Dr. Iqbal Mahmud

Dr. Iqbal Mahmud MBBS , BCS
MD(Cardiology), MACP (USA)
Fellowship on Interventional Cardiology,Fortis New Delhi,India

ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিতে অনেক প্রসিডিওর হয়। আমরা সাধারণত এনজিওগ্রাম,স্ট্যান্টিং ( রিং লাগানো), পেসমেকার, কেউ কেউ ইলেকট...
26/10/2025

ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিতে অনেক প্রসিডিওর হয়। আমরা সাধারণত এনজিওগ্রাম,স্ট্যান্টিং ( রিং লাগানো), পেসমেকার, কেউ কেউ ইলেকট্রোফিজিওলজি করি।

মেডিকেল সায়েন্সে বায়োপসি ( Biopsy) নামে একটা পরীক্ষা আছে। যেটা দিয়ে সাধারণত কোন জায়গায় কোষের ধরণ দেখে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ ডায়াগনোসিসে ব্যবহার করা হয়।

এটার সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত।

তো কার্ডিয়াক বায়োপসি নামেও একটা পরীক্ষা আছে।
যেটাতে হার্টের মাংস, শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে হার্ট থেকে মাংস নিয়ে সেটা পরীক্ষা করা হয়।

সব সাবজেক্টে কিছু থিওরী থাকে যেগুলো পাশের জন্য জানতে হয়,এই পরীক্ষা টাও কার্ডিওলজিতে তেমন মনে হতো। বইয়ে পড়েছি, যতটুকু জানি এটা আমাদের দেশে হয় না।

এটা এতই রেয়ার যে, কখনো করা তো অনেক দূর, দেখার সুযোগ হবে এমন চিন্তাই মাথায় আসে নি।

দিল্লীতে যাওয়ার পর দেখি আমাদের ইউনিটে এই পরীক্ষা টা হয়। ফর্টিসের একটা সৌন্দর্য হচ্ছে এখানে হার্টের এ টু জেড সব হয়,এমনকি হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টও হয়।

মূলত এই পরীক্ষা টা আমরা ট্রান্সপ্লান্টেড হার্টের কোষের বিরুদ্ধে রোগীর শরীর কোন বিরুপ আচরণ ( ট্রান্সপ্লান্ট ইম্যুউনিটি)) করছে কিনা সেটা দেখার জন্য করে থাকি।

যেহেতু হার্টটা অন্য মানুষের সুতরাং যার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সে এটাকে অপরিচিত বা শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে মানবদেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে নষ্ট করে দিতে চায়।সেরকম কিছু হচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য আমরা এই পরীক্ষাটা করা হয়।

গত সপ্তাহেও একটা কার্ডিয়াক বায়োপসি কেস ছিল। আগেরবার করার সময় কনসালটেন্ট আমাকে এই পরীক্ষার প্রসিডিওর নিয়ে ব্রিফ করছিলেন। এবারের রোগীর হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে কিছুদিন আগে, ডিসচার্জের সময় বায়োপসির জন্য আমাদের এখানে পাঠানো হয়েছে।
কার্ডিয়াক বায়োপসি নেয়ার কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ আমার কাছে আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতো। আমরা মোট ছয়টা স্যাম্পল নিয়েছিলাম। অসাধারণ থ্রিলিং আর ফিলিংস্।

Just beyond imagination। একটা ট্রেনিংয়ের পূর্ণতা এখানেই।
বই কেনা আমার একটা রোগ,আমি প্রচুর বই কিনি। কার্ডিওলজির এত বই আমার আছে যে আমি ঢাকায় বই কিনতে গেলে দোকানদার ভাবতো পাগলটা আসছে যা পারি গছায় দি। সেও দিতো, আমিও কিনতাম। বই কিনার পিছনে আমার লজিক, ১০০০ টাকার বই থেকে যদি ১০ লাইন শিখতে পারি তাহলে টাকা উসুল।

জমানো গুছানো চেম্বার ছেড়ে ফর্টিসে একবছরের জন্য যাওয়ার উসুল হচ্ছে কার্ডিয়াক বায়োপসি।

প্রয়োজন পড়লে এই পরীক্ষা আমরা করতে পারি। সমস্যা হচ্ছে কার্ডিয়াক টিস্যুর হিস্টোপ্যাথলজি কে করবে,কোথায় করবে? কবে যে দেশে এসব এভেলেবল হবে।

19/10/2025

একজন সম্মানিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট পেলাম। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। খবরটি শুনে সবাই শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। উনার প্রোফাইলে গিয়ে দেখলাম মাত্র গতরাতে তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিলেন —

"আল্লাহ মালুম, কোন দিকে যাচ্ছি। স্ট্রেসে বুকের ব্যথাটা বেড়ে যায়।"

একটি সরল, হয়তো অসহায় বাক্য, কিন্তু সেটিই ছিল মৃত্যুর আগের সতর্কবার্তা।

আমরা চিকিৎসকরা চেম্বারে, হসপিটালে রোগীদের স্বজনদের বারবার বলি — এ ধরনের বুকে ব্যথা কখনও হালকাভাবে নেবেন না, চেপে রাখবেন না। বিশেষ করে যদি ব্যথা বুকের মাঝখানে হয়, ঘাড়ে বা হাতে ছড়িয়ে পড়ে, ঘাম আসে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা মাথা ঘোরে — তাহলে সেটি হার্টের সতর্ক সংকেত হতে পারে। এই অবস্থায় দ্রুত হসপিটালে যেতে হবে।

আল্লাহ চাইলে এই ধরনের বুকে ব্যথার কারণ যদি সময়মতো শনাক্ত করা যায়, তাহলে হার্ট অ্যাটাকের মতো ভয়াবহ অবস্থা থেকেও জীবন বাঁচানো সম্ভব। এখনকার চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রাইমারি পিসিআই (Primary PCI) বা জরুরি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির মাধ্যমে ব্লক করা ধমনী খুলে দেওয়া যায় মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই। এতে রোগীর হার্টের ক্ষতি অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হয়, এবং তিনি সুস্থ জীবন ফিরে পেতে পারেন।

কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো—আমরা অনেক সময় “অল্প ব্যথা” ভেবে সহ্য করি, “কিছু হবে না” ভেবে অপেক্ষা করি, আর তাতেই হারিয়ে যায় সেই মূল্যবান সময়, যেটা জীবন বাঁচাতে পারত।

👉 স্মরণ রাখুন:

✅ বুকে ব্যথা মানেই গুরুত্ব দিন।
✅২০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে দেরি না করে হাসপাতালে যান।
✅ নিকটস্থ হার্ট সেন্টারে পৌঁছাতে দেরি করবেন না।
✅ ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ – এসব ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করুন।

এই শিক্ষকের মৃত্যু আমাদের জন্য এক বেদনাদায়ক শিক্ষা — জীবন কত ভঙ্গুর, আর সচেতনতা কত মূল্যবান।

আপনার চারপাশে কেউ এমন উপসর্গে ভুগলে দেরি নয়, এখনই পদক্ষেপ নিন। সময়ই জীবন।

🧠 সিনকোপ (Syncope) কী?সিনকোপ বা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (ইংরেজিতে fainting বা passing out) এমন একটি অবস্থা, যাতে ব্যক্তি হ...
14/10/2025

🧠 সিনকোপ (Syncope) কী?

সিনকোপ বা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (ইংরেজিতে fainting বা passing out) এমন একটি অবস্থা, যাতে ব্যক্তি হঠাৎ করে জ্ঞান হারান এবং সাধারণত কয়েক সেকেন্ড বা মিনিটের জন্য স্থায়ী হয় এবং এরপর ব্যক্তি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

এটি ঘটে যখন মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ সাময়িকভাবে কমে যায়, ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিনকোপ ক্ষণস্থায়ী এবং বিপজ্জনক নয়, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এটি হৃদরোগ, স্নায়বিক সমস্যা বা অন্যান্য জটিল রোগের পূর্বাভাস হতে পারে।

সিনকোপের আগে অনেকেই প্রি-সিনকোপ নামক উপসর্গগুলো অনুভব করেন — যেমন মাথা ঘোরা, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, কানে শব্দ বা শুনতে অসুবিধা, দুর্বল লাগা, ঘাম হওয়া বা হঠাৎ ঠান্ডা লাগা। আবার অনেক সময় কোনো পূর্বলক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ করে চেতনা হারিয়ে ফেলেন।

💓 সিনকোপের মূল কারণ

সিনকোপের প্রধান কারণ হলো মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহের ঘাটতি, এবং এটি মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যায় 👇

❤️ ১. কার্ডিয়াক সিনকোপ (Cardiac Syncope)

এটি সবচেয়ে গুরুতর ধরনের সিনকোপ, যা হৃদপিণ্ড বা রক্তনালীর সমস্যার কারণে ঘটে। সাধারণত এটি কোনো সতর্কতা ছাড়াই হঠাৎ ঘটে এবং বিপজ্জনক হতে পারে।

প্রধান কারণসমূহ:

⚡ অ্যারিথমিয়া (Arrhythmia) – হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়, ফলে হার্ট সঠিকভাবে ব্রেনে রক্ত পাম্প করতে পারে না।

💔 কার্ডিওমায়োপ্যাথি (Cardiomyopathy) – হৃদপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে।

🚫 অ্যাওর্টিক স্টেনোসিস – মানুষের হৃদপিণ্ড ও শরীরের সবচেয়ে বড় ধমনী (যাকে মহাধমনী বলা হয়) এর মাঝখানে একটা ভাল্ভ থাকে, এই ভালভ সরু হয়েও সিনকোপ হয়। এসব রোগীরা সাধারণত পরিশ্রমের সময় সংজ্ঞা হারান।

💥 অ্যাওর্টিক ডিসেকশন – হৃদপিণ্ড থেকে শরীরে রক্তবহনকারী প্রধান ধমনীর ছিঁড়ে যাওয়া, যা জীবনহানিকর।

যদি ঘন ঘন অজ্ঞান হয়ে যান। অতিরিক্ত গরম, ডিহাইড্রেশন বা হঠাৎ দাঁড়ানোর কারণে না হয়, তাহলে এটি হৃদজনিত সমস্যা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

💫 ২. রিফ্লেক্স সিনকোপ (Reflex Syncope)

এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরণের সিনকোপ, যা ব্রেনের রিফ্লেক্স বা প্রতিক্রিয়ার কারণে ঘটে। এতে হৃদপিণ্ডের স্পন্দন ধীর হয়ে যায় বা রক্তনালী প্রশস্ত হয়, ফলে রক্তচাপ হঠাৎ কমে যায় এবং মস্তিষ্কে রক্ত যাওয়া বন্ধ হয়।
রিফ্লেক্স সিনকোপের ধরন:

💧 ভ্যাসোভাগাল সিনকোপ (Vasovagal Syncope) — সবচেয়ে সাধারণ রূপ। যা কোন অস্বাভাবিক বিষয় যেম রক্তক্ষরণ দেখা, ব্যথা, মানসিক চাপ, ইনজেকশন নেওয়া, রক্তদান, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা অতিরিক্ত গরমে হতে পারে।

⚙️ সিচুয়েশনাল সিনকোপ (Situational Syncope) — কাশি, হাঁচি, হাসি, খাবার গেলার সময় , প্রস্রাব বা মলত্যাগের সময় হঠাৎ রক্তচাপ কমে ঘটে।

🧣 ক্যারোটিড সাইনাস সিনকোপ (Carotid Sinus Syncope) — ঘাড়ে চাপ, শক্ত কলার বা টাই পরা বা ঘাড় ঘোরানোর সময় ধমনীর উপর চাপ পড়লে হয়; সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়।

এই ধরনের সিনকোপ সাধারণত জীবনহানিকর নয়, তবে এটি ঘন ঘন হলে ট্রিগার চিহ্নিত করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

📉 ৩. অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন (Orthostatic Hypotension)

বসা থেকে দাঁড়ানোর সময় রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং সিনকোপ হয়।

এটি বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং প্রায়ই ডিহাইড্রেশন, অতিরিক্ত গরম, হাইপ্রেসারের ঔষধ বা ডায়ুরেটিকস জাতীয় ঔষধের এর কারণে ঘটে।

পোস্টারাল অর্থোস্ট্যাটিক ট্যাকিকার্ডিয়া সিনড্রোম (POTS) নামের এক বিরল অবস্থায় দাঁড়ালে হৃদস্পন্দন দ্রুত বেড়ে যায়, যার ফলে মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়া ঘটতে পারে।

🩺 সিনকোপ হলে কী করবেন?

যদি কেউ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়, তখন 👇

তাকে শুইয়ে দিন যাতে পা সামান্য উঁচু থাকে — এতে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়ে।

জামাকাপড় ঢিলা করুন ও বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন।

দ্রুত চেতনা না ফিরলে CPR শুরু করুন এবং জরুরি চিকিৎসা সহায়তা নিন।

ঘন ঘন সিনকোপ হলে অবশ্যই রক্তচাপ, ইসিজি, ও হৃদপিণ্ডের পরীক্ষা করানো জরুরি।

💬 শেষ কথা

সিনকোপ অনেক সময় সাময়িক বা ক্ষতিকর নয়, কিন্তু ঘন ঘন হলে এটি হৃদপিণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র বা রক্ত সঞ্চালনের জটিলতার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই অজ্ঞান হওয়াকে কখনও অবহেলা করবেন না। কারণ, কখনও কখনও একটি সাধারণ অজ্ঞান হওয়া জীবন রক্ষার সতর্ক ঘণ্টা হতে পারে।

হৃদরোগ বিশেষ করে করোনারি আর্টারি ডিজিজ আমাদের দেশে দিন দিন বাড়ছে। অনেক সময় হার্টের ধমনীতে কোলেস্টেরল বা প্লাক জমে রক্তনা...
06/10/2025

হৃদরোগ বিশেষ করে করোনারি আর্টারি ডিজিজ আমাদের দেশে দিন দিন বাড়ছে। অনেক সময় হার্টের ধমনীতে কোলেস্টেরল বা প্লাক জমে রক্তনালী সরু হয়ে যায়, যার ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এই অবস্থায় রোগী বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এমনকি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতেও পড়তে পারেন।

হার্টের প্রধান রক্তনালীতে (Left Main) ব্লক ৫০% এর বেশি ও অন্যান্য রক্তনালী ৭০% এর বেশি হলে প্রচলিত চিকিৎসায় ধমনীর ব্লক খুলে সেখানে আমরা রিং বসাই যাকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বলা হয়। এতে একটি বেলুন দিয়ে ধমনীর ব্লক প্রসারিত করা হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেখানে একটি স্টেন্ট ( সরু কোবাল্ট,ক্রোমিয়াম বা প্লাটিনাম ধাতু দিয়ে তৈরি) বসানো হয় যাতে ধমনী পুনরায় সংকীর্ণ না হয়। এই চিকন ধাতুর তারের মধ্যে এক ধরনের ঔষুধ দেওয়া থাকে যে ওষুধটি রক্তনালীর ভিতরে পুনরায় ব্লক আসার প্রবণতা রোধ করে।

তবে সব ক্ষেত্রে স্টেন্ট বসানো সম্ভব হয় না বা কিছু ক্ষেত্রে স্টেন্ট বসানোর পরও সমস্যা তৈরি হয়। বিশেষ করে চিকন বা সরু রক্তনালীতে, আগে বসানো রিংয়ের ভিতর নতুন করে ব্লক হলে এসব জায়গায় আবার রিং করলে নতুন আবারো রিংয়ে ব্লক আসার সম্ভাবনা থাকে। তাই এসব জায়গায় ড্রাগ কোটেড বেলুন (DCB) নামে একটি আধুনিক ও কার্যকর বিকল্প হিসেবে এসেছে।
---

ড্রাগ কোটেড বেলুন কী?

ড্রাগ কোটেড বেলুন হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের বেলুন,যাতে আমাদের ব্যবহৃত রিংয়ে যে ধরনের ঔষুধ থাকে তা এই বেলুনের গায়ে লাগানো থাকে। ফলে এই বেলুন দিয়ে ধমনী প্রসারিত করার সময় বেলুনের গায়ে থাকা ওষুধ (সাধারণত অ্যান্টি-প্রোলিফারেটিভ ড্রাগ) সরাসরি ধমনী প্রাচীরে পৌঁছে যায়। এই ওষুধ ধমনীতে অপ্রয়োজনীয় কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে দেয়, ফলে পুনরায় ব্লক বা সংকীর্ণ হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
---

কখন DCB ব্যবহার করা হয়?

★ছোট আকারের ধমনীতে ব্লক থাকলে যেখানে স্টেন্ট বসানো কঠিন।

★স্টেন্ট বসানোর পর পুনরায় ব্লক (In-stent restenosis) হলে।

কিছু বিশেষ ধমনী ব্লক যেখানে ধাতব স্টেন্ট দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
---

ড্রাগ কোটেড বেলুনের সুবিধা

✅ ধমনীতে স্থায়ী কোনো ধাতব বস্তু (স্টেন্ট) রাখতে হয় না।
✅ পুনরায় ব্লক হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
✅ বিশেষ ক্ষেত্রে স্টেন্টের চেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর।
✅ ভবিষ্যতে আবার প্রয়োজনে চিকিৎসা করা সহজ হয়।
---

সীমাবদ্ধতা

- সব ধরনের ব্লকে ব্যবহার করা যায় না।
- দক্ষ কার্ডিওলজিস্ট ও আধুনিক ক্যাথল্যাব দরকার।
- কিছু ক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক বেশি হতে পারে।
---

সচেতনতার বার্তা

হার্টের রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সুস্থ জীবনযাপন – নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য, ধূমপান পরিহার, ডায়াবেটিস-চাপ নিয়ন্ত্রণ। তবে যদি ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রিংয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন আধুনিক পদ্ধতি, যেমন ড্রাগ কোটেড বেলুন রোগীর জন্য জীবন রক্ষাকারী হতে পারে।

👉 তাই, বুকে চাপ বা অস্বাভাবিক ব্যথা অবহেলা করবেন না। দ্রুত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

গত ২৪-২৫ তারিখ ছিল SCAI( Society of Cardiovascular Angiography and intervention) এ আয়োজিত আন্তর্জাতিক কনফারেন্স। SCAI পর...
27/09/2025

গত ২৪-২৫ তারিখ ছিল SCAI( Society of Cardiovascular Angiography and intervention) এ আয়োজিত আন্তর্জাতিক কনফারেন্স। SCAI পরিচালিত হয় আমেরিকা থেকে। এই কনফারেন্স বাংলাদেশ ও আমেরিকান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে আয়োজন করা হয়।

কনফারেন্সে আমার নিজের করা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটা কেস আমি দেখাই। যেটাতে রোগীর রক্তনালি ফুটা হয়ে গেলে নতুন ইনোভেটিভ উপায়ে আমি সেটা বন্ধ করি। ঢাকার তুলনায় চট্টগ্রামে সুযোগ সুবিধা যন্ত্রপাতি কম, এরকম জটিল কেস হেন্ডেল করাও কঠিন।

সরকারী হাসপাতালে একদিকে গরীব রোগী অন্যদিকে অপ্রতুল জিনিস। এরকম একটা ছিদ্র বন্ধ করতে ৭০০০০-৮০০০০ টাকার জিনিস প্রয়োজন পড়ে আবার অনেক সময় করাও যায় না। ফলে অনেক রোগী মারাও যান। গরীব জায়গায় মিনিমাম খরচে ( যেটা করতে আমাদের মাত্র ৭০০০ টাকা দামের একটা বেলুন লেগেছে) কিভাবে এই কাজ টা করা যায় যেটা আমি দেখিয়েছি।

কেস শেষে ফ্যাকাল্টি ডিনারে আমি ফলো করি, এরকম একজন প্রফেসর আমাকে বলেছেন তোমার জিনিসটা নতুন শিখলাম, ভালো প্রেজেন্ট করছো।

আয়োজকদের একজন আমেরিকার নেভাদার একটা হাসপাতালের হেড প্রফেসর চৌধুরী এইচ আহসান ও আমাকে ইমপ্রেসিভ লিখে টেক্সট করেন।

এই কেস কম্পিটিশনে আমি 3rd Best Case এর পুরস্কার জিতি।

এছাড়াও উপস্থিত কার্ডিওলজিষ্টদের মধ্যে কুইজ কম্পিটিশনে দ্বিতীয় পুরস্কার পাই।

একটা সেশনে এই প্রথমবারের মতো প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করি।

দারুণ এক্সপেরিয়েন্স। আলহামদুলিল্লাহ।

SCAI তে সুযোগ করে দেয়ার জন্য আয়োজক কর্তৃপক্ষের নিকট আমি কৃতজ্ঞ, একই সাথে কৃতজ্ঞতা আমার সকল শিক্ষক ও রোগীর প্রতি, যারা আমাকে প্রতিদিন শিখাচ্ছেন।

হার্ট আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি। এটি শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়। তাই হার্ট...
12/09/2025

হার্ট আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি। এটি শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়। তাই হার্টে সামান্য সমস্যা হলেও তা পুরো শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

অনেক সময় রোগীরা বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা অস্বাভাবিক ক্লান্তি নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসেন। আবার কেউ কেউ নিয়মিত চেকআপের জন্যও হার্টের পরীক্ষা করাতে চান।
তখন প্রেসক্রিপশনে আমরা প্রায়ই দেখি—ECG, ECHO, ETT,রক্তে গ্লুকোজ ও চর্বির পরিমাণসহ বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষার নাম লেখা থাকে।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এই সব পরীক্ষা কেন দরকার বা হার্টের সমস্যা নির্ণয়ে কি কি পরীক্ষা করা প্রয়োজন?

এর উত্তর হলো—প্রতিটি পরীক্ষার মাধ্যমে হার্টের ভিন্ন ভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য।

রক্ত পরীক্ষা সবচেয়ে সহজ এবং প্রাথমিক পরীক্ষা। যখন হার্ট অ্যাটাকের মতো অবস্থায় হার্টের পেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন কিছু নির্দিষ্ট পদার্থ রক্তে নির্গত হয়। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সেসব পদার্থ শনাক্ত করা যায় এবং বোঝা যায় হার্টের পেশী কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি কোলেস্টেরল, গ্লুকোজের মাত্রাও জানা যায়, যা ভবিষ্যতে হার্টের রোগের ঝুঁকি নিরুপনে সাহায্য করে।

ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজি হার্টের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ পরিমাপ করে। এর মাধ্যমে হার্টবিটের ছন্দ, হার্ট অ্যাটাক, রক্তনালীতে ব্লকের চিহ্ন কিংবা অন্য কোনো অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করা যায়।

ইকোকার্ডিওগ্রাম বা হার্টের আলট্রাসাউন্ড যা দিয়ে ভালভ, চেম্বার এবং রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা বোঝা যায়।

আরেকটি প্রচলিত পরীক্ষা হলো ইটিটি (ETT) যেখানে ট্রেডমিল বা সাইকেল চালানোর সময় ইসিজি রেকর্ড করা হয়। এতে ডাক্তাররা দেখতে পান সক্রিয় অবস্থায় হার্ট কেমন কাজ করছে।

আরও উন্নত পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে নিউক্লিয়ার কার্ডিয়াক স্ট্রেস টেস্ট, করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম,সিটি করোনারী এনজিওগ্রাম, কার্ডিয়াক এমআরআই। প্রতিটি পরীক্ষার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তবে এগুলো স্পেশ্যাল কেইসে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞগণ প্রেসক্রাইব করে থাকেন।

নিউক্লিয়ার কার্ডিয়াক স্ট্রেস টেস্টে রক্তে একটি হালকা তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইনজেক্ট করা হয়। বিশেষ ক্যামেরার সাহায্যে তখন দেখা যায় বিশ্রাম এবং ব্যায়াম উভয় অবস্থায় হার্টের পেশীতে রক্ত কেমন প্রবাহিত হচ্ছে। এই পরীক্ষা বিশেষ করে তখন করা হয় যখন ডাক্তার সন্দেহ করেন যে রোগীর হার্টে ব্লকেজ রয়েছে কিন্তু সাধারণ ইসিজি বা ইকো থেকে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।

করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম অনেকটা হার্টের ভেতরের সরাসরি চিত্র দেখার মতো। এতে একটি ক্যাথেটার ধমনীতে প্রবেশ করিয়ে বিশেষ ঔষধ বা কনট্রাস্ট এজেন্ট ব্যবহার করে এক্স-রে ইমেজ তৈরি করা হয়। এতে ধমনীতে কোথায় ব্লক হয়েছে, কতটা সংকীর্ণতা আছে, এমনকি রক্তপ্রবাহ কীভাবে ব্যাহত হচ্ছে তা স্পষ্টভাবে দেখা যায়। অনেক সময় এই পরীক্ষার সাথেই চিকিৎসা (যেমন স্টেন্ট বসানো) করা হয়।

হার্ট এমআরআই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হার্টের ৩-ডি ছবি তৈরি করে। এটি কেবল গঠনই নয়, বরং রক্তপ্রবাহ, টিস্যুর ক্ষতি, এমনকি পূর্বে অজানা থেকে যাওয়া হার্ট অ্যাটাকের চিহ্নও শনাক্ত করতে সাহায্য করে। যাদের জটিল হার্ট ডিজিজ রয়েছে বা পূর্বে অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এমআরআই বিশেষভাবে কার্যকর।

করোনারি সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাম (CCTA) হলো তুলনামূলকভাবে সহজ এবং নন-ইনভেসিভ পরীক্ষা। এতে শরীরে কোনো যন্ত্র প্রবেশ করানো লাগে না। উন্নতমানের সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে করোনারি ধমনীগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য উপকারী যাদের বুকে ব্যথা আছে কিন্তু প্রচলিত পরীক্ষায় সঠিক কারণ ধরা পড়ছে না।

সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রতিটি পরীক্ষার আলাদা উদ্দেশ্য রয়েছে এবং ডাক্তাররা রোগীর উপসর্গ, ঝুঁকি এবং অবস্থা অনুযায়ী উপযুক্ত পরীক্ষা নির্ধারণ করেন। এগুলো হয়তো শুনতে জটিল মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলিই হার্টের রোগের প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
তবে বেসিক টেস্ট হিসেবে ECG, echocardiography, ETT, RBS, Fasting Lipid profile করা যায়।

হার্টের কোনো সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো করান। সুস্থ হার্টই একটি প্রাণবন্ত জীবনের মূলভিত্তি।

হৃদরোগের পর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ব্যায়াম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ শুধু শক্তি ...
25/08/2025

হৃদরোগের পর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ব্যায়াম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ শুধু শক্তি ও উদ্যমই বাড়ায় না, বরং হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৫০% পর্যন্ত কমাতে পারে।

তবে অনেক রোগী হার্ট অ্যাটাক বা অন্যান্য হৃদরোগের পর ব্যায়াম শুরু করতে ভয় পান বা দ্বিধায় ভোগেন—কোথা থেকে শুরু করব? কতটা ব্যায়াম নিরাপদ?

এই নির্দেশিকাটি হৃদরোগীদের ধাপে ধাপে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ্‌।

🏥 কার্ডিয়াক পুনর্বাসনের (Cardiac Rehab) ভূমিকাঃ

কার্ডিয়াক রিহ্যাব হলো একটি বিশেষায়িত প্রোগ্রাম যা আপনাকে নিরাপদে শারীরিক কার্যকলাপ শুরু করতে ও স্বাস্থ্যকর জীবনযা পন করতে সহায়তা করবে।

রিহ্যাব টিমে সাধারণত থাকেন:
✅ কার্ডিওলজিস্ট
✅ ফিজিয়াট্রিস্ট
✅ ফিজিওথেরাপিস্ট
✅ ডায়েটিশিয়ান
✅ সাইকোলজিস্ট

তারা একসাথে কাজ করে আপনাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবেন। যদি আপনার এলাকায় রিহ্যাব সেন্টার না থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই নিরাপদ প্রোগ্রাম অনুসরণ করতে পারেন।

🚶‍♂️ ব্যায়াম শুরু করা – হাঁটা দিয়ে শুরু করুন

অনেকের জন্য হাঁটা সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ ব্যায়াম। শুরুতে ছোট পরিসরেই হাঁটুন – যেমন হলওয়ে, বাসার আঙিনা, বা নিকটবর্তী রাস্তা। ধীরে ধীরে সময় ও দূরত্ব বাড়ান।

হাঁটার প্রোগ্রাম যেভাবে পরিকল্পনা করবেন -

সপ্তাহ ১: প্রতি দ্বিতীয় দিন, ১০ মিনিট সহজ হাঁটা
সপ্তাহ ২: ৫ মিনিট ওয়ার্ম আপ + ১০ মিনিট দ্রুত হাঁটা + ৫ মিনিট রেস্ট নেয়া।
সপ্তাহ ৩: সপ্তাহে ৪ দিন, ১৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা
সপ্তাহ ৪: সপ্তাহে ৪ দিন, ২০ মিনিট দ্রুত হাঁটা
সপ্তাহ ৫–৬: সপ্তাহে ৫ দিন, ২৫–৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা, সামান্য উঁচু পথে চেষ্টা করুন।

প্রতিবার ব্যায়ামের আগে ৫–১০ মিনিট ওয়ার্ম আপ এবং শেষে স্ট্রেচিং করুন।

📏 F**T নীতি – সঠিক ব্যায়ামের নিয়ম

আপনার ব্যায়াম কার্যকরী ও নিরাপদ রাখতে F**T নীতি অনুসরণ করুন:

🔹 F – Frequency (বারবার): সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন ব্যায়াম করুন
🔹 I – Intensity (তীব্রতা): হালকা থেকে মাঝারি পর্যায়ে;যতটুকু পরিশ্রম করলে শ্বাস দ্রুত হবে তবে কথোপকথন চালানো সম্ভব হবে
🔹 T – Time (সময়): প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট
🔹 T – Type (ধরন):

- অ্যারোবিক: হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার, এটি আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে, যা আপনার হৃদয়, ফুসফুস এবং রক্তসংবহনতন্ত্রকে কর্মক্ষম করে।

- স্ট্রেচিং বা নমনীয়তা ব্যায়াম আপনার পেশীগুলিকে শিথিল রাখে এবং আপনার জয়েন্টগুলিকে সচল রাখে।

⚠️ আপনার শরীরের কথা শুনুন

ব্যায়ামের সময় নিচের অনুভূতি স্বাভাবিক:
✔️ হালকা ক্লান্তি
✔️ শ্বাস দ্রুত হওয়া কিন্তু শ্বাসকষ্ট নয়
✔️ সামান্য ঘাম
✔️ শরীর শিথিল লাগা

কিন্তু নিচের উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যায়াম বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন:
❌ বুকে ব্যথা বা চাপ (এনজাইনা)
❌ মাথা ঘোরা বা বমি ভাব
❌ তীব্র শ্বাসকষ্ট
❌ অতিরিক্ত দ্রুত হৃদস্পন্দন
❌ ঠান্ডা ও আঠালো ঘাম

হৃদরোগের পর ব্যায়াম শুরু করা চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে, তবে সঠিক দিকনির্দেশনা ও ধাপে ধাপে অগ্রগতি আপনাকে সুস্থ ও সক্রিয় জীবন ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই নতুন ব্যায়াম শুরু করবেন না।

☀️☀️ পার্কভিউ হাসপাতালে নিউরোথ্রম্বোলাইসিসঃ নতুন যুগের সূচনাআলহামদুলিল্লাহ, আমার অনেক দিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। অন্যভা...
18/08/2025

☀️☀️ পার্কভিউ হাসপাতালে নিউরোথ্রম্বোলাইসিসঃ নতুন যুগের সূচনা

আলহামদুলিল্লাহ, আমার অনেক দিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। অন্যভাবে বলতে গেলে, দিনটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

⚡⚡ইন্ডিয়া থেকে এসে আমি পার্কভিউ হাসপাতালে প্রাইমারী পিসিআই এর ক্যাম্পেইন শুরু করি। একই সাথে পার্কভিউ হাসপাতালের ডায়নামিক ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা এটিএম রেজাউল করিম ভাইকে নিউরোথ্রম্বোলাইসিস শুরু করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করি। উনি এক কথায় রাজি হোন। আমরা প্রাথমিকভাবে নিউরোমেডিসিনের নতুন তুর্কিদের সাথে দুই একটা সিটিং ও দেই। তারপরেও সব মিলিয়ে ব্যাটে-বলে হয়ে উঠছিল না। মাঝৎানে আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার নিউরোলজিস্ট বন্ধুদের এই সেবা পার্কভিউতে চালুর ব্যাপার পীড়াপীড়ি করতে থাকি।

নিউরোথ্রম্বোলাইসিস বিষয়টা নিয়ে একটু বলতে হয়, মানুষের ব্রেনে যে স্ট্রোক হয় তার অন্যতম একটা কারণ ব্রেনের রক্তনালিতে জমাট বেঁধে ব্রেনের একটা অংশের পচন।

আমরা সবাই স্ট্রোকের পরিণতি জানি যে, স্ট্রোকের রোগীরা প্যারালাইসিস বা পঙ্গু হয়ে যান, কথা বলতে পারেন না, অনেক রোগী নিজের খাবারটা নিজে খাওয়া, এমন কি প্রসাব পায়খানাও ঠিকমত করতে পারেন না। অনেক রোগী স্ট্রোকের পর মরা পর্যন্ত বিছানায় কাটিয়ে দেন। বিভীষিকাময় এক বেঁচে থাকা।

এখন এসব রোগীকে যদি স্ট্রোকের সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে আই রিপিট সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে এই ব্লক খোলার একটা বিশেষ ঔষধ দেয়া যায়, তাহলে তার এসব ভোগান্তি থেকে অনেকাংশে মুক্তি মিলে। এই বিশেষ চিকিৎসা কে বলে থ্রম্বোলাইসিস বা রক্তের চাকা ভাঙ্গা।

শনিবার সকালে পার্কভিউ তে আমার একজন পুরনো রোগী ব্রেন স্ট্রোকের ২ ঘন্টার মধ্যে ভর্তি হোন। উনার অনেক আত্মীয় স্বজনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আমি ইন্ডিয়ায় ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় উনি আমার স্যারের কাছে হার্টের চিকিৎসার জন্য যান। সে সূত্রে পরিচয় হলেও পরিবর্তীতে উনার সাথে আমার হৃদ্যতা পারিবারিক পর্যায়ে পৌঁছায়। গত পরশু রাতেও এলাকার এক গরীব রোগী নিয়ে উনি আমার চেম্বারে আসছিলেন।

উনার ইসিজি তেও কিছু সমস্যা দেখে সিসিইউ মেডিকেল অফিসার আমাকে কল দেন। তাছাড়া উনার আত্মীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও জানান যে উনি ভর্তি হয়েছেন। আমি যেন এটেন্ড করি। আমি তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে পৌঁছাই। গিয়ে দেখি খারাপ স্ট্রোক, উনার ডানপাশের মাসল পাওয়ার একেবারে জিরো। জিরো মানে জিরো। কোন নড়াচড়া নাই। কোন কথা বলতে পারেন না। অনেকবার ডাকলাম কোন রেসপন্স নাই। আমাকে একদম চিনলেন না। মনটা খারাপ হয়ে গেল, দুদিন আগেই কথা বললাম। বাঁশখালীতে উনার বাগানবাড়ি বেশ কয়েকবার দাওয়াত করছিলেন আমার যাওয়া হয়ে উঠে নাই।

সাথে সাথে সিটিস্ক্যান করলাম। দেখি ইস্কেমিক স্ট্রোক। মাথা আসলো উনাকে এখনই থ্রম্বোলাইসিস করতে হবে। উনার আত্মীয়ের সাথে কথা বললাম। চিকিৎসক ভাইয়া বললেন এটাই তো বেস্ট ট্রিটমেন্ট, তুমি এরেঞ্জ করো।

এসব আপগ্রেডেশনের ব্যাপারে আমি এমনিতেই নাচুনে বুড়ি, ঢোলের বাড়ি পেলে আর কি লাগে?

সাথে সাথে আমার বন্ধু নিউরোলজিস্ট ডা Shawkat Emran কে কল দিয়ে বললাম, এই ব্যাপারে আপনাকে আসতেই হবে। তার সাথে আমার এই বিষয়ে একাধিকবার লম্বা আলোচনা হয়েছে। সে বললো আমি ১০ মিনিটের মধ্যে আসছি। চট্টগ্রামের নিউরোলজির পরিচিত ও নির্ভরযোগ্য একজন, প্রফেসর শিউলী মজুমদার ম্যাডামকে আমি কল দিয়ে বললাম ম্যাডাম আপনাকে আসতে হবে, ইমরান অন দ্য ওয়ে। উনি বললেন উনিও আসতেছেন।

হার্টে ব্লক খোলার বেস্ট ওষুধ টা আমাদের স্টকে আছে। নিউরো টা কখনো ইউজ হয় নাই। তাই হাসপাতালেই নাই। দামী হওয়াতে অযথা এনে রাখা হয় নাই।

ডিস্ট্রিবিউটর কে ফোন করলাম, ঔষুধটা আমার লাগবে এবং এখনই। শুক্রবার হলেও সে রেসপন্স করলো। বললো তার কলিগ ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে ওষুধ নিয়ে পৌঁছাবেন।

এর মধ্যে ডা ইমরান চট্টগ্রাম মেডিকেলের থ্রম্বোলাইসিসে এক্সপার্ট আরেক ছোটভাই ডা রাফিদকেও ডেকে নেয়। তারা স্কোরিং, এসেসমেন্ট করে ডিসিশন নেয় যে থ্রম্বোলাইসিস করা যাবে। শিউলী ম্যাডাম আমাদের টিমকে লীড দেন। আমরা স্ট্রোকের সাড়ে ৩ ঘন্টার মধ্যে রোগীকে থ্রম্বোলাইসিস করি। একটু পরেই প্রফেসর হাসানুজ্জামান স্যারও রোগীকে দেখতে আসেন ও আমাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।
আমি পার্কভিউয়ের পক্ষ থেকে পুরো নিউরোটিম কে ধন্যবাদ ও উনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা পোষণ করছি।

১ ঘন্টা পর দেখি রোগীকে ডাকলে চোখ মেলে তাকাচ্ছেন, রেসপন্স করছেন। ৬ ঘন্টা পর দেখলাম উনার মাসল পাওয়ার আসতে শুরু করেছে। নিউরোলজিস্টগণ ব্রিফ করলেন থ্রম্বোলাইসিস পাওয়া রোগীর পরবর্তী রেজাল্ট খুব ভালো। মানে যে রোগী পায় নি তাদের ৩ মাসে যা উন্নতি হয়, থ্রম্বোলাইসিস করতে পারলে সেটা বহুগুণে বেশি হয়।আল্লাহ রহমত করলে অনেক রোগী স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতাও ফিরে পান।
আমরা পুরো টিম ঔষুধ শেষ করার পর আরো ১ ঘন্টা রোগীকে অবজার্ভ করি। ডা শওকত ইমরান রাতে আবার এসে দেখে যান। যদিও শুক্রবার আমার মেয়ের ফ্রাইডে ( তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা), তবু এসব রোগী ছেড়ে যেতে আমি কখনো পারি না। আমার দিবসো রজনী কাটে রোগীর পাশে। রাত ১০ টায় বাসায় ফিরি।

পরবর্তীতে আমরা ডিসিশন নেই, পার্কভিউ সিসিইউতে আমরা রেগুলার নিউরোথ্রম্বোলাইসিস করবো ইনশাআল্লাহ। যেখানে আমাদের নিউরোলজিস্ট ডা শওকত ইমরান লিড দিবেন, তার সাথে ২৪ ঘন্টা কাভার দেয়ার জন্য তাদের একটা টিম থাকবে। আমি এমডি সাহেবকে এই প্রস্তাব রাখলে, উনি বলেন তোমার যা যা লাগে সব দেয়া হবে। তুমি সার্ভিস এনসিওর করো।

আজকে আমার অসম্ভব ভালো লাগছে যে, পার্কভিউতে আমার স্বপ্নের নিউরোথ্রম্বোলাইসিস শুরু হয়েছে। আমার সব সময় মনে হয় আধুনিক চিকিৎসাগুলো পার্কভিউতে না হলে আর কোথায় হবে??

চট্টগ্রামে প্রাইভেট সেক্টরে দুই একটা সেন্টারে নিউরোথ্রম্বোলাইসিস শুরু হয়েছে এটার আশার দিক। তবে ২৪/৭ সেবা দেয়ার মতো কোন প্রোগ্রাম এখনো নাই।

আমি আশা রাখি পার্কভিউ প্রাইমারীর পিসিআই এর মতো স্ট্রোক চিকিৎসায় ও চট্টগ্রামে ভরসা স্থান হয়ে উঠবে।

স্ট্রোকের সাথে সাথে রোগীকে পার্কভিউতে পাঠাবেন, ঔষুধটা স্ট্রোকের সাড়ে ৪ ঘন্টার মধ্যে দিতে হবে। তাই দেরি করা যাবে না। মনে রাখতে হবে যত তাড়াতাড়ি থ্রম্বোলাইসিস করা যায় তত লাভ ( "Time is Brain")।

আমরা প্রস্তুত আছি, আপনিও সচেতন হোন।

🩺 লিপিড প্রোফাইলঃ হৃদরোগের ঝুঁকির অন্যতম কারণরেগুলার চেক-আপে করা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোর একটি হলো লিপিড প্রোফাইল। অনেক...
17/08/2025

🩺 লিপিড প্রোফাইলঃ হৃদরোগের ঝুঁকির অন্যতম কারণ

রেগুলার চেক-আপে করা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোর একটি হলো লিপিড প্রোফাইল। অনেক সময় রোগীরা নিজেরাই লিপিড প্রোফাইল বা কোলেস্টেরল পরীক্ষা করে চিকিৎসকের চেম্বারে আসেন।

আজকের আলোচনায় জানব—এই রিপোর্টে আসলে কী বোঝানো হয়, কোন লিপিড ভালো, কোনটি খারাপ, কখন ওষুধ প্রয়োজন হয়, এবং কীভাবে লিপিড নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

লিপিড প্রোফাইলের মাধ্যমে শরীরে থাকা চর্বির (যেমন কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড) মাত্রা নির্ণয় করা হয়। এগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হলে ব্রেন, হার্টসহ শরীরের বিভিন্ন রক্তনালিতে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। লিপিডের এই ভারসাম্যহীনতাকে মেডিকেল সায়েন্সে বলা হয় লিপিড ডিসঅর্ডার।

⚠️ লিপিড ডিসঅর্ডার কেন ঝুঁকিপূর্ণ?
লিপিড মূলত শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। শরীরের প্রতিটি কোষেই লিপিড থাকে। এছাড়া সেক্স হরমোনসহ বিভিন্ন হরমোন তৈরিতেও এটি অপরিহার্য।

কিন্তু কিছু লিপিড অতিরিক্ত হলে তা রক্তনালীতে জমে প্ল্যাক বা ব্লক তৈরি করে। পরবর্তীতে এটি ধমনী ব্লক করে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে LDL এবং উচ্চমাত্রার ট্রাইগ্লিসারাইড এ ধরনের জটিলতার প্রধান কারণ।

🧪 লিপিড প্রোফাইল টেস্টে সাধারণত চার ধরনের ফলাফল পাওয়া যায়:

১️⃣ টোটাল কোলেস্টেরল
👉 রক্তে মোট কোলেস্টেরলের পরিমাণ বোঝায়।
👉 ২০০-এর উপরে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
👉 সর্বদা ২০০-এর নিচে রাখা উচিত।

২️⃣ HDL (হাই-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন)
👉 “ভালো” কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত।
👉 এটি রক্তনালী থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সরিয়ে যকৃতে পৌঁছে দেয়, যেখানে তা ভেঙে যায়।
👉 ন্যূনতম ৪০ থাকতে হবে, আর ৬০-এর উপরে থাকলে হৃদরোগ প্রতিরোধে বাড়তি সুরক্ষা দেয়।
👉 ব্যায়াম, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম ইত্যাদি খাবার এটি বাড়াতে সাহায্য করে।

৩️⃣ LDL (লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন)
👉 একে বলা হয় খারাপ কোলেস্টেরল।
👉 ধমনীর দেয়ালে জমে ব্লক তৈরি করে।
👉 সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে ১৩০-এর নিচে, ডায়াবেটিস থাকলে ১০০-এর নিচে, আর পূর্বে হার্ট অ্যাটাক/রিং/বাইপাস/স্ট্রোক থাকলে ৫৫-এর নিচে থাকতে হবে।
👉 মনে রাখতে হবে: LDL যত কম, তত ভালো।
👉 কোন রিস্ক ফ্যাক্টর ছাড়াও যদি LDL ১৬০-এর বেশি হয়, তাহলে ওষুধ প্রয়োজন। তবে লাইফস্টাইল পরিবর্তন, ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাবার LDL কমাতে বড় ভূমিকা রাখে।

৪️⃣ ট্রাইগ্লিসারাইড
👉 শরীরের ক্যালোরি উৎপাদনে সাহায্য করে।
👉 অতিরিক্ত থাকলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, স্থূলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এমনকি প্যানক্রিয়াটাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
👉 আমাদের অঞ্চলে কার্বোহাইড্রেট-নির্ভর খাদ্যের কারণে এটি বেশি থাকে।
👉 ৫০০-এর নিচে হলে চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। অথচ অনেকেই ৩০০–৪০০ দেখেই অপ্রয়োজনীয়ভাবে ফেনোফাইব্রেট গ্রুপের ওষুধ খেয়ে থাকেন।

🧬 লিপিড ডিসঅর্ডারের কারণ
✅ জেনেটিক প্রবণতা
✅ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস (অতিরিক্ত চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট)
✅ স্থূলতা ও পেটের চর্বি
✅ অলস জীবনযাপন ও ব্যায়ামের অভাব
✅ ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, PCOS
✅ কিছু ওষুধের প্রভাব (যেমন স্টেরয়েড, ইস্ট্রোজেন, মানসিক রোগের ওষুধ)
✅ ফ্যামিলিয়াল হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া নামক জেনেটিক রোগ, যা শিশু বয়স থেকেই অতিরিক্ত লিপিড বাড়িয়ে অকাল হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি করে।

🩻 লক্ষণ
প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। রুটিন চেকআপেই বেশিরভাগ সময় ধরা পড়ে। তবে অত্যধিক কোলেস্টেরলের কারণে চোখের চারপাশে ব্যথাহীন সাদা গোটার মতো ফোলাভাব (জ্যান্থোমা) হতে পারে।

🧪 কোন পরীক্ষা দিয়ে জানা যাবে?
🔹 লিপিড প্রোফাইল (প্রাথমিক ধারণা দেয়)
🔹 লাইপোপ্রোটিন (LpA) টেস্ট (নিখুঁতভাবে ঝুঁকি নির্ধারণ)
🔹 করোনারি ক্যালসিয়াম স্কোর (CT স্ক্যান)
🔹 ক্যারোটিড ইনটিমা-মিডিয়া থিকনেস (CIMT) টেস্ট

🕒 কবে করবেন কোলেস্টেরল পরীক্ষা?
👦 ৯ বছর থেকে: প্রতি ৫ বছর অন্তর
👨 পুরুষ (৪৫+): প্রতি ১–২ বছর
👩 নারী (৫৫+): প্রতি ১–২ বছর
👴 ৬৫ বছরের পর: প্রতিবছর

🩺 লিপিড ডিসঅর্ডারের প্রতিকার ও প্রতিরোধ
✅ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
✅ পরিশোধিত চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট এড়িয়ে চলা
✅ নিয়মিত ব্যায়াম
✅ ধূমপান পরিহার
✅ ওজন নিয়ন্ত্রণ
✅ প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ

👉 লিপিড ডিসঅর্ডার অনেক সময় নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে, কারণ শুরুতে কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে সচেতনতা, নিয়মিত পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মাধ্যমে ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।

❤️ হার্ট সুস্থ রাখতে হলে নিয়মিত লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করা জরুরি।

বাতজ্বর বা রিউম্যাটিক ফিভার শব্দটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত হলেও এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে অনেক ভুল ধারণা। গ্রাম...
12/08/2025

বাতজ্বর বা রিউম্যাটিক ফিভার শব্দটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত হলেও এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে অনেক ভুল ধারণা। গ্রামাঞ্চলে অনেক কোয়াক অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকেন।

চেম্বারে অনেক সময় এমন রোগী পাওয়া যায়, যাদের A*O titre রিপোর্ট বেশি থাকলেই বাতজ্বর ধরে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ফলস্বরূপ রোগীরা নিজেকে বাতজ্বরের রোগী ভেবে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভোগেন। অথচ A*O titre বাতজ্বর নির্ণয়ে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।

★★★ বাতজ্বর আসলে কী, কেন হয়?
অনেকে মনে করেন গিরায় গিরায় বা হাড়ে ব্যথা হলেই বাতজ্বর হয় — কিন্তু এটা সবসময় সঠিক নয়।
কারণ:
✨ মানবদেহ একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়া Group A Streptococcus দ্বারা আক্রান্ত হলে গলায় সংক্রমণ (Pharyngitis) হয়। শরীর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গিয়ে এন্টিবডি তৈরি করে।
✨ Streptococcus ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিনের সঙ্গে হার্টের ভাল্ব ও গিরার পর্দার প্রোটিনের মিল রয়েছে।
✨ ফলে এন্টিবডি ভুল করে নিজের হার্ট ও গিরায় আক্রমণ শুরু করে।
✨ এভাবেই শুরু হয় বাতজ্বর নামের জটিল রোগ।

★★★ কারা বেশি ঝুঁকিতে?
➡️ অস্বাস্থ্যকর, ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারী শিশু
➡️ সাধারণত ৫–১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়
➡️ বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ শিশুর মধ্যে প্রায় ১০০ জন আক্রান্ত
➡️ উন্নত দেশে হার কম

★★★ বাতজ্বরের লক্ষণ
🔹 গলা ব্যথা, হালকা কাশি, জ্বর
🔹 ২–৩ সপ্তাহ পর বড় বড় গিরায় ব্যথা ও ফোলা (হাঁটু, কনুই, গোড়ালি ইত্যাদি)
🔹 ব্যথা সেরে গেলে অন্য গিরায় আক্রমণ
🔹 শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, খাদ্যে অরুচি, দুর্বলতা

★★★ বাতজ্বর নির্ণয়ের Jones Criteria
Major Criteria:
🔸 Migrating polyarthritis (বড় গিরায় প্রদাহ)
🔸 Carditis (হৃদপিণ্ডের প্রদাহ)
🔸 Sydenham chorea (হাত-পায়ে অনিচ্ছাকৃত কাঁপুনি)
🔸 Subcutaneous nodules (চামড়ার নিচে ছোট গোঁটা)
🔸 Erythema marginatum (চামড়ায় লাল ছোপ)

Minor Criteria:
🔹 এক বা একাধিক গিরা ব্যথা (ফোলা নয়)
🔹 হালকা জ্বর
🔹 ECG তে PR prolongation
🔹 ESR বৃদ্ধি
🔹 CRP বৃদ্ধি

পূর্ববর্তী সংক্রমণের প্রমাণ:
✨ Group A Streptococcus culture positive
✨ High A*O titre

নির্ণয়ের শর্ত:
➡️ ২টি মেজর অথবা
➡️ ১টি মেজর + ২টি মাইনর + পূর্ববর্তী সংক্রমণের প্রমাণ

★★★ A*O titre কেন একা নির্ভরযোগ্য নয়?
✨ বাংলাদেশে প্রায় সবার জীবনে একবার হলেও Streptococcus সংক্রমণ হয়।
✨ A*O titre বেশি পেলেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।

★★★ জটিলতা
➤ Rheumatic heart disease (হার্টের ভাল্বের ক্ষতি)
➤ দীর্ঘমেয়াদি গিরার ব্যথা

মনে রাখবেন: বাতজ্বর ও বাতরোগ একই নয়।

★★★ চিকিৎসা
প্রাথমিক প্রতিকার:
🔹 পর্যাপ্ত বিশ্রাম
🔹 Inj. Benzyl penicillin 1.2 million units deep IM stat অথবা
Tab. Penoxymethyl penicillin 250 mg 6 hourly for 10 days
🔹 সাপোর্টিভ চিকিৎসা (Aspirin, Steroid, Diuretics প্রয়োজনে)

পরবর্তী প্রতিরোধ:
✨ ৩ সপ্তাহ অন্তর Inj. Benzathine penicillin অথবা
Tab. Penvik/Oracyn K 250 mg দিনে ২ বার
✨ হার্ট আক্রান্ত হলে বছরে একবার ইকোকার্ডিওগ্রাম
✨ ভাল্ব ক্ষতিগ্রস্ত হলে অপারেশন বা বেলুন চিকিৎসা

চিকিৎসার মেয়াদ:
➡️ ভাল্ব ক্ষতিগ্রস্ত না হলে: ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত অথবা শেষ আক্রমণ থেকে ৫ বছর
➡️ ক্ষতিগ্রস্ত হলে: শেষ আক্রমণ থেকে ১০ বছর অথবা ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত

★★★ প্রতিরোধ
✨ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এড়ানো
✨ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
✨ গলাব্যথা হলে অবহেলা না করে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া

আমাদের কাছে যখন অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (অ্যারিথমিয়া) সমস্যায় কোনো রোগী আসেন, তখন অনেক সময় আমরা হল্টার মনিটর পরীক্ষা করার পরা...
04/08/2025

আমাদের কাছে যখন অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (অ্যারিথমিয়া) সমস্যায় কোনো রোগী আসেন, তখন অনেক সময় আমরা হল্টার মনিটর পরীক্ষা করার পরামর্শ দিই। এই পরীক্ষায় একটি ছোট পোর্টেবল ডিভাইস ব্যবহার করে রোগীর হার্টবিট ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নিয়মিত রেকর্ড করা হয়।

আজ চলুন জেনে নেই এই হল্টার মনিটর পরীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত।

🤔হল্টার মনিটর কী?

হল্টার মনিটর হলো একটি ছোট ও পোর্টেবল মেডিকেল ডিভাইস, যা ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা (বা তারও বেশি সময়) ধরে হৃদয়ের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ নিয়মিত রেকর্ড করে। এটি মূলত অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (অ্যারিথমিয়া) শনাক্ত, ওষুধ বা চিকিৎসার কার্যকারিতা যাচাই এবং হার্টের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার হয়।

🤷‍♂️কেন এটি দরকার?

হল্টার মনিটর এমন কিছু হার্টের সমস্যা ধরতে সাহায্য করে, যেগুলো সাধারণ ইসিজি (ECG)-তে ধরা পড়ে না। এটি দরকার হয় যখন:

🔹 হঠাৎ করে বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার ঘটনা ঘটে
🔹 ওষুধ বা পেসমেকার কতটা কাজ করছে সেটা যাচাই করতে হয়
🔹 দীর্ঘ সময় ধরে হার্টের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে হয়
🔹 কারো হৃৎপিণ্ডে অনিয়ম আছে বলে সন্দেহ হয়

🧐 এটি কীভাবে কাজ করে?
১️⃣ ইলেকট্রোড লাগানো হয় বুকের ওপর ছোট স্টিকারের মতো করে
২️⃣ রেকর্ডিং ডিভাইস কোমরে বা গলায় ঝুলিয়ে রাখা হয়
৩️⃣ রোগীকে ডায়েরি রাখতে বলা হয়, যাতে কখন কী উপসর্গ হয়েছে তা লেখা থাকে
৪️⃣ পরীক্ষা শেষে ডেটা বিশ্লেষণ করা হয়, যাতে দেখা যায় হার্টের ছন্দ স্বাভাবিক ছিল কিনা

👉কাদের জন্য এই মনিটর দরকার?

☑️ অ্যারিথমিয়া (অনিয়মিত হার্টবিট) আছে যাদের
☑️ যাদের হঠাৎ মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার অভ্যাস আছে
☑️ যাদের হার্টের ওষুধ বা চিকিৎসা চলছে
☑️ যাদের পেসমেকার বসানো আছে

পরীক্ষার আগে কী করবেন?
✔️ গোসল সেরে নিন (পরীক্ষার সময় ডিভাইস ভিজানো যাবে না)
✔️ ত্বকে কোনো লোশন বা তেল লাগাবেন না
✔️ ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরুন
✔️ যেসব ওষুধ খাচ্ছেন, সেগুলো ডাক্তারকে জানিয়ে রাখুন

পরীক্ষার সময় কী করতে হবে?
🔸 প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজ করুন
🔸 শুধু সাবান-পানি বা ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন
🔸 ধড়ফড়, মাথা ঘোরা ইত্যাদি হলে, ঠিক কতটায় কী হচ্ছিল তা লিখে রাখুন

পরীক্ষার পর কী হয়?
✅ মনিটর খুলে দেওয়া হয়
✅ রেকর্ড করা তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয় কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না
✅ ডাক্তার ফলাফল বুঝিয়ে দেন এবং পরবর্তী করণীয় ঠিক করেন

হল্টার মনিটরের সুবিধা
🌟 হৃদয়ের কার্যকলাপ দীর্ঘসময় রেকর্ড করে
🌟 কোনো অস্ত্রোপচার লাগে না – এটা পুরোপুরি নিরাপদ
🌟 উপসর্গের সাথে হার্টবিটের সম্পর্ক বোঝা যায়
🌟 রোগ নির্ণয়ে অনেক সাহায্য করে

কিছু সীমাবদ্ধতা
⚠️ সবসময় হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে না – কারণ সব অনিয়ম পর্যবেক্ষণের সময় নাও হতে পারে
⚠️ গোসল বা পানিতে ভেজা কাজ এড়াতে হয়
⚠️ ত্বকে হালকা জ্বালা বা অস্বস্তি হতে পারে

সাধারণ কিছু প্রশ্ন
১. এটি কেন ব্যবহার হয়?
হার্টবিট অনিয়ম, ওষুধের কাজ বা অজ্ঞান হওয়ার কারণ জানার জন্য।

২. পরা কি অস্বস্তিকর?
না, এটি হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য।

৩. গোসল করা যাবে?
না, ডিভাইস ভেজানো যাবে না।

৪. উপসর্গের ডায়েরি কীভাবে লিখব?
যখন ধড়ফড় বা মাথা ঘোরা হবে, তখন সময় লিখে নিন এবং আপনি তখন কী করছিলেন সেটাও লিখুন।

৫. সব ধরনের হার্ট সমস্যা ধরতে পারে?
না, শুধু পরীক্ষার সময় হলে ধরা পড়ে।

৬. ব্যায়াম করা যাবে?
হালকা ব্যায়াম করা যাবে, তবে জোরে কিছু এড়িয়ে চলুন।

৭. কত দিনে রিপোর্ট পাওয়া যায়?
সাধারণত কয়েক দিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে।

৮. ওষুধ কি ফলাফলে প্রভাব ফেলে?
হ্যাঁ, তাই আপনি কী ওষুধ খাচ্ছেন সেটা আগেই জানান।

৯. অস্বাভাবিক ফলাফল হলে কী হবে?
ডাক্তার নতুন চিকিৎসা বা পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন।

পরিশেষে
হল্টার মনিটর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, যা হার্টের কার্যকলাপ বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। যাদের হার্টের সমস্যা আছে বা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাদের জন্য এই মনিটর একটি নির্ভরযোগ্য সমাধান হতে পারে।

Address

94/103, Katalganj Road, Panchlaish
Chittagong
4000

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dr. Iqbal Mahmud posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram