06/03/2025
করসোল বা টক আতা
-------------------------------
কথায় বলে, হুজুগে বাঙালি! এ-জাতির আবেগ বেশি, কিন্তু জ্ঞান কম।
বর্তমানে ফেসবুকে বিভিন্ন প্রোডাক্টের ছড়াছড়ি।তাদের মধ্যে করসোল বা টক আতা অন্যতম।
করসোলের পাতায় ক্যান্সার ভালো হয়, কেমোথেরাপির প্রয়োজন পড়ে না... ইত্যাদি ইত্যাদি।
বলে রাখা ভালো, ভেষজ (Drug) এবং ঔষধ (Medicine) একই জিনিস নয়।ভেষজের যেমন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে, ঠিক তেমনি রোগ সৃষ্টি করাও শক্তি আছে।
করসোলে ক্যান্সার ভালো হয় বা কেমোথেরাপি লাগে না; এই কথা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক।
না, এটা সত্যি নয়। করসোলের পাতা বা ফল খেয়ে কেমোথেরাপির বিকল্প হিসেবে নেওয়া যায়—এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, করসোলের নির্যাস ল্যাবরেটরিতে বা প্রাণী পরীক্ষায় ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে পারে, তবে মানুষের শরীরে এর কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা প্রমাণিত হয়নি। তাই কেমোথেরাপির বদলে করসোল ব্যবহার করা বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এটি প্রমাণিত চিকিৎসা পদ্ধতি নয় এবং চিকিৎসার দেরি করলে ক্যান্সার আরও গুরুতর হতে পারে।
ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট (NCI), আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি (ACS), এবং FDA—কোনো সংস্থাই করসোলকে ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে অনুমোদন দেয়নি।
করসোলের পাতায় অ্যানোনাসিন (Annonacin) নামক যৌগ থাকে, যা স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে এবং পারকিনসন রোগের মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে লিভার ও কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার নির্ধারিত পদ্ধতিই (যেমনঃ কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন, সার্জারি) সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর। করসোলকে শুধুমাত্র একটি সহায়ক খাদ্য উপাদান হিসেবে খাওয়া যেতে পারে, তবে এটি কোনোভাবেই মূল চিকিৎসার বিকল্প নয়।
বিঃদ্রঃ পৃথিবীর অধিকাংশ উদ্ভিদের পাতায় অ্যান্টটক্সিডেন্ট বা ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসকারী উপাদান থাকে।যেমনঃ পেয়ারা, আম, কলাপাতা ইত্যাদি।
আমাদের আবেগ বা মূর্খতাকে পুঁজিকরে কিছু বাটপার ও প্রতারক লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে।