15/11/2025
সরিষার তেল আমাদের ঘরের রান্না থেকে শরীরের যত্ন সব জায়গায়ই এক অসাধারণ উপকারি তেল।
গায়ে লাগানো (Body massage)রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। শীতের সময় ত্বক নরম রাখে। পেশি ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত অস্বস্তিতে আরাম দেয়। শরীরে উষ্ণতা তৈরি করে। শীতে অনেক পরিবার বাচ্চাদের গায়ে সরিষার তেল মালিশ করে।পেশি ও হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। ঠান্ডা–কাশির ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। শীতকালে ব্যবহার শরীরকে উষ্ণ রাখে। ত্বকের শুষ্কতা কমায়। জয়েন্ট পেইন থাকলে মালিশে আরাম দেয়।
এখন আসি ভর্তায়, সরিষার তেল ভর্তার স্বাদই বদলে দেয়! আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, সর্ষে ভর্তা, ডাল ভর্তা ডিম ভর্তা
সবকিছুতেই এর কাঁচাগন্ধ একটা আলাদা ফ্লেভার আনে।
মুড়ি + পেঁয়াজ + কাঁচামরিচ + সরিষার তেল। এই কম্বিনেশনটা আমাদের ঐতিহ্যের স্বাদ! হালকা খাবার। সহজ পাচ্য
এছাড়া ইলিশ মাছ ভাজায়। সরিষার তেল না হলে ইলিশ ভাজার স্বাদই আসে না—ইলিশের গন্ধ ও ফ্লেভার বাড়ায়। বেশি তাপ সহ্য করতে পারে, তাই ফ্রাইয়ে ভালো খাস্তা ভাব দেয়। যাস্ট জিভে জল চলে আসল।
সরিষার তেলে থাকে MUFA (Monounsaturated Fat),PUFA, বিশেষ করে Omega-3।
এক্টু বুঝিয়ে বলি, MUFA = Heart Friendly FatPUFA = “Brain + Anti-inflammatory Fat.
শরীর সহজে ভেঙে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে। LDL কমাতে / HDL বাড়াতে সহায়তা করে।।Fat oxidation একটু বাড়ায় (চর্বি পোড়ানোর ক্ষমতা)
Thermogenesis বাড়ায় (Heat Production)
সরিষার তেলের ঝাঁঝালো উপাদান Allyl isothiocyanate শরীরে সামান্য thermogenic effect তৈরি করে।
এর মানে: শরীর ক্যালরি পোড়াতে একটু বেশি সক্রিয় হয়।
সরিষার কাঁচা তেলের ঝাঁজ— লালা (saliva), পাকস্থলীর এনজাইম, পিত্তরস bile Juice সামান্য বাড়িয়ে দেয়।ফলে, হজম দ্রুত হয় InterestingIy ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট ব্রেকডাউন সহজ হয়।
Anti-inflammatory Effect ওমেগা–৩ এর কারণে—সেলুলার ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করে. Metabolic rate-এর overall efficiency একটু ভালো হয়... পরিমিত সরিষার তেল—কোষে গ্লুকোজ uptake ভালো করে. post-meal glucose spike কিছুটা কমায়
(বিশেষ করে refined oil-এর তুলনায় ভালো)
এখন আসি খাবেন কিভাবে?
সরিষার কাঁচা তেলের ঝাঁজ— অন্ত্রের চলাচল (motility) একটু বাড়ায় খাবার দ্রুত হজম হতে সাহায্য করে এটা প্রমানিত কিন্তু কখন সমস্যা করতে পারে?
বেশি কাঁচা তেল acidity বাড়াবে। বা, Gastritis/GERD থাকলে কাঁচা তেল সাবধানে খাবেন। ভাজা খাবার বেশি হলে lipid oxidation হতে বিপরীত ফল হতে পারে??
তাহলে কি ভর্তা খাওয়ার আগে তেল গরম করে পিয়াজ বাগার দিয়ে খেলে ভাল? না কাঁচা পেয়াজ কাঁচা তেল দিয়ে চটকে ভর্তা খাওয়া ভালো?
আসলে ২ ধরনের ভর্তা মেকিং টা ২ জন মানুষের জন্য প্রযোজ্য। যাদের হাইপারটেনশন আছে তারা তেলে বাগার দিয়ে লবণ দিয়ে ভর্তা মাখাবেন আবার যাদের কোলেস্টেরল হাই তারা হাতে চটকে ভর্তা খাবেন।
কাঁচা পেঁয়াজ + কাঁচা সরিষার তেল কোন ক্ষেত্রে ভালো?
স্বাদের দিক থেকে আসল দেশি ভর্তার ঘ্রাণ কাঁচা তেলেই আসে। ফ্লেভার বেশি ঝাঁঝালো ও টাটকা।আলু, ডাল, বেগুন, সর্ষে ভর্তায় সেরা কম্বিনেশন। কাচা লবণ ( লো ব্লাড প্রেশার খেতে পারেন)
স্বাস্থ্যগত দিক, ওমেগা-৩ ও MUFA/PUFA সবচেয়ে বেশি থাকে।অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নষ্ট হয় না। হজম এনজাইম স্টিমুলেশন হয় (কাঁচা তেলের ঝাঁজ)। তেল কম লাগে → ক্যালরি কম ( ১ গ্রামে ৯ কিলোক্যালরী )
যাদের উপযুক্ত: সাধারণ মানুষ. কম তেল খেতে চান। CVD-risk কমাতে চান।
যাদের সাবধানে , গ্যাস্ট্রিক/GERD। IBS পেশেন্ট। অম্লতা বেশি হয়—তাদের তেল সামান্য কম দিতে হয়
তেল গরম করে পেঁয়াজ বাগার দিয়ে ভর্তা → কোন ক্ষেত্রে ভালো?
স্বাদের দিক থেকে ঝাঁজ কমে।অনেকের পছন্দ মতো নরম স্বাদ হয়।পেঁয়াজ ভাজা সুবাস যোগ হয়। কাঁচা তেলের গন্ধ যারা সইতে পারে না তাদের জন্য পারফেক্ট
ঝাঁজ কমলে গ্যাস কম হয়। পেটের জন্য সহনীয়। তবে PUFA/MUFA কিছুটা নষ্ট হয়। ক্যালরি বাড়ে (কারণ বাগারে তেল বেশি লাগে)
গ্যাস্ট্রিক/GERD আছে বা কাঁচা তেলের গন্ধ সহ্য হয় না।বাচ্চাদের জন্য (ঝাঁজ কমাতে)
একটু বলি, GERD কি??? যখন পাকস্থলীর অ্যাসিড বারবার খাদ্যনালীতে উঠে আসে এবং বুকজ্বালা, গলা জ্বালা বা টক ঢেঁকুর তৈরি করে তখন তাকে GERD বলা হয়।
লিখলে শুধু লিখতেই ইচ্ছা করে।
ধন্যবাদ প্রিয় শিমুল আপা