28/08/2025
যখনই বলা হয়, একজন মুসলিম নারীর প্রধান ক্যারিয়ার তার সংসার। সংসার রাজ্যে রাণী ও মা হিসেবে যেই ভূমিকা পালন করবেন, সেটাই তার মূল ক্যারিয়ার।
তখনই একদল এসে হাউমাউ শুরু করে, ডেলিভারির সময় নারী ডাক্তার কই পাবেন। যেন মনে হচ্ছে, দুনিয়ার সব ক্যারিয়ারমুখী মেয়ে ডাক্তার হচ্ছে। ডাক্তার হওয়ার জন্যই এরা পড়াশোনা করছে। এতো ডাক্তার কোথায় ভাই?
এই যে ক্যারিয়ারের নামে সংসারের পরিবেশ থেকে অসংখ্য নারীকে বের করে আনা হয়েছে, তারা সবাই মনে হয় হাসপাতালের অফিস, বারান্দা আর বেডে অবস্থান করছে।
এর বাইরে সিনেমায় কোন মেয়ে দেখবেন না, বিজ্ঞাপনে কোন মেয়ে দেখবেন না, মার্কেটে কোন মেয়ে দেখবেন না, ব্যাংকে, অফিসে, কারখানায় কোন মেয়ের দেখা পাবেন না। লিটনের ফ্লাট কিংবা ভার্সিটির চিপায়-চাপায়ও কোন মেয়ে পাবেন না।
সব মেয়ে গিয়ে জড়ো হয়েছে আপনার ঐ হাসপাতালগুলোতে। নইলে আপনি আসলে ডেলিভারির সময় নারী ডাক্তার কই পাবেন।
মুসলিমদের ভিতর কিছু নারী চিকিৎসা পেশায় যাওয়া কাম্য ও প্রশংসিত। শুধু চিকিৎসা না, শিক্ষাখাত সহ আরো কিছু প্রয়োজনীয় খাতে। কিন্তু সেটা শরীয়ার নীতিমালা মেনে। এরজন্য পুরো নারী কমিউনিটিকে কেন আমাদের ক্যারিয়ারের নামে একটা ভয়াবহ প্রতিযোগিতায় ফেলে দিতে হবে।
মনে রাখবেন, নারী চিকিৎসক না পেলে পুরুষ চিকিৎসকের চিকিৎসা নেয়া হারাম না। বরং ইসলাম জরুরতের সময় পুরুষ চিকিৎসকের সামনে প্রয়োজন মাফিক সতর খোলাকেও বৈধ করেছে। যদিও সেটা অস্বস্তির এবং কাম্য এটাই যে, আমরা মুসলিম নারীদের জন্য স্বস্তিকর পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করব।
কিন্তু সংসারকে বিরান করা, পুরো নারী জাতিকে ক্যারিয়ারের নামে পুঁজিবাদী প্রতিযোগিতায় ফেলে দেয়া এবং হারাম পরিবেশের দিকে ঠেলে দেয়া নিষিদ্ধ। এটা একটা অসুখ, যেই অসুখ সভ্যতাকে নষ্ট করে দেয়। পরিবার ও সমাজব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দেয়।
এজন্য নারীর প্রতি ইনসাফের যদি সূচনা করতে হয়, সেটা সংসার থেকেই করতে হবে। সংসার ও পরিবারে তার ন্যায্য অধিকার প্রদানে পুরুষদের নৈতিকভাবে সচেতন ও ধাবিত করাই হবে সবচেয়ে বড় কর্মসূচী।
উপরন্তু নারীকে স্বাধীনতা আর সমতার নামে পশ্চিমা সভ্যতার চাপিয়ে দেয়া প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে ঠেলে দেয়াই তার উপর রচিত ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেইনসাফি। যারা নারীর প্রতি ইনসাফ চায়, তাদেরকে এই বেইনসাফির বিরুদ্ধেও আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
- Iftekhar Sifat