15/10/2025
টাইফয়ডের টিকা নিতে ভয় নাই।
॥টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা ও পরিচ্ছন্নতা—দুটোই প্রয়োজন॥
টাইফয়েড ভ্যাকসিন একটি অত্যন্ত নিরাপদ ও কার্যকরী টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। বাংলাদেশেও এটি নিয়মিত টিকাকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চালু হয়েছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
১। সাধারণ ও হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ যেকোনো ধরনের ভ্যাকসিন ব্যবহার করলেই এমন কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
- ইনজেকশনের স্থানে ব্যাথা, লালভাব, ফুলে যাওয়া বা গরম অনুভব হতে পারে।
- সাধারণ উপসর্গ: হালকা জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, বা ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।
- এই লক্ষণগুলো সাধারণত ১-২ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়।
২। মাঝারি মাত্রার পার্শপ্রতিক্রিয়াঃ সচরাচর খুব একটা দেখা যায় না।
- কিছু মানুষের বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা পেট ব্যথা হতে পারে।
- জ্বর কিছুটা বেশি হতে পারে।
৩। গুরুতর অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়াঃ অত্যন্ত বিরল।
-এটি খুবই কম মানুষের ক্ষেত্রে হয়। লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে শ্বাসকষ্ট, মুখ ও গলা ফুলে যাওয়া, হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া ইত্যাদি।
- গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, টিকা প্রদানের পর ১৫-৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখা হয় যেন কোনো অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায়।
টাইফয়েড ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ।
ছোটখাটো ও অস্থায়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চেয়ে এর উপকারিতা অনেক অনেক গুণ বেশি। টিকা নেওয়ার পর হালকা উপসর্গগুলো একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, যা প্রমাণ করে যে শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে।
বাংলাদেশ সরকার এই ভ্যাকসিন চালুর আগে এটি নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছে এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ যাচাই করেছে। এটি বিশ্বব্যাপী ব্যবহারিত একটি প্রমাণিত ও নির্ভরযোগ্য ভ্যাকসিন। তাই জনগণের জন্য এটিকে নিরাপদ ও কার্যকর বলে গণ্য করা হচ্ছে।
তবে সকলের নিকট নিম্নোক্ত বার্তাগুলো পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরিঃ
১) টিকা জীবন বাঁচায়ঃ টাইফয়েড একটি গুরুতর রোগ যা প্রাণনাশক হতে পারে। এই ভ্যাকসিন টাইফয়েড জ্বর থেকে কার্যকর সুরক্ষা দেয় এবং রোগের বিস্তার রোধ করে।
২) নিরাপত্তার প্রতি মানুষের আস্থাঃ এই টিকা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং বাংলাদেশের মতোই অনেক দেশে সফলভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারণত খুবই মৃদু ও স্বল্পস্থায়ী।
৩) সুযোগকে কাজে লাগানঃ সরকারি টিকাকরণ কেন্দ্রগুলোতে এই টিকা বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে দেওয়া হচ্ছে। আপনার সন্তানের টিকার কার্ড দেখে জেনে নিন সে টিকা পেয়েছে কিনা এবং নির্ধারিত সময়ে টিকা নিশ্চিত করুন। পরে হয়তো অনেক বেশি মূল্য দিয়ে এই ভ্যাকসিন কিনে নিতে হবে।
৪) সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতাঃ টিকা নেওয়ার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নিরাপদ পানি পান করা ও খাওয়া, এবং খোলা বা অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন। টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা ও পরিচ্ছন্নতা—দুইই প্রয়োজন।
৫) ভ্রান্ত ধারণা দূর করুনঃ টিকা নিয়ে সামাজিক মাধ্যম বা অপ্রামাণিক কিছু পোস্ট থেকে ছড়ানো গুজবে কান দেবেন না। কোনো প্রশ্ন থাকলে সরাসরি ডাক্তার, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীর নিকট থেকে সঠিক তথ্য নিন।
বাংলাদেশে টাইফয়েড ভ্যাকসিন চালু হওয়া একটি যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। জনসাধারণকে এই টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে আস্থাশীল করে তোলা এবং সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করাই হবে টাইফয়েড মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার মূল চাবিকাঠি।
তথ্যসূত্রঃ
1. StatPearls. (2025). Typhoid vaccine. National Center for Biotechnology Information. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK470571/
International Health Agency Global Advisory
2. Committee on Vaccine Safety (GACVS). (2019, January 25). Safety of typhoid conjugate vaccine (Report of meeting of 5-6 December 2018). World Health Organization. https://www.who.int/groups/global-advisory-committee-on-vaccine-safety/topics/typhoid-vaccines
প্রফেসর সাইফুদ্দিন একরাম স্যারের পোস্ট থেকে।
Typhoid fever predominantly results from Salmonella enterica serotype typhi (Salmonella Typhi), gram-negative bacteria that only cause disease in man. The organism is ingested in contaminated food or water and survives the stomach acid. It penetrates the small bowel epithelium and enters the lymphoi...