13/10/2022
মস্তিষ্কের টিউমার ( Brain tumor ) কী :🔜
মস্তিষ্কের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্রেনে টিউমার বলা হয়। টিউমার ক্ষতিকর নাও (noncancerous / benign ) হতে পারে বা ক্যান্সার প্রবণ (cancerous / malignant).) হতে পারে। মস্তিষ্কের ভিতরে যে ব্রেন টিউমার গঠিত হয় তাকে প্রাথমিক বা প্রাইমারি ব্রেন টিউমার বলা হয়।
প্রকার (Types of Tumours) :-
1. অ্যাকাস্টিক নিউরোমা (Acoustic neuroma )
2. অ্যাস্ট্রোসাইটোমা (Astrocytoma )
3. মস্তিষ্কের মেটাস্টেসেস (Brain metastases)
4. কোরিড প্লেক্সাস কার্সিনোমা (Choroid plexus carcinoma)
5. ক্র্যানোফেরেঙ্গিওমা (Craniopharyngioma)
6. ভ্রূণ টিউমার (Embryonal tumors)
7. এপেন্ডিমোমা (Ependymoma )
8. গ্লিওব্লাস্টোমা (Glioblastoma )
9. গ্লিওমা (Glioma)
10. মেডুলোব্লাস্টোমা (Medulloblastoma )
11. মেনিনিংওমা (Meningioma )
12. অলিগোডেনড্রোগলিওমা (Oligodendroglioma )
13. পেডিয়াট্রিক ব্রেন টিউমার (Pediatric brain tumors)
14. পাইনোব্লাস্টোমা (Pineoblastoma)
15. পিটুইটারি টিউমার (Pituitary tumors)
প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ব্রেইন টিউমারগুলির সবচেয়ে দেখতে পাওয়া যায় গ্লিওমা এবং মেনিনিংওমা।
ব্রেইন টিউমার কেন হয় /ব্রেইন টিউমার হওয়ার কারণগুলি কী কী:-
1. প্রাথমিক ভাবে ব্রেইন টিউমারের কারণ এখন পর্যন্ত অজানা।
2. খারাপ টিউমার শরীরের অন্য জায়গা থেকে ক্যান্সারের রূপ নিয়ে ব্রেইনের মধ্যে চলে যায়।
3. বংশগত কারণেও ব্রেইন টিউমার হতে পারে।
4. তবে কিছু ধরনের বিকিরণ, মাথায় আঘাত, এবং হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি এক্সপোজার, ব্রেইন টিউমারের ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
5. সেল ফোন ব্যবহার করার ঝুঁকিটি হঠাৎ বিতর্কিত হয়েছে।
6. যাঁদের রেডিয়েশনের মধ্যে থাকতে হয় তাঁদের ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি, ।
7. সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মোবাইল টাওয়ার ও ইয়ার ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বাড়ে।
8. কিছু কিছু রাসায়ানিকের প্রভাবেও ক্যানসার-যুক্ত ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
9. বিশেষ করে যাঁদের কাজের সূত্রে নিয়মিত রাসায়ানিকের সংস্পর্শে থাকতে হয়, তাঁদের এই রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি।
ব্রেইন টিউমারের লক্ষণঃ-
নির্দিষ্ট লক্ষণগুলি টিউমারের আকার, অবস্থান, আক্রমণের ডিগ্রী এবং সম্পর্কিত সূত্রের উপর নির্ভর করে। মাথাব্যাথা, জীবাণু, শরীরের এক অংশের দুর্বলতা, এবং ব্যক্তির মানসিক ফাংশনগুলির পরিবর্তন সর্বাধিক দেখা যায়। লক্ষণগুলি হল-
1. .দীর্ঘ মেয়াদে মাথাব্যথা। মাথাব্যথা যা ধীরে ধীরে আরও ঘন এবং আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
2. খিঁচুনি হওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো
3. বমির ভাব বা বমি হওয়া , হজমের সমস্যা না থাকলেও হাঠাৎ বমি পায় ।
4. জ্বর বা অন্য কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎ হঠাৎ কাঁপুনি শুরু হতে পারে। কিছু ক্ষণ পর আপনা থেকেই কমে যায়।
5. দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া ,যেমন ঝাপসা দৃষ্টি, দ্বিগুণ দৃষ্টি বা পেরিফেরিয়াল দৃষ্টিশক্তি হ্রাস।
6. কথা জড়িয়ে যাওয়া, কথা বলতে অসুবিধা।
7. ব্যক্তিত্ব এবং আচরণের পরিবর্তন।
8. মানসিক অস্থিরতা, দ্রুত মানসিক পরিবর্তন।
9. বেশি গন্ধ অনুভূত হওয়া।
10. শরণশক্তির হ্রাস, দুর্বল বিচার ক্ষমতা,
11. হাত দিয়ে কোনও জিনিস শক্ত করে ধরতে সমস্যা হয় (Paralysis) ।
12. ভারসাম্য নিয়ে অসুবিধা, হাত পা নাড়াচাড়া করতে সমস্যা ও হাঁটা চলায় ভারসাম্য রক্ষা করার অসুবিধা হতে পারে।
13. খুব ক্লান্ত লাগছে, সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব থাকে, ঘুম পায়। কোনও কাজ করতে ইচ্ছে করে না।
14. দৈনন্দিন বিষয়ে বিভ্রান্তি
15. সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা
16. মেজাজ, ব্যক্তিত্ব, আবেগ এবং আচরণের পরিবর্তন
17. শ্রবণ সমস্যা ।
18. অনেক সময় টিউমার খুব বড় না হওয়া পর্যন্ত সে রকম কোনও উপসর্গ থাকে না, ইত্যাদি।
ব্রেইন টিউমার নির্ণয়ঃ-
ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। রোগ নির্ণয়ে নিচের পরীক্ষাগুলো সহায়কঃ
1. মাথার নরমাল এক্স-রে।
2. ব্রেনের সিটিস্ক্যান ও এমআরআই।
3. স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দেখার জন্য ইলেকট্রো এনকেফালোগ্রাফি বা ইইজি।
4. স্নায়ুতন্ত্রের পরিবহন ক্ষমতা বা নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট বা ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি।
5. সিটি গাইডেড এফএনএসি।
কী কী লক্ষণ দেখলে সাবধান হতে হবে:-
1. খুব সাধারণ ও সাম্প্রতিক ঘটনার কথা বেমালুম ভুল হয়ে যায়। কিছুতেই মনে পড়ে না
2. মস্তিষ্কের কোন অংশে টিউমার হয়েছে তার উপরেও কিছু কিছু লক্ষণ নির্ভর করে। যেমন সেরিব্রামের টেম্পোরাল লোবে টিউমার হলে দেখতে অসুবিধে হয়।
3. ভাবনা ও বলার কো-অর্ডিনেশনে অসুবিধে হতে পারে।
4. আচার-ব্যবহার বদলে যেতে পারে। চেনা মানুষকেও অচেনা মনে হতে পারে।
5. ইয়ার ফোন ও মোবাইল টাওয়ার থেকে সাবধান
6. সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও নিয়মিত শরীরচর্চা করে ব্রেন টিউমার ঠেকানো যায়।
7. অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
8. রেডিয়েশনের ব্যপারেও সতর্ক থাকতে হবে।
9. কোনও সমস্যা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।