20/05/2025
ছবিতে যে এক্সরে দেখানো হয়েছে, এটি একটি ২ বছরের বাচ্চার। দাদীর কান থেকে কানের দুল মুখে নিয়ে খেলছিল বাচ্চাটি, এরপর সেটি চলে যায় খাদ্যনালীতে। এক্সরে তে দেখা যাচ্ছে, কানের দুল খাদ্যনালীতে ঢোকার পর এর ধারালো অংশ ফুটা হয়ে শ্বাসনালীতে ঢুকেছে, এজন্য বাচ্চাটার শ্বাসকস্ট হচ্ছিল। ভোররাতে ডিউটি ডক্টরের কল পেয়ে সকালে গিয়ে ওটি এরেঞ্জ করে ফেলি। আলহামদুলিল্লাহ কোন সমস্যা ছাড়া ইমার্জেন্সি ওটি তে জেনারেল এনাস্থেশিয়া দিয়ে এটি বের করতে সক্ষম হই। এনাস্থেশিওলোজিস্ট আপাকেও ধন্যবাদ। বাচ্চাটাকে ১ দিন রাখার পর কাল ছুটি দিলাম। বাচ্চার বাবা মা খুব খুশি।
করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে হাসপাতালে গিয়ে রোগী দেখেও শান্তি পাই না। গগল্স, মাস্ক, পিপিই বেশিক্ষন পরে থাকা বেশ কস্টকর, দম বন্ধ লাগে, মনে হয় আর কতক্ষন পর এইসব খুলে শান্তিমত একটু বিশুদ্ধ বাতাস নিতে পারব।
WHO এর গাইডলাইন অনুযায়ী খুব প্রয়োজন ছাড়া আমাদের রুটিন অপারেশনগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ। কারন এই সময়ে ইএনটি সার্জন এবং এনাস্থেশিওলোজিস্ট দের রিস্ক সবচেয়ে বেশি, একদম মুখের কাছে গিয়ে অপারেশনগুলো করতে হয়। এত রিস্ক জেনেও কিন্তু আমাদের ইমার্জেন্সি অপারেশনগুলো থেমে নেই। এভাবে যে আর কত দিন!
তবে এখন রুটিন কেস কমে গেলেও হাসপাতালে ঢোকার পর থেকেই এক এক করে আসতে শুরু হয় ইমপেক্টেড ফরেনবডি’র কেসগুলো, ২৪ ঘন্টায় প্রায় অর্ধ শতাধিক। এই যেমন নাকে পুথি, ছোট্ট ব্যাটারী, বোতাম, খেজুরের বিচি, তেঁতুলের বিচি, ডালিমের দানা; এছাড়া কানের ভেতরে তেলাপোকা, কটন বাড, রাবার আরো কত কি!! সেই সাথে আছে সেফটিপিন, হিজাব পিন, পয়সা, পেরেক,এমনকি কানের দুল খেয়ে আসা রোগী। লকডাউনে ঘরে বসে থেকে মানুষের কাজ না থাকাই মনে হয় এগুলোর প্রধান কারন।
এত কথা লেখার একটাই কারন, প্লিজ বাচ্চাদের একটু সাবধানে রাখবেন, ছোট ছোট জিনিষগুলো যেন বাচ্চারা হাতে না পায় সেদিকে একটু খেয়াল রাখেন। হাসপাতালের প্রতিটা জায়গায় এখন করোনার জীবাণু ঘুরে বেড়াচ্ছে। আপনার করোনা না হলেও, হাসপাতালে এসে নতুন করে ইনফেক্টেড হওয়ার কোন মানে হয় না।
কার্টেসীঃ Dr. Hashim Reza Roctim 💝
রি পোস্ট।