রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়া সাল্লাম বলেন, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে,তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।
হিজামা কি?
হিজামা হল এমন একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, যাতে মানুষের সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা বিদ্যামান রয়েছে। আরবিতে “হিজামা’, বাংলায় “শিঙ্গা” এবং ইংরেজীতে Cupping Therapy বলা হয়। এটা সুন্নতি চিকিৎসা।
কেন হিজামা করাবেন?
আপনার রোগ হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যান। প্রয়োজন পড়লে অস্ত্রপাচার ও করান, তেমনি আপনার রোগের জন্য হিজামা করাবেন। তাহলে ফায়দা স্বরূপ রোগ থেকে ইন্শাআল্লাহ মুক্তি পাবেন এবং রাসূল (সঃ) এর একটি সুন্নতের উপরও আমল করা হলো।
হিজামার উপকারিতা ঃ
হিজামা বা কাপিং থেরাপি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে চুলের গ্রন্থিগুলোকে সক্রিয় করে।
ত্বকের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং লাল জোন গঠন করা হয় যা ত্বকের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং রক্তের কোষের উপকারে পৌছাতে নির্দেশ করে।
হিজামা দ্বারা ত্বকের পৃষ্ঠাধীন ক্ষতিকারক পদার্থ গুলি সরিয়ে ফেলা হয়।
হিজামা টিস্যু থেকে বিষ মুক্ত করতে সহায়তা করে।
মানব দেহের ত্বক ও পেশীতে অবশিষ্ট ঔষধ ও বিষ দেহ থেকে শুষে নিতে কাপিং থেরাপি উপকারি, এর ফলে ইউরিক এসিড ও জয়েন্ট থেকে ক্রিস্টাল বের করে দেয়া সহজ হয় ফলে গাউট রোগ ভাল হয়।
হিজামা সংক্রান্ত হাদিসঃ
১. হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে;
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জিবরায়ীল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তারমধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম। আল-হগাকিম, হাদীছ নম্বর: ৭৪৭০।
২. হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে। রাসূল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাইহু আলাইহি ওয়াসালাম বলেছেন, খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোধ ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৭
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলেন, আমি মেরাজের রাত্রে ফেরেশতাদের যে দলেরই নিকট দিয়ে অতিক্রম করেছি সকলেই বলেছেন, হে মুহাম্মদ! আপনি আপনার উম্মতকে হিজামা লাগানোর হুকুম করুন। (মুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৪৭৯)
হিজামার পদ্ধতিঃ
হিজামা এখন পাশ্চাত্যে এবং প্রাচ্যেও “কাপিং থেরাপি” নামে দারুন জনপ্রিয়। মধ্যপ্রাচ্যে আরব দেশগুলো ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা থেকে শুরু করে ভারত-পাকিস্তানেও হিজামার ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এসব দেশের সেনাবাহিনীর সদস্য খেলোয়ার, শিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ হিজামা বা কাপিং থেরাপিকেই সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। শরীরের নির্দিষ্ট অংশ থেকে কাপিংয়ের সাহায্যে রক্ত চুষে নেওয়াই হচ্ছে কার্পিং থেরাপি বা হিজামা।
হিজামা ( Cupping Therapy) এর মাধ্যমে যে সব রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকেঃ
১. মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘ মেয়াদী মাথাব্যাথা।
২. রক্ত দূষণ।
৩. উচ্চ রক্তচাপ
৪. ঘুমের ব্যঘাত (Insomnia)
৫. চুল পড়া (Hair fall)
৬. পিঠের ব্যাথা
৭. হাঁটু ব্যাথা
৮. অস্থি সন্ধির ব্যাথা / গেটে বাত
৯ ঘাড়ে ব্যাথা
১০. কোমর ব্যাথা
১১. পায়ে ব্যাথা
১২. দীর্ঘমেয়াদী সাধারণ মাথা ব্যাথা।
১৩. স্মৃতিভ্রষ্টতা
১৪. মুটিয়ে যাওয়া (Obesity)
১৫. মাংসপেশীর ব্যাথা (Muscle strain), মাসল পুল
১৬. ডায়াবেটিস (Diabetes)
১৭. দীর্ঘমেয়াদী পেট ব্যাথা
১৮. সাইনুসাইটিস
১৯. হাড়ের স্থানচ্যুতি জনিত ব্যাথা, ফ্র্যাকচার পেইন।
২০. থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা
২১. হাপানি (Asthma)
২১. হৃদরোগ (Cardiac Disease)
২২. দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগ (Chronic skin Disease)
২৩. ব্রন (Acne)
২৪. সোরিয়াসিস
২৫. প্যারাইলাইসিস (স্ট্রোক, মেরুদন্ডে আঘাত, গিয়েন বারে সিনড্রোম, পেসিয়াল প্যারালাইসিস, বেল’স পলসি প্রভৃতি)
২৬. টনসিল
২৭. গ্যাস্ট্রিক পেইন, গ্যাস্ট্রিক আলসার, এসিডিটি।
২৮. দাঁত / মুখের / জিহবার সংক্রমন
২৯. ক্রনিক কফ
৩০. কানের সমস্যা
৩১. রক্তসংবহন তন্ত্রের সংক্রমন
৩২. ত্বকের নিম্মস্থিত বর্জ্য নিষ্কাশন
৩৩. অনিয়মিত মাসিক
৩৪. মানসিক সমস্যা
৩৫. হরমোন সমস্যা
৩৬. Vertigo (মাথা ঘোরা)
৩৭. IBS
৩৮. ভার্টিব্রাল ডিক্স প্রোল্যাস্প / হারনিয়েশান
৩৯. কিডনির সমস্যা
৪০. স্পোর্টস ইনজুরি (খেলোয়াড়, আর্মি, কনট্যাক্ট স্পোর্টস)
৪১. ক্যান্সারের ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ
৪২. ব্রেইন ডিজিজ ও ডিজঅর্ডার
৪৩. লিভার ডিজিজ
৪৪. অস্টিওপোরোসিস (হাড়ের ক্ষর)
৪৫. TMJ Dxsfunction Syndroma
৪৬. Vaginismus
৪৭. মেয়েদের অন্যান্য সমস্যা
৪৮. ফোড়-পাঁচড়াসহ আরো অনেক রোগ
৪৯. এডিকশান / ডিপেন্ডেন্সি (স্লিপিং পিল, ড্রাগস, কফ সিরাপ, জর্দা, সিগারেট, এলকোহল ও অন্যান্য নেশাদ্রব্য)।
৫০. পারকিনসন্স ডিজিজ
এমন প্রায় ৭০টির বেশি রোগ প্রতিরোধে হিজামা যথেষ্ট কার্যকরী।
হিজামা একটি ফরগটেন সুন্নাহ। রাসূল সাঃ এর যুগে এই চিকিৎসা খুব বেশি প্রচলিত ছিল। রাসূল (সাঃ) একদিন ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে সাথে সাথে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে হিজামা করিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালার রাসূল হিজামা নিজে করেছেন এবং অন্যদের করতে উৎসাহ প্রদান করেছেন। নিশ্চয়ই হিজামাতে শেফা রয়েছে।
**আরবী মাসের ১৭, ১৯, ২১ তারিখ হলো হিজামার জন্য উত্তম সময়। আর দিন হিসেবে সোম, মঙ্গল আর বৃহস্পতিবার উত্তম। তবে অন্য দিনেও হিজামা করানো যায়।
হিজামা বা Cupping Therapy নেয়ার জন্য যোগাযোগ করুনঃ
Mobile 01888307930
লোকেশানঃ
Mahfuza Vobun,
House No. 5, Road No. 1, Block- A,
C.D.A R/A, Chandgaon, 4212, Chittagong.