19/10/2025
দীপাবলির আগে চোদ্দ শাক খাওয়ার নিয়ম, কোন শাকের কী গুণ?
এই নিয়মের আড়ালে উপকারিতা অফুরান। এসব শাকের ভেষজ ও পুষ্টিগত গুণ যথেষ্ট ১৪ রকম শাক খাওয়ার সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানের নিবিড় সম্পর্কের কথা জেনে নিন -
1. ওল - ওলের পাতা রক্ত আমাশার সমস্যা এবং ডিসেন্ট্রি সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।
2. কেউ- কেঁউ পাতার রস ভাল হজমকারক ও ক্ষুধাবর্ধক। বাতের অসুখ, কোষ্ঠকাঠিন্য, কুষ্ঠ, কৃমি, চুলকানি, ইত্যাদি রোগে ব্যবহৃত হয়।
3. জয়ন্তী- বহুমূত্ররোগ বা ডায়াবেটিস (যা ডায়াবেটিস মেলাইটাস নামেও পরিচিত) এবং শ্বেতীর চিকিৎসায় কাজে লাগে।
4. নিম- নিমপাতা খেলেই বশ মানে বহু অসুখ । এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ যা ক্ষত সারায়, খুসকি দূর করে, ইমিউনিটি করে জোরদার, ত্বকের নানারকম অসুখ সারায় এবং ব্লাড সুগার কমাতে এর জুড়ি নেই।
5. কালকাসুন্দে- অ্যালার্জি, কোষ্ঠবদ্ধতা, জ্বর, ও ক্ষত নিরাময়ে কালকাসুন্দার পাতার রস ব্যবহৃত হয়।
6. সরিষা- ভিটামিন K,C ও E এবং ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ উৎস হল এই শাক যা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী।।
7. বেতো বা বেথুয়া- এই শাকে থাকা নানারকম ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস ও জিঙ্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ আটটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। কোষ্ঠবদ্ধতা, রক্তাল্পতা, অম্বল, কৃমি, মুখে ঘা, ত্বকের রোগ, বাত ও অর্শ প্রতিরোধে বেথুয়া শাক খুব উপকারী।
8. গুলঞ্চ- গুলঞ্চ শাক খেলে অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি পায় । ডায়াবেটিস, যক্ষ্মা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বাত, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হেপাটাইটিস, পেপটিক আলসার, গনোরিয়া, সিফিলিস, শোথ, জ্বর ইত্যদি নানা রোগের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় গুলঞ্চ ব্যবহৃত হয়।
9. শুষনি- শাক ও ভেষজ উদ্ভিদ হিসাবে শুষনি খুব পরিচিত। ভোজ্য অংশ পাতা, নিদ্রাহীনতায় যাঁরা ভোগেন তাঁদের নিয়মিত শুষনি শাক খেলে কাজ দেয়।
আয়ুর্বেদে বলা হয়, এই শাক নিয়মিত খেলে মাথার যন্ত্রণা এবং মানসিক চাপ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, গায়ে ব্যথা, পায়ের পেশির অনিয়ন্ত্রিত সংকোচন, বাত, উচ্চ রক্তচাপ, জিভে ও মুখে ক্ষত, চর্মরোগ ইত্যদি দূর হয়।
10. হেলেঞ্চা বা হিঞ্চে- হেলেঞ্চাকে রক্তশোধক, পিত্তনাশক, ক্ষুধাবর্ধক, হিসাবে ব্যবহৃত করা হয়। আয়রন থাকায় রক্তাল্পতার সমস্যা কমে নিয়মিত খেলে, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ে। হেলেঞ্চা শাকে যথেষ্ট অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে তাই রোগ প্রতিরোধী ভূমিকা রয়েছে। মাথার যন্ত্রণায় মাথায় এই শাক বেটে লাগালে যন্ত্রণা কমে। কমে ব্লাড সুগারের মাত্রাও।
11. শেলুকা বা শুলফা - মাতৃদুগ্ধের পরিমাণ বাড়াতে ও বাচ্চাদের পেটের অসুখ সারাতে শুলফা শাক খুব উপকারী। বাচ্চাদের গ্রাইপ ওয়াটারের একটা উপাদান এই শুলফা শাক থেকে আসে। চোখের রোগ, চোখে ঘা, পুরানো ক্ষত, জ্বর, ইত্যদি সারাতে শুলফা খুবই কার্যকর।
12. পটলপত্র বা পটলের পাতা- অ্যানিমিয়া কমাতে ও রক্তশোধক হিসাবে এবং লিভার ও চর্মরোগ সারাতে পটলপাতা খুব কার্যকর। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে ব্যবহার হয়। হজম ক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া ও খিদে বাড়ায়। ক্ষতস্থানে পটলপাতার রস লাগালে তাড়াতাড়ি সারে।
13. ঘেঁটু/ঘণ্টাকর্ণ- এর পাতাতে প্রচুর ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। চুল পড়া, হাঁপানি, কফ, বাত, জ্বর, চর্মরোগ, লিভারের রোগ, ইত্যদি রোগ প্রতিরোধে ঘেঁটু পাতা খুব কার্যকর।
14. শালিঞ্চ বা সাঁচিশাক - চোখ, চুল ও ত্বকের জন্য এই শাক খুব উপকারী। ডায়েরিয়া, অজীর্ণ চিকিৎসায় এই শাক খেলে উপকার হয়।