20/10/2025
পুরুষের জন্য নারী এমনিতেই গোটা সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে মোহনীয় বিষয়। এরপর যদি কোনো ব্যক্তি বহুবিবাহের মতো নারী-সংশ্লিষ্ট সেন্সিটিভ বিষয়কে তার মিশন ভিশনে পরিণত করে তাহলে সে ব্যক্তি ওমেনাইজার হয়ে পড়ার আশংকা অনেক বেশি। দেখবেন, শো-বিজ জগতের প্রযোজক পরিচালক ইত্যাদি শ্রেণির লোকেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওমেনাইজার হয়ে পড়ে।
এটাই আমরা দেখছি বহুবিবাহ আন্দোলনের হোতাদের মধ্যে।
নারীরা মানব ইতিহাস সবচেয়ে নিকৃষ্টতর সময় অতিক্রম করছে। পশ্চিমা পর্ন ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে নারীকে সেক্স-অব্জেক্ট হিসেবে উপস্থাপন, ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে যা খুশি তা করার লাইসেন্স, পরকালহীন জীবন-দর্শনে খাও-দাও ফুর্তি করো--সব মিলিয়ে মানুষকে এক যৌনজীবে রুপান্তরিত করার সকল আয়োজন সম্পন্ন, আর এই যৌনজীবদের জীবনের প্রধানতম লক্ষ্য হলো নারী সম্ভোগ।
এক শ্রেণির মানুষকে আজকাল দেখা যাচ্ছে ইসলামকে ব্যবহার করে তাদের এই ভোগবাদিতাকে ইসলামাইজেশানের চেষ্টা করছেন। বহুবিবাহ আন্দোলনের নামে একধরনের হালাল পতিতালয় খুলে বসেছেন তারা।
যে বহুবিবাহ ছিলো নারীদের জন্য শারিরিক, মানসিক, সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তাজাল বা সেইফটিনেট তৈরির মাধ্যম সেই বহুবিবাহকে ব্যবহার করে তারা অসংখ্য নারীর জীবন তারা উলটো নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। একইসাথে এরা আধুনিক শিক্ষিত নারীদের মধ্যে পশ্চিমাদের রোপন করা ইসলামবিদ্বেষের মাত্রা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলছে।
বিবাহ কোনো আন্দোলন সংগ্রামের বিষয় নয়, বরং ব্যক্তিগত প্রয়োজনের বিষয়। বিবাহ কারো জন্য ফরজ, কারো জন্য মুসতাহাব, কারো জন্য নফল, কারো জন্য মাকরুহ আবার কারো জন্য হারাম।
কারো যদি সকল সামর্থ্য থাকে এবং প্রয়োজন অনুভব করে সে বহুবিবাহ করুক, এটা যেমন তার নিজস্ব ব্যাপার, তেমনি কেউ যদি বিয়ে একটাও না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন সেটাও তার ব্যাপার। বাট, যে সিদ্ধান্তই নেন, সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন।
আল্লাহ যা কিছু হালাল করেছেন তার মধ্যে অবশ্যই কল্যাণ রেখেছেন। এখন সেই হালালকৃত জিনিষের মাধ্যমে যদি আপনি কল্যাণ সাধন না করে সমাজের জন্য আরও অকল্যাণ বয়ে আনেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার কথা সত্য হলেও আপনি ব্যক্তি সত্য নন।
আশা করি বহুবিবাহ আন্দোলনের আড়ালে বহু নারী সম্ভোগের রাস্তা খোলা লোকগুলোর ব্যাপারে উলামায়ে কেরাম শক্ত ভুমিকা গ্রহণ করবেন।
একইসাথে আমাদের মা-বোনদেরও বলব, মায়েরা, বোনেরা শুনুন, বহুবিবাহ নারীদের নিরাপত্তা বাড়ায়, আর পুরুষের বাড়ায় বোঝা। পুরুষের মধ্যে গাধার মতো বোঝা বহনের কিছু ড্রাইভ আল্লাহ দিয়েছেন, তাই সে নিজের মেরুদণ্ড ভেঙ্গেও তা করে এবং গর্বিত বোধ করে।
আপনারা পশ্চিমা প্রপাগাণ্ডার শিকার হয়ে আপনার স্রষ্টা মহাজ্ঞানী আল্লাহর হালাল করা একটা বিধানের প্রতি এমন বিদ্বেষমূলক মনোভাব রাখবেন না। এটা আপনাদের দুনিয়া আখিরাত কোনোটার জন্যই ভালো না।
চারপাশে খোঁজ নিয়ে দেখুন, লক্ষ-লক্ষ নারীদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, অসংখ্য বিধবা-তালাকপ্রাপ্তা নারীরা স্বামী পাচ্ছেন না!
শুধু নিজে ভালো আছেন বলেই যে সমাজ ভালো আছে তা কিন্তু নয়। চোখ খুলুন। চারিদিকে তাকান। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠুন, আবেগের ঊর্ধ্বে উঠে বাস্তবতাকে মেনে নিতে শিখুন। না হলে একদিন হয়তো এই অভিশাপ আপনাকে কিংবা আপনার পরিবারকেও গ্রাস করবে।
একটা এক্সট্রিমিজমই আরেকটা এক্সট্রিমিজমের জন্ম দেয়। বহুবিবাহের প্রতি সমাজে জেঁকে বসা এক্সট্রিম বিদ্বেষের কারণেই আজ কাসেমীদের মতো ফালতু লোকেরা আরেকটা এক্সট্রিমজমের জন্ম দিয়ে নিজেদের একটা জায়গা করে নিতে পেরেছে।
একটা স্বাভাবিক বৈধ বিষয়ের প্রতি সমাজের এমন বিদ্বেষমূলক মনোভাবের সুযোগ নিয়েই কিন্তু এইসব ফালতু লোকেরা বহুবিবাহের আন্দোলন গড়ে তোলার গ্রাউন্ড পেয়েছে।
সমাজ যদি এই বিদ্বেষ ত্যাগ না করে তাহলে এক কাসেমীকে দমন করলে আরেক কাসেমী গজিয়ে উঠবে।
আশা করি আপনারা তা দেবেন না।
©️আহমেদ রফিক (হাফিযাহুল্লাহ)