04/12/2025
সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে হার্ট রোগ ও হার্ট অ্যাটাক উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর এ বৃদ্ধিটি আরও চোখে পড়ার মতো।
এটি শুধুই “একটা কারণ”—এমন নয়।
বরং কয়েকটি বিষয় একসাথে মিলেই তরুণদের হার্ট আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।
1) করোনা-পরবর্তী শরীরের প্রদাহ (Post-COVID inflammation)
অনেকের ক্ষেত্রে COVID শরীরে এমন প্রদাহ রেখে গেছে যা
সময়ের সাথে সাথে—
- রক্তনালীর ভেতরের দেয়াল দুর্বল করে
- রক্ত জমাট (clot) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়
- হার্টের পেশিতে চাপ তৈরি করে
অনেকে বুঝতেই পারেনি যে তাদের শরীরের ভিতরে এই ক্ষতি চলছিল।
2) অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ (High stress lifestyle)
মহামারির পর অর্থনৈতিক চাপ, চাকরি/বিজনেসের টেনশন, সম্পর্কগত স্ট্রেস—
কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনকে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রাখে।
এটি তরুণ হার্টের জন্য খুব harmful।
3) বসে থাকা জীবনযাত্রা (Sedentary habits)
করোনার সময়–পরবর্তী সময়ে—
- ঘরে বসে কাজ
- কম নড়া–চড়া
- মোবাইল/ল্যাপটপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানো
এই অভ্যাসগুলো তরুণদের রক্তনালী দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
4) ওজন বৃদ্ধি + পেটের চর্বি বাড়া
পেটের চর্বি হৃদরোগের সবচেয়ে বড় silent driver।
করোনার সময়ে খাবার, কম চলাফেরা ও স্ট্রেস—
তরুণ বয়সে ওজন বাড়ার “পারফেক্ট কম্বিনেশন” তৈরি করেছে।
5) ঘুম কমে যাওয়া + অনিয়মিত রুটিন
ঘুম কম হলে শরীরের রক্তচাপ, সুগার, এবং হৃদস্পন্দন
২৪ ঘণ্টাই unstable থাকে।
এটাই হার্ট রোগের অন্যতম সাইলেন্ট কিলার।
6) ধূমপান, ভেপিং, জাঙ্ক ফুডের অভ্যাস
১৮–৩০ বয়সী গ্রুপে এগুলোর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
ভেপিং তরুণদের রক্তনালী দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত করছে—অনেকে জানেও না।
7) ডায়াবেটিস/কোলেস্টেরল কম বয়সেই শুরু হওয়া
লক্ষণ না থাকলেও ক্ষতি চলতে থাকে।
অনেকে জানেই না তাদের ভিতরে জিনগত ঝুঁকি কাজ করছে।
কিভাবে ঝুঁকি কমাবেন? (Simple, actionable)
- প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা/ব্যায়াম
- ধূমপান/ভেপিং পুরোপুরি বন্ধ
- পেটের চর্বি কমানোর দিকে ফোকাস
- জাঙ্ক/প্রসেসড ফুড কমানো
- নিয়মিত ঘুম
- স্ট্রেস কমানোর টেকনিক (deep breathing/meditation)
- বছরে অন্তত ১ বার—BP, Sugar, Lipid profile চেক করা
কখনই অবহেলা করবেন না
-বুক চাপ লাগা
- বাম হাত/চোয়ালে ব্যথা
- হাঁটা বা সিঁড়ি উঠলে সহজে শ্বাস কষ্ট
- মাথা ঘুরানো বা ঘাম
➡️ এসব হলে দেরি না করে জরুরি চিকিৎসা নিন।
করোনার পরে তরুণ বয়সেই হার্ট রোগ বাড়ছে—
কিন্তু সচেতন জীবনযাপন ঝুঁকি অনেক কমাতে পারে।
নিজে জানুন, অন্যদের জানান—শেয়ার করুন।