29/11/2025
কিসমিস কি ব্লাড সুগার বাড়ায় নাকি কমায়? নতুন গবেষণা চমকে দিয়েছে
কিসমিস দেখতে যত সরল, এর ভেতরে লুকিয়ে থাকা শক্তি নিয়ে অনেকেই ভয় পান, কারণ অনেকের ধারণা কিসমিস খেলে নাকি ওজন বেড়ে যায়, ব্লাড সুগার হঠাৎ বাড়ে, এমনকি লিভারের ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু এই ভয় আর অন্ধ বিশ্বাসের কারণে আমরা অনেক সময় একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক খাবারকে দূরে সরিয়ে রাখি। অথচ সত্য হলো, কিসমিসের সঠিক ব্যবহার না জানার কারণেই এমন ভুল ধারণা তৈরি হয়, আর তাই আজকের তথ্যগুলো আপনাকে চমকে দেবে।
গবেষণা বলছে, সূর্যের আলোতে শুকানো আঙুরের এই ছোট দানায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘনমাত্রা থাকে যা শরীরের টক্সিন দূর করতে অসাধারণভাবে কাজ করে। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে কিসমিসে থাকা রেসভেরাট্রল কোষের ক্ষয় কমিয়ে শরীরকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দেয়। আরেকটি গবেষণা জানায়, প্রতিদিন ৪ থেকে ৬টি কিসমিস খেলে পটাশিয়াম এবং ফাইবারের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা হৃদযন্ত্রের চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। যাদের প্রতিদিন সকালে পেট পরিষ্কার হয় না, তাদের ক্ষেত্রেও কিসমিসের দ্রবণীয় ফাইবার নিয়মিততা আনে।
কিসমিসে থাকা প্রাকৃতিক আয়রন শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে, যা অনেক নারী ও কিশোরীর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে ম্যাগনেশিয়াম ও বোরন নামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ হাড়কে মজবুত করতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। অনেকেই জানেন না, কিসমিসে থাকা প্রাকৃতিক গ্লুকোজ শরীরে শক্তি বাড়ায়, কিন্তু পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামা ঘটায় না। যারা প্রতিদিন ঝিমুনি অনুভব করেন, তারা কিসমিস খেলে সহজেই স্বাভাবিক শক্তি ফিরে পান।
এখন প্রশ্ন, কিসমিস কীভাবে খাবেন যাতে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন রাতে ৬ থেকে ৮টি কিসমিস এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে সেই পানি ও ভেজানো কিসমিস দুটোই খান। এতে পটাশিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আরও সহজে শোষিত হয়। যাদের হজমে সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাস হয় তারা এই ভেজানো কিসমিস প্রতিদিন খেলে উপকার পাবেন। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা ১০ থেকে ১২টি কিসমিস খেতে পারেন, তবে ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই ৪ থেকে ৬টির বেশি খাবেন না।
কিসমিস নিয়মিত খাওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি শরীরকে ধীরে ধীরে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে তোলে। ত্বক উজ্জ্বল হয়, চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং শরীরের প্রদাহ কমে আসে। যারা সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তারা দুই সপ্তাহ খেলেই পরিবর্তন অনুভব করতে পারবেন। শেষে একটাই কথা, কিসমিসের উপকারিতা অসাধারণ হলেও অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে খেলে এটি আপনার শরীরের জন্য প্রকৃত আশীর্বাদ হয়ে উঠবে।
স্বাস্থ্য পরামর্শ