06/10/2023
গর্ভস্থ শিশুর আকারে ছোট হওয়ার সমস্যা নির্ণয়
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে আপনার ছোট বাচ্চা হওয়ার ঝুঁকি কতটুকু তা পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ।
▪️ যদি আপনার ছোট বাচ্চা হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে, তবে আপনার প্রসূতি বিশেষজ্ঞ আপনার শিশুর বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা অব্যাহত রাখবেন:
• প্রতিটি প্রসবপূর্ব অ্যাপয়েন্টমেন্টে, গর্ভাবস্থার ২৪ সপ্তাহের পর থেকে নিয়মিত আপনার জরায়ুর উচ্চতা পরিমাপ করে একটি তালিকায় লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। আপনার তলপেটের নিচে মাঝ বরাবর অনুভূত হাড় (পিউবিক হাড় নামে পরিচিত) এবং আপনার জরায়ুর উপরের অংশের মধ্যের দূরত্ব হলো জরায়ুর উচ্চতা। একে Fundal Height/Symphysiofundal height বলে। এই পরিমাপ তালিকাবদ্ধ করে পর্যবেক্ষণ করলে আপনার শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে।
• যদি পরিমাপ থেকে বোঝা যায় যে আপনার শিশুটি ছোট হতে পারে, তাহলে আপনাকে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান করার পরামর্শ দেয়া হবে।
▪️ যদি আপনার ছোট বাচ্চা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, তবে আপনাকে:
• গর্ভাবস্থার ২৬-২৮ সপ্তাহ থেকে নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান করার জন্য উপদেশ দেয়া হবে,
• আপনার প্লাসেন্টায় রক্ত প্রবাহের একটি আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান করার জন্য উপদেশ দেয়া হবে। এটি ইউটেরাইন আর্টারি ডপলার টেস্ট (uterine artery doppler test) নামে পরিচিত এবং গর্ভাবস্থার ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহে করা হয়। এর রেজাল্টের উপর নির্ভর করে আপনার শিশুর পরবর্তীতে কোন স্ক্যানের প্রয়োজন আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হবে।
অন্যান্য সাহায্যকারী যেসব পরীক্ষা করা প্রয়োজন
আপনার শিশুর সুস্থতা পরীক্ষা করার জন্য নিম্নলিখিত টেস্টগুলো করতে হতে পারে:
• আম্বিলিক্যাল আর্টারি ডপলার (Umbilical artery doppler)- এটি আম্বিলিক্যাল কর্ড এর মধ্য দিয়ে রক্তের প্রবাহকে পরিমাপ করে
• কার্ডিওটোকোগ্রাফ(Cardiotocograph/CTG)- এর মাধ্যমে আপনার শিশুর হৃদস্পন্দন নির্ণয় করা হয়
• আপনার শিশুর চারপাশে থাকা পানির পরিমাণ (amniotic fluid) নির্ণয় করা।
আম্বিলিক্যাল আর্টারি ডপলার পরীক্ষা অস্বাভাবিক হলে আরও বিস্তারিত স্ক্যানের জন্য আপনাকে একজন ফিটাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হতে পারে। ..
এমন ছোট শিশুর জন্মের জন্য সবচেয়ে সঠিক সময়
এটি নির্ভর করবে আপনার শিশুর বৃদ্ধি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ডপলার পরীক্ষার ফলাফল কেমন এসেছে তার উপর। স্ক্যানগুলো আপনার চিকিৎসককে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে যে আপনার শিশুর তাড়াতাড়ি জন্ম হওয়া ভাল নাকি আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য আপনার গর্ভাবস্থা আরও বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া নিরাপদ। যদি আপনার শিশু স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি হয় এবং ডপলার টেস্টগুলো স্বাভাবিক থাকে, তবে আপনার গর্ভাবস্থার কমপক্ষে ৩৭ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো।..
অকালেই শিশুর প্রসব করতে চাইলে করণীয়
আপনি কখন এবং কীভাবে আপনার সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে, আপনাকে ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে Corticosteroid ইঞ্জেকশন প্রদান করা হতে পারে। এটি আপনার শিশুর বিকাশে সাহায্য করার জন্য এবং জন্মের পরে শ্বাসকষ্টের সম্ভাবনা কমাতে ব্যবহার করা হয়।
ছোট শিশু প্রসব করার উপযুক্ত পদ্ধতি
যদি অন্য আর কোন জটিলতা না থাকে, তবে আপনি নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করতে পারবেন। প্রসবের সময় আপনার শিশুকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। যাই হোক, যদি আম্বিলিক্যাল আর্টারি ডপলার পরীক্ষা স্বাভাবিক না থাকে, তবে আপনাকে সিজারিয়ান সেকশন এর মাধ্যমে সন্তান প্রসব করার উপদেশ দেয়া হবে।
যদি আপনার সন্তান প্রসবের জন্য পরিকল্পিত সময়ের পূর্বে আপনার প্রসব বেদনা উঠে বা আপনার পানি ভেঙ্গে যায় অথবা কোন ধরনের রক্তক্ষরণ দেখা দেয়, তবে আপনার তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত।
প্রসবের উপযুক্ত স্থান
নবজাতক ইউনিট আছে এমন হাসপাতালে আপনাকে সন্তান প্রসবের পরামর্শ দেয়া হয়। আপনার শিশুর নবজাতক ইউনিটের পরিচর্যার প্রয়োজন পড়বে কিনা তা নির্ভর করে, আপনার শিশু কতটা ছোট এবং গর্ভাবস্থার কোন পর্যায়ে আপনার শিশুর জন্ম হয়েছে তার ওপর। যদি এমন হয় যে আপনার শিশুর বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন রয়েছে, তবে আপনার নবজাতক ইউনিটের চিকিৎসকের সাথে কথা বলা উচিত।
সর্বোপরি, এবিষয়ে আরো কোনো উদ্বেগ থাকলে, আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন, যিনি আপনাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবেন।
#মা_হওয়া_bydrreshma পর্ব ৩৪
পর্ব ৩৪
Previous part link:
Next part link: