11/05/2022
ডায়া"বেটিসের ভয়াবহ দশ
পরিণতি ...
ডায়া"বেটিস শব্দটির কথা শুনলে মনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই'নসুলিন ও রক্ত শর্করা ব্যবস্থাপনার কথা চলে আসে। নিশ্চিতভাবে ইন'সুলিন ও রক্ত শর্করা এই ক্রনিক রোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ডায়া"বেটিস রোগীর শরীরে প্রয়োজনীয় ইন'সুলিন উৎপাদন হয় না অথবা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, এর ফলে রক্তে শর্করা বেড়ে যায়। কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করলে শরীরের বিভিন্ন অংশে অপূরণীয় ক্ষতি হয়।
উচ্চ রক্ত শর্করা হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও এমনকি যৌন*জীবনে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলে।
বোস্টনের জোসলিন ডায়া"বেটিস সেন্টারের অন্তর্গত ইনপেশেন্ট ডায়া"বেটিস প্রোগ্রামের পরিচালক ওসামা হামদি বলেন, ‘ডায়া"বেটিসকে রূপকার্থে টার্মাইট বা কাঠের আসবাবপত্র ধ্বংসকারী কীটের সঙ্গে তুলনা করা যায়, যা গোপনে ধীরে ধীরে শরীরের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করে।
টাইপ ২ ডায়া"বেটিসের অধিকাংশ রোগীর মৃত্যু হয় হার্ট অ্যাটাকে। কিন্তু এই রোগের গুরুতর উপসর্গ নেই বলে অনেকে এটাকে হালকাভাবে নেন।’
গবেষণায় দেখা গেছে,
অনিয়ন্ত্রিত ডায়া"বেটিস শরীরের প্রত্যেকটা তন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একারণে ডায়া"বেটিস শনাক্ত হলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহকে রক্ষার্থে রোগটিকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ডায়া"বেটিস নিয়ন্ত্রণ না রাখার ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।
রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়:
টাইপ ২ ডায়া"বেটিস থাকলে শরীর রক্ত শর্করাকে নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন ইন''সুলিন ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। এর ফলে এইচডিএল তথা উপকারী কোলেস্টেরল কমে যায় ও ট্রাইগ্লাইসেরাইডস নামক অপকারী রক্ত চর্বির মাত্রা বেড়ে যায়।
ইন'সুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারণে ধমনী শক্ত ও সরু হয়ে রক্তচাপ বেড়ে যায়। একারণে ৩ জন ডায়া"বেটিস রোগীর মধ্যে ২ জনের হাইপারটেনশন তথা উচ্চ রক্তচাপও থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ ও চিন্তা/স্মরণ সমস্যার অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়া"বেটিসে রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যায় বলে শরীর অন্যান্য পরিণতির দিকেও এগুতে থাকে, বলেন জোসলিন ডায়া"বেটিস সেন্টারের চিফ মেডিক্যাল অফিসার রবার্ট গাবাই।
মস্তিষ্কে সমস্যা হয়:
মেরিল্যান্ডের এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট হেলেনা রডবার্ড বলেন, ‘ডায়া"বেটিসে আক্রান্ত লোকদের মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে কিছু গণ্ডগোল হয়। সম্ভবত এই কারণে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদের মেন্টাল ফাংশন তুলনামূলক দ্রুত বিঘ্নিত হয়,
যেমন- পরিকল্পনা ও সংগঠিত করার ক্ষমতা কমে যায়, স্মরণশক্তি হ্রাস পায়, কোনটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত তা বুঝতে সমস্যা হয় ও কাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।’
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে রক্ষার্থে প্রতিদিন শরীর ও মনকে সক্রিয় রাখতে হবে, কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করতে হবে ও মন উদ্দীপ্ত হয় এমন কাজ করতে হবে। ডা. রডবার্ড বলেন, ‘মস্তিষ্কের কার্যক্রম অটুট রাখতে অথবা মনকে উদ্দীপনা যোগাতে বই পড়ুন, সামাজিক কাজে যুক্ত হোন ও গেমস খেলুন।
ইতিবাচক ও আশাবাদী মনোভাব ধরে রাখুন,
নিজেকে বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন করবেন না।’
মাড়িতে রোগ হয়:
ডায়া"বেটিস রোগীদের পেরিয়োডোন্টাল ডিজিজ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। পেরিয়োডোন্টাল ডিজিজ হচ্ছে মাড়ি ও দন্তমূলীয় হাড়ের সংক্রমণ, যার ফলে খাবার চাবানো যন্ত্রণাদায়ক হয় ও দাঁত পড়ে যেতে পারে।
ডা. রডবার্ড বলেন, ‘অতিরিক্ত রক্ত শর্করা টিস্যুর কোলাজেনে পরিবর্তন ঘটিয়ে সংক্রমণটির সূচনা করে। কেবল তা নয়, উচ্চ রক্ত শর্করা অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে।’ অন্যদিকে মাড়ির রোগ/প্রদাহ অথবা মাড়িতে গভীর ফোঁড়া রক্ত শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে ও ডায়া"বেটিস নিয়ন্ত্রণকে কঠিন করে তোলে, জানান ডা. হামদি।
পেরিয়োডোন্টাইটিস তথা মাড়ির রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ ও ফ্লস করুন। বিদ্যমান প্লেক দূর করতে মাইল্ড অ্যান্টিসেপ্টিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন।
যৌনজীবনে বিপর্যয় আসে:
ডায়া"বেটিসে আক্রান্ত অনেক পুরুষ জীবনকালের কোনো না কোনো সময় ইরেক্টাইল ডিসফাংশনে ভুগেন, অর্থাৎ যৌনমিলনের সময় পেনিসকে যথেষ্ট খাড়া করতে ব্যর্থ হন। ডা. হামদি বলেন, ‘মনস্তাত্ত্বিক কারণে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হতে পারে, আবার টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়ার কারণেও পুরুষেরা সহবাসের সময় ব্যর্থ হতে পারেন।
ডায়া"বেটিস রোগীদের টেস্টোস্টেরন কমে যেতে পারে, বিশেষ করে যদি তারা স্থূল হয়ে থাকেন। এছাড়া যারা দীর্ঘসময় ধরে ডায়া"বেটিসে ভুগছেন তাদের পেনিস সংশ্লিষ্ট রক্তনালী ও স্নায়ুতে সংঘটিত পরিবর্তনও পুরুষত্বহীনতার কারণ হতে পারে।’ ডায়া"বেটিসে আক্রান্ত মধ্য বয়স্কা ও তদোর্ধ্ব বয়সের নারীদেরও যৌন সমস্যা হতে পারে, অবস্টেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনিকোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে।
এর সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে, স্নায়ুর ক্ষতি নারীর যৌনাঙ্গে পিচ্ছিলতা কমিয়ে দেয় ও চরমসুখ পেতে বাধা দেয়।
শ্রবণশক্তি কমে যায়:
মানুষ যখন বার্ধক্যে পৌঁছায়, শ্রবণশক্তি কিছু না কিছু কমে যায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (সিডিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডায়া"বেটিস থাকলে শ্রবণশক্তি আরো বেশি কমে যেতে পারে।
ডায়া"বেটিস অন্তঃকর্ণের রক্তনালী ও স্নায়ুর ক্ষতি করে শ্রবণশক্তি কমিয়ে দেয়। ডা. রডবার্ড বলেন, ‘ডায়া"বেটিস রোগীদের শ্রবণ সুরক্ষার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে রক্ত শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।’
সিডিসি প্রতিবছর শ্রবণ পরীক্ষা করতে পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া কানের ক্ষতি করতে পারে এমনকিছু থেকেও বিরত থাকতে হবে, যেমন- উচ্চ ভলিউমে অডিও শোনা।
আসুন ! শরীরের বিভিন্ন অংগ সমুহের যত্ন নেই ও
এই বিষয়ে সচেতন থাকি ...
বিস্তারিত জানতে সেন্ড ম্যাসেজে ক্লিক করে ইনবক্স করুন।।
শুভ কামনা ...♦️