চক্র (sleep cycle) তৈরি করতে শুরু করে।
এই চক্র মায়ের জীবনযাপনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
তাই মা যদি বেশি স্ট্রেসমুক্ত, সঠিক খাবার খান ও যথেষ্ট বিশ্রাম নেন—তাহলে শিশুর ঘুমের প্যাটার্নও আরও স্বাস্থ্যকর হয়।

#গর্ভেরশিশু #মাতৃত্বেরমুহূর্ত

25/10/2025

গর্ভস্থ শিশু দিনে কয়বার নড়াচড়া করা স্বাভাবিক?
কখন বাচ্চা সবচেয়ে বেশি নড়াচড়া করে?

গর্ভাবস্থার একটি সবচেয়ে আনন্দদায়ক মুহূর্ত হলো—মায়ের পেটের ভেতর শিশুর নড়াচড়া অনুভব করা। এই ছোট্ট আন্দোলন শুধু আনন্দ দেয় না, বরং জানিয়ে দেয় শিশুটি ভালো আছে কিনা।

🩵 কখন থেকে নড়াচড়া অনুভব করা যায়?
সাধারণত গর্ভাবস্থার ১৮ থেকে ২২ সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার মায়েরা শিশুর নড়াচড়া টের পান।
প্রথম সন্তান হলে একটু দেরি হতে পারে, প্রায় ২২ সপ্তাহের দিকে। আর দ্বিতীয় বা তৃতীয় গর্ভে আগে থেকেই বোঝা যায়—কারণ তখন মা শরীরের এই অনুভূতির সাথে পরিচিত থাকেন।

দিনে কয়বার নড়াচড়া করা স্বাভাবিক?

👉 ২৮ সপ্তাহের পর থেকে শিশু নিয়মিতভাবে নড়াচড়া করে।
👉 সাধারণত দিনে ১০ বা তার বেশি বার নড়াচড়া (kick) অনুভব করা স্বাভাবিক ধরা হয়।
👉 নড়াচড়া মানে শুধু পা বা হাতের লাথি নয়; শিশুর গড়াগড়ি খাওয়া, হাত নাড়া, ঘুরে যাওয়া—সবই এর মধ্যে পড়ে।

যদি আপনি ২ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১০ বার নড়াচড়া অনুভব করেন, তাহলে তা একদম স্বাভাবিক।
তবে হঠাৎ করে যদি শিশুর নড়াচড়া একেবারে কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়, তখন দেরি না করে ডাক্তারকে জানানো জরুরি।

কোন সময় বাচ্চা সবচেয়ে বেশি নড়াচড়া করে?
শিশুরাও ঠিক বড়দের মতো তাদের নিজস্ব রুটিন তৈরি করে ফেলে!
সাধারণত—
🕐 রাতে বা সন্ধ্যায় মা যখন বিশ্রামে থাকেন, তখন শিশু সবচেয়ে বেশি নড়াচড়া করে।
🍽️ খাওয়ার পর রক্তে গ্লুকোজ বাড়লে শিশুটি শক্তি পেয়ে সক্রিয় হয়।
🛏️ মা যখন চুপচাপ শুয়ে থাকেন বা আরাম করেন, তখনও নড়াচড়া স্পষ্টভাবে অনুভব করা যায়।

:

:
#মা_ও_শিশু #গর্ভকালীন_যত্ন #মায়ের_গল্প #গর্ভবতী_মা

24/10/2025

গর্ভাবস্থায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে গর্ভাবস্থায় গ্রহণীয় এবং বর্জনীয় কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. স্বাস্থ্যকর খাবার (Healthy Foods):

অ্যাভোকাডো (Avocados): এতে ফলিক অ্যাসিড এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে।

মাল্টিগ্রেইনস (Multigrains): শস্যদানা সমৃদ্ধ খাবার যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস আঁশ এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সরবরাহ করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

বিনস ও মসুর ডাল (Beans & Lentils): প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রনের চমৎকার উৎস, যা গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

পাতাসমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি (Leafy Greens): পালংশাক, কেল-এর মতো শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, কে এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে।

সামুদ্রিক খাবার (Seafood): স্যালমন মাছের মতো সামুদ্রিক খাবারে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও চোখের বিকাশের জন্য জরুরি। তবে, পারদ-সমৃদ্ধ মাছ এড়িয়ে চলতে হবে।

বাদাম (Nuts): প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের ভালো উৎস।

চর্বিহীন মাংস (Lean Meats): প্রোটিন এবং আয়রনের ভালো উৎস, যা শরীরের টিস্যু গঠন ও রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে।

সিদ্ধ ডিম (Cooked Eggs): প্রোটিন এবং কোলিনের চমৎকার উৎস, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের বিকাশে সহায়তা করে।

২. বর্জনীয় বা সীমিত খাবার (Foods to Avoid or Limit):

অতিরিক্ত ক্যাফেইন (Excess Caffeine): অতিরিক্ত ক্যাফেইন গর্ভপাত বা কম ওজনের শিশুর জন্ম দিতে পারে। দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা উচিত।

সফট চিজ (Soft Cheeses): ফেটা, ব্রাই, ব্লু চিজের মতো অপাস্তুরিত নরম পনিরে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর।

কাঁচা সুশি (Raw Sushi): কাঁচা মাছ ও শেলফিশে ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী থাকতে পারে।

অ্যালকোহল (Alcohol): গর্ভাবস্থায় যেকোনো পরিমাণে অ্যালকোহল সেবন করা অনিরাপদ, কারণ এটি ভ্রূণের অ্যালকোহল সিন্ড্রোম (FAS) ঘটাতে পারে।

উচ্চ পারদযুক্ত মাছ (High Mercury Fish): হাঙর, সোর্ডফিশ, কিং ম্যাকেরেল এবং টাইলফিশের মতো মাছে উচ্চ মাত্রার পারদ থাকে, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।

ডেলি মিটস (Deli Meats): সসেজ, সালামির মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত হতে পারে। এগুলো ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত।

কাঁচা ডিম (Raw Egg): কাঁচা ডিমে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা গুরুতর খাদ্য বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।

গর্ভাবস্থায় সব সময় পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা এবং ক্ষতিকর খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কোনো নির্দিষ্ট খাবার সম্পর্কে সন্দেহ থাকলে একজন ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

23/10/2025

শুভ জন্মদিন, বাবা!❤️ আজ তোমার প্রথম জন্মদিনে তোমাকে জানাতে চাই আমার প্রেগনেন্সি, সিজারের সময়ের কষ্ট, বাবার অসীম লড়াই, অকৃত্রিম মায়া ও তোমাকে পাওয়ার অফুরন্ত আনন্দ।
আজ হয়তো তুমি এগুলো বুঝতে পারবে না, কিন্তু বড় হয়ে যখন পড়বে, তখন জানবে মা-বাবার ভালোবাসা ও ত্যাগ কেমন হয়? কেন সন্তানকে নাড়ী ছেড়া ধন বলা হয়? কেন সৃষ্টিকর্তা তাঁরপরে বাবা মাকে স্থান দিয়েছেন? আমরা স্বাভাবিকভাবেই ছোটবেলায় কিংবা বড় হয়ে অবুঝের মত বাবা-মার মনে প্রচন্ড আঘাত দিয়ে থাকি। তখন বাবা মায়ের ভালোবাসা প্রকৃত অর্থে বোঝার বোধ হয়ে ওঠে না। হয়তো তখন আমাদের পিতা-মাতাও বলেছিল "বাবা-মা হও তারপরে বুঝবে?" তুমিও যখন বাবা হবে ঠিক তখনই এর যথার্থ মর্মার্থ বুঝবে।

সেসব কথা থাক প্রথম থেকে শুরু করি। জীবনের প্রথম মা' হচ্ছি তাই এই যাত্রার অভিজ্ঞতা ছিল কৌতূহল, ভয় ও রোমাঞ্চকর।

আমার প্রেগনেন্সি টাইম শুরু হয়েছিল জানুয়ারী মাস থেকে। প্রথম থেকেই আমার হাজবেন্ডের ডিসিশন ছিল প্রতি মাসে আমাকে একবার করে চেকআপ করাবেন। এজন্য প্রথমেই আমাদের যেটা করতে হয়েছিল সেটা হচ্ছে একজন ভালো এবং রোগী বান্ধব ডাক্তার খুঁজে বের করা। বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যে বাজে অবস্থা এবং অধিকাংশ ডাক্তারদের চিকিৎসা-বাণিজ্য সেখানে অবশ্যই আমাকে এমন ডাক্তার খুঁজে বের করতে হবে যিনি আমাকে আমার মত করে দেখবেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল যে কারণে খুব সহজেই খুঁজে পেয়েছিলাম স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাঃ সুলতানা নাজনীন রিতা ম্যামকে। আমার হাজবেন্ডের চাওয়া ছিল প্রেগন্যান্সি টাইম টা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে সংবেদনশীল সময় তাই অবশ্যই ডাক্তার যেন পার্সোনাল ফোন নাম্বার শেয়ার করেন। ডাক্তারের সাথে প্রথম আলাপেই আমার হাজব্যান্ড গুছিয়ে তার চাওয়া পাওয়াটা বলেছিল ডাক্তার ম্যাম তার কথাগুলো সহজেই বোঝেন এবং তার নিজস্ব মোবাইল নাম্বার শেয়ার করেন। সাথে বলে রাখেন যেকোনো সময় যেকোনো সমস্যায় অবশ্যই নক করবা। ইভেন তিনি তার বাড়ির এড্রেস দিয়ে রাখেন যদি ইমারজেন্সি কোন সিচুয়েশন হয় অবশ্যই যেন তার বাসায় চলে যায়। তাছাড়া ডাক্তার ম্যামের ব্যক্তিগত সহকারী শাহিনা আপা ছিলেন বেশ আন্তরিক।

আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার প্রেগনেন্সির প্রথম তিন মাস ভালই চলছিল। নিয়মিত ডাক্তার চেকআপ, খাওয়া দাওয়া, নিয়ম-তান্ত্রিক জীবন যাপন। কিন্তু চতুর্থ মাসে যখন পুনরায় ডাক্তার চেকআপে গেলাম ডাক্তার আলট্রাসনোগ্রাফি করতে বললেন? আল্ট্রা রিপোর্ট হাতে পেয়ে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখাতে তিনি বললেন" লো লাইন প্লাসেন্টা" ধরা পড়েছে এবং সেইসাথে জরায়ুর ওপরে একটা আলুর সমান টিউমার হয়েছে।
ডাক্তার সম্পূর্ণ বেড রেস্টে থাকতে বললেন। তিনি বুঝিয়ে বললেন লো-লাইন প্লাসেন্টা তে যদি ভারী কাজ করা হয় সেক্ষেত্রে যদি ব্লিডিং শুরু হয় সেই ব্লিডিং নিয়ন্ত্রণ করা প্রচন্ড কষ্টসাধ্য। তাছাড়া যেহেতু টিউমার হয়েছে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম মেনে চলতে হবে। আমার হাজব্যান্ড বেশ কেয়ারিং একজন মানুষ এবং সচেতনও বটে। তাই তিনি আমার সমস্যার সম্পর্কে নিজেই পড়াশোনা করলেন। এবং সিদ্ধান্ত নিলেন আমি যেন সম্পূর্ণ বেড রেস্টেই থাকি। বাসায় এসে আমার হাজব্যান্ড আমার হেল্পিং হ্যান্ড কে রান্না সহ বাসার সকল কাজের দায়িত্ব দিলেন। আমি তখন কেবল শুয়ে বসেই থাকি। যতটুকু পারি হালকা হাটাহাটি করি। ধর্মীয় প্রার্থনা অর্থাৎ নামাজ, দোয়া ,কোরআন তিলাওয়াত নিয়মিত করতাম। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি আমার সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে পবিত্র "আল-কোরআন" খতম করতে পেরেছিলাম।

তবুও মোটামুটি অলস সময় কাটছিলাম তাই আমার প্রেগন্যান্সির যখন সাত মাস চলছিল ঠিক সেই সময়ে শখের বশে হাজব্যান্ডকে না জানিয়ে দুইদিন দাঁড়িয়ে রান্না করেছিলাম। রাত থেকে পেটের বাম সাইডে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয় আমি যেন প্রচন্ড কষ্টে ভেঙে পড়েছিলাম। নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না ‌। শরীরের শক্তি ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছিল। রাত দেড়টায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ইমারজেন্সি থেকে আমার ডাক্তারকে ইন্টার্ন ডাক্তার ফোন দিয়ে বললেন- ম্যাম আপনার পেশেন্ট মোনালিসা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ম্যাম একটু অবাক হলেন মোনালিসা! ও না গত পরশু চেকআপ করে গেল? কি হয়েছে ? মোনালিসাকে ফোনটা দাও তো?
আমি ম্যামকে খুলে বললাম আমার সমস্যার কথা। ম্যাম আমার সমস্যা শুনে ভয় পেলেন তবে আমাকে আশ্বস্ত করলেন এবং আমার হাজব্যান্ডকে আশ্বস্ত করলেন তোমরা ভয় পেয়ো না আমি সার্বক্ষণিক মোবাইল ফোনে তোমার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। ভর্তি কমপ্লিট হল হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে আমার ডাক্তার আমার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ডাক্তার ম্যাম ভয় পেয়েছিলেন হয়তো পানি ভেঙ্গে গেছে? পরবর্তীতে চেকআপ করে ম্যামের পরামর্শে ঔষধ স্যালাইন দিয়ে ভোর সাড়ে তিনটায় আমার ব্যথা কমতে শুরু করলো। মনে আছে খুব সকাল সকাল ডাক্তার ম্যাম আমাকে দেখতে এসেছিলেন। হাসপাতালের কেবিনে পুরো তিন দিন ভর্তি থেকে আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলাম। শুরু হলো ডাক্তার এবং আমার হাসবেন্ডের কড়া আদেশ পালন অর্থাৎ কোন কিছুই করা যাবে না।

আমার প্রসবের প্রায় সময় ঘনিয়ে এসেছে। আলট্রাসনোগ্রাফি অনুযায়ী ডেলিভারির ডেট নভেম্বরের ১০ তারিখ। ডাক্তার চেকআপে গেলাম ম্যাম পুনরায় আল্ট্রা করলেন? প্লাসেন্টা লো লাইনেই ছিল তাছাড়া টিউমার তাই সি-সেকশন ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। আমার হাজবেন্ডও কোন রিস্ক নিতে চায় না। ডাক্তার আমার হাজব্যান্ড কে বললেন তিনি অক্টোবরের ২৬ তারিখ থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশের বাইরে যাবেন। এই কথা শুনে আমি আমার হাজব্যান্ড আমি খুবই দুশ্চিন্তায় পড়লাম। ও ডাক্তার কে বলল ম্যাম আপনি ছাড়া এ সময়টা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হবে। তাই সি-সেকশনটা আমরা যদি কয়দিন আগে করি সেক্ষেত্রে কি কোন বাঁধা আছে? ডাক্তার ম্যাম বললেন আলহামদুলিল্লাহ বাবুর ওজন ভালো আছে এ কারণে তুমি চাইলে আগেও ডেট করতে পারো। ডাক্তার ম্যাম এবং আমার হাজব্যান্ড হিসাব নিকাশ করে আমার সি সেকশন এর ডেইট ফিক্সড করলো ২৩ শে অক্টোবর ২০২৪।

আমরা যথারীতি ২২ অক্টোবর ভর্তি হয়ে গেলাম মেডিকেলে। আত্মীয়-স্বজনরা সবাই আসলো। আমি মানসিকভাবে বেশ শক্ত ছিলাম তবে আমার হাজব্যান্ড প্রচন্ড ভয় পাচ্ছিল। আমার সি-সেকশনের আগে ও ডাক্তারকে বলেছিল আমার স্পষ্ট মনে আছে- ম্যাম আমি আমার ওয়াইফ কে ভীষণ ভালোবাসি তার গর্ভে আমার সন্তান। আপনি এমন ভাবে সি-সেকশন করবেন যাতে ওরা কেউ কোন ব্যথা অনুভব না করে।
ডাক্তার ম্যাম মুচকি হেসে বলেছিলেন"তুই কোন দুশ্চিন্তা করিস না"আমি আমার বেস্ট ট্রাই করবো ইনশাআল্লাহ।

ডাক্তার এবং আমার হাজব্যান্ড এর প্রচেষ্টায় কেবিন ম্যানেজ হলো। ২২ তারিখ বিকেলে আমরা কেবিনে চলে গেলাম। একটু পর পর ডাক্তার নার্সরা এসে চেকআপ করে যাচ্ছেন। আমাকে এবং আমার হাজব্যান্ডকে ডাক্তার বলে গেলেন রাত আটটার পর থেকে আর কিছু খাওয়া যাবে না। শেষবারের মতো আমার কলা খেতে ইচ্ছে হয়েছিল ,খেয়েছিলাম।

ভোর রাত থেকে হঠাৎ আমার প্রেশারটা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল আমি দুশ্চিন্তা করছি না কিন্তু তবুও পেশার বেড়েছে আসলে কেন বেড়েছিল সেটা এখনো বুঝিনি।
সকাল সাড়ে নয়টায় আমাকে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হল। ওটিতে যাওয়ার আগে আমার হাজবেন্ডের চোখের ছলছল অশ্রু মুছে দিয়ে বলেছিলাম দুশ্চিন্তা করো না ইনশাআল্লাহ খুব ভালোভাবে আমরা তোমার কাছে ফিরে আসব।

সকাল দশটায় সবার প্রথমে আমার সিজার করার কথা ছিল। এজন্য নার্সরা আমাকে সেইভাবে প্রস্তুত করেছে। প্রি-অপারেটিভ রুমে একাই আছি। এরমধ্যে প্রায় দুইটি সি সেকশন কমপ্লিট হল। আমি বুঝতে পারলাম আমার পাশ থেকে অন্যান্য গর্ভবতী আপুদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন। তখন একটু টেনশন লাগছিল সবার প্রথমে আমার সিজার করার কথা ছিল কিন্তু আমাকে কেন নিচ্ছে না?
পরবর্তীতে অন্যান্য ডাক্তারদের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে বেশ কয়টি গর্ভবতী আপুর জরুরি অবস্থা ছিল? তাদের মধ্যে তুলনামূলক আমি ভালো ছিলাম। তাছাড়া আমার অপারেশন একটু সময় সাপেক্ষ কেননা সাথে টিউমার অপসারণ করতে হবে তাই ডাক্তার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে তো রীতিমতো আমার হাজব্যান্ড আমার বাবা-মা শ্বশুর-শাশুড়ি আত্মীয়-স্বজনরা সবাই চিন্তায় অস্থির। যখন সকাল ১১ টা ১০ বাজে তখন আমাকে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হলো।
ডাক্তার ম্যাম গল্প করতে করতে আমার পিঠে ইনজেকশন দিয়ে দিলেন। এবং খুব দ্রুত শুয়ে পড়তে বললেন। সবাই তড়িঘড়ি করে আমাকে শুইয়ে দিলেন। আমার তখন একটু একটু ভয় কাজ করছিলো। তাই ভয়ে চোখ বন্ধ করেছিলাম। এবং প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছিলো। মাথা ভেঙে পড়ছিল। দুইবার বমি করে ফেলেছিলাম। কিন্তু ডাক্তার আমাকে বারবার সাহস দিচ্ছিলেন এবং গল্প করছিলেন।
ডাক্তার ম্যাম বললেন তোমার পেটে যে টিউমার আছে সেটা কি কেটে নিবা? আমি বললাম ম্যাম আপনার যেটা ভালো মনে হয় সেটাই করেন। ম্যাম বললেন দাড়াও একটু ভিডিও করে নেই তোমার হাজব্যান্ডকে দেখাতে হবে। টিউমারটা এখন কেটে ফেলা তোমার জন্য বেশ রিস্ক হবে। ম্যাম পরবর্তীতে আমার হাজবেন্ডকে জানিয়েছিলেন এবং ভিডিও দেখেছিলেন যে টিউমার কাটতে গেলে আরো ওপর পর্যন্ত পেট কাটতে হবে সে ক্ষেত্রে দুইটি অপারেশন একসাথে ঝুঁকিপূর্ণ হবে। ম্যাম আমার হাজব্যান্ডকে বলেছিলেন তুমি যেভাবে আমাকে ভরসা করে দায়িত্ব দিয়েছিলে সেই দায়বদ্ধতা থেকে তোমাকে ভিডিও করে এনে দেখালাম যাতে আমার ওপরে ভরসা রাখতে পারো। যাইহোক আসল ঘটনায় আসি।

সিজারের এক পর্যায়ে হঠাৎই ম্যাম বললেন,
“মোনালিসা, তোমার একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তান হয়েছে।”
সেই মুহূর্তে আমার পুরো পৃথিবী আলোকিত হয়ে উঠলো।
ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে এগারোটা, কিন্তু আমার জীবনের সময় যেন তখনই শুরু হলো।
আমি ধীরে ধীরে চোখ খুললাম
দেখলাম, আমার সামনে আমার চাঁদ —আমার পৃথিবী, আমার ছোট্ট সোনা বাবা!
যার জন্য এতদিন অপেক্ষা, কান্না, প্রার্থনা —
সে এখন আমার সামনে নিঃশব্দে শ্বাস নিচ্ছে, আমার বুকের ঠিক বা' পাশে।
চোখের পানি, হাসি আর ভালোবাসা একসাথে মিশে গিয়ে যেন এক অনন্ত অনুভূতিতে ভরে গিয়েছিল হৃদয়টা।

ওই অবস্থাতেই আমি পরম মমতায় আর ভালোবাসায় আমার সোনার গালে একটা চুমু এঁকে দিলাম।
মনে আছে, ওটি রুমে আমার ছোট্ট সোনাকে আমার কাছে দু’বার এনে দেখিয়েছিল।
দু’বারই মনে হয়েছিল, এ যেন স্বপ্ন —
স্বপ্নটা আমি হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখছি, মনের গভীরে বেঁধে রাখছি সারাজীবনের জন্য।

এরপর আমার ছোট্ট সোনাটাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আমি তখনও সিজারের টেবিলে— আধা জাগ্রত, আধা ঘুমের মতো এক অদ্ভুত অনুভূতিতে ভাসছি।
মাথার ভেতর কেমন জানি ঝিমঝিম করছে, পৃথিবীটা যেন ঘুরছে আমার চারপাশে।
হঠাৎই বমি করে ফেললাম। নার্সরা তাড়াতাড়ি এসে সামলে নিল, মনে হচ্ছে শরীরটা নিজের নয়।
ঘড়ির কাঁটা তখন ১১টা ৫৫ মিনিটে থেমে আছে —
ঠিক তখনই আমার সিজারের সব কাজ শেষ হলো।
আমাকে ধীরে ধীরে ওটি রুম থেকে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে নিয়ে যাওয়া হলো।
সেই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, আমার শুধু মাথাটা আছে তাছাড়া পুরো শরীর যেন কোথাও হারিয়ে গেছে।
গলা থেকে নিচে কোনো অনুভূতি নেই, কোনো শক্তি নেই —
শুধু নিঃশব্দ ক্লান্তি তবে অদ্ভুত এক শান্তি ভর করেছে মনজুড়ে।

আমাকে লেপে জড়িয়ে রাখা হলো, নার্সরা নরম স্বরে বলল,
“চোখ বন্ধ করে একটু বিশ্রাম নিন, আপনি এখন নিরাপদ।”

আমি চোখ বুজলাম…
শরীর ক্লান্ত, কিন্তু হৃদয়ে ভরে আছে এক অনির্বচনীয় ভালোবাসায় —
আমার ছোট্ট সোনাকে প্রথমবার বুকে নেওয়ার সেই অপেক্ষায়।

বিশ্রাম নিচ্ছিলাম তবে শরীরটা তখনও পুরো অবশ। কিছুক্ষণ পর আমার ভাবি আর আমার আম্মু আমার ছোট্ট সোনাটাকে নিয়ে এলো আমার কাছে। সেই মুহূর্তটা যেন আবার নতুন করে বাঁচার মতো। আমার ছোট্ট সোনা বাবুটা তখন খাওয়ার জন্য কেঁদে চলেছে। সেই কান্নার আওয়াজে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠছিল, কিন্তু আমি কিছুই করতে পারছিলাম না। ওকে কোলে নিতে চাইলেও শক্তি ছিল না, খাওয়াতে চাইলেও দুধ পাচ্ছিল না আমি তখন অসহায় নিরুপায় এক মা'।
নার্সরা বেশিক্ষণ থাকতে দিল না। ওরা আমার পাখিটাকে নিয়ে চলে গেল। আবার একা হয়ে গেলাম আমি—একদম নিঃশব্দ, ফাঁকা একটা রুমে, শুধু বুকের ভেতরটা কাঁদছিল নীরবে।
চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে ধীরে ধীরে শরীরে একটু শক্তি ফিরলো। রাত আটটার দিকে নার্সরা আমাকে আমার কেবিনে নিয়ে গেল। কেবিনে গিয়ে দেখি—আমার ছোট্ট পাখিটা তখনও কাঁদছে, ক্ষুধায়। বুকের দুধ পাচ্ছে না, ডাক্তাররা ফর্মুলা দুধও দিতে নিষেধ করেছেন। বললেন, “বাচ্চারা আড়াই দিনের খাবার সাথে নিয়েই আসে, তাই চিন্তা করো না।”

কিন্তু মা হয়ে কি শান্ত থাকা যায়? বুকের দুধ না পেয়ে আমার সোনা যে কাঁদছিল, সেটা দেখা সত্যিই অসহ্য যন্ত্রণার ছিল।
তার উপর, হঠাৎ দেখি ছোট্ট সোনার পুরো শরীরে অসংখ্য র‍্যাশ উঠে ভরে গেল। ভয় পেয়ে ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার ঔষধ দিলেন, আর আল্লাহর রহমতে আমার সোনা ছেলেটা জন্মের শুরু থেকেই সুন্দরভাবে ঔষধ খেত।

সিজারের পরে সবচেয়ে কষ্টকর মুহূর্ত ছিল প্রথম হাঁটার অভিজ্ঞতা। মনে হয়েছিল, শরীরটা ভেঙে যাচ্ছে, প্রতিটি পা ফেলার সাথে তীব্র যন্ত্রণা। তবু আমি হেঁটেছিলাম—আমার সোনার জন্য, আমার জীবনের।
তিনদিন পর অবশেষে আমাকে প্রথমবার খাবার খেতে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমার সোনা দুধ পেতে শুরু করলো। তার কান্না কমলো, মুখে ফুটে উঠলো শান্তির হাসি।

তবে আমার সোনা ছেলেটা যখন জন্ম নেয়, তখন টানা পাঁচ দিন বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই কারণে জন্মের পর একটুও রোদ পায়নি। তাই হালকা জন্ডিস ধরা পড়েছিল। ওকে রোদে দেওয়ার সুযোগ পাইনি বলে আমরা ইচ্ছে করেই মেডিকেলে আরো দুই দিন থেকে গেলাম।

অবশেষে ছয় দিনের দিন, যখন বাইরে রোদ উঠলো, তখন আমরা আমাদের ছোট্ট সোনাকে কোলে নিয়ে বাসায় ফিরলাম। প্রথমবার ওকে সকালের রোদে নিয়ে গেলাম — ওর মুখে রোদ পড়তেই মনে হলো সূর্য যেন হাসছে আমার সন্তানের মুখে।

ধীরে ধীরে আমার সোনা বাচ্চা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলো। আর সপ্তম দিনের সকালে, আমার সোনার আকিকা হলো। তার বাবা ভালোবেসে ওর নাম রাখলো —
আরহাম আল মাহমুদ রাজ্য। 💛

সেই নামের মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে আমাদের সকল কষ্ট, ভালোবাসা, দোয়া আর আনন্দের অমলিন স্মৃতি।
মহান সৃষ্টিকর্তা তোমাকে দীর্ঘায়ু দান করুক।

"শুভ জন্মদিন" আব্বু !! 💕

:

:

SuperMom Monalisa

05/11/2025

04/11/2025

03/11/2025

02/11/2025

30/10/2025

29/10/2025

28/10/2025

27/10/2025

26/10/2025

25/10/2025

24/10/2025

23/10/2025

Address

Telephone

Website

Alerts

Contact The Practice

Shortcuts

Share

Category