01/11/2025
হজ্ব/ওমরা যাত্রীদের পালনীয়
স্বাস্থ্য ও সচেতনতামূলক কিছু
জরুরী টিপস !! 💢💢💢💢
**************************
বেশীরভাগ মানুষই হজ্ব বা ওমরায়
গিয়ে, ঠান্ডা, হাঁচি, কাশি, গলা ব্যাথা,
জ্বর, পা ব্যাথা, পা ফাটা ইত্যাদি
সমস্যায় ভুগে থাকে !! তাই, এসব
সমস্যা সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রয়োজনীয় টিপস
এখানে দেওয়া হলো !! 🍁🍁🍁
১. মক্কা-মদিনার ২ মসজিদ এর
ভিতরেই পিলারের গা ঘেঁষে এসির
খুব ঠান্ডা বাতাস বের হয় !!
তাই মসজিদ এর ভিতর সব সময়
পিলার থেকে একটু দুরে বসতে
হবে, তাতে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে !!
২. জমজম এর পানি, খাওয়ার জন্য, সাধারণত মসজিদ এর বিভিন্ন স্থানে একসাথে পাশাপাশি কয়েকটি সাদা
বড় জার থাকে !! তারমধ্যে অল্প কিছু
জার এর উপর নীল কালিতে বড় করে
লেখা থাকে- "NOT COLD" অর্থাত
স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি !!
সব সময়, এই জার এর পানি খেতে
হবে, অন্য গুলির পানি অনেক বেশী
ঠান্ডা, ওগুলো থেকে পানি খেলে
সহজেই হাঁচি-কাশি-ঠান্ডা-জ্বর হয়ে
যায় !!
৩. মসজিদ চত্বর এর ভিতর বিভিন্ন
স্থানে, বারান্দায় ও চারিদিকে অনেক অজুখানা ও পানির কল আছে !! অনেকে এর সব গুলোকেই জমজম
এর পানি মনে করে খেয়ে থাকেন !! আসলে, ওগুলোর সব কিন্তু জমজম
এর পানি নয় !! এগুলো খেয়ে
উল্টো, পেট এর সমস্যা হতে
পারে !! নিশ্চিন্তে জমজম এর পানি
পেতে, মসজিদের সাদা জার থেকে
নেয়াই নিরাপদ ও উত্তম !!
৪. পরিধেয় সকল জামা-কাপড় যতটুকু সম্ভব ঢোলাঢালি ও সূতি কাপড় এর হতে হবে, তাতে
চলাফেরা ও জীবনযাত্রা
অনেক আরামদায়ক হবে !!
৫. বেশি হাঁটতে হয় বিধায়,
পায়ে নরম ও ঠিক মতো ফিটিং
হওয়া আরামদায়ক স্যান্ডেল পরা
উচিত !! উন্নত ও ভালো কোম্পানির
তৈরী স্পন্জ এর স্যান্ডেলই এসময়
উপযুক্ত ও ভালো !! হজ্ব এ কমপক্ষে
৩ জোরা এবং ওমরাতে ২ জোরা
স্পন্জ এর স্যান্ডেল নেওয়া নিরাপদ !! আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার,
তা হলো--
স্যান্ডেলটি যেনো ঠিক পায়ের মাপ
মতো হয়, বড়ও না, ছোটও না !
ছোট বড় হলে, ভিড়ের ভিতর
অন্যর পায়ের আঘাত বা চাপে
সহজেই পরে যাবার সম্ভবনা থাকে !!
৬. বেশী হাঁটাহাঁটি ও বাতাসে আদ্রতা
কম থাকার কারণে, অনেকেরই
পায়ের ত্বক খসখসে ও ফাটাফাটা
হয়ে যায় !! তাই, সবারই কয়েকটা রং
গন্ধহীন ভ্যাসলিন ক্রিম/গিলিসারিন/
লিকুইড প্যারাফিন অথবা ভালো উন্নত কোম্পানির লোশন বা ক্রিম নিয়ে
যাওয়া উচিত !! প্রতিবার অজু করার
পর পায়ের তলায় এগুলোর যে
কোনোটি ভালোভাবে লাগিয়ে নিলে,
এ সমস্যার সমাধান হবে এবং
অনেক আরাম পাওয়া যাবে !!
৭. তীব্র গরম ও রোদে দিনের
বেলা বাইরে কোথাও বেড়াতে
গেলে, অবশ্যই ছাতা ব্যবহার
করতে হবে !! নচেৎ, হিটস্ট্রোক
হবার সম্ভাবনা থাকে, আর
তৃষ্ণা মেটাতে অন্তত ১ বোতল
খাবার পানিও সাথে রাখতে হবে!!
৮. প্রতিদিন সকাল ১০/১১টার
মধ্যেই গোছল সেরে ফেলা
উচিত !! কারন, এরপর
বেশিরভাগ হোটেলের বাথরুমে,
সাপ্লাই এর পানি রোদে অনেক
গরম হয়ে যায় !!
৯. পুরুষদের ইহরাম এর জন্য
সাদা কাপড় এখন, অনেক ধরণের
পাওয়া যায় !! প্রচন্ড গরম ও রোদ
এর কথা মাথায় রেখে, শরীরের
জন্য আরামদায়ক হয়, এমন
কাপড় বেছে নিতে হবে !! লম্বা
ও স্বাস্থ্যবান লোকদের জন্য
কাপড়ের পরিমান একটু বড়
হলে ভালো !!
মহিলাদের অবশ্য কাপড় সাদা
হওয়ার বাধ্যবাধকতা নাই !!!
জীব জন্তুর ছবি মুক্ত হালকা
রং এর ঢোলা ঢালা সূতি
কাপড় এর সেলোয়ার কামিজই
এ সময় উত্তম !! হজ্ব এর সময়
কমপক্ষে ৩ সেট এবং ওমরা-তে
২ সেট সাথে রাখাই নিরাপদ !!
(বিদেশে তো আর, সব সময়
সব পরিবেশে ধোয়া যাবে না ) !!
১০. পেট এর সমস্যা থেকে বাঁচতে
এসময় অতিরিক্ত ভুরিভোজন
এড়িয়ে পরিমিত পরিমান খাদ্য
গ্রহন করাই নিরাপদ !! সব স্থানেই
লাবাং পাওয়া যায়, ইচ্ছে করলে,
রোজ একটু খেতে পারেন,
ভালো !!
১১. বড় কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা
দেখা দিলে, অবশ্যই স্থানীয়
নির্ধারিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে
যোগাযোগ করতে হবে !!
যদি আগে থেকেই কারো কোনো রোগের ওষুধ চলমান থাকে,তবে
যার যার নিজস্ব রোগের ওষুধ,
পর্যাপ্ত পরিমানে অবশ্যই দেশ
থেকেই সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে !!
এগুলি ছাড়াও, অতিরিক্ত কিছু
অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ সবারই
দেশ থেকেই সাথে করে নিয়ে
যাওয়া উচিত !!
বিশেষ করে--
TAB.NAPA
(সাধারণ জ্বর ও ব্যাথার জন্য) TAB.FEXO (180mg)
(সাধারণ হাঁচি কাশি ঠান্ডা এলার্জী ও চুলকোনির জন্য)
TAB.LOSECTIL(40mg)
(হঠাৎ বেশি এসিডিটি হলে)
ORS
(হঠাৎ পাতলা পায়খানা বা
অতিরিক্ত ঘাম বা হঠাৎ প্রেশার
কমে গেলে )
এক কোর্স ভালো এন্টিবায়োটিক
(TAB.ZIMAX 500mg)
১টি ভালো এন্টিবায়োটিক মলম FACID CREAM
(কাটা, পোড়া, ফোঁড়া, ছুলে
যাওয়া ইত্যাদির জন্য) !!
(বিদ্র: জনস্বার্থে ও সবার
সুবিধার্থে বাজারের পরিচিত
ওষুধের নাম ব্যবহার করা
হয়েছে !!)
@@ যারা পান সিগারেট গুল
ইত্যাদি নেশায় আসক্ত, তাঁরা দয়া
করে, হজ্ব/ওমরার নিয়ত করলেই,
এগুলো পুরোপুরি ছেড়ে দেবারও
দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেবেন !! পবিত্র স্থানে
যাবার আগেই নিজেকে এসব
ক্ষতিকর নেশার আসক্তি থেকে
পুরোপুরি মুক্ত করে যাওয়া
উচিত !!
আরো ২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে
সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি !!
তা হলো--
💢 মসজিদে প্রবেশ ও বের
হওয়ার সময়, তাওয়াফের
সময় এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ
স্থানে, ভীড় ও হুড়াহুড়ি
সতর্কভাবে যথাসাধ্য এড়িয়ে
চলতে হবে !! প্রয়োজনে,
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অথবা
কিছুটা এগিয়ে-পিছিয়ে,
ঝুঁকিমুক্ত ফাঁকা স্থান দিয়ে
হাঁটার চেষ্টা করতে হবে !!
কারণ, মাটিতে পড়ে গিয়ে
পায়ের চাপায় পিষ্ট হয়ে
মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই হয়ে
থাকে !! এখানে উল্লেখ্য,
জোহরের নামাজের আগে
পরে তাওয়াফ করার জন্য
সবচেয়ে ভালো সময় !!
এ সময় ভীড় অনেক কম
থাকে !!
💢💢 আরাফাতের ময়দান
হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ
দোয়া কবুলের স্থান !!
তাই সম্মানিত হাজী
সাহেবগন আরাফাতের
ময়দানে অবস্থানকালীন সময়ে,
আল্লাহর কাছে যাবতীয় চাওয়া পাওয়ার কাজটি সেরে নিতে
পারেন !!
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বেশিরভাগ
তাবুর ভেতরে একান্তে একাগ্রচিত্তে মন ভরে দোয়া ও মোনাজাত করার উপযুক্ত পরিবেশ থাকে না !!
তাই তাবুর বাইরে এসে,
সুবিধাজনক স্থানে ও নিরিবিলি পরিবেশে যার যার ব্যক্তিগত
দোয়া ও মোনাজাতের কাজটি সহজেই সেরে নেয়া যেতে পারে !!
আর এ সময়ে প্রচন্ড গরম
এবং তাপদাহ থেকে বাঁচতে,
আরাফাত ময়দানে থাকা, বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান
এর উপহার হিসাবে প্রদত্ত নিম
গাছ এর ছায়ার নিচে/পাশে
দাঁড়িয়ে এই মহামূল্যবান
মোনাজাতের কাজটি খুব
স্বাচ্ছন্দে সেরে নেয়া যায় !!
🍀 সবশেষ কথা হলো 🍀
এই পোষ্টটিতে, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য
বিষয়ক অল্প কয়েকটি জরুরী টিপস উল্লেখ করা হয়েছে !!
কিন্ত,
১. সময়ে সময়ে সৌদি সরকার
প্রবর্তিত হজ্ব/ওমরাকালীন সর্বশেষ
আইন কানুন এবং
২. হজ্ব/ওমরার সঠিক সহীহ
নিয়ম ও মাছায়ালা-মাছায়েল
গুলো ভাল একজন অভিজ্ঞ
আলেম থেকে নিজ দায়িত্বে
জেনে নিতে হবে !!!
💢💢💢💢💢💢💢💢💢
🍀🍀 লেখক ::
অধ্যাপক ডা: আহাম্মদ আলী
চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ !!
#জমজম #মদিনা
#পানি
#নামাজ #সালাত