24/11/2025
"শীতকালীন কমনরোগ ও তার প্রতিকার" 🩺🌱
🟦 শীতের আগমনের সাথে সাথে কিছু রোগের আক্রমন বাড়তে থাকে। শীতকালে পরিবেশগত কারণ এবং মানুষের
আচরণের পরিবর্তনের সংমিশ্রণের কারণে রোগগুলি বেড়ে যায়। এ সময় বিশেষ কিছু রোগজীবাণু সহজভাবে বিস্তার
করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।
➡️ এ সময়ের কমন রোগগুলি হলোঃ-
⭕ সাধারণ ঠান্ডা এবং ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা)
⭕ ব্রঙ্কিওলাইটিস
⭕ ব্রঙ্কাইটিস
⭕ নিউমোনিয়া
⭕ হাঁপানি এবং সিওপিডি
⭕ আর্থাইটিস এবং জয়েন্ট ব্যথা
⭕ হৃদরোগ বিশেষ করে হার্ট এটাকের ঝুকি বেশি থাকে
⭕ শুষ্ক ত্বক, একজিমা এবং সোরিয়াসিস
⭕ অ্যালার্জিক ক্ষিন ডিজিজ
⭕ ঋতুগত আবেগজনিত ব্যাধি (এসএডি)
⭕ নোরোভাইরাস (শীতকালীন বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া হয়ে থাকে)
⭕ এছাড়া কানের, গলা ও সাইনাসের সমস্যা বেড়ে যায়।
🟧 শীতকালে প্রতিটি পরিবারেই সর্দি-কাশি এবং ফ্লু নিঃসন্দেহে বেড়ে যায়। এ সময় আমরা আধুনিক এলোপ্যাথিক ড্রাগ যেমন এন্টিপাইরেটিক, এন্টিহিস্টামিন, কফনাশক প্রচুর ব্যবহার করি। ওষুধগুলি সাময়িক উপশম দিলেও, অসুস্থতা প্রতিরোধে বা রোগের সময়কাল কমাতে পারে না। অন্যদিকে, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা আমাদের শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এই ক্লান্তিকর রোগগুলি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার একটি উপায় প্রদান করে।
♻️ প্রতিরোধের উপায়
🟢 খাদ্যাভ্যাসঃ
✅ সুষম, উষ্ণ এবং পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন।
✅ আপনার খাবারে মৌসুমি ফল এবং শাকসবজি, আস্ত শস্য, ডাল এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (ওমেগা -৩) অন্তর্ভূক্ত করুন।
✅ ওমেগা -৬ যুক্ত খাবার যেমন বাদাম, আখরোট, কাজু, চিনাবাদাম, তিসির বীজ, চিয়া বীজ এবং সূর্যমুখী বীজ বেশি করে খাবেন।
✅ তেলের মধ্যে জলপাই তেল, ক্যানোলা তেল, সূর্যমুখী তেল এবং তিসির বীজের তেল উত্তম।
✅ অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
✅ মিষ্টি, টক ও লবন স্বাদযুক্ত খাবার উপযোগী।
💠 রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকরন
1️⃣আপনার দৈনন্দিন রুটিনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ভেষজ অন্তর্ভুক্ত করুন। তুলসী, অশ্বগন্ধা, আদা এবং আমলকী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত।
2️⃣ দুধ, হলুদ, আদা এবং মধু দিয়ে তৈরি একটি উষ্ণ পানীয় পান করুন যা গোল্ডেন মিল্ক নামে পরিচিত। হলুদে কারকিউমিন থাকে, যার প্রদাহ-বিরোধী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
3️⃣ আপনার দৈনন্দিন রুটিনে চ্যবনপ্রাশ অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করুন। এটি একটি আয়ুর্বেদিক ভেষজ
জ্যাম যাতে আমলা সহ বিভিন্ন ভেষজের মিশ্রণ রয়েছে এবং এটি তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী
বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত।
🔷 শরীরের পানি ধরে রাখা (হাইড্রেটেড থাকা) -
✅ সারাদিন ঈষৎ উষ্ণ পানি এবং ভেষজ চা পান করুন যাতে হাইড্রেটেড থাকা যায়। উষ্ণ তরল পদার্থ হজমশক্তি
বজায় রাখতে সাহায্য করে ।
💪 ব্যায়াম⤵️
🔹 প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করতে হবে। তবে কঠোর ব্যায়াম এড়িয়ে চলা উত্তম।
🔹 অতিরিক্ত ঠান্ডায় ব্যায়াম না করে আবহাওয়া কিছুটা গরম হলে ব্যায়াম করা উচিত।
🔹 ব্যায়ামের মধ্যে হাটা, সাইক্লিং, ও ইয়োগা উত্তম।
😤 ঠান্ডা, কাশি, ফ্লু এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা প্রতিরোধ
ভেষজ
☕ চা এবং পানীয়ঃ
✅ গরম দুধের সাথে হলুদ (কাচা হলুদ শুকিয়ে পাউডার করে) মিশিয়ে পান করুন।
✅ আদা, তুলসী, যষ্ঠিমধু দিয়ে চা তৈরি করে নিয়মিত পান করুন।
✅ দারুচিনি, গোল মরিচ এবং লবঙ্গ গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন বা গলা ব্যথা হলে গড়গড়া করুন।
🟥 শুষ্ক ত্বক এবং একজিমা
🔹 ময়োশ্চারাইজেশন: ত্বকের পুষ্টির জন্য প্রতিদিন উষ্ণ তিল বা বাদাম তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে ঈষৎ উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল করুন।
🔹নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেলের মতো প্রাকৃতিক ময়োশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
🔹 প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অল্প পরিমান ঘি রাখা যেতে পারে। এটি শরীরের শুক্ষতা প্রতিরোধ করবে।
🔴 জয়েন্টে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস ⚠️
✅ আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস এড়িয়ে চলুন।
✅ প্রক্রিয়াজাত চিনি, ট্রান্স ফ্যাট, অতিরিক্ত লবণ এবং তৈলাক্ত ফাস্ট ফুড সীমিত করুন।
✅কয়েক স্তরে উষ্ণ পোশাক পরুন, হাত-পা ঠান্ডা হওয়া থেকে বিরত রাখুন।
✅ জয়েন্টগুলোতে চাপ না দিয়ে নমনীয়তা এবং পেশীর শক্তি বজায় রাখার জন্য হাঁটা, হালকা যোগব্যায়াম বা উষ্ণ পুলে সাঁতার কাটার মতো কম-প্রভাবশালী শারীরিক কার্যকলাপে জড়িত থাকুন।
✅ গরম দুধের সাথে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো ও এক চিমটি কালো মরিচ মিশিয়ে প্রতিদিন খান, অথবা আক্রান্ত
জয়েন্টগুলিতে পেস্ট তৈরি করে প্রয়োগ করুন।
✅ ১ চা চামচ মেথি বীজ সারারাত ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খালি পেটে কুসুম গরম জলের সাথে চিবিয়ে খান।
✅ ৫০০ মি.গ্রাম অশ্বগন্ধা চূর্ণ গরম জল বা দুধসহ দিনে ২ বার খেতে পারেন।
জন সচেতনতায়ঃ⤵️
🌱 এবি ল্যাবরেটরিজ (আয়ু)