Islamic Matrimony fb page

Islamic Matrimony fb page way to get married

নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।জীবন্ত  প্রাণীর চোখ তুলে ফেলা , কি অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতা।ইসলামে কখনো কোন  যুদ্ধবন্দিকেও এভাবে  শাস...
07/11/2025

নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।

জীবন্ত প্রাণীর চোখ তুলে ফেলা , কি অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতা।

ইসলামে কখনো কোন যুদ্ধবন্দিকেও এভাবে
শাস্তি দেওয়া হয় নি।

আপনার সন্তানকে ছোটবেলা থেকে দয়া, মমতা শিক্ষা দিন।
এই দুনিয়ায় বড় অপরাধ করে পার পেয়ে গেলেও পরকালে আল্লাহর বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

এটা ভালোভাবে বুঝিয়ে দিবেন।

দোয়া করি এই জালিমরা যেন কঠিন শাস্তি পায়।

ধানমন্ডিতে চোখ উপড়ে ফেলা বাচ্চাগুলোর আপডেট-

থানা থেকে SI ইমরান আমাকে কল করেছিলেন... উনি খুবই হেল্পফুল, খুবই চেষ্টা করছেন অপরাধীকে খুঁজে বের করার। তদন্ত করে এখন পর্যন্ত এটাই পেয়েছেন যে- এই কাজটা ধানমন্ডি লেকে বসে করা হচ্ছে না, বাইরে থেকে এনে বেড়ালগুলি এখানে ছাড়া হচ্ছে। কারণ প্রত্যেকটা বাচ্চাই খুবই ফ্রেন্ডলি, আদুরে। গলায় বেল্ট ছিল। আমার কাছে যে লিলু আছে, সে লিটার বক্স ইউজ করে, বাথরুম ইউজ করে।

এত বড় ধানমন্ডি লেক এলাকা, সঠিক তারিখ পাওয়া না গেলে সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজে কিছু বের করা খুবই মুশকিল। তিনি আমাকে অনুরোধ করেছেন যেকোনো নতুন তথ্য পেলে উনাকে সেটা দিয়ে সহায়তা করতে...

আমি আপনাদের কাছে জানতে চাইছি -
২৯-৩১ অক্টোবরের ভেতরে তিনটা বাচ্চাকে পাওয়া গেছে। এর আগে কি কেউ ধানমন্ডি লেকে এরকম চোখ উপড়ে ফেলা বাচ্চা দেখেছেন ?? তারিখ এবং সময়টা জানতে পারলে তদন্তে খুবই উপকার হবে...

শুধু লেক না, এরকম চোখ উপড়ে নেওয়া বাচ্চা আপনি যদি নিজের আশেপাশের এলাকা বা অন্য কোথাও দেখে থাকেন রিসেন্টলি, সেটাও জানাবেন। এটাও অপরাধীকে ধরতে কাজে আসবে।

ছবিতে লিলু মা... হতভাগ্য বাবুগুলির একজন।

সুবহান আল্লাহ আজকাল তো শুনি ঘন্টায় ঘন্টায় তালাক হয়। সেখানে এরকম ব্যতিক্রমী দম্পতির কথা পড়তে খুব ভালো লাগলো।সুখী হওয়...
07/11/2025

সুবহান আল্লাহ

আজকাল তো শুনি ঘন্টায় ঘন্টায় তালাক হয়।
সেখানে এরকম ব্যতিক্রমী দম্পতির কথা পড়তে খুব ভালো লাগলো।
সুখী হওয়ার জন্য আসলে খুব বেশি টাকাপয়সার দরকার নেই।
পারস্পরিক ভালবাসা , সহমর্মিতা
থাকলে জান্নাতের সাথীর সাথে এই দুনিয়াতেও ভালোভাবেই বাঁচা যায়।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম জীবনসঙ্গী দিন।

https://www.facebook.com/share/p/17a3t7gWUg/

রোজ সন্ধ্যায় এই নারীকে ও পুরুষকে দেখি। কখনো বসে গল্প করেন। কখনো বা মন খারাপ করে থাকেন, দুজন দু দিক ফিরে। একদিন জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা কী হন সম্পর্কে। বৃদ্ধ পুরুষটা বললেন, আমি ওর স্বামী। প্রিয়তম।
প্রিয়তম শব্দটা শুনে পাশে থাকা বৃদ্ধা শাড়ির আঁচলে মুখ ঢেকে বললেন, লোকটার আক্কেল হইলো না। কী সরমের কথা!
বৃদ্ধ হাসতে থাকলেন।
মূলত এই দুজন স্বামী-স্ত্রী। থাকেন ঢাকার এক বস্তিতে । ছেলে-মেয়ে বড় হয়েছে। যারা তাদের ছোট থেকে বড় করলেন তাদের ভুলে গেছে তারা।
মাঝে মাঝে দেখি বৃদ্ধ একাই বসে থাকেন। পান বি-ড়ি বিক্রি করেন। গালে হাত দিয়ে কী যেন ভাবেন। একদিন জিজ্ঞাসা করলাম, কী হয়েছে? বললেন, আমার বাড়িআলীর(স্ত্রী) খুব জ্বর।
আহা। তা আপনি তাকে বাসায় রেখে চলে এলেন!
বললেন, কী করবো। সংসার চালানো লাগে নাহ! মানুষটা কী যে করতেছে একলা একলা!
আরেকদিন দেখি দুজন বসে বেশ খুনসুটি করছেন। কাছে গেলাম। একজন সুপারি হাম্বল দস্তায় পিষছেন, গুড়া করছেন। তিনি নিজেও পান খান। আরেকজন পানে চুন লাগাচ্ছেন।
দুজন দুজনকে পান বানিয়ে দিচ্ছেন। বৃদ্ধ স্বামী পান মুখে দিয়ে বললেন, সুপারি শক্ত হইছে।
এবার বৃদ্ধা স্ত্রী পাশ থেকে ইয়ার্কির ছলে বলছেন, ওই মিয়া প্রতিদিন বাকি খাও। তার উপর আবার ভুল ধরো ক্যান।
এবার স্বামীটা বললেন, আরে একদিন সব শোধ কইরা দেব। দেইখো। আমি এতো সস্তা খরিদ্দার নাহ।

পাশ থেকে জীবনের শেষ দিকে আসা একজন স্বামী স্ত্রীর এমন আদুরে ভালোবাসার খুনসুটি দেখতে আরও লোভ হচ্ছে আমার।

কাছে গিয়ে বললাম, চাচা একটা পান দেন। তিনি পান সাজালেন। পাশে বসে স্ত্রী কাগজ বের করে দিলেন।
গতকাল দেখলাম, সে চাচি একাই দাঁড়িয়ে আছেন। মনটা বিষণ্ণ। বললাম, চাচি কী হয়েছে? বললেন, আপনার চাচা গেছে চা খাইতে এখনো আসে নাই।
বললাম, তিনিতো আর ছোট মানুষ নন। এতো চিন্তা কিসের। বললেন, এতো দেরি করবো কী জন্য যতই বড় মানুষ হোক। দিনকাল ভালো না।
যুগ যুগ সংসার করে এসেও স্বামী তার কয়েক মিনিটের জন্য আড়াল হয়েছে তাতেই বেচার মুখে মেঘ জমেছে। আহা ভালোবাসা।
বললাম, চাচি মন খারাপ করেন না। দেন পান দেন।
ঠিক তখনই তার স্বামী অর্থাৎ বৃদ্ধ লোকটা হাজির। এসেই অপরাধী বালকের মতো বললেন, আহারে । হইছে কি জানো, চা খাইতে গিয়া আমাগো গ্রামের সেলিমের লগে দেখা। হেইজন্যই দেরি হইছে।
স্ত্রীর চোখে মুখে অভিমান। বলল, এই জন্যই আপনারে যাইতে দেই না । গেলেই দেরি করেন।
আমি পান মুখে দিয়ে তাদের দেখি তাকিয়ে রইলাম। এই ইট পাথরের শহরে ধুলাবালির ফুটপাথে যেন গোলাপ হয়ে ফুটে আছে দুজন মানুষ আর তাদের ভালোবাসা।

আলী ইমরান

05/11/2025

ভাতের মাড় ফেলবেন কিন্তু লুছনী খুঁজে পাচ্ছেন না, গোসলে যাবেন গামছা খুঁজে পাচ্ছেন না সাথে সাথে আল্লাহকে বলবেন যে, আল্লাহ খুঁজে পাচ্ছিনা পাইয়ে দাও।

যদিও এগুলো জিনিস হাতের কাছেই থাকে একটু খুঁজলেই পাওয়া যায় তবুও আগে আল্লাহকে বলবেন।

আমার ছেলে ঘুমের মধ্যে পুরো বিছানা গড়াগড়ি করে, খাটের মাথায় গিয়ে বাড়ি খায় নয়তো নিচে পড়ে যায় এইজন্য দুই পাশে কোল বালিশ দিয়ে রাখি।

রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ হাত দিয়ে দেখি এক পাশে বালিশ নাই। ঘুমের মধ্যেই উঠে বিছানার চারপাশে খুঁজলাম পেলাম না পরে বিরক্ত হয়ে শুয়ে পড়লাম।

তখনই মনে খেয়াল আসলো, আল্লাহ তো জুতার ফিতাও চাইতে বলছেন আচ্ছা আল্লাহকেই বলি। বলে আবার খুঁজা শুরু করলাম। আলহামদুলিল্লাহ পেয়ে গেলাম অথচ সেই একই জায়গায় মাত্রই দেখেছি কিন্তু পাইনি।

বড় বড় বিপদ ছাড়া আল্লাহকে বলার অভ্যাস নাই আমাদের কিন্তু বলা উচিত তাহলে জীবন সহজ হয়ে যায়।
কারণ লুছনী বলেন বা গামছা প্রত্যেকটা জিনিসের মালিক আল্লাহ।

এই ছোট্ট জিনিসটাও আল্লাহর ইচ্ছে ছাড়া ফিরে পাওয়া সম্ভব না। যতই নাগালে থাকুক, চোখের সামনে থাকুক। তাই খুঁজবেন কিন্তু আল্লাহকে বলে নিবেন।

একটা আইসক্রিম খেতে চাইলেও হাজব্যান্ড বা বাবাকে বলার আগে আল্লাহকে বলবেন।

এই ছোট্ট জিনিসটা কিনে দিতে কোনো বাবা বা হাজব্যান্ডই না করবেন না।
কিন্তু এমন হতে পারে যে, তাদের আনার কথা মনে থাকলোনা কিংবা আনার পথে হারিয়ে গেলো বা কোনোভাবে নষ্ট হয়ে গেলো।
কিন্তু আল্লাহ ইচ্ছে করলে যেভাবেই হোক আপনার হাতে পৌঁছে যাবে।

সবচেয়ে বড় ফায়দা হলো, এই ধরনের ছোট ছোট বিষয়ে বলার অভ্যাস থাকলে আল্লাহর সাথে স্ট্রং একটা কানেকশন তৈরি হয়ে যায় তখন বড় বড় বিপদে মাথা ঠান্ডা থাকে।

নয়তো আমরা প্যানিক করে ফেলি, হসপিটালে দৌড়াই টাকা ঢালতে থাকি, এর কাছে বলি ওর কাছে দৌড়াই, এই সেক্টরে পরিচিত উচ্চপদস্থ কে আছে খুঁজতে থাকি।

সবশেষে যখন কোন কাজ হয়
না তখন আল্লাহকে বলি
অথচ শুরুতেই আল্লাহকে বললে আল্লাহ বিষয়টা সবচেয়ে সুন্দরতম উপায়ে সহজ করে দিতেন।

: Sadia Samha

05/11/2025

ইনকামে বরকত পাচ্ছি
না ,
এই অভিযোগ নিয়ে একদিন আমার এক প্রিয় উস্তাযের (মেন্টর) কাছে গেলাম।

আমার এই উস্তাযের কথা আমি আরো একবার লিখেছিলাম।

কোনো কিছু নিয়ে দ্বিধান্বিত-কনফিউজড কিংবা অশান্তিতে থাকলে তার সাথে কথা বললে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি আমি পাই।

তো একবার এইরকম একটা ডাউট নিয়ে আমি মেন্টরের সাথে দেখা করলাম।

আমাকে দুধ এবং চিনি ছাড়া স্রেফ গরম পানিতে ডুবানো একটা টি প‍্যাক এগিয়ে দিয়ে বললেন-তানভীর, আছো কেমন?
আমি কিছুটা আড়ষ্টতা নিয়ে তাকে বললাম, কনফিউজড উস্তায!

তিনি আমার চেহারার দিকে গভীর ভাবে তাকালেন, মিনিট খানেক। তারপর চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন-কি নিয়া পেরেশানিতে আছো?

আমি তার আরো একটু সামনে এসে নিচু কন্ঠে বললাম-উস্তায, আমার ইনকাম নিয়া আমি দ্বিধায় আছি। আমি সৎ পথে উপার্জন করি।

পেশাগত কাজে পারলে ২০০ ভাগ নিবেদন দিয়ে কাজ করি। তারপরও কেন জানি এতো বছর কাজ করার পরও আমার মনে হয়ে যে আমার উপার্জনে কোনো বরকত পাচ্ছিনা।

উস্তায মন দিয়ে আমার কথা শুনলেন, তারপর জিজ্ঞেস করলেন
-কেন তোমার এমন মনে হচ্ছে?

আমি এবার বললাম, যে আমার সেভিংস হচ্ছেনা। প্রতিবছর যেমন আয় বাড়ছে, তেমনি খরচও বাড়ছে।

উস্তায আবার কী মনে করে যেন আমার ডান হাতটা তার হাতে নিলেন। তারপর আবার গভীর ভাবে আমার কপাল আর চোখের দিকে তাকালেন। প্রশ্ন করলেন
-কিসের খরচ বাড়ছে তোমার?

-এই ‍যেমন বাচ্চাদের এডুকেশন-ওদের স্কুলের বেতন, ওদের টিচারদের বেতন, কিছু অস্বচ্ছল আত্নীয় স্বজনদের খরচ।
-কোন স্কুলে পড়ে তোমার বাচ্চারা?
-আমি স্কুলের নাম বললাম।

-তানভীর, তুমি কি মনে করো, শুধু ব‍্যাংকে জমা বাড়া মানেই আয়ের বরকত?
আমি আমতা আমতা করি।

-এই যে তুমি সেরা একটা স্কুলে তোমার বাচ্চাদের পড়াতে পারছ, এটা কি বরকত নয়? কয়জন বাবা-মা এরকম ভালো স্কুলে তার বাচ্চাদের পড়াতে পারছে?
হ‍্যাঁ, তা তো ঠিক। আমি মাথা নাড়ি।

-তোমার বাচ্চারা কেমন? ওরা কি উচ্ছৃংখল? তোমাদের কথা বার্তা শোনেনা?
-না, না উস্তায। খুব লক্ষি বাচ্চা ওরা।
-এটা কি বরকত নয়, তানভীর?
-জি, অবশ‍্যই।
-বিগত ৫/৭ বছরে তোমার পরিবারে কেউ বড় রকম অসুস্থ হইছে? বা তুমি নিজে?

-না উস্তায, আল্লাহর রহমতে কেউ ওরকম সিরিয়াস অসুস্থ হয়নাই। আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়েছিল, আল্লাহর রহমতে দ্রুত সুস্থ হয়ে গেছে।
-হাসপাতালে ভর্তি করাতে হইছিল?
-না উস্তায, আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়েছে।

-এই যে তোমরা সুস্থ আছো, এটা কি বরকত না, তানভীর? আমার মাথায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করেন তিনি।
-জি অবশ‍্যই।

-তানভীর, তোমার স্ত্রী কেমন মানুষ? সে কি তোমার সাথে সদাচারণ করে? তোমার খেয়াল রাখে? সে কী উন্নত চরিত্রের নয়?
-না না, উস্তায। সে অসাধারণ উন্নত চরিত্রের মানুষ। সে শুধু আমাকেই নয়। আমার সন্তাদের, আমার বাবার, আত্নীয় স্বজনেরও যত্ন নেয।
-আর কী বরকত চাও, তুমি? পরিবারে শান্তির চেয়ে বড় বরকত কী হতে পারে?
-জি উস্তায, আমি আসলে এভাবে গভীরে গিয়া চিন্তা করিনাই।

-তোমার বাবা-মা আছেন?
-মা নেই, বাবা আছেন?

-বাবা কি তোমার সাথে থাকেন, নাকি আলাদা থাকেন?
-আমার সাথে থাকেন, উস্তায। আমার সাথে।
-তোমার বাবা তোমার সাথে থাকেন,
এ যুগে বাবা-মা সাথে থাকা, কত বড় বরকত তানভীর, তুমি টের পাও‌না?
-টের পাই উস্তায। টেরপাই। আব্বা সাথে আছেন, এইটা
অনেক বড় বারাকা, উস্তায।

তিনি আর কথা বাড়ান না। আমাকে বুকে জড়াই ধরেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। তারপর বলেন, জীবনে টাকা পয়সা-ধনসম্পদ বৃদ্ধিই শুধু বরকত না।

জীবনে তুমি সুস্থ আছো, তোমার একটা সুন্দর পরিবার আছে, তুমি তাদের এবং তারা তোমার দেখভাল করতে পারছে-এটাও বরকত। জীবনে তুমি সঠিক জ্ঞানের আলো পাচ্ছ-এটাও বরকত। আত্নীয় স্বজনের খবর নিতে পারছ-এটাও বরকত। প্রতিদিন বাবার চেহারা দেখতে পাচ্ছ-এটাও বরকত।

-তুমি টাকা পয়সা ব‍্যাংকে জমাইয়া কী এরচেয়ে বেশি বরকত পাবে, তানভীর?
-উস্তায, আপনি ঠিক বলছেন।

তিনি আমাকে নিচ তলা পর্যন্ত এগিয়ে দেন। আমি তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে পড়ি।

গাড়ি সার্ট দিয়ে আমি প‍্যানারমিক সানরুফটা খুলে দিই। তারপর গভীর কৃতজ্ঞতায় আকাশের দিকে তাকাই। সেদিন ছিল জোৎস্না। রুপালী আলোয় ভেসে যাচ্ছে আকাশ।

সানরুফের খোলা ছাদ দিয়ে আমি দুইহাত উপরে তুলে দাঁড়িয়ে যাই। তারপর দুচোখ বন্ধ করি। আমি অনুভব করি, পৃথিবীর সব বরকত জড়িয়ে আছে আমায়!

© Tanvir Shahriar Rimon

05/11/2025

আমি সেদিন ডাক্তার হতে পারি
নি..." 💔

তখন আমি এক কর্পোরেট প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করি।

নামমাত্র পদ—মেডিকেল অফিসার, কিন্তু কাজের ভেতর ছিল সবকিছু—ডাক্তার, কেরানি, এমনকি সহকারীও।

রাতে ডিউটি পড়েছিল। ক্লান্ত শরীরে হাসপাতালে ঢুকেই গেলাম পোস্ট-অপারেটিভ রুমে।

দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই চোখে পড়ল —
সাদা কাপড়ে মোড়ানো ছোট্ট ৩টি দেহ।
চারপাশে নার্স খালা’রা নিঃশব্দ দাঁড়িয়ে।

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম

“এগুলো কী?”

খালার কণ্ঠ কেঁপে উঠলো

“স্যার, তিনটা বাচ্চা... দুইটা ছেলে মারা গেছে, একটা মেয়ে এখনো শ্বাস নিচ্ছে।”

আমি এগিয়ে গেলাম।
মেয়েটার বুক উঠছে-নামছে, ঠোঁট নীলচে, চোখ দুটো আধখোলা।
একটা ছোট্ট জীবন মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছে—একলা।

আমি রাগে কেঁপে উঠলাম,

“অক্সিজেন দিচ্ছেন না কেন? ওয়ার্মারে রাখেননি?”

খালা চোখ নামিয়ে বললেন —

“স্যার, মেয়েটার গার্ডিয়ান নিষেধ করেছে।”

আমি অবিশ্বাসে তাকালাম,

“কেন নিষেধ করবে?!”

খালার উত্তরটা যেন আমার বুক চিরে গেল—

“স্যার, এরা বাচ্চা নষ্ট করতে চেয়েছিল।
রক্ত বন্ধ না হওয়ায় হাসপাতালে এসেছে। তারা চায় না কেউ বাঁচুক…”

এক মুহূর্তে আমার গলা শুকিয়ে গেল।
২০-২২ সপ্তাহ বয়সী তিনটা প্রাণ—
দুইটা ইতিমধ্যেই নিঃশব্দ,

আর একটা ছোট্ট মেয়েটা তখনো লড়ছে বাঁচার জন্য।

আমি তাকিয়ে ছিলাম…
ওর নরম হাতদুটো নড়ছে,
চোখের কোণে একফোঁটা জল জমে আছে কিনা কে জানে।

আমার ভেতরে আগুন জ্বলছিল,
কিন্তু আমি কিছু করতে পারিনি—
কারণ আমি একজন “দুই টাকার মেডিকেল অফিসার”,
আর এটা “কর্পোরেট হাসপাতাল”
সরকারি না যে নিজ ইচ্ছায় কিছু করা যাবে

রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মেয়েটা লড়লো।
আমি চুপচাপ ওর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
কিছুই করতে পারিনি,
শুধু এপ্রোন ভিজিয়ে ফেলেছি নিজের চোখের জলে।

আমি মনে মনে শুধু বলেছিলাম

“হে আল্লাহ,
যারা সন্তান চায়, তারা পায় না,
আর যাদের আছে, তারা নিজের হাতে ফেরেশতাদের মেরে ফেলে…”

রাত ১০টার দিকে মেয়েটা থেমে গেল।
শ্বাস, নড়াচড়া, সব শেষ।

আমি দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়েছিলাম।
চোখে পানি, বুক ভরা লজ্জা
কারণ আমি ডাক্তার হয়েও কিছু করতে পারিনি।
সেদিন মনে হয়েছিল,
আমি ডাক্তার নই, আমি এক অসহায় সাক্ষী,
যে দেখেছে মানুষ কেমন করে মানুষ হয়ে জানোয়ার হয়ে যায়।

আর মনে মনে ভাবছিলাম

“ওরা টাকায় বাঁচে,
আমরা বিবেকে মরি।”

Dr-Abdur Rahman

এমবিবিএস (শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ)
এফসিপিএস (অর্থোপেডিক্স), পিজিটি (সার্জারি), সিসিডি (বারডেম)

05/11/2025

♦️রাতের বেলা এক রোগী আসলো। যার বায়স ২০ ছিলো। পেটে প্রচুর ব্যথা।পাচঁ মাসের গর্ভ।একটু একটু রক্ত ভাংতিছে।

আল্ট্রা করলাম দেখলাম সুন্দর পাচঁ মাসের বাচ্ছা। নড়াচড়া করছে।বার বার জিজ্ঞেস করলাম আপনার এত ব্যথা হওয়ার কারন কি? কিছু খেয়েছেন কিনা?

কিছু বলল না। আমার একটু সন্দেহ হলো। বললাম আপনার হাসবেন্ড কোথায়?

বলল হাসবেন্ডের সাথে রাগারাগি হয়েছে কালকে রাতে। তাই আসে নি সাথে।
তখন আমার আরো বেশি সন্দেহ হলো।বললাম আপনি যদি না বলেন কোন কিছু লুকালে আপনাকে অন্য ঔষধ দিলে কিন্তু আপনাকে বাচাঁতে পারব না।

পরে রোগী স্বীকার করলো যে তিনি হাসবেন্ডের সাথে রাগ করে বাচ্ছা নষ্ট করার ঔষধ খেয়েছেন।
এর পর থেকেই পেট ব্যথা। আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলাম।

পাচঁ মাসের বাচ্ছা নিয়ে মানুষ এমন কাজ করে!!হাসবেন্ডের সাথে রাগ হতেই পারে। তাই বলে এর শাস্তি বাচ্ছা পাবে। এটা কেমন কথা!!

আমার মন টাই ভেঙে গেলো।কারন এখন কোন নিশ্চয়তা নেই।অনেক চেষ্টা করা হয়েছিলো
বাচ্ছাটিকে বাচাঁনোর জন্য। মা নিজরে হাতে বাচ্ছা মারার জন্য যা করার দরকার ছিলো করে ফেলছেন।এখন কিছু করেও লাভ নেই।

বাচ্ছাটি রাত ৩ টায় ডেলিভারি হয়ে যায়। বাচ্ছাটি বের হয়েও করেকবার শ্বাস নিলো। এর পর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে চলে গেল। মা বাবার সংসারের ঝামেলার কারনে একটি নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু হলো।

" আজব এই দুনিয়ায় আজব মানুষদের বসবাস।"

কিছু কিছু মানুষ এগুলো বিশ্বাস করতে চান না। নিজের বাচ্ছাকে কেউ এই ভাবে মারতে পারে এমন প্রশ্নই করবেন।কিন্তু বাস্তবতা হলো এটাই সংসারের ঝামেলার কারনে সবই হতে পারে। কিন্তু একজন ডাক্তার সব কিছুর স্বাক্ষী হয়ে থাকেন।

ডা.শারমিন সুলতানা বিথী

আল্লাহ হেদায়েত করুন
05/11/2025

আল্লাহ হেদায়েত করুন

এই যে গাড়ী দেখছেন এটা আবার ছবি তোলার কি আছে?? প্রশ্ন জাগতে পারে।আমি ইচ্ছে করেই গাড়ী দুটার ছবি তুলছি।

এ গাড়ী দুটা পাশের থানায় এক বাড়ীতে যাচ্ছে। এ শুধু গাড়ী যাচ্ছেনা, যাচ্ছে এক কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার হাহাকার ভরা ১৫০ মানুষের জন্য তৈরী করা খাবার - পোলাও, রোস্ট, গরুর মাংস,দই মিষ্টি এবং ওখানকার লোকজনের জন্য ৪০ হাজার টাকার জামাকাপড়।

এদিকে মেয়ে প্রথমবার প্রেগন্যান্ট হলে সব খরচ মেয়ের মা বাবার।মেয়ের সাত মাস পেরুলে মেয়েকে ঘটা করে শশুরবাড়ী থেকে বাবার বাড়ী নিয়ে আসতে হয়।মেয়ের বাচ্চা হওয়ার খরচ থেকে পরবর্তী তিনমাস সব খরচ মেয়ের মা বাপের।

তো আজকে সাত মাস হওয়াতে মেয়েকে আনতে যাবে বলে মেয়ের শশুরকে ফোন দিয়ে বললো " বেয়াই মেয়েকে তো আনতে যাবো।আমরা ৭/৮ জন যাবো। আর আপনাদের দিকের ২০/২৫ জন বলেন আমি এটার আয়োজন করবো। " অর্থাত মেয়ের বাপকে এখান থেকে যে ৭/৮ জন যাবে তাদের খাবার তো সাথে নিয়ে যেতে হবে পাশাপাশি মেয়ের শশুরবাড়ীর জন্য আরো ২০/২৫ জনের খাবার আয়োজন করে নিয়ে যেতে হবে।

কিন্তু মেয়ের শশুর মানেনি "স্পষ্ট ভাষায় বলছে আপনারা ১০/১২ জন আসেন আর আমাদের এদিকের ১৫০ জনের খাবার নিয়ে আসেন।এবং আমাদের এদিকের যাদের কাপড়চোপড় দেয়া লাগে সবার কাপড়চোপড় আনবেন।সে কাপড়চোপড় আমরা এখান থেকে গিয়ে পছন্দ করে নিবো"।

মেয়ের বাপের তো মাথায় হাত। এতগুলো মানুষের খাবার রান্না করে নিয়ে যাওয়া আবার সাথে প্রায় ১৪/১৫ জনের কাপড়চোপড়। এত করে রিকোয়েস্ট করলো মেয়ের জামাই আর মেয়ের শশুরকে কেউ মানলোনা।
শেষে কি করবে এক বিঘা জমি বন্ধক রেখে তারপর সব আয়োজন করে এ গাড়ীতে করে নিয়ে যাচ্ছে মেয়ে আনার জন্য।
ওরা এসে নিজেদের পছন্দ কাপড় কিনেছে ৪০ হাজার টাকার।
তারপর আসেন মেয়ের সিজার।এদিকে জটিলতা থাকলে সিজার করে তা না।বরং সিজার না করালে লোকজন ভাববে টাকার অভাবে সিজার করায়নি নরমালে চেষ্টা করেছে।এতে মানসম্মান খুন্ন হয় বলে এখানে কোনো কথা ছাড়া সিজার হয়।

সেটা নিয়ে ও মেয়ের শশুরের শর্ত আছে।এখানকার থানাসদরে সিজার করানো যাবেনা।রাজশাহী বিভাগীয় শহরে সিজার করাতে হবে।

অতঃপর মেয়ের জামাই ও শশুরের সমস্ত শর্ত মেনে মেয়েকে একটু আগে নিয়ে আসলো।
বাচ্চা তাদের অথচ সমস্ত খরচ বহন করতে হবে মেয়ের মা বাপকে।

এদের ও দোষ আছে।যখন বিয়ে হচ্ছে তখন তাদের অহংকারের শেষ নেই।মেয়ের জামাইরা খুব বড়লোক এটার অহংকারে মাটিতে পা পরতোনা।আজকে বড়লোকের ডিমান্ড পূরণ করতে গিয়ে বুঝতে পারছে সমানে সমানে আত্মীয়তা না করলে তার খেসারত কেমনে দিতে হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সয়লাব চট্টগ্রাম যৌতুকের জন্য নাকি কু*খ্যাত। আমি অস্বীকার করছিনা এক সময় চট্টগ্রামে এটা ভয়াবহ ছিলো।কিন্তু দিন যত যাচ্ছে চট্টগ্রাম এর মানুষের চিন্তাভাবনা ডেভেলপ হচ্ছে।
এখন অতটা প্রকট নেই।আমি তো দেখছি এই উত্তরবঙ্গের আমি যে সাইটে থাকি এখানকার যৌতুক প্রথা ভয়ং*কর, নি*ষ্ঠুর, নি*র্মম।

এখানকার এসব কালচারের কোনো প্রতিবাদ ও দেখিনা।কারো মধ্যে চিন্তাভাবনা ডেভেলপ করার মানসিকতা ও দেখিনা।এরা এখনো অশিক্ষিত মূ*র্খ বর্ব*র।বিন্দুমাত্র মানবিকতা নেই এদের।

উত্তরবঙ্গের অন্য এলাকায় কেমন জানিনা কিন্তু আমি যেখানে থাকি এখানকার আশেপাশের ২/৪ ইউনিয়নে মারাত্মক অবস্থা।
সবশেষে সব মাছে... টুট টুট খায় নাম শুধু পাঙ্গাশের।
সব জেলায় যৌতুক নেয় নাম শুধু চট্টগ্রামের।

05/11/2025

‘বড় আপা জানেন আজকে আমার বিয়ে?’

হ্যাঁ জানি, এই নিয়ে চারবার বলেছিস। আর কয়বার বলবি বল?

এক কাজ কর, রাস্তার ওইপাশ থেকে একটা মাইক ভাড়া করে পুরো এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দে আজকে তোর বিয়ে।।

কোকিলা মুচকি বলে আপা এই কাজটা করলে কিন্তু খারাপ হয়না। তবে নিজের মুখে নিজের বিয়ের কথা মাইকিং করা যায় বলেন?
আর একটা মাইক ভাড়া করতে কয়টাকা লাগবে আমি সেসব জানি না।
আপনি জানেন?

রুবির রাগ উঠে যায়, ইচ্ছে করছে কোকিলার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিতে।

বিয়ে নিয়ে নাচ শুরু করছে। ঘরের সবাইকে যেয়ে বলছ আজকে ওর বিয়ে, রুবির ঘরে এই নিয়ে চারবার এসে বলেছে। ভোরে ঘুম থেকে ডেকে তুলেছে।

রুবি গতরাতে এই বাড়িতে এসেছে, অবশ্য এখানে আসবার একটা কারণ আছে।

শওকতের সাথে ঝগড়া করেই এসেছে। কই এখানে এসে একটু শান্তিতে থাকবে কিন্তু কোকিলা নামের এই মেয়েটার জন্যে কিছুতেই পারছে না। একটু পর পর এসে যন্ত্রণা দিচ্ছে।

রুবি কিছু বলতেও পারছে না, আজকে মেয়েটার বিয়ে। কঠিন কথা বলে শুভ দিনে মন খারাপ করে দিতে ইচ্ছে করছে না।

কোকিলার বয়স যখন তেরো বছর তখন থেকে এই বাড়িতে কাজ করে, রুবির বাবাই কোকিলার বিয়ে ঠিক করেছে। ছেলের একটা মুদি দোকান আছে, সাথে চারটা রিক্সা ভাড়া দেয়। এসব কথা কোকিলার থেকেই রুবি শুনেছে।

রুবি এবার দরজা আটকে দেয়, কোকিলা যেনো আর না এসে বিরক্ত করতে পারে।

আপার ঘর থেকে বের হয়ে কোকিলা খালাম্মার পাশে ঘুরঘুর করে। কাজ করতে গেলে খালাম্মা বলে, কোকিলা আজকে তোর বিয়ের দিন কোনো কাজ করতে হবে না। খালাম্মার মুখে বিয়ের কথা শুনে কোকিলা লজ্জ পায়।
আছমা বেগম বলে, এতো লজ্জা পাইলে হবে কোকিলা? তুই না সাহসী মেয়ে।

কোকিলা এক দৌড়ে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে খালুর কাছে যায়।..........

বলে, খালুজান গাড়ি কখন আসবে?
কথাটা বলতেই কোকিলা ভীষণ লজ্জা পায়। জমিরউদ্দীন বলে, কিসের গাড়ি?
কোকিলা মুখ চেপে বলে, বিয়ের গাড়ি।

জমিরউদ্দীন বলে, দুপুরের ভিতরে চলে আসবে। আচ্ছা খালুজান ঠিক আছে আমি যাই তাহলে।

জমিরউদ্দীন মেয়েটাকে দেখে, বিয়ের কথা শুনে মেয়েটা কেমন প্রজাপতির মতো পুরো ঘরে উড়ছে।

কোকিলার বিয়ে ঠিক হবার পরেই জমিরউদ্দীনের সাথে বলে, খালুজান আমার একটা ইচ্ছে আছে। জমিরউদ্দীন বলে, কি ইচ্ছে?

কোকিলা বলে, খালুজান আমার ইচ্ছে একটা গাড়িতে করে বউ হয়ে যাবো। যেমন আপার বিয়ের সময় গাড়ি ছিলো।

জমিরউদ্দীন হেসে বলে, ঠিক আছে আমি একটা গাড়ির ব্যাবস্থা করবো। গাড়িতে চড়েই তোর জামাইকে নিয়ে যাবি। কোকিলা মুখ টিপে তখন হাসে।

দুপুর হয়ে যায় তবে বাড়িতে কোনো গাড়ি আসে না, কোকিলার মন রয়েছে বিয়ের গাড়ির দিকে। কখন ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়ি আসবে।

কোকিলার বিয়ে সন্ধ্যায়, ছেলেপক্ষ থেকে দশজন আসবে। সন্ধ্যায় বিয়ে হবে, রাতের খাবার খেয়ে বউ নিয়ে তারা চলে যাবে।

কোকিলা রুবি আপার দরজায় ধাক্কা দেয়, রুবি বলে কি দরকার? কোকিলা বলে, আপা একটু জরুরী দরকার দরজা খুলেন।

রুবি দরজা খুলতেই কোকিলা বিছানার উপর বসে কাঁদতে থাকে।

রুবি বলে, কি হয়েছে আবার তোর?

কোকিলা কোনো কথা না বলে কেঁদে যায়। রুবি পাশে বসে বলে, দেখ কোকিলা মন মেজাজ এমনিতেই খারাপ। কি হয়েছে বল, কান্নাকাটি বাদ দিয়ে।

‘আপা খালুজান তো বলছিলো আমাকে যখন ওদের বাসায় নিয়ে যাবে, একটা ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়িতেই নিয়ে যাবে। খালুজান গাড়ি ঠিক করেছে। তবে সেই গাড়ি আসেনি। মাঝপথেই নষ্ট হয়ে গেছে গাড়িটা। এদিকে এখন কোনো গাড়ি খুঁজে পায়নি আর।’

রুবি বলে, গাড়িতেই যেতে হবে কেন? কান্নাকাটি করিস নাতো এখন যা আমার ঘর থেকে।

কোকিলা চোখ মুছে বের হয়ে যায়।

রুবি কিছুসময় চুপচাপ বসে থাকে, তারপর বাবার কাছ যায়। গাড়ির বিষয়টা জানতে চাইলে বাবা বলে, দেখতো রুবি আমি তো গাড়ি ঠিক করেছি তবে সেই গাড়ি যদি নষ্ট হয় আমি কি করবো বল? এখন তো গাড়ি পাওয়া যাবে না হুট করে।

রুবি বাবার থেকে সব শুনে নিজের ঘরে আসে। রুবি ঠিক করে শওকতকে একটা কল দিবে। কিন্তু শওকতের সাথে এখন ঝগড়া চলছে, কল দিতে ইচ্ছে করছে না। রুবির মনে হয় শওকতের সাথেই এক জীবন চলে যাবে, তবে কোকিলা মেয়েটার বিয়ের এই দিন বারবার আসবে না। রুবি শওকতকে কল দেয়।

‘হ্যালো রুবি? আমি জানতাম তুমি বেশি সময় রাগ করে থাকতে পারবে না।’

‘তুমি অধিকাংশ সময়ই ভুল জানো। একটা দরকারে তোমাকে কল দিছি। তাই বলে রাগ কমে গেছে এমনটা ভেবোনা।'

‘কি দরকার বলো। আমি জানি আমার জন্যে তোমার হৃদয়ে একটা কোমল জায়গা আছে, যতো রাগ করো না কেন তুমি তো আমাকে ভালোবাসো।’

‘কচুর ভালোবাসা। শুনো আমাদের বাসায় যে মেয়েটা কাজ করে কোকিলা? চিনো তো তুমি তাই না? কোকিলার আজকে সন্ধ্যায় বিয়ে। ওর ইচ্ছে ছিলো বউ হয়ে একটা ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতেই যাবে। বাবা অবশ্য গাড়ি ঠিক করেছিলো, তবে একটা ঝামেলার কারণে সেই গাড়ি আসতে পারবে না। আমি চাই তুমি তোমার গাড়ি ফুল দিয়ে সাজিয়ে বিকালে নিয়ে আসবে।’

‘আমার গাড়ি?’

‘হ্যাঁ তোমার গাড়ি। কিছুসময় তোমার গাড়ি কেউ ব্যাবহার করলে ক্ষয়ে যাবে নাতো?’

‘রুবি আমি তো সেসব বলি নাই। তুমি বলতে পারতে আমাদের গাড়িটা নিয়ে আসবে।’

‘এতো মন ভুলানো কথা বলতে হবে না।’

‘শুনো আমি ড্রাইভারকে এখনি গাড়ি নিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি ফুল দিয়ে সাজাতে। কোকিলা গাড়িতে চড়েই জামাই নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাবে।’

রুবির ইচ্ছে করছে শওকতকে বলবে তুমিও এসো না। তবে কি ভেবে কিছুই বলে না। শওকত যদি আসে রুবি তাহলে রাগ করে থাকবে না ঠিক করে রাখে।

কোকিলা মন খারাপ করে চুপচাপ এক কোনায় বসে আছে, বিয়ের গাড়ি হবে না তাই একটু বেশিই মন খারাপ। বিয়ে নিয়ে মেয়েটার যে উচ্ছ্বাস ছিলো এখন সব শান্ত হয়ে আছে।

রুবি ঠিক করে গাড়ির বিষয়ে কিছুই জানাবে না, যখন দেখবে ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়ি এসেছে তখন খুশি হবে।

শওকত গাড়ি নিয়ে সন্ধ্যায় চলে আসে। রুবি তখন কোকিলাকে সাজিয়ে দিচ্ছে। শওকত রুবিকে ডেকে বলে, গাড়ি নিয়ে এসেছি একবার দেখে আসো।

রুবি কোকিলাকে জানালা দিয়ে বিয়ের গাড়ি দেখায়, ফুল দিয়ে সাজানো একটা সাদা গাড়ি। কোকিলা মুচকি হাসে গাড়িটা দেখে, রুবি আপাকে জড়িয়ে ধরে, কিছুক্ষণ ফুপিয়ে কাঁদে। রুবি বলে কাঁদতে হবে না সাজ নষ্ট হয়ে যাবে, চুপচাপ একটু বসে থাকে। কোকিলা বসে থাকে।

কোকিলার ইচ্ছে পূর্ণ হয় ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়িতেই বরের সাথে যায়।

কোকিলা যাবার পরে শওকত রুবির কাছে এসে বলে, চলো আমরা বাসায় যাই। রুবি বলে রিক্সা ডেকে নিয়ে আসো আমি বের হচ্ছি।

শওকত গলির মুখে যেয়ে গেটের কাছে রিক্সা নিয়ে আসে। রুবি সব রাগ কমিয়ে শওকতের সাথে রিক্সায় বসে। শওকত রুবির হাত ধরে বলে, তুমি কি জানো তুমি অনেক ভালো একটা মানুষ? রুবি বলে, তুমি কি জানো তুমিও একটা ভালো মানুষ? শওকত বলে, আমি যে তোমার সাথে ঝগড়া করি, তাইতো ছেড়ে চলে আসলে। রুবি বলে, যদি ঝগড়া না হতো এমন সুন্দর মুহুর্ত তৈরি হতো বলো? ভালোবাসায় ঝগড়া দরকার, আরো গভীরভাবে প্রিয় মানুষকে অনুভব করা যায়। ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু মিটিয়ে ফেলবে পারবে না? শওকত বলে, পারবো।

বিয়ের গাড়ি

মুস্তাকিম বিল্লাহ

04/11/2025

যাদের স্ত্রীরা কুরআন মুখস্থ করতে চেষ্টা করছেন তাদের এই বিষয়টা একটু বুঝতে হবে যে, এটা আজীবনের প্রকল্প না।

হয়ত দু চার বছর আপনার স্ত্রী একটু কম সময় দিতে পারবেন সংসারে। ইনশাআল্লাহ তিনি সবই করবেন, কিন্তু হয়ত আগের চেয়ে একটু কম সময় ব্যয় করে।

আপনি যদি এই কটা বছর তাঁকে একটু সহযোগিতা করেন, কবছর পরের ফলাফল কিন্তু ইনশাআল্লাহ আপনার কল্পনার চেয়েও সুন্দর হবে!

আপনার স্ত্রী হবেন একজন হাফিজা!

সেই পথ ধরে ইনশাআল্লাহ আপনার সন্তানেরাও পাবে মায়ের মাঝে একজন উত্তম গাইড।
তিনিই তাদের হিফজ করাতে পারবেন!
আর এই এক কুরআন মুখস্থের কারণে যে কত রহমত এবং বরকতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে আপনার সংসার ইনশাআল্লাহ, তা অনুভব করবেন কেবল যদি ধৈর্য ধরে কটা বছর আপনি তাঁকে সহায়তা করেন!

মানুষ তো দুনিয়ার পড়ালেখা, চাকরি, কাজ ইত্যাদির জন্য কত ত্যাগ করে, কম্প্রমাইজ করে।

আমরা নিজেদের সংসারে সবাই মিলে কি পরস্পরকে সহায়তা করতে পারি না, যেন আমরা আল্লাহর কথাকে আমাদের অন্তরে ধারণ করতে পারি?

উস্তাযা নায়লা

04/11/2025

শাশুড়ি মায়ের সাথে তুমুল ঝগড়া শেষে ননদ আমার কাঁধে সব দোষ চাপিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। বেরোনোর সময় বলল, “মায়ের মাথাটা বেশ ভালো করেই চি'বি'য়ে খেয়েছ। তোমার মা বুঝি এই শিখিয়ে দিয়েছে?”

আমার মা নেই। ছোট বেলায় মা'রা গিয়েছে। কথাটা তার অজানা নয়। তবুও মাকে তুলে এমন কথা বলার বেশ ঘৃণাই লাগল। নরম সুরে বললাম, “আমার মা আমাকে খুব বেশি শিক্ষা দিতে পারেনি। তবে যতটুকু শিখেছে তাতে তিনি বারবার করে বলেছেন– বড়দের গায়ে হাত তুলবে না। সম্মান দেখাবে। যদি সে কথা না শেখাত তবে এখন আপনার গালে অন্তত একটা চ'ড় মা'র'তা'ম।”

ননদ কিছু বলল না। বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইল। তারপর বেরিয়ে গেল। শাশুড়ি মা বললেন, “বেলা, ঘরে যাও।”

মাথা দুলিয়ে ঘরে চলে এলাম। ঘর ফাঁকা। আমি ছাড়া আর কেউ নেই। রিফাত অফিসে গিয়েছে বেশ অনেকক্ষণ। সকাল নয়টা থেকে তার অফিসের সময় শুরু হয়। ফিরতে রাত আটটা বাজে। এই দীর্ঘ সময়ে কথা বলার জন্য আমার কোন সঙ্গী নেই। টুকটাক ঘরের কাজকর্ম করতে শাশুড়ি মায়ের সাথে যা কথা হয় তাই। ঘরে মানুষ বলতে এই তিনজনই। গতকাল ননদ এসেছিল। আজ সকালেই চলে গেল। এ বছরের মার্চ মাসে আমার বিয়ে হয়েছে। এখন অক্টোবরের শেষের দিকে। এই কয়েক মাসের ভেতরে যতবারই সে এসেছে, মায়ের সাথে ঝগড়াঝাটি করে ফিরে গিয়েছে। কী নিয়ে ঝগড়া সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তবে সে বেশিরভাগ সময়ই আমার দোষ দেয়। কুৎসিত ভঙ্গিতে বলে, “তুমি মায়ের মাথাটা চিবিয়ে খেয়েছ।”

শাশুড়ি মা নির্বিকার মানুষ। এতদিনেও তার সাথে আমার কিছু হয়নি। ঝগড়াঝাটি, কথা কা’টা’কা’টি, সামান্য মনোমালিন্যও না। তিনি সবসময় আমাকে ছাড় দিয়ে চলেন। বিয়ের প্রথম দিকে রান্না করতে প্রায়ই সব গুলিয়ে ফেলতাম। সেবার বিরিয়ানি লবন দিতে ভুলে গেলাম। ঘরভর্তি মেহমান। শাশুড়ি মা আগ বাড়িয়ে সব দোষ নিজের কাঁধে নিয়ে নিলেন। সহজ গলায় বললেন, “মানুষের ভুল হতেই পারে। এটা কোন বড় ব্যাপার না।”

ঘরভর্তি লোকের কেউই কোন কথা বলল না। পাতে গাদাগাদা কাঁচা লবন নিয়ে খাওয়া শেষ করল। এই ঘটনার জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ দিতে পারিনি। অথচ আমার উচিত ছিল খুব গুছিয়ে কিছু বলা। খানিকক্ষণ জড়িয়ে ধরে বসা থাকা। ভালো-মন্দ কিছু উপহার দেওয়া। সে-সবের কিছুই করা হয়নি। কেন হয়নি কে জানে? শত চেষ্টা করেও নিজের সাথে পারিনি। গলা দিয়ে স্বর বের হয়নি।

দুপুরের খাওয়া শেষে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। দরজায় খটখট শব্দে জেগে উঠলাম। এই সময়ে আবার কে এলো? তড়িঘড়ি পায়ে ছুটে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। সুমনের মা এসেছে। ভদ্রমহিলা আমাদের পাশের বাসায় থাকে। বেশ কিছুদিন হলো শাড়ির ব্যবসা শুরু করেছে। দু'হাতে জাম্বো সাইজের দু'টো ব্যাগ ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হাসিহাসি মুখ। ঠোঁটের একপাশে পানের পিক লেগে আছে।

“দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ভেতরে এসে বসুন।”

“সে না হয় এলুম। তোমার শাশুড়ি কোথায়?”

“আম্মা! আম্মা কোথায় সে কথা তো বলতে পারি না। ঘরে থাকবেন হয়তো।”

“একটু দেখো তো। দু'টো শাড়ি নিয়েছিল। শাড়ির টাকা নিতে এসেছি। শাড়িগুলো সাথে করে নিয়ে এসেছি। দেখো তো পছন্দ হয় কি-না।”

আমি তার দিকে তাকিয়ে অল্প হাসলাম। তারপরই নিচু গলায় আম্মা আম্মা ডাকতে ঘরের ভেতরে ঢুকে গেলাম। শাশুড়ি মা বাড়িতে নেই। কখন কোথায় গিয়েছেন বলে যাননি।

সুমনের মা বেশ অভাব হলো। চিকন গলায় বলল, “তোমাকে না বলে বেরিয়ে গেল?”

“ঘুমিয়ে ছিলাম। বোধহয় জাগাতে চাননি। আশেপাশে কোথাও গিয়েছে। চলে আসবে।”

“তা বেশ ভালো কথা। তোমার শাশুড়ির এই গুণটা আছে। বউদের ঘাটায় না। আমাদের শাশুড়ি হলে তো হিড়হিড় করে টেনে তুলত। ভরদুপুরে ঘুমনোর জন্য বেশ কিছু কথাও শুনিয়ে দিতো। তা তোমাকে কিছু বলে না বাপু?”

“না কাকি। আম্মা আমায় কিছুই বলেন না।”

“তা জানি। আপা হলেন মাটির মানুষ। সংসারের সবদিকে নজর দিয়ে চলে। এইতো আমার থেকে দু'টো শাড়ি নিলো। বলল– মেয়েটা কতদিন পর এসেছে, একটা কিছু তো কিনে দিতে হয়। খুব দামী দুটো শাড়ি নিয়েছে। আমি বললাম– আপার মত মা আর কোথায় পাওয়া যায়! মেয়ে এসেছে দুই দু'টো শাড়ি। সে বলল– একটা মেয়ের, অন্যটা তোমার জন্য নিয়েছে। তা তোমাকে কোনটা দিয়েছে? গোলাপি রঙের শাড়িটা দিয়েছে?”

ডানে বামে মাথা দোলালাম। শাশুড়ি মা আমাকে কোন শাড়ি দেননি। সুমনের মা ভীষণ অবাক হলো। বিস্মিত গলায় বলল, “সেকি কথা! তোমাকে কোন শাড়ি দেয়নি?”

তার কথার জবাব দিলাম না। শান্ত চোখে তাকিয়ে রইলাম। সে শাড়ির ভাজ খুলতে খুলতে বলল, “তাহলে হয়তো মেয়ের সাথে পারেনি।”

“আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না।”

“আরে আমাদের মিলি, ছোট থেকেই ও একটু হিংসুটে স্বভাবের। শাড়ির কেনার সময় আপা যখন তোমার কথা বলল তখনই তো তেঁ তেঁ উঠল। বলে, পরের মেয়েকে এত মাথায় তুলো না। আমাকে দিলেই তাকে দিতে হবে কেন। ছোট তো ওকে কাপড়চোপড় কিনে দিচ্ছে। বাবা রে বাবা! কথায় কথায় ঝগড়াই বাঁধিয়ে ফেলল। আমার সামনে। বোঝ অবস্থা? শুধু কী তাই। গোলাপি রঙের ওই একটা শাড়িই ছিল। সেটা নিয়েও খানিকক্ষণ কথা কা’টা’কা’টি হলো।”

কি বলব বুঝতে পারলাম না। বিব্রত মুখে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম। তাহলে এই ব্যাপার ঘটছে। শাশুড়ি মা আমায় শাড়ি দিতে চেয়েছে বলেই ননদ ওসব কথা বলল। আমার মা নেই। তাই হয়তো বুঝতে পারি না– মায়ের ভালোবাসার ভাগ কাউকে দেওয়া যায় না। পরের মেয়েকে তো না-ই! নাকি যায়? মায়েরা কী তাদের একাধিক সন্তানকে ভালোবাসে না?

সুমনের মা আরও খানিক গল্পগুজব করল। তার কথাতে মন লাগতে পারলাম না। হঠাৎই খুব খারাপ লাগছে। কাঁদতে ইচ্ছে করছে। ঘন্টা খানেক পর শাশুড়ি মা এলেন। তার হাতে কাগজের ঠোঙায় মুড়িমাখা। ঠোঙাটা আমার হাতে দিয়ে বললেন, “কাল বলছিল না মুড়িমাখা খেতে ইচ্ছে করছে। ফেরার পথে দেখলাম তা-ই নিয়ে এলাম। ঝাল কমিয়ে এনেছি। ধরে না রেখে খেয়ে ফেলো। নেতিয়ে গেলে ভালো লাগবে না।”

চোখ জ্বালা করছে। গলা জড়িয়ে আসছে। অস্পষ্ট দৃষ্টিতে ঠোঙা হাতে নিয়ে ঘরে চলে এলাম।

খানিকক্ষণ বাদে শাশুড়ি মা আমার ঘরে এলেন। গোলাপি রঙের একখানা শাড়ি খাটের উপর ছড়িয়ে বললেন, “দেখো তো। পছন্দ হয় কি-না।”

শাড়ির দিকে তাকালাম না। শাশুড়ি মায়ের চোখে চোখ রেখে বললাম, “আমার জন্য নিজের মেয়ের সাথে ঝগড়া করলেন কেন?”

ভেবেছিলাম তিনি খুব কঠিন কথা বললেন। কিন্তু বললেন না। শান্ত ভঙ্গিতে আমার পাশে বসলেন। অসম্ভব কোমল গলায় বললেন, “মায়েরা সন্তানদের মাঝে বিভেদ করে না।”

“তবুও!”

“সে-সব কথা থাক। শাড়ি পছন্দ হয় কি-না বলো।”

“পছন্দ হয়েছে।”

“তাহলে একটা কাজ করো। তোমার অপরাজিতা গাছে বেশ কয়েকটা ফুল ধরেছে। ওগুলো দিয়ে আমায় এক কাপ চা করে দাও। শুনেছি এই ফুলের চা খেতে ভালো।”

মাস তিনেক আগে বেলকনির টবে বেশ কয়েকটা বীজ লাগিয়ে ছিলাম। দুটো চারা ফুটেছে। সেই থেকেই এদের যত্নআত্তি করছি। পানি সার কোন কিছুই কমতি নেই। টব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে রোদের জায়গায় রেখেছি। এতদিনে ফুলে ধরেছে৷ সবুজ পাতার মাঝে নীল ফুলগুলোকে দেখতে চমৎকার লাগছে। নরম হাতে ফুল তুলে নিলাম। একটু মায়াই লাগছিল। তবুও তুললাম। চা বানিয়ে শাশুড়ি মায়ের কাছে নিয়ে এলাম। তিনি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে আমার দিকে তাকালেন। শান্ত গলায় বললেন, “এখানে বসো।”

আমি তার পাশে বসলাম।

“কয়টা ফুল ধরেছিল?”

“আটটা।”

“সবগুলো তুলে ফেলেছ?”

“জ্বি।”

“এত যত্নের গাছের ফুল তুললে খারাপ লাগেনি?”

“একটু লেগেছে।”

“গাছটা ম'রে গেলে কষ্ট হবে না?”

“তা হবে। অনেক যত্ন নিয়ে বড় করেছি তো, তাই আর কী।”

“মানুষের সম্পর্কগুলোও গাছের মত। যত্ন নিয়ে তৈরি করতে হয়। নয়তো আগাছায় শেষ করে ফেলে। তুমি আমার কাছে জানতে চাইলে না নিজের মেয়ের সাথে ঝগড়া করি কেন? আমি ওর সাথে ঝগড়া করি না। ওকে সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝাতে চাই। ও সে-সব বুঝতে পারে না। যুগের বস্তাপঁচা নিয়মে কতৃত্ব ফলিয়ে টিকে থাকতে চায়। ক্ষমতার জোর ক্ষমতা থাকা পর্যন্তই। কিন্তু ভালোবাসা, যত্নের এসবের জোর অসীম পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। আমার কথা বুঝতে পারছ?”

“পারছি।”

“ইচ্ছে করলেই আমি তোমার সাথে উঁচু গলায় কথা বলতে পারি। কাজের ভুল ধরে দুটো কথা বেশি শুনিয়ে দিতে পারি। কিন্তু তাতে কী খুব বেশি লাভ হবে? হবে না। তুমি নিজের মনে আমার প্রতি ঘৃণা পুষে রাখবে। ঘৃণা না পুষলেও ক্ষোভ জমিয়ে রাখবে। এতটুকু জীবনে ঘৃণা পেলে সার্থকতা আর কোথায়?”

আমি তার কথার জবাব দিতে পারলাম না। চা শেষ। তিনি আমার হাতে চায়ের কাপ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “লোকে ঠিক কথাই বলে। অপরাজিতা ফুলের চা খেতে বেশ ভালো। পরেরবার ফুল ধরলে আরও এক কাপ বানিয়ে দিও।”

সন্ধা নেমে গেছে। বেলকনির বাতাস ঠান্ডা। গায়ে লাগলে কেমন শীত শীত করে। শাড়ির আঁচলটা আরও একটু গায়ে জড়িয়ে নিলাম। আনমনে বললাম, “আমার এই গাছের সবগুলো ফুল আপনার জন্য মা। এই ফুলের চা-ও আপনার। আমি আমার নিজের মা'কে পাইনি। মায়ের ভালোবাসাও পাইনি। প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করে না। সেজন্যই বোধহয় আপনার কাছে নিয়ে এসেছে। হয়তো জানেন না– আপনি সমুদ্রের অতলে লুকিয়ে থাকা দামী রত্নের মতো মূল্যবান। আপনার চিন্তাগুলোও তেমন।

চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নিলাম। বাতাসে হালকা ধরনের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে আছে। রিফাত এসেছে। এই গন্ধ ওর পারফিউমের। রিফাত সোজা বেলকনিতে চলে এলো। বিস্মিত গলায় বলল, “শাড়ি কোথায় পেলে?”

“মা দিয়েছে।”

“মা!”

ওর বুঝতে একটু সময় লাগল। শাশুড়ি মা'কে আমি আম্মা বলে ডাকি। এরপর থেকে হয়তো মা ডাকব। কী জানি! বোধহয় পারব না। গলায় জড়িয়ে যাবে। রিফাত হাসল। খুশি খুশি গলায় বলল, “তুমি মা'কে কী দিয়ে?”

“অপরাজিতা ফুলের চা।”

সে আর কথা বলল না। শান্ত চোখে তাকিয়ে রইল। অন্ধকার গাঢ় হচ্ছে। এই গাঢ় অন্ধকারের ভেতরেও শাড়ি গোলাপি রং কেমন জ্বলজ্বল করছে। ভালো লাগছে দেখতে।

সমাপ্ত
#অপরাজিতা_ফুলের_চা
কলমে : #ফারহানা_কবীর_মানাল

04/11/2025

নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।

তালাকের মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে আমাদের দেশের পুরুষরা খেল তামাশা মনে করে।

নিচের পোস্ট দেখুন ।
এখনো বিয়ে হতে পারলো না ,
আগেই তিন তালাকের শর্ত দিয়ে বসে আছে ।

দাম্পত্য জীবন অসহনীয় হলে প্রথমে এক তালাকের মাধ্যমেই আলাদা হবেন। তাহলে শুরুতেই তিন তালাকের কথাটা কেন আসছে?

দয়া করে সবাই সচেতন হই।

না জানি কত দম্পতি এভাবে তিন তালাক, ১০, ২০ তালাকের পরেও সংসার করা যাচ্ছেন।

আল্লাহ রহম করুন।

***

আসসালামু আলাইকুম

হযরত আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে আত্বীয় এক পরিবারের মেয়ের সাথে,
মেয়ে ভালো এবং মাদ্রাসায় পড়ছে,
কিন্তু ওর বোনের জামাইরা ভালো না,বাজে ভাবে ঢং করে ওর সাথে,

এজন্য আমি রাগ করে বলেছিলাম প্রয়োজন ছাড়া তুমার বোন জামাইদের সাথে কথা বললে বা ঢং করলে বিয়ের পর সাথে সাথেই তিন তালাক হয়ে যাইবা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিয়ের আগে এমন শর্ত দেওয়া কি ঠিক হইছে
এবং সে যদি শর্ত ভঙ্গ করে ফেলে
তাইলে কবুল বলার পর শর্ত অনুযায়ী তিন তালাক হবে?

নাকি বিয়ে না হওয়ার কারনে শর্ত বাতিল হবে?

তাড়াতাড়ি এপ্রুভ করেন।

এমন হলে বিয়েটা ক্যান্সেল করে দিব কারন আমি চাই
না আমার দ্বারা ওর সুন্দর জীবন টা নষ্ট হোক।

কপি

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Islamic Matrimony fb page posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Islamic Matrimony fb page:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram