12/10/2025
গর্ভাবস্থায় মায়ের কিছু ভুল বা অসাবধানতার কারণে শিশুর Congenital disease (জন্মগত ত্রুটি বা রোগ) হতে পারে। এগুলো সাধারণত ভ্রূণের বিকাশকালীন সময়ে ঘটে এবং জন্মের পর বিভিন্ন শারীরিক বা মানসিক সমস্যা তৈরি করে। নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে বলা হলো—
🩸 ১. প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব
ফোলিক অ্যাসিডের অভাব ➜ শিশুর neural tube defect (যেমন: স্পাইনা বিফিডা, মস্তিষ্কের বিকৃতি) হতে পারে।
আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, আয়োডিনের অভাব ➜ শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা, থাইরয়েড সমস্যা, অকাল জন্ম ইত্যাদি হতে পারে।
🚭 ২. ধূমপান, অ্যালকোহল ও মাদক সেবন
ধূমপান ➜ শিশুর কম ওজন, হৃদযন্ত্রের ত্রুটি, অকাল জন্ম বা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
অ্যালকোহল ➜ “Fetal Alcohol Syndrome” — মুখের বিকৃতি, মানসিক প্রতিবন্ধকতা, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা সৃষ্টি করে।
ড্রাগ বা নিষিদ্ধ ওষুধ ➜ শিশুর জন্মগত বিকৃতি বা মৃত ভ্রূণ পর্যন্ত হতে পারে।
💊 ৩. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া
কিছু ওষুধ (যেমন: Isotretinoin, Thalidomide, ACE inhibitors, Valproate) ভ্রূণের বিকৃতি ঘটাতে পারে।
তাই গর্ভাবস্থায় সব ওষুধ ডাক্তার অনুমতি ছাড়া নেওয়া উচিত নয়।
☣️ ৪. ইনফেকশন বা সংক্রমণ
Rubella (জার্মান measles) ➜ শিশুর চোখ, কান, হৃদযন্ত্রে বিকৃতি।
Toxoplasmosis, Cytomegalovirus, Syphilis, Zika virus ➜ মস্তিষ্ক ও চোখের ত্রুটি, মানসিক বিকাশে সমস্যা।
সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন ও হাইজিন খুব গুরুত্বপূর্ণ।
☢️ ৫. রেডিয়েশন বা বিষাক্ত রাসায়নিকের সংস্পর্শ
এক্স-রে, রেডিয়েশন থেরাপি, কীটনাশক, ভারী ধাতু (lead, mercury) ইত্যাদি শিশুর জিনে ক্ষতি করে জন্মগত বিকৃতি ঘটাতে পারে।
🍔 ৬. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ওজন সমস্যা
অতিরিক্ত ফাস্টফুড, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার ➜ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করে, যা শিশুর অঙ্গ গঠনে প্রভাব ফেলে।
খুব কম ওজন বা অতিরিক্ত স্থূলতা — উভয়ই শিশুর জন্মগত ঝুঁকি বাড়ায়।
💉 ৭. ডায়াবেটিস ও থাইরয়েড রোগ নিয়ন্ত্রণ না করা
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ➜ শিশুর হৃদযন্ত্র, স্নায়ু, মস্তিষ্কের ত্রুটি।
থাইরয়েড সমস্যা ➜ মানসিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা।
😟 ৮. মানসিক চাপ ও ঘুমের অভাব
দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ ➜ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, শিশুর বিকাশে প্রভাব ফেলে।
🌡️ ৯. অতিরিক্ত জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে উচ্চ জ্বর বা দীর্ঘস্থায়ী জ্বর ➜ শিশুর মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
🧬 ১০. বংশগত কারণ
কিছু Congenital disease (যেমন Down syndrome, Thalassemia) বংশগত — তবে মা-বাবার আগে থেকেই জেনেটিক টেস্ট করালে তা জানা সম্ভব।
🔹 সংক্ষেপে প্রতিরোধের উপায়:
✅গর্ভধারণের আগে ও গর্ভাবস্থায় ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট।
✅ধূমপান, অ্যালকোহল, মাদক একদম না।
✅ইনফেকশন প্রতিরোধে ভ্যাকসিন ও স্বাস্থ্যবিধি।
✅সঠিক পুষ্টি ও নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ।
✅চিকিৎসকের পরামর্শে সব ওষুধ গ্রহণ।