26/11/2025
ইসলামে হস্তমৈথুনের (Self-gratification) বিধান নিয়ে ইসলামী পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশ আলেমের মতে, স্বাভাবিক অবস্থায় হস্তমৈথুন করা হারাম বা নিষিদ্ধ (কবীরা গুনাহ)।
📜 প্রধানত যে সকল দলিলের উপর নির্ভর করা হয়:
১. কুরআনের আয়াত (সূরা আল-মুমিনুন ও সূরা আল-মা'আরিজ)
ইসলামী ফিকহবিদদের একটি বড় অংশ এই আয়াতগুলিকে হস্তমৈথুনের নিষিদ্ধতার প্রধান দলিল হিসেবে গণ্য করেন।
* সূরা আল-মুমিনুন, আয়াত ৫-৭:�"এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না। অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারাই সীমালংঘনকারী হবে।"�
* (অনুরূপ আয়াত সূরা আল-মা'আরিজ, আয়াত ২৯-৩১)
* এই আয়াতগুলোর ব্যাখ্যায় বলা হয় যে, বৈধভাবে যৌনচাহিদা পূরণের ক্ষেত্র দুটি: স্ত্রী এবং অধিকারভুক্ত দাসী (যা এখন বিলুপ্ত)। এই দুটি ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে (যেমন হস্তমৈথুন) যৌনচাহিদা পূরণ করলে, সে ব্যক্তি "সীমালংঘনকারী" বলে গণ্য হবে।
২. সহীহ হাদিস (বিবাহে উৎসাহিত করা ও রোজা রাখার নির্দেশ)
নবী মুহাম্মদ (সাঃ) যুবকদেরকে বিবাহ করতে উৎসাহিত করেছেন এবং যারা বিবাহে সক্ষম নয়, তাদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই হাদিসটিকে হস্তমৈথুন বৈধ না হওয়ার একটি পরোক্ষ দলিল হিসেবে পেশ করা হয়। যুক্তি হলো—যদি হস্তমৈথুন বৈধ হতো, তবে নবীজি (সাঃ) সহজেই সেই নির্দেশ দিতেন।
* আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস (সহীহ বুখারী, মুসলিম):�"হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে। কারণ তা অধিক দৃষ্টি-সংযতকারী এবং অধিক যৌনাঙ্গ রক্ষাকারী। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন রোযা রাখে, কারণ রোযা তার জন্য ঢালস্বরূপ।" (বুখারী: ৫০৬৬, মুসলিম: ১৪০০)��এই হাদিসে, সামর্থ্যহীনদের জন্য রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে, যা যৌনচাহিদা দমনে সাহায্য করে। হস্তমৈথুন যদি বৈধ বা সহজ পন্থা হতো, তবে নবীজি (সাঃ) সেটির নির্দেশ দিতে পারতেন—কিন্তু তিনি তা না করে রোজা রাখার কথা বলেছেন।
এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদি যে ক্ষয়ক্ষতিগুলোর কথা সাধারণত আলোচনা করা হয়, তা দেওয়া হলো:
১. 🧠 মানসিক এবং আবেগগত ক্ষতি
অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের সবচেয়ে বড় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হলো মানসিক ও আবেগগত নির্ভরতা তৈরি হওয়া।
* অপরাধবোধ এবং লজ্জা (Guilt and Shame): ধর্মীয় বা সামাজিক কারণে অনেকে হস্তমৈথুনের পর তীব্র অপরাধবোধ এবং লজ্জায় ভোগেন। এই অনুভূতি দীর্ঘমেয়াদে আত্মমর্যাদা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
* আসক্তি (Addiction): এটি যখন একটি বাধ্যতামূলক অভ্যাসে পরিণত হয় এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ (যেমন কাজ, পড়ালেখা, সামাজিক মেলামেশা) ব্যাহত করে, তখন এটিকে আসক্তি বলা হয়। এটি মনস্তাত্ত্বিক নির্ভরতা তৈরি করে।
* একাকীত্ব এবং বিষণ্ণতা (Loneliness and Depression): সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধুমাত্র এই কাজের উপর নির্ভরতা বাড়লে একাকীত্ব বা বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
* মনোযোগ হ্রাস (Impaired Focus): পর্নোগ্রাফির সাথে জড়িত অতিরিক্ত হস্তমৈথুন মস্তিষ্কের ডোপামিন সিস্টেমকে অতিরিক্ত উত্তেজিত করে, যার ফলে স্বাভাবিক কাজকর্মে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
২. ⚡ যৌন কার্যকারিতা এবং সম্পর্কের ক্ষতি
দীর্ঘমেয়াদে অতিরিক্ত হস্তমৈথুন যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
* সংবেদনশীলতা হ্রাস (Reduced Sensitivity): কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে যৌনাঙ্গের সংবেদনশীলতা কমে যেতে পারে, যা স্বাভাবিক যৌন মিলনের আনন্দকে প্রভাবিত করতে পারে।
* ইডি ও পিই এর ভয় (Fear of ED/PE): হস্তমৈথুন সরাসরি ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) বা অকাল বীর্যপাত (PE) ঘটায় বা পরোক্ষভাবে এই সমস্যাগুলিকে বাড়িয়ে তোলে।
* বাস্তব সম্পর্কের সমস্যা (Relationship Issues): পর্নোগ্রাফি দেখে হস্তমৈথুন করার অভ্যাস তৈরি হলে, অনেকে বাস্তব সঙ্গীর সাথে যৌনতার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে বা সঙ্গীর প্রতি অস্বাভাবিক প্রত্যাশা তৈরি করতে পারে, যা দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারে।
৩. 🦵 শারীরিক সমস্যা (বিরল ক্ষেত্রে)
যদিও বড় ধরনের অভ্যন্তরীণ শারীরিক ক্ষতি বিরল, তবুও কিছু বাহ্যিক বা অস্থায়ী সমস্যা হতে পারে:
* ত্বকের প্রদাহ (Skin Irritation): দীর্ঘমেয়াদে বা অতিরিক্ত জোরে ঘর্ষণের ফলে যৌনাঙ্গের চামড়ায় সামান্য ক্ষত, প্রদাহ বা লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।
* দুর্বলতা ও ক্লান্তি (Weakness and Fatigue): বার বার অতিরিক্ত বীর্যপাতের ফলে শরীর সাময়িকভাবে দুর্বল বা ক্লান্ত অনুভব করতে পারে।
* টেস্টিকুলার পেইন (Testicular Pain): মাঝে মাঝে অতিরিক্ত উত্তেজনার পর অণ্ডকোষে (Testicles) হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে, যা সাধারণত অস্থায়ী।
ডি এইচ হসপিটাল
টমছমব্রীজ ,কুমিল্লা
০১৮২০১১৩৩৬৫
#বিশেষজ্ঞ #ইসলামিক #ডাক্তার #কুমিল্লা #হরমোন #ইমার্জেন্সি