20/07/2022
**স্ট্রোক(Stroke)কি?
স্ট্রোক হলো মস্তিষ্কের রক্তনালির একটি রোগ যা রক্তনালী হঠাৎ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে বা ছিড়ে যাওয়ার কারনে হয়ে থাকে।
তবে আঘাতের কারনে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধলে তা স্ট্রোক বলা যাবে না।
**স্ট্রোক কাদের হয়?
সাধারনত বয়স্কদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুকি বেশি হলেও বর্তমানে তরুন তরুনীদের মধ্যেও স্ট্রোক হচ্ছে।এমনকি বাচ্চাদের ও রক্তনালীর গঠনগত সমস্যা থাকলে স্ট্রোক হতে পারে।
# নীচের সমস্যাগুলো যাদের আছে তাদের স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি:
-ডায়াবেটিস
-উচ্চরক্তচাপ
-রক্তে চর্বি/ কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেশি।
-ধুমপান, মদ্যপান, কোকেন, এমফিটামিন
-হার্টের ভাল্ভের সমস্যা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হার্টফেইলিয়র, হৃদরোগ, কার্ডিওমায়োপ্যাথি।
-যাদের রক্ত জমাট বাঁধার প্রবনতা বেশী
-কোন কারনে রক্ত ঘন হয়ে যাওয়া ( যেমন পানিশূন্যতা, প্রেগন্যান্সি, রক্তের নিজের কিছু সমস্যা)
-মস্তিষ্কের রক্তনালির গঠনগত সমস্যা
-কেরোটিড ধমনিতে সমস্যা।
-কানেক্টিভ টিস্যু ডিজিজ (সিস্টেমিক লুপাস ইরাইথেমেটোসাস, রিঊমেটয়েড আর্থ্রাইটিস, ভাস্কুলাইটিস)
-অতিরিক্ত স্ট্রেস ফুল কন্ডিশনে থাকা।
-পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ইত্যাদি।
** স্ট্রোকের উপসর্গ:
*হঠাৎ করে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া
*চোখে দেখতে না পাওয়া
*মুখ বেকে যাওয়া
*শরীরের একপাশের হাত এবং পা নাড়তে না পারা
*কথায় জড়তা আসা বা কথা বুঝতে বা বলতে না পারা
খাবার গিলতে না পারা, নাক দিয়ে পানি বের হয়ে আসা
আবোলতাবোল বলা, কাউকে চিনতে না পারা
*প্রচন্ড মাথা ব্যথা,বমি, খিচুনি
*অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ।
**স্ট্রোক হলে করনীয়:
অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
স্ট্রোকের চিকিৎসায় সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতি ২ মিনিটে ২ মিলিয়ন স্নায়ু কোষ (Brain Cell) মারা যায়।তাই এ লক্ষন গুলো দেখা দিলে অতি দ্রুত রোগিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
যদি সঠিক সময়ে(অসুস্থতার চার ঘন্টার মধ্যে) আনা যায় তবে ইস্কেমিক স্ট্রোকের(Ischemic Stroke) ক্ষেত্রে খুব কার্যকরী চিকিৎসা (Thrombolysis) রয়েছে।
হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জের পর সঠিক ফিজিওথেরাপি দিতে হবে।খেতে না পারলে নাকে নল দিয়ে( Ryles tube) খাওয়াতে হবে।
শয্যাশায়ী রোগিদের ২ ঘন্টা পরপর পাশ ফিরাতে হবে।
** প্রতিকার:
যে কারন গুলো স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় সেগুলোকে যদি এড়ানো যায় তাহলেই স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।
যেমন, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে রাখা, হার্টের ভাল্বের সঠিক চিকিৎসা ও বাতজ্বর নিয়ন্ত্রণ , ধুমপান, মদ্যপান ত্যাগ করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা।
“স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ হৃদরোগ নয়”