24/02/2021
#রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও গোপন শক্তি বাড়াতে কালোজিরা সেবনের পদ্ধতি জেনে নিন #
একাধিক আশ্চর্য স্বাস্থ্যগুণে সমৃদ্ধ কালোজিরা।
কালোজিরা (ইংরেজি: Black Caraway, also known as Black Cumin, Nigella, Kalojeere, এবং Kalonji) একটি মাঝারি আকৃতির মৌসুমী গাছ, একবার ফুল ও ফল হয়।
কালোজিরার বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa Linn.
পুষ্টিবিদরা বলেন, কালোজিরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফসফেট, ফসফরাস আর আয়রন, যা দেহের জন্য অতিমাত্রায় উপকারী।
সব রোগের ওষুধ বলা হয় কালোজিরাকে। স্থূলতা, ক্যান্সার ও হৃদরোগ– সব কিছুর বিরুদ্ধেই শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কালোজিরা।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন: “ তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যৃ ব্যতীত সর্বরোগের মুক্তি রয়েছে”।- আসুন আমরা জেনে নেই আমাদের জন্য কি কি ঔষধী গুণ আছে এই কালোজিরাতে।
তারুণ্য ধরে রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে কালোজিরা খাওয়াটা দীর্ঘদিনের রীতি। কাজ করার শক্তিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে এই কালিজিরা। সরাসরি খাওয়ার থেকে প্রথম প্রথম ভাত বা রুটির সঙ্গে কালোজিরা খাওয়াটা অভ্যাস করুন।
প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ খাবারের সঙ্গে ‘কালোজিরা’ গ্রহণ করে আসছে। কালোজিরার তৈলও আমাদের শরীরের জন্য নানাভাবে উপকারি। কালোজিরার তৈলে ১০০টিরও বেশি উপযোগী উপাদান আছে। এতে আছে প্রায় ২১% ( শতাংশ) আমিষ, ৩৮ % শর্করা এবং ৩৫% ভেষজ তৈল ও চর্বি। এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে।
কালোজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যেআছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন ও স্থায়ী তৈল। এতে আরো আছে প্রয়োজনীয়ফ্যাটি এসিডসহ নানা উপাদান। পাশাপাশি কালোজিরার তৈলে আছে লিনোলিক এসিড, অলিকএসিড, ক্যালসিয়াম, টাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন-এ, কপার, ফোলাসিন, ভিটামিন–বি, ভিটামিন-বি২, নিয়াসিন ও ভিটামিন–সি ।
এর মধ্যে রয়েছে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও জীবাণু নাশক ভিবিন্ন উপাদান সমূহ। এতে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্যারোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, পস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্ল নাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক ।
#
১. রোগ প্রতিরোধে কালোজিরা:
কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এটি যেকোনো জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা: কালোজিরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা: কালোজিরা নিম্ন রক্তচাপ বৃদ্ধি করে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দেহের কলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে শরীরে রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখে।
৪. যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে কালোজিরা: কালোজিরা নারী-পুরুষ উভয়ের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে কালোজিরা খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এটি পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সম্ভাবনাও
তৈরি করে।
৫. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে কালোজিরা: নিয়মিত কালোজিরা খেলে দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। এতে করে মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধি ঘটে; যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৬. হাঁপানী রোগ উপশমে কালোজিরা: হাঁপানী বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সমাধানে কালোজিরা দারুণ কাজ করে। প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা খেলে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা উপশম হয়।
৭. পিঠে ব্যাথা দূর করে কালোজিরা: কালোজিরার থেকে তৈরি তেল আমাদের দেহে বাসা বাঁধা দীর্ঘমেয়াদী রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
৮. শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে কালোজিরা: নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ালে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে। কালোজিরা শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে।
৯. চুলের যত্নে কালোজিরা : কালোজিরার তৈল চুল পড়া বন্ধ ও চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে।
রুক্ষতা দূর করে চুল ঝলমলে করে, চুলের অকালে পেকে যাওয়া রোধ করে। চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, ফলে দ্রুত বাড়ে চুল।
১০. জীবাণু নাশক হিসেবে কালোজিরা : কালোজিরায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল এজেন্ট, অর্থাত্ শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এই উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ (ছোঁয়াচে রোগ) হয় না। কালোজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক
ও অ্যান্টিসেপটিক। ইহা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১১. দাঁতের যত্নে কালোজিরা : দই ও কালোজিরার মিশ্রণ প্রতিদিন দুবার দাঁতে ব্যবহার করুন। এতে দাঁতে শিরশিরে অনুভূতি ও রক্তপাত বন্ধ হবে।
#কালোজিরার ব্যবহারঃ
১. তিলের তেলের সাথে কালোজিরা বাঁটা বা কালোজিরার তৈল মিশিয়ে ফোড়াতে লাগালে ফোড়ার উপশম হয়। রুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া, সর্দি, কাশি, হাঁপানি নিরাময়ে কালোজিরা সহায়তা করে। ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কালোজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
২. চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্কিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি, মস্তিষ্কশক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়াতেও কালোজিরা উপযোগী।
৩. কালোজিরা চূর্ণ ও ডালিমের খোসাচূর্ণ মিশ্রন, কালোজিরা তেল ডায়াবেটিসে উপকারী।
৪. চায়ের সাথে নিয়মিত কালোজিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল বা আরক মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হয়, তেমনি মেদ ও বিগলিত হয়।
৫. মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
৬. কফির সাথে কালোজিরা সেবনে স্নায়ুবিক উত্তেজনা দুরীভুত হয়।
৭. জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করার জন্য কালোজিরা যথেষ্ট উপকারী বন্ধু। এতে রয়েছে বাড়ানোর উপাদান। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায়।
৮. কালোজিরায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল এজেন্ট, অর্থাৎ শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এই উপাদানের জন্য -শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ (ছোঁয়াচে রোগ) হয় না।
৯. সন্তান প্রসবের পর কাঁচা কালোজিরা পিষে খেলে শিশু দুধ খেতে পাবে বেশি পরিমাণে।
১০.মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
১১. দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালিজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে; জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মরে।
১২. কালিজিরা কৃমি দূর করার জন্য কাজ করে।
১৩. কালিজিরা মেধার বিকাশের জন্য কাজ করে দ্বিগুণ হারে। কালিজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক।
১৪. দেহের কাটা-ছেঁড়া শুকানোর জন্য কাজ করে।
১৫. নারীর ঋতুস্রাবজনীত সমস্যায় কালিজিরা বাটা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৬. কালোজিরার যথাযথ ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি অজির্ত হয়। এর তেল ব্যবহারে রাতভর প্রশান্তিপর্ন নিদ্রা হয়।
১৭. প্রসূতির স্তনে দুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য, প্রসবোত্তর কালে কালিজিরা বাটা খেলে উপকার পাওয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কালিজিরা খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে।
১৮. প্রস্রাব বৃদ্ধির জন্য কালিজিরা খাওয়া হয়।
১৯. কালোজিরা যৌন ব্যাধি ও স্নায়ুবিক দুর্বলতায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য অতি উতকৃষ্ট ঔষধ।
২০. ১৫/১৬ টি কালোজিরা ছোট ১টি পিয়াজ ও ২ চামচ মধু সহ বিকালে বা রাতে খেলে চির যৌবন রক্ষা হয়।
২১. পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তৈল পাখলে সহজে বীর্যপাত হয়না । ইহা ব্যবহারে পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
# # #