21/11/2025
রয়েল জেলি কি ?
রয়েল জেলী একটি অসাধারণ পুষ্টি গুণ সম্পন্ন খাবার। মৌচাকে বিদ্যমান এই অলৌকিক পুষ্টি উপাদান সম্পন্ন খাবারটি মূলত রাণী মৌমাছির খাবার। কর্মী মেীমাছির সেফালিক গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত দুধের ন্যায় এক জাতীয় সাদা আঠালো পদার্থই রয়েল জেলী। রানী মৌমাছি সারা জীবন এই খাদ্যই গ্রহণ করে থাকে। এই খাবার রানী মৌমাছির পরিপূর্ণ গর্ভাশয় তৈরীতে, প্রচুর ডিম দিতে ও শক্তিশালী রোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। একটি সাধারণ মৌমাছির জীবনকাল যেখানে ৩-৪ মাস, সেখানে খাবারের পার্থক্যের কারণে রাণী মৌমাছি বাঁচে ৩-৫ বছর। শরীর সুস্থ রাখতে এই খাবার অদ্বিতীয়। এতে রয়েছে শতকরা ১২-১৫ ভাগ প্রোটিন, ১০-১২ ভাগ শর্করা, ৩-৭ ভাগ লিপিড, ৬০-৭০ ভাগ পানি এবং বাকিটা বিভিন্ন এমাইনো এসিড, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। আমাদের দেহে প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিডের সবগুলোই রয়েল জেলীতে বিদ্যমান। এছাড়াও এতে রয়েছে এসিটাইলকোলিন, এনজাই, সেক্র হরমোন এবং সব রকমের ভিটামিন ও খনিজ লবণ। উন্নত বিশ্বের অনেক চিকিৎসকই আজ ব্রঙ্কিয়াল এ্যাজমা, লিভার ও কিডনীর রোগ, অগ্নাশয়ের প্রদাহ, পিওথলির সমস্যা, মাইগ্রেন ব্যথা এবং ত্বকের নানাবিধ সমস্যা প্রতিরোধে এই রয়েল জেলীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিরোধকারী কোষগুলোর বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং এলার্জীক প্রতিক্রিয়া বন্ধ করতে এতে রয়েছে এন্টি হাইপার টেনসিভ গুণাগুণ। রয়েল জেলীতে বিদ্যান রয়ালিসিন নামক প্রোটিনটি জীবাণুনাশক গুণ সম্পন্ন যা কিনা গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর। রয়েল জেলী রক্তরসে ও লিভারে লিপিডের পরিমাণ কমিয়ে কোলেষ্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে। এতে প্রদাহ নাশক গুণাগুণ রয়েছে। এন্টিবডি তৈরীতে ও রোগ প্রতিরোধকারী কোষ সমূহের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে রয়েল জেলী খুবই সহায়ক। ক্যান্সার প্রতিরোধেও রয়েল জেলী বিশেষভাবে কার্যকর। এর নানাবিধ গুণ বিবেচনা করে ও মৌমাছির উপর এর কার্যকারিতা দেখে এটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে যারা দীর্ঘায়ু লাভ করতে চান ও নিরোগ জীবন যাপন করতে চান তাদের জন্য এই রয়েল জেলী একটি উত্তম সমাধান। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, মধুর চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই খাবার আমাদের দেশে এখনও বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন হয় না।