22/11/2022
🔰হাড় ও জয়েন্টের রোগে হোমিওপ্যাথি, পর্ব-৪
✅বার্সাইটিসঃ
বার্সার প্রদাহ, ফুলা বা ইরিটেশনকে বার্সাইটিস বলে।
মানবদেহে প্রায় ১৬০ টি বার্সা রয়েছে। অস্থিসন্থির উপরিভাগে লুব্রিকেটিং ফ্লুইড সহ যে থলির মত দেখতে পাওয়া যায় সেটিই মুলত বার্সা। টেন্ডন, পেশি ও হাড়ের মধ্যবর্তী গদি বা কুশন হিসেবে বার্সা কাজ করে। আমাদের হাঁটাচলা, দৌড়াদৌড়ি, নড়নচড়নের সময় ঘর্ষণ কমানোর জন্যই মুলত বার্সার অবস্থান।
যখনই বার্সার প্রদাহ ঘটে তখন উক্ত সন্ধির নড়নচড়ন খুব ব্যথাকর হয়ে ওঠে।
বার্সাইটিস সাধারণত শোল্ডার, এলবো, এঙ্কেল, হাটু,পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে হয়ে থাকে।
✅কারনঃ
✨শারীরিক পরিশ্রম, যেমনঃ খেলাধুলা, ভারী বস্তু ✨উত্তোলন ইতাদি
✨আঘাত
✨বার্ধক্য
✨ইনফেকশন
✨বিভিন্ন রোগ, যেমনঃ গাউট,রিউমাটয়েড আর্থাইটিস ইত্যাদি।
✅লক্ষণঃ
আক্রান্ত জয়েন্ট-
✨ফুলা এবং লালচে বর্ণ ধারন
✨ব্যথা
✨নড়নচড়নে বা চাপে ব্যথার বৃদ্ধি
✅ডায়াগনোসিসঃ
✨ফিজিক্যাল এক্সাম
✨দৈনন্দিন কাজকর্মের ইতিহাস ও সাম্প্রতিক আঘাতের ইতিহাস জানা।
ল্যাব টেস্টঃ
✨সিবিসি
✨বার্সা থেকে ফ্লুইড কালেকশন করে পরীক্ষা
✨আলট্রাসনোগ্রাফি
✨এক্সরে
✨এমআরআই
✅হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
❝বার্সাইটিসের প্রধান মেডিসিন এপিস মেল।❞
রুটা, বেলিস পার, রাস টক্স, ব্রায়োনিয়া, সাইলিয়াও প্রয়োজন হতে পারে।
সাধারণত চিকিৎসার শেষের দিকে আরোগ্য গতি তরান্বিত বা সমাপ্ত করতে সাইলিশিয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
✅এপিস মেলিফিকাঃ
✴️প্রধান নির্দেশকঃ তরুন প্রদাহ(ডি/ডিঃ বেল,একোনাইট)
✴️জ্বালাকর, বিদ্ধকর,পরিবর্তনশীল ব্যথা
তাপ প্রয়োগে বৃদ্ধি,স্পর্শে বৃদ্ধি (এমনকি সামান্যতম স্পর্শে)
✴️বিকেল ৪-৬ টায় বৃদ্ধি
ঠান্ডা প্রয়োগে,সতেজ বাতাসে উপশম।
✅নোটঃ
✨জ্বালা + বিদ্ধকর হুলফুটানো ব্যথা = এপিস
✨জ্বালা + চুলকানি = সালফার
✨জ্বালা + ক্ষতকর ব্যথা = কস্টিকাম
✅রুটা গ্র্যাভিওলেনসঃ
✴️আর্নিকা + রাস টক্সের লক্ষন, লিগামেন্ট ও পেরিঅস্টিয়াম সম্পর্কিত লক্ষন।
আঘাত→আড়ষ্টতা→ভারবোধ
টেন্ডন ও পেরিঅস্টিয়ামে ব্যথা।
✴️ঠান্ডায়, বিশ্রামে বৃদ্ধি, নড়চড়ায় উপশম
অবস্থান পরিবর্তনে উপশম।
✅বেলিস পেরেনিসঃ
আর্নিকার চেয়ে গভীরে ক্রিয়াশীল।
অতিরিক্ত পরিশ্রম হেতু ক্ষতকর ব্যথা
স্পর্শে, হঠাৎ শীতলীকরনে বৃদ্ধি
ঠান্ডায় উপশম ( রাস টক্স!)
চলমান নড়াচড়ায় উপশম
✅রাস টক্সিকোডেন্ড্রনঃ
হিউম্যান ব্যারোমিটার।
শারীরিক অস্থিরতা
সন্ধির মারাত্মক আড়ষ্টভাব তৎসহ ক্ষতকর ব্যথা
জ্বালাকর ব্যথা, গুলি করার মত ব্যথা, টেনে ধরার মত ব্যথা
✴️বৃদ্ধিঃ বিশ্রামে,রাতে, নড়াচড়ার শুরুতে, কতক্ষণ টানা হাঁটাচলা করার পরে, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে, ঝড়ের পরে।
✳️উপশমঃ নড়াচড়া, ধীরে নড়নচড়ন, অঙ্গমর্দন, দক্ষতার সহকারে হস্ত চালন, তাপে, শুষ্ক গরম আবহাওয়া, অবস্থানের পরিবর্তন।
✅ব্রায়োনিয়া এলবাঃ
✴️ব্রাই ইজ ড্রাই!
✴️প্রধান নির্দেশকঃ পুরাতন প্রদাহ।
সামান্যতম নড়াচড়াও বৃদ্ধি, এমনকি চোখের পাতার নড়নচড়নেও!
রাত ৯ টায় বৃদ্ধি
গভীর শ্বাস নিলে
হালকা চাপে বৃদ্ধি
✳️উপশমঃ বিশ্রামে, পরিপূর্ণ বিশ্রামে, জোরে চাপ দিলে, ব্যথাযুক্ত পার্শ্বে শয়নে।
------------------------------------------------------------------------
ডাঃ মোহাম্মদ আসলাম হাওলাদার
বিএইচএমএস, ঢাবি
মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর।
০১৭৮৫৭০৪৬৩২