Doctor's Chamber of Cumilla

Doctor's Chamber of Cumilla " Don't invest yourself in the wrong people "

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের প্রভাবে শরীরের এমন কোনো অঙ্গ নেই যেখানে ঝুঁকি থাকে না। বিশেষ করে এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলে ...
16/11/2022

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের প্রভাবে শরীরের এমন কোনো অঙ্গ নেই যেখানে ঝুঁকি থাকে না। বিশেষ করে এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলে কিডনি, চোখ, মস্তিষ্ক, হার্টের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। অনেকের গর্ভধারণের ব্যর্থতার পেছনেও অন্যতম কারণ ডায়াবেটিস। কিডনি ডায়ালাইসিস বা প্রতিস্থাপনকারীদের বেশির ভাগই অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগী। সারা বিশ্বে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়াদের অর্ধেকের বেশি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগী। একইভাবে রেটিনোপ্যাথি, হাত-পা কেটে ফেলার ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকা মানে রোগীদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ না থাকা। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবনের নিয়ন্ত্রণ আনতে হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা অপরিহার্য। না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বণিক বার্তাকে বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ সাধারণ মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। এতে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়া লাগতে পারে। কোনো কোনো সময় এসব রোগীর অবস্থা এমনও হয় যে তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিতে হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে চোখের রক্তনালিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে চোখের রক্তনালিতে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে ধীরে ধীরে চোখের ভেতরে পানি জমতে থাকে। এছাড়া চোখের লেন্স, কর্নিয়া, রেটিনায় প্রভাব ফেলে এ প্রাণঘাতী রোগটি। সাধারণত বার্ধক্যের কারণে চোখে ছানি পড়লেও ডায়াবেটিসের কারণেও হয়ে থাকে। এর কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড সুগার। এক্ষেত্রে বার্ধক্যের আগেই চোখে ছানি পড়তে পারে।

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে অন্ধত্বের ঝুঁকি নিয়ে ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যাটারেক্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মুন্তাকিম শাহিদ বণিক বার্তাকে বলেন, সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো ডায়াবেটিস থেকে রেটিনোপ্যাথি হয়ে থাকে। অর্থাৎ চোখের রেটিনা যদি একবার নষ্ট হয়ে যায় সেটি আর ফেরত আনা সম্ভব নয়। কারো যদি ১০ বছর ধরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে রেটিনায় কিছু পরিবর্তন এলেও সেটি গ্রহণযোগ্য মাত্রায়। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে তিন-চার বছরের মধ্যেই রেটিনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে ধীরে ধীরে চোখ অন্ধ হয়ে যেতে থাকে। ক্ষতি থেকে বাঁচতে রোগীদের প্রতি তিন বা ছয় মাস পর পর একজন বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

তিনি আরো বলেন, ডায়াবেটিসের রোগীদের বছরে অন্তত একবার চোখের ভেতরের কালার ফান্ডাস ফটোগ্রাফি পরীক্ষা করতে হবে। কারণ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে চোখের ভেতরের রক্তনালিগুলোতে রক্তক্ষরণ হয়। এছাড়া ধীরে ধীরে চোখের ভেতর পানি জমতে থাকে। যখন রক্তক্ষরণ চলে যায় তখন প্রোটিন ম্যাটেরিয়ালগুলো থেকে যায়। ফলে রেটিনায় সাদা শক্ত আবরণ দেখা যায়। এতে রেটিনার মধ্যে থাকা মেকুলায় পানি জমে রোগীদের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়।

অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাত বিশেষজ্ঞের ‘হাইপারটেনশন অ্যান্ড ইটস রিলেটেড ফ্যাক্টরস অ্যামং পেশেন্ট উইথ টাইপ ২ ডায়াবেটিস মেলিটাস: আ মাল্টি হসপিটাল স্টাডি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৭ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে উচ্চরক্তচাপ রয়েছে। মূলত যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিসে ভুগেছেন, তাদের মধ্যেই উচ্চরক্তচাপের প্রবণতা বেশি। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের মধ্যে কিডনি জটিলতার কারণেও উচ্চরক্তচাপের প্রবণতা বাড়ছে।

সকলের জানা উচিৎ -০১. আপনার পাকস্থলী কখন ভীত; যখন আপনি সকালে ব্রেকফাস্ট করছেন না।০২. আপনার কিডনি কখন আতঙ্কিত; যখন আপনি ২৪...
29/01/2022

সকলের জানা উচিৎ -

০১. আপনার পাকস্থলী কখন ভীত; যখন আপনি সকালে ব্রেকফাস্ট করছেন না।

০২. আপনার কিডনি কখন আতঙ্কিত; যখন আপনি ২৪ ঘন্টায় ১০ গ্লাস পানি পান করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

০৩. আপনার গলব্লাডার ভীত; যখন আপনি রাত ১১টার মধ্যে ঘুমাতে এবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বিছানা ছাড়তে ব্যর্থ হচ্ছেন।

০৪. আপনার ক্ষুদ্রান্ত্র আতঙ্কিত; যখন আপনি ঠান্ডা এবং বাসী খাবার খাচ্ছেন।

০৫. বৃহদান্ত্র আতঙ্কিত; যখন আপনি ভাজা-পোড়া এবং ঝাল মশলাযুক্ত খাবার বেশি খাচ্ছেন।

০৬. ফুসফুস তখন ভীত; যখন আপনি ধোঁয়া, ধুলা এবং বিড়ি ও সিগারেটের বিষাক্ত আবহাওয়ায় থাকছেন।

০৭. লিভার ভীত; যখন আপনি অতিরিক্ত ভাজা, জাঙ্কফুড এবং ফাস্টফুড খাচ্ছেন।

০৮. হৃদপিন্ড ভীত; যখন আপনি বেশি লবণ এবং কোলেস্টরলযুক্ত খাবার খাচ্ছেন।

০৯. প্যানক্রিয়াস আতঙ্কিত; যখন আপনি সহজলভ্য এবং সুস্বাদু বলে প্রচুর মিষ্টিজাত খাবার খাচ্ছেন।

১০. আপনার চোখ আতঙ্কিত; যখন আপনি অন্ধকারে মোবাইলের আলো এবং কম্পিউটার স্ক্রীনের আলোয় কাজ করছেন।

১১. আপনার মস্তিষ্ক ভীত; যখন আপনি নেতিবাচক চিন্তাকে প্রশ্রয় দেয়া শুরু করেছেন।

সুতরাং আপনার শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গসমূহের যত্ন নিন।

~ সংগৃহীত

আয়রনের ঘাটিত পূরণে সহায়ক খেজুর:-অনেকেই রক্তশূন্যতায় ভোগেন। নারীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। রক্তশূন্যতা হলে অন্যান্...
29/01/2022

আয়রনের ঘাটিত পূরণে সহায়ক খেজুর:-

অনেকেই রক্তশূন্যতায় ভোগেন। নারীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। রক্তশূন্যতা হলে অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও বাড়ে। খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন থাকলেই এই সমস্যা দূর হতে পারে। রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়াতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন খেজুর। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফলে আছে অন্যান্য ওষুধি গুণও।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়, সারা বছর খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে শীতকালে খেজুরের উপকারিতার শেষ নেই।

খেজুরে আরও যেসব পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়-

১. খেজুরে থাকা গ্লুকোজ, ফ্রুটোজ ও সুক্রোজের মতো প্রাকৃতিক শর্করা শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। তাই খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখলে সারাদিন বেশ প্রাণবন্ত থাকা যায়।

২. খেজুরে কোনও ফ্যাট নেই। নেই কোনও কোলেস্টেরলও । খেজুরে থাকা ‘ক্যাটাচিনস’ নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। তা ছাড়া, খেজুর ধমনীতে চর্বির স্তর জমতে দেয় না।

৩. রক্তশূন্যতায় ভুগলে অবসাদ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রায়ই দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রেও খেজুর ভীষণ উপকারী। খেজুর আয়রনের ভাল উৎস।

৪. হৃদ্‌রোগ, ক্যান্সার কিংবা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও খেজুর খুব উপকারী। খেজুরে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ফ্ল্যাভোনয়েডস ক্যানসার এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও ভীষণ উপকারী। এ ছাড়াও খেজুরে থাকা আইসোফ্ল্যাভন ও ক্যারোটেনয়েডস উপাদান হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে কার্যকরী। খেজুরে থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

৫. খেজুরে বেশ ভাল মাত্রায় পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। খেজুর হল এমন এক প্রাকৃতিক প্রতিষেধক, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৬. খেজুরে প্রচুর পরিমাণ সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। এ সব হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগ প্রতিরোধের জন্য বেশ উপকারী।

৭. খেজুরে ভিটামিন এ এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ‘ক্যারোটানয়েডস’ থাকে। এসব উপাদান দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে উপকারী। এমনকি, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চোখের পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ ক্ষমতা কমে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধেও সক্ষম খেজুর।

৮. খাদ্যে ফাইবারের অভাব হলে পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ হয়। খেজুরে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, তাই নিয়মিত খেজুর খেলে এ রোগগুলি থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন।

৯. খেজুরে ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, রিবোফ্লোভিন, নিয়াসিন এবং আরও অনেক ধরনের পুষ্টির উপকরণ থাকে, যা বিপাকক্রিয়া বাড়ায়।

১০. খাদ্যতালিকায় খেজুর থাকলে ত্বক সতেজ এবং প্রাণবন্ত হবে। খেজুরে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বকের নমনীয়তা বাড়ায়। তা ছাড়াও খেজুর শরীরে মেলানিনের মাত্রা কমিয়ে বয়স ধরে রাখে।

27/01/2022
ডায়াবেটিসইনসুলিন বৃত্তান্তইনসুলিন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে ডায়াবেটিসের রোগীরা খুব অল্প বয়সেই মারা যেতেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের...
27/01/2022

ডায়াবেটিস
ইনসুলিন বৃত্তান্ত

ইনসুলিন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে ডায়াবেটিসের রোগীরা খুব অল্প বয়সেই মারা যেতেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আবিষ্কৃত হয়, ডায়াবেটিস রোগীর ইনসুলিন ঘাটতি থাকে আর সেটির উৎস পরিপাক রস নিঃসরণকারী গ্ল্যান্ড ‘প্যানক্রিয়াস’। প্যানক্রিয়াস নিঃসৃত পদার্থটি নিয়ে গবেষণা চলে বিস্তর, কিন্তু সফলতা আসে না। পরবর্তী সময়ে কার্যকর সমাধান দেন দুই চিকিৎসাবিদ—ফ্রেডেরিক ব্যান্টিং ও চার্লস বেস্ট। ১৯২১ সালে ইনসুলিন আবিষ্কার করতে তাঁরা পুরোপুরি সক্ষম হন। লিওনার্ড থমসন প্রথম ডায়াবেটিস রোগী, যাকে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। এরপর ডায়াবেটিস আর মারাত্মক নয়, নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ হিসেবে গণ্য হতে থাকে।

গবেষণায় দেখো গেছে, শুধু ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা বা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করাটাই মুখ্য নয়। রোগীর রক্তে চিনির মাত্রা সারা দিন নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, সেটা খুবই জরুরি। অর্থাৎ খালি পেটে, দুপুরের খাওয়ার আগে, রাতে খাওয়ার আগে ৬-৭ মিলিমোল/লিটার এবং সকাল ও রাতে খাওয়ার পর ৮-১০ মিলিমোল/লিটার রাখতে হবে। গড় ডায়াবেটিস এইচবিএ১সি ৭ শতাংশের নিচে থাকবে। শুধু তা-ই নয়, যত তাড়াতাড়ি ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা যাবে, তত বেশি প্যানক্রিয়াসকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সঙ্গে বিটা সেলকে ধ্বংস হওয়া থেকেও রক্ষা করা যায়। ইনসুলিনের মাধ্যমে রক্তের শর্করা সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, যেটি ট্যাবলেটের মাধ্যমে কষ্টসাধ্য। একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে, ডায়াবেটিস রোগীর ইনসুলিনই শেষ চিকিৎসা। সত্যিটা হলো, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ইনসুলিন শেষ চিকিৎসা নয়, বরং শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা।

বিভিন্ন ধরনের ইনসুলিন বাজারে পাওয়া যায়। রাসায়নিক গঠনের ওপর ভিত্তি করে কোনোটিকে স্বল্পমেয়াদি, মাঝারি, আবার কোনোটিকে দীর্ঘমেয়াদি হিসেবে তৈরি করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য সারা দিনের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করা। এসব ইনসুলিন রোগীর সঙ্গে আলোচনা করে তার জন্য উপযোগী নির্দিষ্ট মাত্রা—দিনে দুই, তিন ও চারবার, আবার অনেক ক্ষেত্রে দুই ধরনের ইনসুলিনই মিলিয়ে দেওয়া হয়।

স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেহে দুই ধরনের ইনসুলিন নিঃসরিত হয়। অভুক্ত অবস্থায় শরীরের নিজস্ব যে গ্লুকোজ তৈরি হয়, সেই গ্লুকোজকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সারা দিন অভুক্ত থাকলেও একধরনের ইনসুলিন নিঃসরিত হবে। এই ইনসুলিনকে বলা হয় বেসাল ইনসুলিন। আবার আমরা যখন খাবার খাই, সেটি যে খাবারই হোক, যে পরিমাণই হোক, শরীরে সেই খাবার গ্লুকোজ হিসেবেই জমা হয়। খাওয়ার পর সে গ্লুকোজ রক্তে আসে, তাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্যানক্রিয়াস থেকে আরেকভাবে ইনসুলিন নিঃসরিত হয়। এই ইনসুলিনকে বলা হয় বোলাস ইনসুলিন, যা খাবারের পরের গ্লুকোজকে নিয়ন্ত্রণ করে।

একজন সুস্থ মানুষের দেহে এই দুই ধরনের ইনসুলিন সঠিক মাত্রায় তৈরি হলেও ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে এর ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে তাদের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এই নতুন ধারণাকে মাথায় রেখে ইনসুলিন সরবরাহের ক্ষেত্রে নতুন করে ইনসুলিন মলিকিউল তৈরি করা হচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে এ ধরনের ইনসুলিন এখন পাওয়া যাচ্ছে।

এই ইনসুলিন সারা দিনে একবার গ্রহণ করে ২৪ ঘণ্টায় আমাদের শরীরে অভুক্ত অবস্থায় যে পরিমাণ ইনসুলিনের প্রয়োজন, তার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। তবে এটা দিয়ে খাবারের পর যে শর্করা তৈরি হয়, সেটা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কিছু ক্ষেত্রে সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে খাওয়ার পর রক্তের বাড়তি শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ইনসুলিন (বোলাস ইনসুলিন) দরকার, তার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, যেটা আগের ইনসুলিন দিয়ে সম্ভব ছিল না। এটাই হলো বোলাস ইনসুলিনের কার্যকারিতা। ফলে সঠিকভাবে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এবং রক্তে শর্করার স্বল্পতা, অর্থাৎ হাইপোগ্লাইসেমিয়া এড়ানো সম্ভব।

এখন আমরা যদি একই সঙ্গে বেসাল ও বোলাস ইনসুলিন ব্যবহার করি, তাহলে অভুক্ত অবস্থায় এবং খাওয়ার পর শরীরে ইনসুলিন সরবরাহ সুস্থ মানুষের মতো সঠিকভাবে করা সম্ভব। ফলে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা থেকে খুব সহজেই ভালো থাকা সম্ভব। সমস্যা হচ্ছে বোলাস ও বেসাল ইনসুলিন রোগীদের চারবার নিতে হয়। এতে অনেকে অনীহা প্রকাশ করে। তাই দুবার ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।

জেনে রাখা দরকার, অসুস্থ হলেও সময়মতো ইনসুলিন নিতে হবে। হয়তো ডোজ কম লাগবে কারও কারও। কারণ, আমাদের শরীরে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কিছু হরমোন তৈরি হয়, যা রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দিতে পারে। ইনসুলিনের অভাবে একদিকে রক্তের শর্করা শরীরের কাজে লাগে না, অপর দিকে তাপ ও শক্তির জন্য দেহের সঞ্চিত চর্বি অতিরিক্ত ভেঙে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যেমন কিটন বডি বেশি মাত্রায় রক্তে বেড়ে যায়। ফলে রোগী অজ্ঞান হয়েও যেতে পারে। এ অবস্থাকে ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিস বলে।

আসলে ইনসুলিন ডায়াবেটিস রোগীর একটা অধিকার। ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধা মেটানো যেমন অধিকার, সে রকম ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ বেশি থাকলে ইনসুলিন দিয়ে তা কমানো, রোগীর ভালো থাকাও একটা অধিকার।

নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা:
যাঁদের পক্ষে সম্ভব, তাঁরা অবশ্যই গ্লুকোমিটার কিনে নেবেন। প্রতিদিন সম্ভব না হলে সপ্তাহে এক দিন অবশ্যই রক্তের গ্লুকোজ নিজের মেশিনে চেক করে নেবেন। রক্তের এ পরীক্ষা দিনের বিভিন্ন সময়ে করতে হবে (খালি পেটে, নাশতার দুই ঘণ্টা পর দুপুরের খাওয়ার আগে ও পরে, রাতে খাওয়ার আগে ও পরে)। খাবার অবশ্যই পরিমিত খাবেন (খাদ্য তালিকা অনুযায়ী) এবং অল্প করে তিন ঘণ্টা পরপর খেতে হবে। সকাল ৮টা, বেলা ১১টা ও ২টা, বিকেল ৫টা, রাত ৯টা এবং রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই কিছু খেয়ে শোবেন। নিয়মিত ব্যায়াম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং ওষুধ খাওয়ার পরও যদি একজন রোগীর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকে অথবা এইচবিএ১সি ৭ শতাংশের বেশি থাকে, তবে বুঝতে হবে, শরীরে ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতা কমে যাচ্ছে অথবা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ইনসুলিন শুরু করতে হবে। নতুন অবস্থায় অথবা হঠাৎ রক্তের গ্লুকোজ কোনো কারণে বেড়ে গেলে ইনসুলিন নিয়ে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে হবে। ইনসুলিন নিতে প্রত্যেক রোগীই ভয় পায়। শরীর ভালো রাখতে হলে ইনসুলিন নিয়েই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীর ভালো থাকলে, মন ভালো থাকে, কাজকর্মে দক্ষতা বাড়ে।

রোগীরা অনেক সময় ইনসুলিন নিতে চায় না। চিকিৎসক হিসেবে আমাদের তাতে সাড়া না দিয়ে বরং বুঝিয়ে শুরু করা উচিত।

উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটবেন। এমনভাবে হাঁটতে হবে, যাতে আপনার হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি পায়। হাঁটা শুরুর আগে ৫-১০ মিনিট শরীর গরম করে নেবেন এবং ৩০ মিনিট জোরে হাঁটার পর আবার ধীরে ধীরে হেঁটে শরীর ঠান্ডা করে নেবেন। হাঁটতে যাওয়ার আগে পানি খেয়ে নেবেন।
আর অসুস্থকালীন দিনগুলোতেও ইনসুলিন নেওয়া বন্ধ করা যাবে না। বরং ক্ষেত্রবিশেষে অধিক মাত্রায় ইনসুলিনেরও দরকার হতে পারে। ইনসুলিনের মাত্রা নির্ণয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। সুখে থাকুন, অসুখে নয়।

লেখা:অধ্যাপক ডা. মো. ফিরোজ আমিন
বিভাগীয় প্রধান, হরমোন বিভাগ, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা
ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ

সূত্রঃ প্রথম আলো

আজ বিশ্ব হার্ট দিবসএবারে স্লোগানঃহৃদয় দিয়ে হৃদয়ের যত্ন নিন...
29/09/2021

আজ বিশ্ব হার্ট দিবস
এবারে স্লোগানঃ
হৃদয় দিয়ে হৃদয়ের যত্ন নিন...

সংক্রমণ ছাড়াই প্রস্রাবে প্রদাহঃ-ইউরেথ্রাল সিনড্রোম চিকিৎসার জন্য জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। সঙ্গে করতে হবে চিকি...
23/09/2021

সংক্রমণ ছাড়াই প্রস্রাবে প্রদাহঃ-

ইউরেথ্রাল সিনড্রোম চিকিৎসার জন্য জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। সঙ্গে করতে হবে চিকিৎসাও।

কারও কারও, বিশেষ করে অনেক নারী দিনের পর দিন মূত্রনালির প্রদাহজনিত নানা রকম অস্বস্তিতে ভুগছেন। বারবার মূত্র পরীক্ষা করেছেন, কিন্তু কোনো সংক্রমণ ধরা পড়ছে না। এ ধরনের সমস্যাকে ইউরেথ্রাল সিনড্রোম বলা হয়। অনেকে প্রস্রাবে অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া হলেই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে ফেলেন। কিন্তু এটি আদৌ কোনো সংক্রমণ না–ও হতে পারে। সংক্রমণ নিশ্চিত হতে সাধারণত ইউরিন কালচার পরীক্ষা করা দরকার। আর সংক্রমণ ছাড়াও এ রকম উপসর্গ হতে পারে। এটাই হলো ইউরেথ্রাল সিনড্রোম। সব বয়সের ব্যক্তিরাই এ রেগে আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু নারীদের এটি বেশি হয়।

* কারণ কীঃ
ইউরেথ্রাল সিনড্রোমের কিছু সম্ভাব্য কারণ হলো প্রস্রাবের পথ সরু হয়ে যাওয়া অথবা কোনো আঘাত, মূত্রনালির চোট, কেমোথেরাপি অথবা রেডিয়েশন, ক্যাফেইনসমৃদ্ধ পানীয় (চা, কফি) পান, পারফিউম, সাবান, স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার, শুক্রাণুনাশক জেলি ব্যবহার, সহবাস, বাইকে চড়া, যৌনবাহিত রোগ ইত্যাদি।

* উপসর্গ কীঃ
প্রস্রাবের সময় ব্যথা করা, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ, হঠাৎ করে তীব্র প্রস্রাবের বেগ, তলপেট ও কোমরের মাঝামাঝিতে ব্যথা অনুভব, কুঁচকি ফোলা, সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব ইত্যাদি । পুরুষদের মধ্যে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে। যেমন অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া, বীর্য বের হওয়ার সময় ব্যথা।

* চিকিৎসা কীঃ
ইউরেথ্রাল সিনড্রোম চিকিৎসার জন্য জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। সঙ্গে করতে হবে চিকিৎসাও। সে ক্ষেত্রে সুগন্ধি সাবান, দীর্ঘক্ষণ বাইকে চড়া ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। চিকিৎসক সমস্যা ও উপসর্গ বুঝে ওষুধ দিয়ে থাকেন। আন্দাজে নিজে নিজে ওষুধ সেবন করবেন না। বিশেষ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। সাধারণত মূত্রনালি সংকুচিত হয়ে গেলে তখন এটা করা হয়।

* প্রতিরোধে করণীয়ঃ
নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় পান; অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার এবং অ্যাসিডিক খাবার পরিহার; চা, কফি, কোমল পানীয় অতিরিক্ত সেবন পরিহার; ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ রাখা; যেসব প্রসাধনীর ব্যবহারে মূত্রনালির প্রদাহ বেড়ে যায়, সেগুলো ব্যবহার না করা; সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার; সহবাসের পরপর মূত্রত্যাগ; যৌনবাহিত রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলে পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেওয়া; আঁটসাঁট কাপড় পরিধান থেকে বিরত থাকা; সুতি কাপড়ের অন্তর্বাস ব্যবহার করা।

ডা. নওসাবাহ্ নূর, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, পপুলার মেডিকেল কলেজ

Address

Comilla
3500

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Doctor's Chamber of Cumilla posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram

Category