27/10/2023
বিশ্ব পোলিও দিবস: ২৪ অক্টোবর
আজ বিশ্ব পোলিও দিবস। প্রতিবছর আজকের দিনে অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর সারাবিশ্বে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হল পোলিও সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্রুত বিশ্বকে পোলিও মুক্ত করা।
বিশ্ব পোলিও দিবসের প্রচলন করে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল। ১৯৫৫ সালে বিজ্ঞানী জোনাস সক ও তার গবেষণাদল বিশ্বের প্রথম পোলিও টিকা আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে তিনি তৈরি করেন ইন্যাকটিভেটেড পোলিওভাইরাস টিকা। এই যুগান্তকারী সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখতেই তার জন্মদিনটিকে বিশ্ব পোলিও দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। উল্লেখ্য যে, তার সাফল্যের সূত্র ধরেই পরবর্তীতে অ্যালবার্ট স্যাবিন ১৯৮৮ সালে ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হন যা এখনও সারাবিশ্বে শিশুদের পোলিও থেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রদান করে হয়ে থাকে। উল্লেখ্য যে, ২০০২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয়ান অঞ্চলকে পোলিও মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল এই ২৪ অক্টোবর তারিখেই।
পোলিও একটি ভাইরাস। যা দ্বারা পোলিওমাইলাইটিস নামক মারাত্মক সংক্রামক রোগ হয়ে থাকে। ওয়াইল্ড পোলিও ভাইরাস ৩ ধরণের যথা: টাইপ ১, ২ ও ৩ তন্মধ্য টাইপ-২ ১৯৯৯ এবং টাইপ-৩ ২০২০ সালে পৃথিবী থেকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। টাইপ ১ শুধুমাত্র পাকিস্তান ও আফগানিস্থানে এখনও পর্যন্ত বিদ্যমান। আশা করা হচ্ছে সেটিও দ্রুতই নির্মূল করার মাধ্যমে সারাবিশ্ব থেকে স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের ভাইরাসের মতো পোলিও ভাইরাসকেও নির্মূল করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ব্যতীত সারাবিশ্ব পোলিও মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকার ব্যাপক বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ ১৯৯৫ সাল থেকে পোলিও মুক্ত হওয়ার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা শুরু করে এবং প্রতি বছর দেশে জাতীয় টিকা দিবস বা National Immunization Day (NID) আয়জনের মাধ্যমে শিশুদেরকে পোলিও টিকা খাওয়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে মোট ২১টি NID আয়োজিত হয় যাতে প্রায় ৯৮ কোটিরও বেশি শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়। অবশেষে এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞের কল্যাণেই ২০১৪ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের অন্যান্য সকল দেশের সাথে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পোলিও মুক্ত সনদ অর্জন করে।
মনে রাখবেন বর্তমানে দেশে ইপিআই হতে সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিশুদের অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ ৩ ডোজ ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন বা ওপিভি ও ২ডোজ ফ্র্যাকশনাল আইপিভি প্রদান করা হয়ে থাকে যা পোলিও মুক্ত অবস্থা বজায় রাখতে অত্যন্ত জরুরি।