Human Life

Human Life শির্ক মুক্ত ঈমান এবং বিদ'আত মুক্ত আমল সমাজে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষুদ্র একটি প্রয়াস।

29/10/2025

ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আইয়ূব ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ (৬৯১–৭৫১ হি.) বলেন,
কোনো এক আলেম বলেছেন,
“আমি চিন্তা করেছি, মানুষ (বুদ্ধিমানরা) যে বিষয়ের জন্য চেষ্টা-পরিশ্রম করে — দেখলাম, তাদের সকল প্রচেষ্টা একটিই লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে, যদিও তা অর্জনের পদ্ধতি ও পথগুলো একে অপরের থেকে ভিন্ন। দেখলাম, তারা সবাই দুঃখ, উদ্বেগ ও কষ্ট দূর করার প্রচেষ্টা করছে।
এইজন্য কেউ তা করে খাবার ও পানীয়ের মাধ্যমে, কেউ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও উপার্জনের মাধ্যমে, কেউ করে বিবাহের মাধ্যমে, কেউ করে সুর ও সংগীত শুনে, কেউ করে খেলাধুলা ও বিনোদনের মাধ্যমে।

আমি বললাম: প্রকৃতপক্ষে মানুষের চাওয়াটা এক — মনে প্রশান্তি ও দুঃখের দূরীকরণ। কিন্তু এ সব পথই আসলে প্রকৃত উদ্দেশ্যের দিকে পৌঁছে দেয় না, বরং অধিকাংশ সময় তা বিপরীত ফল দেয়।
আর আমি দেখিনি এসব পথের মধ্যে এমন কোনো পথ, যা নিশ্চিতভাবে প্রকৃত প্রশান্তি ও সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যায় — অন্তরকে একমাত্র আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেওয়া ও তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা ছাড়া।”

- ইমাম ইবনুল কাইয়‍্যিম, আদ-দা ওয়াদ-দাওয়া পৃষ্ঠা ৪৫০।

সারকথা:
মানুষ জীবনের সকল প্রয়াসে মূলত দুঃখ-চিন্তা থেকে মুক্তি খুঁজে। কেউ খাওয়া-দাওয়া, ব্যবসা, বিবাহ, গান-বাজনা বা বিনোদনের মাধ্যমে তা চায়। কিন্তু প্রকৃত প্রশান্তি ও দুঃখমুক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপন ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব — অন্য কোনো পথে নয়।

©️ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ)

29/10/2025

শরিয়তের কোনো বিষয় আমল করার ক্ষেত্রে আমাদের করনীয় 👇

মাযহাব অনুসরনের ক্ষেত্রে কোরআন সুন্নাহর বক্তব্য অগ্রগন্য,মাযহাব কোন দ্বীন নয় বরং এটি অভিমত।রাসুলুল্লাহ ﷺ কে আনুগত্য করা ফরজ,অন্যকারো আনুগত্য করা ফরজ,সুন্নাত বা নফলও নয়। মাযহাবের ঈমামগনও তাদের বক্তব্যের অনুসরণ করাকে ফরজ দাবী করেন নি।

🎤ড.মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মাদানী (হাফিযাহুল্লাহ)

21/10/2025

সলাতের মাঝে অযু ভেংগে গেলে করনীয় 👇

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী ﷺ বলেছেনঃ সলাতের মধ্যে তোমাদের কারো অযু নষ্ট হলে হলে সে যেন তার নাক চেপে ধরে বেরিয়ে যায়।[1]

📖সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২/ সালাত (كتاب الصلاة)
হাদিস নম্বরঃ ১১১৪

[1] ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সলাতে অযু ভঙ্গ হলে কিভাবে বেরিয়ে আসবে, হাঃ ১২২২), বায়হাক্বী ‘সুনান’ (২/২৫৪), হাকিম (১/১৮৪), দারাকুতনী (১/১৫৮)। ইমাম হাকিম বলেনঃ এটি বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ, তবে তাঁরা এটি বর্ণনা করেননি। ইমাম যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ

©️হাদিস বিডি

20/10/2025

পুরুষের জন্য নারী এমনিতেই গোটা সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে মোহনীয় বিষয়। এরপর যদি কোনো ব্যক্তি বহুবিবাহের মতো নারী-সংশ্লিষ্ট সেন্সিটিভ বিষয়কে তার মিশন ভিশনে পরিণত করে তাহলে সে ব্যক্তি ওমেনাইজার হয়ে পড়ার আশংকা অনেক বেশি। দেখবেন, শো-বিজ জগতের প্রযোজক পরিচালক ইত্যাদি শ্রেণির লোকেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওমেনাইজার হয়ে পড়ে।

এটাই আমরা দেখছি বহুবিবাহ আন্দোলনের হোতাদের মধ্যে।

নারীরা মানব ইতিহাস সবচেয়ে নিকৃষ্টতর সময় অতিক্রম করছে। পশ্চিমা পর্ন ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে নারীকে সেক্স-অব্জেক্ট হিসেবে উপস্থাপন, ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে যা খুশি তা করার লাইসেন্স, পরকালহীন জীবন-দর্শনে খাও-দাও ফুর্তি করো--সব মিলিয়ে মানুষকে এক যৌনজীবে রুপান্তরিত করার সকল আয়োজন সম্পন্ন, আর এই যৌনজীবদের জীবনের প্রধানতম লক্ষ্য হলো নারী সম্ভোগ।

এক শ্রেণির মানুষকে আজকাল দেখা যাচ্ছে ইসলামকে ব্যবহার করে তাদের এই ভোগবাদিতাকে ইসলামাইজেশানের চেষ্টা করছেন। বহুবিবাহ আন্দোলনের নামে একধরনের হালাল পতিতালয় খুলে বসেছেন তারা।

যে বহুবিবাহ ছিলো নারীদের জন্য শারিরিক, মানসিক, সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তাজাল বা সেইফটিনেট তৈরির মাধ্যম সেই বহুবিবাহকে ব্যবহার করে তারা অসংখ্য নারীর জীবন তারা উলটো নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। একইসাথে এরা আধুনিক শিক্ষিত নারীদের মধ্যে পশ্চিমাদের রোপন করা ইসলামবিদ্বেষের মাত্রা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলছে।

বিবাহ কোনো আন্দোলন সংগ্রামের বিষয় নয়, বরং ব্যক্তিগত প্রয়োজনের বিষয়। বিবাহ কারো জন্য ফরজ, কারো জন্য মুসতাহাব, কারো জন্য নফল, কারো জন্য মাকরুহ আবার কারো জন্য হারাম।

কারো যদি সকল সামর্থ্য থাকে এবং প্রয়োজন অনুভব করে সে বহুবিবাহ করুক, এটা যেমন তার নিজস্ব ব্যাপার, তেমনি কেউ যদি বিয়ে একটাও না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন সেটাও তার ব্যাপার। বাট, যে সিদ্ধান্তই নেন, সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন।

আল্লাহ যা কিছু হালাল করেছেন তার মধ্যে অবশ্যই কল্যাণ রেখেছেন। এখন সেই হালালকৃত জিনিষের মাধ্যমে যদি আপনি কল্যাণ সাধন না করে সমাজের জন্য আরও অকল্যাণ বয়ে আনেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার কথা সত্য হলেও আপনি ব্যক্তি সত্য নন।

আশা করি বহুবিবাহ আন্দোলনের আড়ালে বহু নারী সম্ভোগের রাস্তা খোলা লোকগুলোর ব্যাপারে উলামায়ে কেরাম শক্ত ভুমিকা গ্রহণ করবেন।

একইসাথে আমাদের মা-বোনদেরও বলব, মায়েরা, বোনেরা শুনুন, বহুবিবাহ নারীদের নিরাপত্তা বাড়ায়, আর পুরুষের বাড়ায় বোঝা। পুরুষের মধ্যে গাধার মতো বোঝা বহনের কিছু ড্রাইভ আল্লাহ দিয়েছেন, তাই সে নিজের মেরুদণ্ড ভেঙ্গেও তা করে এবং গর্বিত বোধ করে।

আপনারা পশ্চিমা প্রপাগাণ্ডার শিকার হয়ে আপনার স্রষ্টা মহাজ্ঞানী আল্লাহর হালাল করা একটা বিধানের প্রতি এমন বিদ্বেষমূলক মনোভাব রাখবেন না। এটা আপনাদের দুনিয়া আখিরাত কোনোটার জন্যই ভালো না।

চারপাশে খোঁজ নিয়ে দেখুন, লক্ষ-লক্ষ নারীদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, অসংখ্য বিধবা-তালাকপ্রাপ্তা নারীরা স্বামী পাচ্ছেন না!

শুধু নিজে ভালো আছেন বলেই যে সমাজ ভালো আছে তা কিন্তু নয়। চোখ খুলুন। চারিদিকে তাকান। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠুন, আবেগের ঊর্ধ্বে উঠে বাস্তবতাকে মেনে নিতে শিখুন। না হলে একদিন হয়তো এই অভিশাপ আপনাকে কিংবা আপনার পরিবারকেও গ্রাস করবে।

একটা এক্সট্রিমিজমই আরেকটা এক্সট্রিমিজমের জন্ম দেয়। বহুবিবাহের প্রতি সমাজে জেঁকে বসা এক্সট্রিম বিদ্বেষের কারণেই আজ কাসেমীদের মতো ফালতু লোকেরা আরেকটা এক্সট্রিমজমের জন্ম দিয়ে নিজেদের একটা জায়গা করে নিতে পেরেছে।

একটা স্বাভাবিক বৈধ বিষয়ের প্রতি সমাজের এমন বিদ্বেষমূলক মনোভাবের সুযোগ নিয়েই কিন্তু এইসব ফালতু লোকেরা বহুবিবাহের আন্দোলন গড়ে তোলার গ্রাউন্ড পেয়েছে।

সমাজ যদি এই বিদ্বেষ ত্যাগ না করে তাহলে এক কাসেমীকে দমন করলে আরেক কাসেমী গজিয়ে উঠবে।

আশা করি আপনারা তা দেবেন না।

©️আহমেদ রফিক (হাফিযাহুল্লাহ)

20/10/2025

বিখ্যাত আলেম ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন:
যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভুলে যায়,আল্লাহ তাকে দুইটি কঠিন শাস্তি দেন:

প্রথম শাস্তি: আল্লাহও তাকে ভুলে যান।

দ্বিতীয় শাস্তি: আল্লাহ তাকে তার নিজের কথাও ভুলিয়ে দেন।

আল্লাহর ভুলে যাওয়ার মানে কী?
এর মানে হলো,আল্লাহ সেই ব্যক্তির উপর থেকে তাঁর রহমত ও সাহায্য তুলে নেন। তাকে তার নিজের অবস্থার উপর ছেড়ে দেন এবং তার কোনো ব্যাপারে আর খেয়াল রাখেন না।

আর মানুষ নিজেকে কীভাবে ভুলে যায়?

এর মানে হলো,মানুষ ভুলে যায় কোন কাজে তার আসল কল্যাণ ও সফলতা।সে নিজের ভুল-ত্রুটিগুলো আর দেখতে পায় না,তাই নিজেকে শুধরানোর কথাও তার মনে আসে না।তার অবস্থাটা ঠিক এমন একজন মারাত্মক অসুস্থ রোগীর মতো,যে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সে জানেই না যে সে অসুস্থ।তাই সে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার বা সুস্থ হওয়ার কোনো চেষ্টাই করে না।

এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কী হতে পারে যে,একজন মানুষ নিজের ভালো-মন্দ সম্পর্কেই উদাসীন? সে নিজের ভেতরের রোগগুলো জানে না এবং কীভাবে তা থেকে মুক্তি পাবে,সেই পথও ভুলে গেছে। সে ভুলে গেছে কীভাবে চিরস্থায়ী সুখ ও সফলতা অর্জন করা যায়।

অন্যদিকে যারা বুদ্ধিমান ও সফল,তারা এই দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের বিনিময়ে আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবন কিনে নিয়েছে।তারা তুচ্ছ জিনিসের বিনিময়ে মহামূল্যবান জিনিস অর্জন করেছে।

[গ্রন্থ: আল-জাওয়াব আল-কাফী, পৃষ্ঠা: ১০৩]

📝 *শায়েখ আরিফ হোসেন মাদানী* (হাফিযাহুল্লাহ)

19/10/2025

আমাদের সমাজে ইসলাম পালনের ধরন নিয়ে একটু চিন্তা করলে তিনটি ক্যাটাগরি চোখে পড়ে।

১. থেরাপিউটিক ইসলাম

প্রথম ক্যাটাগরিতে আছেন তারা, যারা ইসলামকে মূলত একটা 'থেরাপিউটিক ট্যুল' হিসেবে ব্যবহার করেন। তাদের জীবনযাপন পুরোপুরি সেক্যুলার আধুনিকতার ছকে বাঁধা; ক্যারিয়ার, লাইফস্টাইল, সোশ্যাল সার্কেল, বিনোদনের ধরন, সবকিছুই মূলধারার পশ্চিমা মডেল অনুসরণ করে। কিন্তু এই আধুনিক জীবনযাপন তাদের মধ্যে যে মানসিক চাপ, অস্থিরতা, শূন্যতা তৈরি করে, সেই টক্সিসিটি ম্যানেজ করার জন্য তারা ইসলামের কাছে ফিরে যান।

তাদের ইসলাম হচ্ছে মাইন্ডফুলনেস, মেডিটেশন, ইয়োগার মতোই আরেকটা 'ওয়েলনেস প্র্যাকটিস'। তারা হয়তো নামায পড়েন মানসিক শান্তির জন্য, কুরআন তিলাওয়াত করেন থেরাপি হিসেবে, দোয়া পড়েন পজিটিভ এফার্মেশনের মতো করে। কিন্তু ইসলাম যখন তাদের 'অথেন্টিক সেলফ' বা লাইফস্টাইলে মৌলিক পরিবর্তন দাবি করে, যখন শরিয়ার বিধান তাদের কমফোর্ট জোনকে চ্যালেঞ্জ করে, সেখানে তারা এগোতে রাজি নন।

সুদভিত্তিক ব্যাংকিং? - এখনকার যুগে তো এড়ানো অসম্ভব।
হিজাব-পর্দা? - এগুলো আরব সংস্কৃতি, অনলি গড ক্যান জাজ মি।
হালাল-হারামের বিধান? - ইনটেনশন ম্যাটারস, ফরমালিটি-ই সব না।

তাদের কাছে ইসলাম একটা 'পিক অ্যান্ড চুজ সেলফ-হেলপ সিস্টেম'-একধরনের 'স্পিরিচুয়াল বুফে' যেখান থেকে তারা যা পছন্দ, যা তাদের কমফোর্ট জোনে ফিট করে, সেটা নেবেন। বাকিটা? সেটা "কঠোর," "পুরনো," বা "প্রসঙ্গহীন" বলে ডিসমিস করে দেওয়া হয়।

২. কম্যুনাল ইসলাম: পরিচয়বাদী মুসলিম

দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে আছেন তারা, যাদের কাছে ইসলাম মূলত একটা 'এথনো-রিলিজিয়াস আইডেন্টিটি মার্কার'। এটা তাদের সোশ্যাল ক্যাপিটাল দেয়; একটা কমিউনিটি, পরিবার, বিয়ে-শাদির নেটওয়ার্ক দেয়।

বলিউডের জাভেদ আখতারের উদাহরণটা এখানে প্রাসঙ্গিক। উনার দাদার দাদা ছিলেন মাওলানা ফযলে হক্ব খাইরাবাদি যিনি ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিহাদের ফতোয়া দিয়েছিলেন এবং আন্দামানে নির্বাসিত হয়ে শহীদ হয়েছিলেন। ধার্মিক একটা পরিবারে বড় হয়েও জাভেদ আখতার নিজে হয়েছেন নাস্তিক। আবার, নাস্তিক হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে "মুসলিম" বলতেন, "কালচারাল মুসলিম" বলতেন।

আমাদের সমাজেও এমন অসংখ্য "জাভেদ আখতার" আছেন। তাওহিদ-রিসালাত-আখিরাতে তাদের আসলে কোনো বিশ্বাস নেই, বা থাকলেও সেটা এতটাই দুর্বল যে তাদের জীবনে কোনো প্রভাব ফেলে না। তারা ঈদে কুরবানি দেন, কারণ সেটা একটা সামাজিক রিচুয়াল, কিন্তু নামায-কালাম থেকে বহু দূরে।

ইসলামকে রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক পর্যায়ে দেখার ব্যাপারে তাদের তীব্র আপত্তি দেখবেন। শরিয়ার কথা উঠলে তারাই সবার আগে "তালেবানি ইসলাম," "মধ্যযুগীয় চিন্তা" বলে আপত্তি জানাবেন। তাদের ইসলাম ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং সামাজিক পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ - নট মোর দ্যান দ্যাট।

৩. ট্রান্সফরমেটিভ ইসলাম: সমগ্র জীবনের দিশা

তৃতীয় ক্যাটাগরি হচ্ছে তারা, যারা ইসলামকে একটা পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাদের কাছে ইসলাম শুধু নামায-রোযা বা পার্সোনাল স্পিরিচুয়ালিটি নয়, বরং এটা একটা ট্রান্সফরমেটিভ ফোর্স যা তাদের পুরো জীবনকে নতুন করে সাজায়।

এই মানুষগুলো বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহর দাসত্ব মানে শুধু ইবাদতখানায় নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থাৎ অর্থনীতিতে, রাজনীতিতে, পারিবারিক সম্পর্কে, ব্যবসায়, শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে। তারা কুরআন-সুন্নাহর আলোকে নিজেদের জীবনকে ক্রমাগত রিফর্ম করতে থাকেন।

তাদের জন্য ইসলাম মানে:
-ব্যক্তিগত স্তরে: তাকওয়া, আখলাক, ইখলাস।
- পারিবারিক স্তরে: ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে পরিবার তৈরি করা, সন্তানদের দ্বীনদার হিসেবে গড়ে তোলা।
- সামাজিক স্তরে: আমর বিল মা'রুফ, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে কাজ করা।
-রাষ্ট্রীয় স্তরে: আল্লাহর আইনকে জমিনে বাস্তবায়ন করার স্বপ্ন দেখা, সে জন্য চেষ্টা করা।

তারা বোঝেন যে, ইসলাম একটা পূর্নাজ্ঞ জীবনব্যবস্থা হিসাবে স্ট্যাটাস কো'-কে চ্যালেঞ্জ করবেই। তাই আধুনিকতার সাথে সংঘাত হলে তারা কমপ্রোমাইজ করেন না, বরং দ্বীনের উপর অটল থাকার চেষ্টা করেন, সেটা যতই কঠিন হোক না। নিজের কাজকর্মে ভুলত্রুটি থাকলেও সেটাকে অ্যাকনলেজ করেন, জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেন না।

আমাদের প্রত্যেকের নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত: আমি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ি?

- আমার ইসলাম কি 'কনজিউমার স্পিরিচুয়ালিটি' যেখান থেকে আমি অন্তরের শান্তি খুঁজি মাত্র, কিন্তু আমার আসল জীবনে কোন স্যাক্রিফাইস করতে আমি প্রস্তুত না?

- নাকি আমার ইসলাম শুধুই একটা 'কালচারাল আইডেন্টিটি', যেটা আমাকে একটা কমিউনিটি দেয়, কিন্তু আমার ঈমান-আমল-আখলাকের সাথে তার কোনো গভীর সম্পর্ক নেই?

- নাকি আমি সত্যিই চাই যে আমার ইচ্ছাকে আমার রবের সামনে সমর্পণ করতে? সত্যিই চাই ইসলাম আমার পুরো জীবনে প্রতিফলিত হোক - তা যতই কঠিন হোক, যতই সমাজের মূলধারার বিপরীত হোক?

প্রথম দুই ধরনের ইসলাম বেশ 'নিরাপদ ইসলাম' - এতে দুনিয়াতে তেমন কোনো মূল্য দিতে হয় না, কোনো রিস্ক নেই। কিন্তু,তৃতীয় ধরণে প্রবেশ করতে আপনাকে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করা লাগতে পারে - বন্ধুবান্ধব, লাইফস্টাইল, হারাম ইনকাম সোর্স, ইত্যাদি।

কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:

"তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশে ঈমান আনো এবং কিছু অংশে কুফরী করো ? তাহলে তোমাদের যারা এরুপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ও অপমান এবং কিয়ামতের দিন তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে কঠিনতম শাস্তির দিকে। আর তারা যা করে আল্লাহ্‌ সে সম্পর্কে গাফিল নন।" (সূরা বাকারা: ৮৫)

আরেকটি আয়াতে:

"হে মুমিনগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু" (সূরা বাকারা: ২০৮)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের সবাইকে প্রকৃত অর্থে মুসলিম হওয়ার তাওফিক দান করুন। এমন মুসলিম হওয়ার তাওফিক দিন, যারা ইসলামকে শুধু একটা আইডেন্টেটি মনে করে না, বরং পুরো জীবনের দিশা হিসেবে গ্রহণ করে। আমীন।

©️আহমেদ শাফি

17/10/2025

জামাতে সলাত আদায়ের সময় কাতার সোজা করা,ফাঁকা জায়গা বন্ধ করা☝️

ঈসা ইবনু ইব্রাহীম ..... আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তোমরা নামাযের সময় কাতারগুলো সোজা কর,পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও, উভয়ের মাঝখানে ফাঁক বন্ধ কর এবং তোমাদের ভাইদের হাতে নরম হয়ে যাও। রাবী ঈসা তাঁর বর্ণনায় “বি-আইদী ইখওয়ানিকুম” বাক্যাংশ উল্লেখ করেন নাই। তিনি আরো বলেনঃ তোমরা কাতারের মধ্যে শয়তানের দন্ডায়মান হওয়ার জন্য ফাঁক রাখবে না। যারা কাতারের মধ্যে পরস্পর মিলিত হয়ে দাঁড়াবে আল্লাহ্ তাদেরকে তাঁর রহমতের অন্তর্ভূক্ত করবেন। অপরপক্ষে যে ব্যক্তি কাতারে মিলিত হয়ে দাঁড়াবে না আল্লাহ্ তাকে তাঁর রহমত হতে বঞ্চিত করবেন। (নাসাঈ)।

ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আবূ শাজারার নাম কাছীর ইবনু মুররা। আবূ দাউদ (রহঃ) আরো বলেন, “তোমাদের ভাইদের হাতে নরম হয়ে যাও” কথার অর্থ এই যে,
কোন ব্যক্তি এসে কাতারে প্রবেশ করার চেষ্টা করতে পারে। তখন প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কাঁধ নরম করে দেবে যাতে সে সহজে কাতারের মধ্যে দাঁড়ানোর স্থান করে নিতে পারে।

সূনানে আবু দাউদ:৬৬৬
হাদিসের মানঃ সহিহ

17/10/2025

★একজন মু'মিনের অন্তর সর্ব অবস্থায় স্থীর থাকে★

কেন?

কারণ সে সকল বিষয় আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছে।সে জানে যে,সে যা পেয়েছে সেটা তার কাছ থেকে হারাতো না, আর যা হারিয়েছে সেটা তার প্রাপ্য ছিলো না।

আর এজন্যই নবী মুহাম্মদ ﷺ, ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু কে ছোটকালেই বলেছেন,

“হে বৎস! আমি তোমাকে কিছু কথা শিক্ষা দিচ্ছি—
আল্লাহকে স্মরণে রাখো,আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন।
আল্লাহকে স্মরণে রাখো,তুমি তাঁকে তোমার সামনে পাবে।
যখন কিছু চাইবে,আল্লাহর কাছেই চাও।
যখন সাহায্য চাইবে,আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাও।
জেনে রাখো— যদি সমগ্র জাতি একত্রিত হয় তোমাকে কোনো উপকার করার জন্য,তারা কেবল সেইটুকুই পারবে যা আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন।আর যদি তারা একত্রিত হয় তোমাকে কোনো ক্ষতি করার জন্য,তারা কেবল সেইটুকুই পারবে যা আল্লাহ তোমার জন্য নির্ধারণ করেছেন।
কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে, এবং লিখিত পাতাগুলো শুকিয়ে গেছে (অর্থাৎ তাকদির নির্ধারিত হয়ে গেছে)।”
সূত্র:
সহীহ তিরমিযী, হাদীস নং ২৫১৬
সহীহ বুখারী (আরও সংক্ষিপ্ত আকারে ৩২০৮ নম্বর হাদীস)

এ জন্য সাহাবাগণ এই কথার মর্মার্থ বুঝতে পেরেছিলেন।আর তাই উমর বিন খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহু বলতেন,আল্লাহর কসম! আমি প্রতিদিন সকাল এটা করি,কিন্তু এটা পরোয়া করি না যে,আমি খুশি হলাম নাকি কষ্ট পেলাম।
লোকজন বলল,হে আমীরুল মুমিনীন! কেন??

তিনি বললেন,কারণ আমি জানি না আমার খুশি হওয়াতে কল্যাণ আছে নাকি দুঃখ পাওয়ার মাঝেই কল্যাণ আছে।

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,তোমরা হয়তো কোনো কিছু ভালো মনে করো কিন্তু সেটা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর আবার হয়তো কোনো কিছুকে মন্দ ভাবো কিন্তু সেটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর।

আর এজন্যই উমর বিন আব্দুল আযীয (রাহিমাহুল্লাহ) একটা কথা বলতেন,কথাটা অনেকটা উমার রাদিআল্লাহু আনহুর কথার মতোই।আমি প্রত্যেক সকালে যখন উঠি তখন আমি দুইটা জিনিস নিয়ে উঠি। *একটা হলো সবর আরেকটা হলো শুকর।* যদি কোন পরীক্ষা আসে তো সবর করি। আর যদি কোন নিয়ামত পাই তবে তার শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।আর এজন্যই একজন মু'মিনের অন্তর সর্বদাই স্থীর থাকে।কারণ,সে তার সকল বিষয় আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে সঁপে দিয়েছে।সে আল্লাহর ফায়সালা ও তাকদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখে।সে আল্লাহর আদেশের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে।।এজন্য ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,যে ব্যক্তি আল্লাহকে তার নাম ও গুণাবলী সহ নিশ্চিত ভাবে চিনতে পেরেছে,তার উপর যদি কোন দুর্যোগ বা বিপদআপদ আসে,সেটার মাঝেই তার জন্য কল্যাণ ও উপকার রয়েছে যা তার সাধারণ জ্ঞানে ধরবে না।কিন্তু বান্দা যা পছন্দ করে তার চেয়ে যা সে অপছন্দ করে তার মাঝেই তার জন্য কল্যাণ রয়েছে।

অনুরূপভাবে আরেকজন সালাফ একটি চমৎকার কথা বলেছেন,তিনি বলেন যে, জেনে রাখো বান্দা নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার চেয়ে আল্লাহ বান্দার জন্য যা নির্ধারণ করেন সেটাই বেশি উত্তম।

আরো একজন সালাফ একটি কথা বলেছেন যা স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। তিনি বলেন, *যদি তুমি গায়েবও জানতে পারো তবুও তুমি আল্লাহর নির্ধারণ ছাড়া নিজের জন্য ভালোটা চয়ন করতে পারবে না।* আর তাই মু'মিন আল্লাহর জন্য আত্মসমর্পণকারী, অনুগত ও নমনীয় হয়।আর তাওহীদ ছাড়া এই আনুগত্যশীল হওয়া সম্ভব নয়। মু'মিনের জবান ও অন্তর শুধু আল্লাহর জন্যই শূন্যতা অনুভব করবে। সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে না।আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে আশা করবে না।আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দিকে অন্তর ঝুঁকবে না। এমনকি মানুষকেও না।অবস্থাটা এমন হবে যে, কোনো মানুষকেও সে ভয় করবে না। কেনোনা মানুষ তোমাকে যত বড় বিপদেই ফেলুক না কেনো সেটাও আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়।কারণ সব কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে,মানুষের পক্ষ থেকে নয়। *মানুষ শুধুমাত্র ওসিলা।* কিন্তু কাজ আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়।মানুষ তো নিজেই নিজের কোনো উপকার বা ক্ষতি করার সক্ষমতা রাখে না,তাহলে সে তোমার উপকার বা ক্ষতি করবে কিভাবে?? তাহলে কেনো তুমি অন্যকে ভয় করবে,বরং অন্তরে আল্লাহর ভয় রাখো।আর আল্লাহর কাছে চাও তিনি বিষয়গুলো তোমার আয়ত্ত্বে এনে দিবেন। অথবা এমন কাউকে তোমার অনুগত করে দিবেন যে কিনা তোমার চলার পথ সহজ করে দিবে।যারা তোমার দুনিয়াতে ও আখেরাতের কাজে সাহায্য করবে।

-সংগৃহীত

আহমাদ ইবন মানী (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ এমন দুটো অভ্য...
14/10/2025

আহমাদ ইবন মানী (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ এমন দুটো অভ্যাস রয়েছে যদি কোন মুসলিম সে দুটো আয়ত্ব করতে পারে তবে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। জেনে রাখ,এ দুটো আভ্যাস খুবই সহজ কিন্তু এ আনুসারে আমলকারীর সংখ্যা খুবই কম। *প্রত্যেক সালাতের পর দশবার সুবহানাল্লাহ দশবার আলহামদু লিল্লাহ দশবার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে।*

আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে হাতের সাহায্যে তা গণনা করতে দেখেছি।নবী ﷺ বলেনঃ যবানে তো মোট হয় একশত পঞ্চাশবার আর মীযানের পাল্লায় হবে এক হাজার পাঁচশতবার।

আর যখন শয্যাগ্রহণ করবে তখন *সুবহানাল্লাহ,আল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহ পাঠ করবে একশতবার।* এ যবানে তো হল একশ কিন্তু মীযানের পাল্লায় হবে হাজার। তোমাদের মাঝে এমন কে আছে যে রাত দিনে দু' হাজার পাঁচশ গুনাহ করে! সাহাবীগণ বললেন আমরা এ দুটো অভ্যাস কেন আয়ত্ব করতে পারব না?

নবীজী ﷺ বললেনঃ তোমাদের একজন যখন সালাতে থাকে তখন শয়তান আসে আর তাকে বলতে থাকে এটা মনে কর ওটা মনে কর। এমন কি সে সালাত (নামায) শেষ করে ফেলে। হয়তো সে কারণে সে তা আয়ত্ত করতে পারে না। ফলে তার শয্যাগ্রহনের সময় সে আসে এবং তাকে ঘুম পাড়াতে থাকে।শেষে সে ঘুমিয়ে যায়।

-ইবনু মাজাহ ৯২৬, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৪১০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

হাদীসটি হাসান-সহীহ। শু'বা ও ছাওরী (রহঃ) এই হাদীসটি আতা ইবনুস সাইব (রহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আ’মাশ (রহঃ)-ও এটি আতা ইবনুস সাইব (রহঃ) থেকে সংক্ষিপ্তাকারে রিওয়ায়াত করেছেন। এ বিষয়ে যায়েদ ইবন ছাবিত আনাস ও আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ

04/10/2025

রাজা,প্রেসিডেন্ট আর প্রধানমন্ত্রীদের শোসনের শিকার হওয়া মানুষ মনে করে তাদের দুঃখের কারণ কোনো ব্যক্তিবিশেষ। ভাবে তাদের দুর্দশার জন্য দায়ী কিছু অযোগ্য বা দুর্নীতিগ্রস্ত শাসক অথবা কোনো দল।

তাই তারা ইনসাফের আশায়, যুলুম থেকে মুক্তির খোঁজে নতুন সরকারের পেছনে ছোটে।একেকবার একেক ব্যক্তি কিংবা দলের পেছনে পড়ে। কিন্তু অত্যাচারের চাবুক পিঠ থেকে সরে না।

ধোঁকায় পড়বেন না। এ ব্যবস্থার গোড়াতেই পচন।

যতোদিন মানুষের তৈরি নিযামকে আল্লাহর নিযামের জায়গায় বসানো হবে, যতোদিন মাখলুককে ভয় করা হবে খালিক্বের চেয়ে বেশি,যতোদিন রাব্বুল আলামীন-এর কথার ওপর গোলামের কথাকে প্রাধান্য দেয়া হবে—

ততোদিন মযলুম শোসিত হবে,দাম্ভিকরা অত্যাচার করবে,আদল ও ইনসাফ থাকবে নির্বাসিত।

সেক্যুলার জাতিরাষ্ট্র নামের এই মূর্তিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত,নতুন নতুন যালিম জন্ম নেবেই।নষ্ট শেকড় থেকে কেবল বিষবৃক্ষই জন্ম নেবে।

এক ফিরাউনকে সরিয়ে আরেক ফিরাউনকে বসিয়ে আযাদী আসবে না।এক যালিমকে ছুড়ে ফেলে নতুন যালিম তৈরি করা আমাদের দায়িত্ব না।

আমাদের দায়িত্ব অত্যাচারের এ কাঠামোকেই উপড়ে ফেলা।

একমাত্র ইসলামি শরীয়াহ,যা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত,বান্দার হক আর পৃথিবীর বুকে আদল ও ইনসাফ ফিরিয়ে আনতে পারে।

একমাত্র মুক্তি হলো আল্লাহর সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নেয়া।কেবল মুখে না,বাস্তবে, আমলে।

আসমান ও যমীনসমূহের একচ্ছত্র মালিকের নাযিল করা শরীয়াহ দিয়ে সমাজকে সাজানো,এবং কর্তৃত্বের দাবিদার প্রত্যেক তাগুতকে সমূলে উৎপাটন করা ছাড়া আযাদী আসবে না।ইনসাফ আসবে না।আদল প্রতিষ্ঠিত হবে না।

-আসিফ আদনান (হাফিযাহুল্লাহ)

অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহনের বিধান☝️পূজা দেখতে যাওয়া ও শুভেচ্ছা জানানো মুসলিমদের জন্য নিষেধ❗"ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত ...
27/09/2025

অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহনের বিধান☝️

পূজা দেখতে যাওয়া ও শুভেচ্ছা জানানো মুসলিমদের জন্য নিষেধ❗

"ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত একমাত্র গ্রহনযোগ্য দ্বীন বা জীবন বিধান। আল্লাহ আমাদেরকে কুরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন \"নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে একমাত্র গ্রহনযোগ্য বা মনোনীত জীবন বিধান হচ্ছে ইসলাম\"। এছাড়া অন্যান্য জীবন বিধান বা ধর্ম বাতিল। তাহলে অন্যান্য ধর্মের মানুষদের প্রতি আমাদের মুআ'মালাত বা আচরণ-ব্যবহার কেমন হবে?

কুরআনে আল্লাহ স্পষ্ট করে বলেছেন \"তোমরা অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রভুদের গালি দিও না\"। তাদেরকে গালি দিলে তারা মনে কষ্ট পাবে এবং আমাদের প্রভু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'লাকেও গালি দিবে। এজন্য অন্য ধর্মের দেবতা, ধর্ম গ্রন্থ বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে গালি দেয়া বা হেয় প্রতিপন্ন করা ইসলামে নিষিদ্ধ।

তাহলে আমরা কি তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাব? তাদেরকে শুভেচ্ছা জানাব? সেটাও গ্রহনযোগ্য নয়!

আমাদের দেশের এক শ্রেণীর মানুষকে বলতে শোনা যায় \"ধর্ম যার যার, উৎসব সবার\"। এটা একটা অমানবিক ও অযৌক্তিক কথা। কোনো বিবেকবোধ সম্পন্ন ও মানবিক লোক এটা বলতে পারে না। ধর্মীয় বিশ্বাস যেই উৎসবের সাথে জড়িত থাকে সেই উৎসবকে সকলের জন্য সাধারণ করতে চাওয়া একটা হঠকারীতা। কারণ এক ধর্মের উপাসনা বা উৎসব আরেক ধর্মের ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক। তাই একমাত্র ধর্মহীন বা নাস্তিক ব্যক্তির পক্ষেই বলা সম্ভব \"ধর্ম যার যার, উৎসব সবার\"।

মুসলিমদের জন্য জাস্ট দেখার জন্য বা মজা করার জন্য অন্য কোনো ধর্মের ধর্মীয় উৎসবে যোগ দেয়া বৈধ নয়। অথবা তাদেরকে তাদের উৎসবে শুভেচ্ছা জানানোও বৈধ নয়। কারণ আমরা এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে প্রভু বলে স্বীকার করি না। *তাই আমরা যদি অন্য ধর্মের ধর্মীয় উৎসবে শুভেচ্ছা জানাই তাহলে প্রকারান্তে তাদের করা শিরকের উৎসবে আমরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।* কারণ তাদের কাছে যেটা তাদের ধর্মের ইবাদত, আমাদের কাছে সেটা আল্লাহর সাথে শিরক করা। তাই অন্য ধর্মের ইবাদতে আমাদের উপস্থিত থাকা বা তাদেরকে *শুভেচ্ছা জানানো উচিত নয়* ।

আমরা কোনো হারাম কাজ হতে দেখলে কোনো মুমিন কি তা সেলিব্রেট করতে পারি? উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় কোথাও মদ খাওয়া হচ্ছে বা সুদের কারবার হচ্ছে বা কোথাও শুকরের মাংস খাওয়া হচ্ছে। আমরা মুমিনরা কি বলতে পারি \"হ্যাপি ড্রিংকিং\"? বা বলতে পারি \"আপনাদের সুদ খাওয়া বা শুকর খাওয়া শুভ হোক\"? কখনোই না! কারণ এগুলো আমাদের কাছে হারাম। আমরা কোনো হারামের ব্যাপারে শুভ কামনা জানাতে পারি না।

একই ভাবে আমরা অন্য ধর্মের কাউকে বাধ্য করতে পারি না আমাদের নামাজ, আমাদের ঈদে একাত্মতা জানাতে। হিন্দু ধর্মে গরু হত্যা করা নিষেধ। আমরা কুরবানিতে গরু কুরবানি করি। তাদের ধর্মীয় অনুসাশনে কিন্তু এটা সাপোর্ট করবে না আমাদের কুরবানির ঈদে আমাদের গরু জবাইয়ের সময় সামনে থাকা বা শুভেচ্ছা জানানো। কারণ আমাদের কাছে এটা ইবাদত কিন্তু তাদের কাছে এটা পাপ। তাই বলা হয় এক ধর্মের ইবাদত অন্য ধর্মের পাপ হিসাবে গণ্য হতে পারে।

অন্য ধর্মের ধর্মীয় উপাসনা ও উৎসব পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসলামী রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মুসলিম সমাজের দায়িত্ব হচ্ছে তারা যেন তাদের ধর্ম-কর্ম নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে সে ব্যাপারে সহযোগিতা করা। তাদের প্রতি কটুক্তি বা অসহযোগিতামূলক কোনো আচরণ করা কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয়। যেমনি ভাবে তাদের উৎসবে অংশগ্রহন ও শুভেচ্ছা জানানোও বৈধ নয়।

আল্লাহ আমাদেরকে সকল প্রকার শিরক ও বিদআত থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন।

©️Muslims Day

24/09/2025

নিঃসন্দেহে, যে ব্যক্তি আল্লাহর আইন ও বিধান অনুযায়ী বিচার-ফায়সালা করাকে ফরয বলে বিশ্বাস করে না, সে কাফির।
একইভাবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে নিজের মনগড়া বা প্রচলিত আইন অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার-ফায়সালা করাকে বৈধ এবং ইনসাফভিত্তিক মনে করে, সেও কাফির। কারণ, আদল বা ন্যায়বিচার করতে তো সব জাতিই বলে।
অনেক ধর্মের অনুসারীরা তাদের জ্ঞানী ব্যক্তিদের তৈরি করা আইন ও বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করাকেই ন্যায়বিচার বা 'আদল' হিসেবে গণ্য করে।
কিন্তু ইসলামে নিজেদের সম্পৃক্তকারী এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা আল্লাহর আইন ও বিধানকে বাদ দিয়ে প্রচলিত আইন দিয়ে বিচার ফায়সালা করে।
যেমন, গ্রাম্য বেদুঈনরা তাদের দলপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিচারকার্য চালাত। আর এই দলপতি ও নেতারা তাদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য ছিল। তারা ভাবত, কুরআন-হাদীস বাদ দিয়ে আমাদের নেতা বা দলপতিদের মত অনুযায়ী বিচার করাই বেশি উপযোগী।
আর এটাই হলো কুফরি। অনেক মানুষ ইসলাম মানা সত্ত্বেও নিজেদের অনুসরণীয় নেতাদের আদেশে প্রচলিত নিয়মেই বিচার-ফায়সালা করে।
এই লোকেরা যদি মানব-রচিত আইন দিয়ে বিচার করা হারাম জানা সত্ত্বেও আল্লাহর বিধান না মেনে এর বিপরীতে অন্য বিধান দ্বারা বিচারকার্য ও দেশ পরিচালনা করাকে হালাল (বৈধ) মনে করে, তবে তারা কাফির।

-শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ)
📖মিনহাজুস্ সুন্নাহ্ আন্ নাবাবিয়্যাহ্

Address

Sylhet

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Human Life posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram