24/11/2025
কোন বাদামের কেমন পুষ্টিগুণ, খাবেনই–বা কতটুকু
বাদাম স্ন্যাকস হিসেবে জনপ্রিয়। আমাদের দেশে চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম, আখরোট পাওয়া যায় বেশি। এ ছাড়া অন্যান্য বাদাম হলো ম্যাকাডমিয়াম, পাইন, ব্রাজিল নাট, হেজেলনাট ইত্যাদি। প্রতিটি বাদামের নিজস্ব স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণ রয়েছে।
কাজুবাদাম
কাজুবাদামে বেশ আয়রন থাকে যা নারীদের জন্য ভালো। এ ছাড়া কাজুবাদামে জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম থাকে যা হাড়ের স্বাস্থ্য, হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলি–আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান, এটি সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে এবং মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কাঠবাদাম
কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যা ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। রয়েছে প্রচুর মনোস্যাচুরেটেড যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কাঠবাদামে থাকা পিনোলিক অ্যাসিড ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
চিনাবাদাম
চিনাবাদামে প্রোটিন, ফাইবার, স্বাস্থ্যকর চর্বি, অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসহ অসংখ্য ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। চিনাবাদামে ২০টি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এ ছাড়া এটি কো-এনজাইমের ভালো উৎস। চিনাবাদামে রেসভেরাট্রল নামক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিয়মিত চিনাবাদাম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ক্ষুধা কমানো ও ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।
আখরোট
আখরোট ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। আখরোটে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আখরোট ভিটামিন ই, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাঙ্গানিজ ও বায়োটিনের ভালো উৎস।
পেস্তাবাদাম
পেস্তাবাদামে ফাইবার ও প্রোটিন বেশি থাকে যা হজমে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পেস্তাবাদাম ভিটামিন বি৬, কপার, ম্যাঙ্গানিজের ভালো উৎস। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কমানো ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পেস্তাবাদামে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ব্রাজিল বাদাম
ব্রাজিল বাদাম সেলেনিয়ামের ভালো উৎস যা থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন এক–দুটি ব্রাজিল বাদাম খেলে সেলেনিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। এ ছাড়া ব্রাজিল বাদামে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম আছে।
বাদাম কতটুকু খাবেন
যাঁদের ওজন বেশি, পেটের পীড়া, গ্যাস্ট্রিক বা আইবিএস থাকলে বেশি বাদাম না খাওয়াই ভালো। পিত্তথলিতে সমস্যা থাকলে বেশি বাদাম খাওয়া যাবে না। অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্ট আছে যাঁদের, তাঁরা বেশি বাদাম খাবেন না। নির্দিষ্ট ওষুধ বিশেষ করে থাইরয়েড রোগীরা বাদাম খাবেন ওষুধ খাওয়ার ২ থেকে ৩ ঘণ্টা আগে বা পরে। বাদামের সঙ্গে লবণ যোগ করে খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খারাপ। দিনে ৫০ গ্রামের বেশি বাদাম খাওয়া ঠিক নয়।
-লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর, বাংলাদেশ।
♻️ Nature Version 3.0 পেইজটি আপনার জন্য উপকারী মনে হলে এখনই আপনার প্রিয়জনদের মাঝে ছড়িয়ে দিন!
⚜️নিজে ভালো থাকুন এবং অন্যকেও ভালো থাকতে সহযোগিতা করুন!