19/04/2024
হিট স্ট্রোক (Heat stroke)
==
১. ষাট বছরের বেশী বয়স্ক এবং বয়স সন্ধি:কালের আগ পর্যন্ত শিশুদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি।
২. বয়স্কদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সিস্টেম আর আগের মত কাজ করে না ফলে অধিক পারিপার্শ্বিক তাপের মুখে তাদের thermoregulatory system অতিরিক্ত তাপটুকু শরীর থেকে বের করে দিতে পারে না, তাতে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। যেসব বয়স্ক লোকেদের এয়ারকন্ডিশন রুমে থাকার সুযোগ নেই তাদের এ সময়ে নজরদারির মধ্যে রাখবেন কোন প্রকার অসুস্থতা বিশেষ করে মনোযোগ, হুশ জ্ঞান বা অন্য যেকোনো নতুন সমস্যা দেখা যায় কিনা। দেখা গেছে সামান্য সমস্যা দেখা দেওয়ার পর থেকে এক থেকে তিন দিনের মধ্যে অধিকাংশ বয়স্ক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং তাদের অর্ধেকের বেশি মারা যায়।
২. কয়েকটি বিশেষ কারণে বয়সন্ধির আগ পর্যন্ত শিশুদের হিট স্ট্রোকে ভোগার ঝুঁকি বেশি।
ক. শিশুদের বডি মাসের তুলনায় সারফেস এরিয়া বেশি। ফলে অধিক সারফেস এরিয়া থেকে অধিক তাপ শোষণ হয় কিন্তু body mass কম বলে সেটা কাজে লাগাতে পারেনা। ফলে দেহের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
খ. তুলনামূলকভাবে শিশুদের শরীরের তুলনায় রক্তের পরিমাণ কম। ফলে অধিক মাত্রায় তাপ পরিবহন করে শরীর থেকে বের করে দিতে পারে না। এতে দেহের ভিতরে তাপ বেড়ে যায়।
গ. শিশুদের ঘর্মগ্রন্থী বড়দের মতো developed থাকেনা ফলে ঘামের মাধ্যমে তারা আশানুরূপ তাপ বের করে দিতে পারে না।
ঘ. প্রবীনদের মতোই শিশুদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (thermoregulatory system) অপরিপক্ক থাকে ফলে তাপদাহের মুখে তাদের শরীর অতিরিক্ত তাপ বের করতে পারে না।
৩. এক দুই বছরের ছোট বাচ্চাদের বেলায় আরো সতর্ক থাকতে হবে। ১-২ ঘন্টা বদ্ধ গাড়ির ভিতর থাকা তাদের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট।
৪. চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধে বেশি জোর দিতে হবে। খুব প্রয়োজন না হলে গরমে যাবেন না। এয়ারকন্ডিশন বা ফ্যানের নিচে থাকুন। পানি পান করুন প্রচুর তবে চা কফি, এলকোহল বা চিনিযুক্ত শরবত নয়। সম্ভব হলে বারবার গোসল করুন, শরীরে পানি ঝাপটা দিন।
৫. এ সময়ে মোটিভেশন যত বড়ই হোক কোনোভাবেই পানিবিহীন উপবাস থাকবেন না, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করবেন না। পরিপার্শ্বের তাপমাত্রা খুব বেশি না হলেও ব্যায়াম বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে এ সময়ে দেহ নিজেই অতিরিক্ত তাপ তৈরি করতে পারে। দেহের অভ্যন্তরের এই সৃষ্ট তাপ ও হিটস্ট্রোক করতে পারে।
একনাগাড়ে শারীরিক পরিশ্রম না করে বিরতি দিয়ে দিয়ে করুন। Exhausted হবার আগেই বিশ্রাম নিন। পিপাসা না লাগলেও পানি পান করুন।
৬. বয়স্ক ও শিশুদের দিকে বিশেষ লক্ষ রাখুন। মানসিক নিউরোলজিক্যাল বা যেকোনো রকমের সমস্যা দেখা দিলেই হিটস্ট্রোক হয়েছে কিনা সে প্রশ্ন নিজেকে করবেন এবং সে অনুযায়ী তড়িৎ ব্যবস্থা নিবেন।
৭. চিকিৎসার পরেও বয়স্ক ও শিশুদের বেলায় মৃত্যুর হার অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ১০ জন heat stroke এ আক্রান্ত হলে পাঁচজনের বেশি মারা যাবে।
সঙ্গত কারণেই চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম (Prevention is better than cure)