02/11/2025
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Glycemic Index) এবং রক্তে শর্করার মাত্রা
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) হলো একটি মানদণ্ড, যা নির্ধারণ করে কোনো খাবার খাওয়ার পর সেটি কত দ্রুত রক্তে শর্করার (গ্লুকোজ) মাত্রা বৃদ্ধি করে। সাধারণত খাবারগুলিকে গ্লুকোজ বা সাদা পাউরুটির সঙ্গে তুলনা করে ০ থেকে ১০০ স্কেলে র্যাংক দেওয়া হয়।
উচ্চ GI যুক্ত খাবার দ্রুত হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায়।
নিম্ন GI যুক্ত খাবার ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায়।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের শ্রেণিবিন্যাস
👉 নিম্ন GI (৫৫ বা তার কম):
রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে বাড়ায়।
উদাহরণ: বেশিরভাগ ফল, সবজি, ডাল, বাদাম, পূর্ণ শস্য (whole grains)।
👉মধ্যম GI (৫৬–৬৯):
মাঝারি হারে শর্করা বাড়ায়।
উদাহরণ: পূর্ণ গমের রুটি, ব্রাউন রাইস, মিষ্টি আলু।
👉উচ্চ GI (৭০ বা তার বেশি):
দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়ায়।
উদাহরণ: সাদা রুটি, সাদা ভাত, চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার, সফট ড্রিঙ্কস।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও রক্তে শর্করার সম্পর্ক
খাবার খাওয়ার পর বিশেষ করে উচ্চ GI খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায়।
তখন অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা রক্তের গ্লুকোজকে কোষে প্রবেশ করিয়ে শক্তিতে রূপান্তর করে।
নিয়মিত উচ্চ GI খাবার খাওয়া রক্তে শর্করার ওঠানামা ঘটায়, যা দীর্ঘমেয়াদে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
অপরদিকে নিম্ন GI খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বাস্তব জীবনে গুরুত্ব
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য:
নিম্ন GI খাবার খেলে হঠাৎ রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে:
নিম্ন GI খাবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে।