24/10/2025
🛑হারাম রিলেশন মানুষকে পাপের অতল সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়।এটি শয়তানের মরিচীকা, যা তাকে আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে নিয়ে যায়। আর বেশির ভাগ হারাম রিলেশনশীপের শেষ পরিণতিই হয় বিচ্ছেদ, ধোঁকা!🛑
বিবাহের মাধ্যমে ছেলে-মেয়েদের রিলেশন হালাল রিলেশন হিসেবে স্বীকৃত। বিবাহ বহির্ভূত রিলেশন হারাম এবং তা যিনার শামিল।বিবাহ ছাড়া অবৈধ পন্থায় যৌন তৃপ্তি লাভ করা যিনা।
বিবাহ সমন্ধ তৈরির পরের রিলেশন পবিত্র ও ছাওয়াব অর্জন হয়।
যিনা বা ব্যভিচার বলতে বুঝায় ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ ছাড়া অবৈধ পন্থায় যৌন তৃপ্তি লাভ করাকে।যি'না বা জি'না ( আরবি: زِنَاء, زِنًى, زِنًا) হল বিবাহের সম্পর্ক ছাড়া দুইজন মানুষের (পুরুষ এবং মহিলা) মধ্যে যৌ'নক্রি'য়া। ব্যুৎপত্তিগতভাবে: যি'না হলো ইসলামি বৈবাহিক নিয়ম অনুযায়ী পরস্পর বিবাহের সম্পর্ক স্থাপন না করে দুই মুসলিম নারী-পুরুষের মাঝে অবৈধ যৌ'ন সম্পর্ক বিষয়ক একটি ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা।
পবিএ কুরআনে আছে,
وَلا تَقرَبُوا الزِّنا إِنَّهُ كانَ فاحِشَةً وَساءَ سَبيلًا
আর যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ।
(সূরা বানী ইসরাঈল – ৩২)
হাদিসে পাকে আছে –
রাসূল (সা) বলেছেন, ‘মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে জিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের জিনা, ফুঁসলানো কণ্ঠের জিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের জিনা, হাত দিয়ে স্পর্শ করা হাতের জিনা, কোনো অবৈধ উদ্দেশ্যে পথ চলা পায়ের জিনা, এভাবে ব্যভিচারের যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয়, তখন লজ্জাস্থান তার পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে’।
(বুখারি, মুসলিম ও আবু দাউদ)
আরেকটিতে "মহানবি বলেন, আমি স্বপ্নে জা'হা'ন্নামে একটি চুলা দেখতে পেলাম যা উপরের দিকে সরু এবং নিচের দিকে প্রশস্ত ছিল। যেখান থেকে নর নারীর প্রবল চিৎকার ভেসে আসছিল। কিছুক্ষণ পর দেখলাম সেই চুলা'র উত্তপ্ত শিখার সাথে তারাও উপরে উঠছে আর নিচে নামছে। আমি আগন্তুক কে বললাম, এদের এমন বিভৎস শাস্তি দেওয়া হচ্ছে কেন? আগন্তুক বললো, এরা অবৈধ সম্পর্ককারী নারী পুরুষ"
[বুখারি: হাদিস নং ৭০৪৭ এর অংশ ]
একটা বেগানা নারী/পুরুষের সাথে দিনের পর দিন হারাম রিলেশনে থেকে আপনার "দুনিয়া ও আখি'রাত" উভয়ই বরবাদ হয়ে যাচ্ছে। আর এই আল্লাহর অবাধ্যতায় ডুবে থেকে আপনি কখনো ভালো থাকতে পারবেন না। আপনার ঈমান,
আমল, সময় , বর্তমান, ভবিষ্যৎ সব ধ্বংস হয়ে যাবে।শেষ পর্যন্ত যে হারাম রিলেশনে থাকা মানুষটিকে তুমি জীবন সঙ্গী হিসেবে পাবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। আর পাপগুলো আপনার 'আমাল নামায় ঠিকই যুক্ত হচ্ছে।
অধিকাংশ হারাম রিলেশনের শেষ পরিনতি হয় বিচ্ছেদ ও ধোঁকা। এগুলো তো আপনাকে নতুন করে গেলানো লাগবে না আশা করি কেননা আপনি কচি শিশু নন যে আপনাকে মুখে তুলে খাওয়ানো লাগবে।চারপাশের পরিস্থিতি দেখে বুঝতেই তো পারছেন এর ভয়াবহ পরিণতি। কত যুবক পাগল হয়ে গেছে,কতো নারী তার সতীত্ব হারিয়েছে, কতো যুবক -যুবতীর মুখে চুলকানি লেগেছে সাথে পরিবারের মুখেও লেগেছে। আর কতো যুবক-যুবতী এসব ডিপ্রেশন সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে তার হিসেব নেই।
এখন আপনি যদি এটা ভাবেন যে বিয়ের করার উদ্দেশ্যে আপনি তার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন,কোনো বেপর্দা মেয়েকে পর্দাশীল করার জন্য প্রেম করা, গাঞ্জাখোর ছেলেকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রেম করা, ওর সাথে প্রেম না করলে সে হাত-পা কেটে নিজের ক্ষতি করবে তাই ওর ভালোর জন্য একটু-আধটু রিলেশন করা, প্রেম না করলে কষ্ট পাবে সে ইত্যাদি যতো বাহানা এগুলো সব শয়তানের ধোঁকা। আপনি মনে করতে পারেন আপনার সাদা মনে তো আর কাঁদা নেই। কিন্তু না, এগুলো হলো সবই শয়তা'নের জাল। মানুষের উপকার করার বহু উপায় আছে । তবুও হারাম রিলেশনে জড়িয়ে নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবেন না।।
এটা মনে রাখবেন_ হজ্বের উদ্দেশ্যে যেমন ডাকাতি করা জায়েয নেই, কোরবানির উদ্দেশ্যে যেমন গরু চুরি করা জায়েয নেই।ঠিক তেমন বিবাহের উদ্দেশ্য হারাম রিলেশনে থাকাও জায়েজ নেই। আপনি মদের সাথে জমজম কূপের পানি মিশালেও তা হারামই থাকবে, হালাল হবে নাহ।কেউ যদি বিসমিল্লাহ বলে ম'দ পান করে হালাল মনে করে তাহলে সে কাফের হয়ে যায়। আপনি যদি হারামকে হালাল মনে করেন তাহলে আপনিও কাফের হয়ে যাবেন। আল্লাহ ও তার রাসূল স: যা নিষেধ করেছেন কারো বাপের সাধ্য নাই সেটাকে হালাল করবে।
"বিয়ে হচ্ছে দ্বীনের অর্ধেক " নবীর সুন্নাহ। তাই হালাল সম্পর্ককে হারামের মাধ্যমে পূর্ণতা দেয়া ইসলাম সমর্থিত নয়।
বয়ফ্রেন্ড হলো ছদ্মবেশী দর্শক। আর গার্ল'ফ্রেন্ড হলো ছদ্মবেশী পতিতা।বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড কখনো দ্বীনদার হয় না আর দ্বীনদার ছেলে কখনো বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড হয় না।বিয়ের আগে যতো নন মাহরাম ছেলে-মেয়ের রিলেশন ও বন্ধুত্ব আছে তা সবই হারাম।এর নাম হারাম রিলেশনশিপ যার অপর নাম যিনা।আর যিনার শান্তি দুনিয়া ও আখিরাতে অত্যন্ত ভয়াবহ। যাকে দেখে আপনার (ছেলে-মেয়ে উভয়েরই) চোখ সরিয়ে নেওয়া আবশ্যক সেখানে তার সাথে কিভাবে এসবে জড়াতে পারেন❓
আপনি মনে করছেন, এতেদিনের রিলেশন সে তো কষ্ট পাবে❓
যিনি তোমাকে সৃষ্টি করলেন, তার আদেশের
চেয়ে হারাম সঙ্গীর সাময়িক কষ্ট তোমার
কাছে বড় হয়ে গেলো? এই ঈমান নিয়ে
কিভাবে চির'স্থায়ী জান্না'তের স্বপ্ন দেখছেন❓
💥হারাম রিলেশন ছাড়তে পারছেন না❓
নিজেকে প্রশ্ন করুন, "এখন আমার মৃত্যু চলে আসলে, যার মোহে জড়িয়ে রব্বের অবাধ্য হচ্ছি সেই হারাম সঙ্গী কি আমার সঙ্গে কবরে যেতে চাইবে? নাকি আমার কবরে আমাকেই থাকতে হবে। রব্বের অবাধ্যতার কাজে লিপ্ত থাকলে আমার কবরের প্রথম রাত কেমন হতে পারে?"
এখনো সময় আছে, একবার ভাবুন...
আপনি কী শয়তা''নের হারাম রিলেশনশীপের ফাঁদে পড়ে দুনিয়া ও আখিরাত বিপন্ন ও বরবাদ করবেন নাকি আপনার প্রিয় প্রতিপালক আল্লাহর আদেশ ও নবীর সুন্নতের আলোয় নিজেকে সাজিয়ে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে সাফল্য ও কল্যান চাইবেন!
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, "তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু" (সুরা জুমা, আয়াত: ৫৩)। এছাড়াও সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৩৫-এ বলা হয়েছে, "যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে—আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ মাফ করবে—তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করেন, যদি তারা সে পাপের দিকে ফিরে না যায়"।
يا أَيَّتُهَا النَّفسُ ال