ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন জুয়েল

ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন জুয়েল ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন জুয়েল এর অফিসিয়াল পেজ। He admitted to MBBS at Dinajpur Medical College in 1999 & completed MBBS under Rajshahi University in 2004.

He was selected for MD in Cardiology in 2007 as one of the youngest candidates in Bangladesh & completed FCPS 1st part in July 2007. He was selected in the 27th BCS exam with merit position 50.

16/11/2025

বাংলাদেশের কোন কোন খাবারে শুকরের চর্বি আছে এবং কিভাবে আছে তার বর্ণনা
=============================

[অতি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট, আজ সকালে ইগলুর বক্স মিলিয়ে দেখলাম সত্যিই সেখানে এমন একটি কোড E-471 লেখা আছে যেটি শুকরের চর্বি থেকে উৎপাদিত]

শূকরের মাংস ইউরোপ জুড়ে তাদের প্রোটিন বা আমিষ সরবরাহের অন্যতম একটা মাধ্যম। এক হিসেবে দেখা গেছে যে, একমাত্র ফ্রান্সেই প্রায় বিয়াল্লিশ হাজারেরও বেশী শূকরের খামার রয়েছে। ইংল্যন্ডরও আনাচে কানাচে রয়েছে শূকরের খামার। বাণিজ্যিকভাবে এইসব খামারগুলো পুরো ইংল্যন্ড জুড়েই শূকরের মাংস সরবরাহ করে আসছে। আর ইংল্যন্ডে বসবাস করার কারণে নিত্যদিন চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি ইংরেজদের খাদ্য তালিকায় শূকরের মাংস একটি অতি আবশ্যকীয় ও উপাদেয় তালিকা। কেবল ইংল্যন্ডই নয় বরং পুরো ইউরোপ, আমেরিকা আর প্রাচ্য, অর্থাৎ পুরো খৃষ্ট বিশ্বেই প্রকৃত অবস্থাটি এমনই। এমনকি মুসলিম বিশ্বের কোথাও কোথাও, বিশেষ করে, মুসলিম দেশসমুহে বসবাসকারী অমুসলিম ধর্মালম্বীদের কাছে শূকরের মাংস অতি কাংক্ষিত একটি খাদ্য মাধ্যম।

এই মাধ্যমটি যে আজ নতুন সৃষ্টি হয়েছে তা নয় বরং সেই মধ্যযুগের কিংবা তারও আগে থেকেই এটি বিদ্যমান। শূকরের দেহে সবচেয়ে বেশী চর্বি থাকে এবং সেই চর্বির মধ্যে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর চর্বিও রয়েছে। বস্তুুতান্ত্রিক চিন্তা চেতনায় উজ্জীবিত ইউরোপ জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে এইসব চর্বিকে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে এ থেকে ব্যবহার্য বা খাদ্য জাতিয় বিভিন্ন প্রকার উপকরণ যেমন উদ্ভাবন করেছে তেমনি তা সারা বিশ্ব জুড়েই বাজারজাতও করেছে। আজকাল পুরো ইউরোপ, আমেরিকা আর পশ্চিমা বিশ্ব, এমনকি সমগ্র বিশ্বব্যাপি স্বাস্থ সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মানুষ খাদ্যে অতিরিক্ত ফ্যাট নিয়ে বড় বেশী চিন্তিত এবং সজাগ। খাদ্যে চর্বির আধিক্যই হৃদরোগের প্রধান কারণ, সেটা বিশ্ববাসী খুব ভালো করেই জেনে গেছে বিজ্ঞানের সুবাদে। শূকরের দেহে সবচেয়ে বেশী চর্বিই কেবল থাকে না বরং সেই চর্বির মধ্যে ক্ষতিকারক উপাদানটির আধিক্যও সবচেয়ে বেশী। ফলে ইউরোপের সচেতন মানুষ শূকরের মাংস খেলেও এর চর্বিকে সব সময় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে বা চলার চেষ্টা করে। এর ফলে শূকর ব্যবসায়ী ও তার মাংস সরবরাহকারীদের একটা বড় অংশই অপচয় হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

এইসব অপচয় থেকে বাঁচার জন্যই ইউরোপ শূকরের চর্বির বিকল্প ব্যবহার উদ্ভাবন করেছে। শূকরের চর্বিকে তারা বিভিন্নভাবে বাজারজাত করেছে। এর বহুবিধ ব্যবহারকে নিশ্চিত করেছে প্রসাধনী সামগ্রীর কাঁচামাল, ঔষধের মাধ্যম বা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার, শল্য চিকিৎসায় ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নির্মাণ এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো মনুষ্য ও পশু খাদ্য সামগ্রির বিভিন্ন উপাদান হিসেবে এই ক্ষতিকারক বস্তুটিকে ব্যবহার করছে। প্রথমে শূকরের চর্বি দিয়ে সাবান বানানো হয় এবং তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এর পরে একইভাবে ঐ চর্বিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রকম তরল প্রসাধনী, ক্রিম ইত্যাদি উৎপাদন এবং বাজারজাত করা হয়, এটাও ব্যবসায়িক সফলতা পায়। বন্দুকের কার্তুজে এই শূকরের চর্বি ব্যবহার শুরু হয় সর্বপ্রথমে, উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কিংবা তারও আগে।

যা হোক, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীগুলোও তাদের উৎপাদিত ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রীতে এর ব্যবহার শুরু করে। সর্বপ্রথমে শরীরের অভ্যন্তরে সেলাই করার জন্য এমন এক ধরনের সুতোর দরকার পড়ে, যা ক্ষত শুকোনোর পরে খূলে ফেলার প্রয়োজন পড়বে না, এবং শরীরের ভেতরে হবার কারণে তা সম্ভবও নয়, বরং সেলাই কাজে ব্যবহৃত এই সুতো আপনা আপনিই মানুষের মাংসের সাথে মিশে যাবে। এ চিন্তা থেকেই চিকিৎসকরা বেড়ালের অন্ত্রের চর্বি দিয়ে তৈরী করেন এক বিশেষ ধরনের সুতো, যা দিয়ে মানুষের দেশে অস্ত্রোপচারের সময় আভ্যন্তরীণ ক্ষত জোড়া দিতে ব্যবহার করা যাবে। শল্য চিকিৎসক বা সার্জনরা মানুষের শরীরে এরকম যে সুতোর ব্যবহার করেন তাকে ‘ক্যটগাট’ বলা হয়। বেড়ালের চেয়ে শূকরের প্রচলন বেশী এবং শূকরের মাংস ও চর্বি সহজ লভ্য হবার সুবাদে ইউরোপের শূকর খামার ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকরা এগিয়ে আসেন এই সুতো নির্মাণে বেড়ালের পরিবর্তে শূকরের চর্বি ব্যবহারে। এবং তারা তা শুরুও করেন।

কিন্তু কিছু সচেতন মুসলমান ইউরোপীয় পণ্যসামগ্রীর গা’এ লিপিবব্ধ উপাদানের তালিকায় pig fat শব্দটি দেখে আঁতকে উঠেন। কারণ যে কোন মুসলমানের কাছে এই pig fat বা শূকরের চর্বি, তার মাংস বা রক্ত সকল কিছুই হারাম, এর যে কোন ধরনের পরোক্ষ ব্যবহারও হারাম। তারা তাদের ভাষণে-বিবৃতিতে, লেখা-লেখনীতে এ ব্যপারে জনগণকে যেমন সতর্ক করেন, তেমনি সরকারের কাছেও দাবী জানাতে থাকেন এইসব ইউরোপীয় পণ্য দেশে আমদানী করারা অনুমতি না দেবার। এর ফলে ইউরোপীয়রা তাদের পণ্যতে pig fat শব্দটির পরিবর্তে ‘animal fat’ শব্দটি ব্যবহার শুরু করে।

ফলে ইউরোপীয়ান বাবস্যায়ীরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার হারাতে বসে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতেই তারা বিকল্প পন্থা উদ্ভাবন করে। আর এই বিকল্প পন্থাটইি হলো উৎপাদিত কোন বস্তু, তা খাদ্য সামগ্রী হোক বা ঔষধ পথ্য কিংবা প্রসাধনী কিংবা অন্য কিছু, তার গা’এ ইউরোপীয়ান আঈন অনুযায়ী উপাদান সমুহের নাম লেখা হবে বটে তবে সেই সব নামগুলো লেখা থাকবে বৈজ্ঞানিক কোন টার্ম কিংবা সাংকেতিক নাম ব্যবহার করে যেন সাধারণ জনগণ সেই সব নাম, সেইসব টার্ম পড়ে বুঝে উঠতে না পারে, আসলে এই জিনিসগুলো কী?

করপোরেট বাণিজ্যের এই বিশ্বে ব্যবসাীয় মহলের চাপে নতী স্বীকার করে সরকার উৎপাদকদের সাথে আপোষ করে এবং উৎপাদিত পণ্যের গা’এ সাংকেতিক ভাষায় উপাদানসমুহের নাম লিপিবদ্ধ করার অনুমিত দেয়। সেই থেকে শিল্পকারখানায় উৎপাদিত পণ্য, বিশেষ করে, খাদ্য সামগ্রী কিংবা তা প্রস্তুতে ব্যবহৃত উপাদানসমুহে, প্রসাধনী, ঔষধ কিংবা পথ্যের উৎপাদনে সাংকেতিক ভাষায় বিশেষ নাম বা E-Codes ব্যবহার করা হয়, যা আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য একটি বিষয়।

এরকমই একজন মুসলিম টেকনিশিয়ান কাজ করতেন ফ্রান্সের Pegal শহরে অবস্থিত Departments of Food Administration এর মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে বা ল্যবরেটরিতে। তিনি অনূসন্ধিৎষূ মন নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বের করেছেন বেশ ক’টি E-Codes যার প্রত্যেকটিই শূকরের চর্বিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। একটি ওয়েব সাইটে Are we eating Pork? শিরোণামে মুসলমানদের উদ্দেশ্যে এক পাকিস্থানী বিজ্ঞানী ড: এম আমজাদ খান কর্তৃক প্রচারিত উক্ত তালিকায় শুকরের চর্বি থেকে প্রস্তুত E-Codes এর তালিকা নিম্নরুপ:

E100, E110, E120, E 140, E141, E153, E210, E213, E214, E216, E234, E252, E270, E280, E325, E326, E327, E334, E335, E336, E337, E422, E430, E431, E432, E433, E434, E435, E436, E440, E470, E471, E472, E473, E474, E475, E476, E477, E478, E481, E482, E483, E491, E492, E493, E494, E495, E542, E570, E572, E631, E635, E904. I

উক্ত তালিকায় উল্লেখিত E-Codes গুলোর বেশ ক’টি আমাদের দেশে প্রাত্যহিক ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত জনপ্রিয় খাদ্যতালিকায় উপস্থিত দেখতে পাওয়া যায়। তার দু‘একটা নমুণা দেখুন, যেমন; নিচে উল্লেখিত তালিকায় খাদ্য দ্রব্যের নামের পাশে তাতে ব্যবহৃত E-Codes ও তুলে দেয়া হলো:

1 Cadburrys chocolate – E476

2 Igloo Ice Cream -E471,E433

3 Baskin Robbins Ice Cream E471

4 Foster Clarks Custard Powder-E110

5 Fadeco Ice Cream-E471

6 Nova Chewing Gum -E422

7 Demah Fresh -E422

8 Big Babool Chewing Gum

বলা বাহুল্য, উপরের তালিকায় উল্লেখিত প্রায় সবকটিই আমাদের দেশসহ প্রায় সকল মুসলিম দেশে ছেলে বুড়ো’সহ সকলের কাছেই খুবই প্রিয়।

আল কুরআনে অন্তত চারটি জায়গায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শূকরের মাংস এবং মৃত জন্তু জানোয়ার আর সেইসব জানোয়ার যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম নিয়ে জবাই করা হয়েছে, মুসলমানদের জন্য হারাম করেছেন। তারই একটি আয়াত দেখুন:

তিনি তোমাদের উপরে হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত শূকর মাংশ এবং সেসব জীব জন্তু যা আল্লাহ ব্যতিত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং না-ফরমানী ও সীমালংঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নি:সন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু (সুরা আল বাক্বারা- ১৭৩)

এটা মোটমুটি অমুসলিম ব্যবসায়ীরা জানে, অন্তত তাদের সরকার ও জনগোষ্ঠির সচেতন অংশটি খুব ভালো করেই জানে, কিন্তু তারপরেও তারা ভিন্ন কৌশলে মুসলমানদেরকে আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় সেই হারাম বস্তু খাওয়াতে মনে হয় উঠে পড়ে লেগেছে। এর পেছনে কেবল যে তাদের আর্থিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থই আছে তাই নয় বরং এর পেছনে রয়েছে ধর্মীয় বিদ্বেষজনিত এক আগ্রাসী মনোভাব, যার মিল রয়েছে একমাত্র ক্রসেডের সাথেই।

সংগৃহীত পোস্ট
Tahmina Akter

10/10/2025

আজ থেকে বন্ধ হচ্ছে আগারগাঁও এর কেকপট্টি!
জনদূর্ভোগ কমাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত,
কেকের প্রধান উপাদান হলো চিনি।অতিরিক্ত চিনি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এর ফলে ডায়াবেটিস, স্থূলতা (obesity), হৃদরোগ, ও দাঁতের ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
🧈 অধিকাংশ কেকেই বাটার, মার্জারিন বা ক্রিম ব্যবহার হয়।
এগুলোতে স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা
→ রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বাড়ায়
→ হৃদরোগ ও স্ট্রোক এর ঝুঁকি বাড়ায়।

🍞 কেক তৈরি হয় ময়দা (white flour) দিয়ে, যাতে ফাইবার কম থাকে। এটি দ্রুত হজম হয়ে রক্তে চিনি বাড়ায় এবং দীর্ঘমেয়াদে ওজন বৃদ্ধি ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ঘটাতে পারে।

🧁 অনেক কেকে কৃত্রিম রং, ফ্লেভার ও প্রিজারভেটিভ দেওয়া হয়। এগুলোতে অ্যালার্জি, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি পর্যন্ত থাকতে পারে (দীর্ঘমেয়াদে)।
⚖️অল্প এক টুকরা কেকেই থাকে অনেক ক্যালোরি।
নিয়মিত খেলে ওজন বৃদ্ধি, মেটাবলিক সিন্ড্রোম, ও ফ্যাটি লিভার হতে পারে।

🧃 ক্রিম বা পুরনো কেক খেলে হতে পারে গ্যাস, বদহজম, এমনকি খাদ্যে বিষক্রিয়া।
তবে—
হোল-গ্রেইন বা ওটস কেক, চিনি ও ক্রিম কমানো কে খেলে তেমন ক্ষতি নাই।
Collection

আগামীকাল সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত গোবিন্দগঞ্জ রুগী দেখবেন
18/09/2025

আগামীকাল সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত গোবিন্দগঞ্জ রুগী দেখবেন

15/09/2025

এক কেজি সয়াবিন থেকে সর্বোচ্চ ২০০ মিলি তেল পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সয়াবিন মেশিনে ঢোকানোর আগে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে নেওয়া হয়। ফলস্বরূপ এক কেজি সয়াবিন (+কেমিক্যাল) থেকে মোটামুটি এক লিটার তেল পাওয়া যায় (যেটা আসলে ভোজনযোগ্য তেল নয়, কেমিক্যালের মিশ্রণ)। যদি শুধুমাত্র সয়াবিন থেকে তেল বের করে বাজারজাত করা হতো, সেক্ষেত্রে প্রতি লিটারের মূল্য হতো কয়েক হাজার টাকা।

একইভাবে এক লিটার ভেজিটেবল অয়েল তৈরি করতে এক মিনি ট্রাক শাক-সবজি দরকার- যার বাজার মূল্য অর্ধ লক্ষাধিক টাকা।

আখের রস থেকে গুড় বানালে যে দাম হয়, বাজারে তার চাইতে সস্তায় সাদা চকচকে (কেমিক্যাল যুক্ত) চিনি পাওয়া যায়!

কিভাবে সম্ভব?!? আসলে ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে ঘটছে-টা কী?

কনজিউমারিজম আপনাকে সস্তায় সয়াবিন তেল, রিফাইন্ড চিনি, প্রসেসড চাল, রিফাইন্ড আটা ইত্যাদি খাওয়াচ্ছে বটে, কিন্তু হেলথ কেয়ার-এর নামে সুদে-আসলে লাভ তুলে নেওয়া হচ্ছে..!

সয়াবিন তেল, চিনি, পলিশড চাল, ময়দা- এসব খাবার উচ্চমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত এবং পুষ্টিহীন। আর এগুলোই বাজারে সবচেয়ে সস্তা ও সহজলভ্য। কারণ এগুলো বিপুল পরিমাণে উৎপাদন, ট্রান্সপোর্টেশন ও স্টোরেজ করা সহজ। অনেক সময় সরকারি ভর্তুকি থাকে। আবার কর্পোরেট লবিং সরকারের খাদ্য-নীতি প্রভাবিত করে (যেমন রিফাইন্ড ভোজ্যতেলের আমদানি বাধ্যতামূলক করা)।

ভোজন-রসিক মানুষ এগুলো বেশি বেশি খেয়ে দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, হরমোনাল সমস্যা, ক্যান্সার ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়। আর এখানেই হেলথ কেয়ার ইন্ডাস্ট্রির লাভের খেলা!

আপনি যখন ওইসব সস্তা অখাদ্যের কারণে অসুস্থ হন, তখন আপনাকে যেতে হয় হেলথ কেয়ার সিস্টেমে। সেখান থেকে চিকিৎসা, ওষুধ, ল্যাব টেস্ট, সার্জারি ইত্যাদির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি মুনাফা উঠে আসে। কেননা সেখানে রোগ নিরাময় না করে উপশমের ব্যবস্থা করা হয় যেন রোগী আজীবন অসুস্থ থাকে। ইনসুলিন, রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল কমানোর ড্রাগসের বেশিরভাগই আজীবন খাওয়ার জন্য নকশাকৃত!

Consumer capitalism মানুষকে প্রথমে সস্তা খাবারে অভ্যস্ত করে, তারপর তাদের অসুস্থতাকে পুঁজি করে মূল লাভটা উসুল করে নেয়। এজন্যই আপনি বাজারে সয়াবিন তেল, চিনি, পলিশড চাল, ময়দা এসব সস্তায় পান। অন্যদিকে Whole food বা অপ্রক্রিয়াজাত প্রাকৃতিক খাবার (যেমন লাল চাল, ঘানির তেল, দেশি ফলমূল, শাকসবজি, লাল আটা, গুড় ইত্যাদি)-এর দাম তুলনামূলক বেশি (এখানে তো profit cycle নেই)!

সস্তা, অস্বাস্থ্যকর, উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাদ্য দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্থূলতা, গ্যাস্ট্রিকের কারণ হয়ে জনস্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। মানুষ অসুস্থ হলে ফার্মা কোম্পানিগুলো ওষুধ/চিকিৎসা সরবরাহ করে। ক্রনিক রোগের চিকিৎসা চলে আমৃত্যু। এদেশে শুধু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের বাজারই বছরে ১২,০০০+ কোটি টাকার!

লোকাল জায়ান্ট গ্রুপগুলো সমান্তরালভাবে ফুড, ফার্মা, হাসপাতালে বিনিয়োগ করেছে.. ফুড ডিভিশন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য বিক্রি করে রোগ সৃষ্টি করে, ফার্মা ডিভিশন তা ম্যানেজ করে মুনাফা কামায়!

যারা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য consume করছে, এরাই কিছুদিন পর কর্পোরেশনগুলোতে রোগীর জোগান দেবে। সাধারণ মানুষ তো আর ফুড-ফার্মা কমপ্লেক্স-এর ইনভেস্টমেন্ট সাইকেল বোঝে না?

সস্তা খাদ্যপণ্য গরিব, মধ্যবিত্ত, অসচেতন মানুষদেরকে আকৃষ্ট করে। দীর্ঘমেয়াদে তাঁদের চিকিৎসা ব্যয়ে দারিদ্র্য বাড়ে (শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রত্যেক বছর সাড়ে ৫২ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছেন)!

সস্তার খাবার আর হাসপাতালের বিল একই কর্পোরেটের হাতে। এই চক্র ভাঙতে ভোক্তা সচেতনতা আর নীতিগত হস্তক্ষেপ (যৌথ প্রয়াস) প্রয়োজন। আপনি সস্তা খাবারের প্রলোভন এড়িয়ে স্থানীয়, ঐতিহ্যবাহী, অপ্রক্রিয়াজাত, পুষ্টিকর খাদ্য বেছে নিন। এটাই হোক হোক কর্পোরেট লাভ চক্রের ফাঁদ ভাঙার প্রথম পদক্ষেপ..!
©

26/08/2025

পিজি হাসপাতালের আউটডোর অনলাইন টিকেট সেবা বেশ আগেই চালু হয়েছে, সম্প্রতি আলট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এম আরআই এসব রেডিওলোজী সার্ভিসের সিরয়াল অনলাইনে শুরু হয়েছে, ঝামেলা এড়াতে অনলাইনে এসব পরীক্ষার সিরিয়াল নিতে পারেন, নীচে দুটি লিংক দিয়ে রাখলাম।
বিএমইউ হাসপাতালে সকালের আউটডোর টিকেট Online বুকিং লিংক-
appointment.bmu.ac.bd/ticketing
রেডিওলজি সেবা ( X-Ray, MRI, CT Scan, Ultrasound (USG), Contrast X-Ray) এর Online সিরিয়াল লিংকঃ
appointment.bmu.ac.bd/radiology_ticketing

Ticketing, e-Ticketing, BMU, Bangladesh Medical University, Medical, Best Medical in Bangladesh, Low Costing, Surgery Center, Eye Hospital, Opticals, medicine, clinics, doctors

12/08/2025

ইসলামে অসুস্থতা একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা মুমিনের ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসাকে শক্তিশালী করে। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল, যা রোগীর জন্য শান্তি ও সুস্থতা নিয়ে আসে এবং দোয়াকারীর জন্য আল্লাহর রহমত অর্জনের মাধ্যম।
মহানবী (সা.) অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে।
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত।
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া
ইসলামে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ব্যাপারে নবীজি (সা.) কয়েকটি নির্দিষ্ট দোয়া শিখিয়েছেন। এই দোয়াগুলো রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন। নিচে কয়েকটি প্রধান দোয়া উল্লেখ করা হলো:
১. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এই দোয়া পড়তেন:
অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রভু, রোগ দূর করো, সুস্থতা দাও, তুমিই সুস্থতা দানকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া কোনো সুস্থতা নেই, এমন সুস্থতা দাও যা কোনো রোগ রাখে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৪৩)
পড়ার নিয়ম:
• রোগীর ডান হাত দিয়ে তার কপাল বা শরীরের ব্যথার স্থানে হাত রেখে এই দোয়া পড়া।
• তিনবার বা সাতবার পড়া উত্তম।
• রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন।
২. সুরা ফাতিহা পড়া
সুরা ফাতিহা রোগ নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে আছে, সুরা ফাতিহা শিফা বা নিরাময়ের জন্য পড়া যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন সাহাবি সুরা ফাতিহা পড়ে একজন রোগীকে সুস্থ করে দিয়েছিলেন, এবং নবীজি (সা.) এটি অনুমোদন করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৬)
যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।
সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২
পড়ার নিয়ম:
• সুরা ফাতিহা সাতবার পড়ে রোগীর শরীরে ফুঁ দেওয়া।
• রোগীর কপালে বা ব্যথার স্থানে হাত রেখে পড়া উত্তম।
৩. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস
এই তিনটি সুরা (সুরা ইখলাস: ১১২, সুরা ফালাক: ১১৩, সুরা নাস: ১১৪) অসুস্থতা থেকে সুস্থতা ও সুরক্ষার জন্য পড়া হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ হলে এই তিনটি সুরা পড়তেন এবং শরীরে ফুঁ দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৫,০১৭)
• তিনটি সুরা তিনবার করে পড়া।
• পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে রোগীর শরীরে মুছে দেওয়া।
৪. সাধারণ দোয়া
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নিজের ভাষায়ও দোয়া করা যায়। উদাহরণ: ‘হে আল্লাহ! আমার/তার রোগ দূর করো, সুস্থতা দান করো, তুমি সব ক্ষমতার মালিক।’ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মূল।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)
নিজের ভাষায় দোয়া করার সময় আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা জরুরি।
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আমল
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন: তুমি পবিত্র হও, তোমার পথ পবিত্র হোক এবং তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৮)
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে মুমিন ধৈর্যের সঙ্গে অসুস্থতা সহ্য করে, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৫২)
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ফজিলত অপরিসীম। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।’’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২)
এছাড়া, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।
দোয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা গ্রহণ করা, কারণ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি রোগের জন্য চিকিৎসা রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৭৮)
দোয়া করার সময় শিরক বা অপ্রমাণিত পদ্ধতি এড়ানো দরকার। শুধু কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া ব্যবহার করব আমরা।
[Collected]

12/05/2025

স্বাস্থ্য বিভাগ
১। দিনের বেলায় ঘরের বাইরে বের হলে ছাতা, টুপি/ক্যাপ, বা কাপড় দিয়ে মাথা যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন।

২। হালকা রঙের সুতির ঢিলে-ঢালা জামা পরিধান করুন।

৩। প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন এবং তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।

৪। সম্ভব হলে একাধিক বার গোসল করুন।

৫। অতিরিক্ত তেল-মশলা যুক্ত খাবার পরিহার করুন এবং বাসি, খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৬। প্রস্রাবের রঙের দিকে লক্ষ্য রাখুন, গাড় হলুদ রঙের প্রস্রাব হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন।

৭। গরমে অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৮। গরমে যেসকল ব্যক্তি অধিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন যেমনঃ

ক) শিশু ও গর্ভবতী মা

খ) বয়স্ক ব্যক্তি

গ) প্রতিবন্ধী ব্যক্তি

ঘ) শ্রমজীবী ব্যক্তি, যেমন রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণ শ্রমিক, দিনমজুর

ঙ) স্থূলকায় ব্যক্তি

চ) শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি বিশেষ করে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী, তারা বিশেষ ভাবে সাবধান থাকবেন।

৯। প্রয়োজনে "স্বাস্থ্য বাতায়ন”- ১৬২৬৩ নম্বরে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করুন।

06/11/2024

সহজ ভাষায় পুষ্টি বার্তা
১ টি বিষয় যা চর্চা করবো - সিজন বা ঋতু ভিত্তিক নানান পদের, নানা বর্ণের ও স্বাদের, সতেজ মিশ্র খাবার বয়স ও ওজনের ভিত্তিতে পরিমান মতো খাবো।
৪ টি বিষয় যা থেকে দূরে থাকবো বা বিশেষ প্রয়োজনে স্বল্প খাওয়া যেতে পারে -
১। যা দেখতে সাদা এমন খাবার- যেমন সাদা ভাত, রুটি সাগু, চিনি, লবণ ইত্যাদি
২। জিহ্বায় যা মিষ্টি লাগে- যেমন গুড়, মধু বা চিনির তৈরি খাবার, পানীয় ইত্যাদি
৩। হাতে যা পিচ্ছিল লাগে- যেমন তেল, তৈলাক্ত খাবার বা তেলে প্রস্তুত খাবার ।
৪। সব ধরনের বাণিজ্যিক , প্যাকেটজাত, সংরক্ষিত (শুকনা খাবার বাতিত ) খাবার।
রান্নার পধতিতে পরিবর্তন - সিদ্ধ বা ভাপ বা স্বল্প আঁচে রান্না এবং সপ্তাহে দু এক দিন নন কুকিং ডে পালন করা।

07/10/2024

সাধারন এলার্জিক খাবার তালিকা
প্রানিজ- গোরুর মাংস, গোরুর দুধ, হাঁসের মাংস, হাঁসের ডিম, পুঁটি মাছ, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, কবুতরের মাংস।
উদ্ভিদ: মসুরের ডাল, পুঁই শাক, কচু শাক বা কচু, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, ঢেঁড়শ , নারিকেলের শাস।

07/04/2024

ঘুমের স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম-নীতি
১. ঘুমোতে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে কুসুম গরম পানি দিয়ে স্নান বা গোসল করুন। সাধারণ কুসুম গরম পানীয় পানে (দুধ, পাতলা সুপ ইত্যাদি) আপনাকে ঘুমে সাহায্য করবে।
২. ঘুমোতে যাওয়ার কমপক্ষে ৬ ঘন্টা পূর্বে আপনার দৈনিক নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ঘুমের জন্য সহায়ক।
৩. শব্দ দূষণমুক্ত পরিবেশ বা শব্দ দূষণযুক্ত পরিবেশে অবস্থান করলে বা শোবার ঘর হলে, হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যেমন বৃষ্টির শব্দ, সমুদ্রের মৃদুগর্জন ইত্যাদি ঘুমের জন্য সহায়ক।
৪. দিবানিদ্রা এড়িয়ে চলা বা যদি অভ্যাস থাকে তাহলে সংক্ষিপ্তকরণ- যেমন ১০ থেকে ১৫ মিনিট।
৫. ঘুমিয়ে পড়তে দেরি হলে রিল্যাক্সিং মিউজিক অথবা প্রাকৃতিক মৃদু কোন শব্দের রেকর্ড শুনতে পারেন।
৬. কোন কর্ম পরিকল্পনা, সমস্যা মাথা থেকে তাড়িয়ে দিন অথবা আগামী কালের জন্য রেখে দিন, এই সময় এটি নিয়ে মোটেই ভাববেন না।
৭. অন্য কেউ যেন আপনার রুমে হুটহাট আলো জালানো বা শব্দ তৈরি করতে না পারে তা নিশ্চিত করুন।
৮. বেডরুমের আদর্শ তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৬৪ থেকে ৬৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট বজায় রাখুন।
৯. ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন চা-কফি, সফট ড্রিংকস ইত্যাদি দৈনিক সর্বোচ্চ তিন কাপের বেশি নয় এবং অভ্যাস থাকলে তা অবশ্যই সকাল দশটার মধ্য গ্রহণ করুন।
১০. ধুমপান বা তামাক গ্রহণ সর্বাবস্থায় এড়িয়ে চলুন একান্তই অভ্যাস থাকলে সন্ধ্যা সাতটার পর আর নয়। মনে রাখবেন ঘুমের উপর নিকোটিনের প্রভাব ক্যাফেইনের মতোই।
১১. সব ধরনের অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন অথবা অভ্যাস থাকলে স্বল্প মাত্রায় সীমাবদ্ধ করুন কেননা এটি ঘুমের নিরবিচ্ছন্নতায় ক্রমাগত ব্যাঘাত ঘটায়।
১২. পেট পুরে খাবার গ্রহণ বা অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খাবেন না। বুক জ্বালাপোড়ার এসিডিটির সমস্যা থাকলে একাধিক বালিশ ব্যবহার করুন।
১৩. ঘুমোতে যাওয়ার প্রক্রিয়াটিকে আনুষ্ঠানিক আচারে পরিণত করুন, হালকা ধরনের বই পত্র পড়ুন নিজেকে শিথিল রাখুন, শিথিলায়নের বিভিন্ন পদ্ধতির চর্চা করুন।
১৪. বিছানায় যাবার ৩০ মিনিটের মধ্যে ঘুম না আসলে উঠে পড়ুন। হালকা পায়চারি করুন, শিথিলায়নের চর্চা করুন অথবা হালকা মেজাজের কোন বই পড়ুন। এইভাবে চক্রটি চালিয়ে যান ঘুম আসা পর্যন্ত
১৫. যদি ঘুম ভেঙে যায়, তবে জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন না বরং উপভোগ্য কোন বিষয়ের উপর শিথিলায়ন করুন।
১৬. অপরিচিত ঘুমের পরিবেশ সৃষ্টি হয় এমন রাত্রি যাপন এড়িয়ে চলুন।
১৭. মনে রাখবেন, মানসম্মত ঘুম অতীব প্রয়োজনীয়, বিছানায় অতিরিক্ত সময় শুয়ে থাকা বা ঘুমে কাটানো পরবর্তী ঘুমের সূচিতে ব্যাঘাত ঘটাবে।
১৮. আপনার শোবার ঘরকে শুধুমাত্র ঘুম বা বিশ্রামের জন্যই বরাদ্দ রাখুন, এটি আপনার কর্মক্ষেত্র, আলাপচারিতা বা বিনোদনের জায়গা নয়।
চলমান----------

13/03/2024

রোযা ও যাকাত : প্রচলিত কয়েকটি মাসআলা
- মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ
প্রসঙ্গ : রোযা
------------
একস্থানে রোযা শুরু করে অন্যস্থানে যাওয়ায় রোযা কম-বেশি হলেধরে নেওয়া যাক, কোনো ব্যক্তি জাপানে রোযা শুরু করল সেদেশে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে এবং ১৫ রমযান সে সৌদি গিয়ে দেখল ওই দিন ১৭/১৮ রমযান।
লোকটি যেদিন সৌদিবাসীর সাথে ঈদ করল তার আগের দিন পর্যন্ত রোযা হয়েছে ২৭ বা ২৮টি। এখন তার করণীয় কী?
এমনিভাবে উদাহরণস্বরূপ, সাউথ আফ্রিকায় রোযা শুরু করে কেউ ইন্দোনেশিয়া চলে গেলে তার রোযা ৩০টি পুরো হওয়ার পরও ইন্দোনেশিয়াবাসীদের সে হয়তো আরো ২টি বা ১টি রোযা রাখতে দেখতে পারে।
এক্ষেত্রে লোকটি কত দিন রোযা রাখবে? অর্থাৎ এক দেশে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোযা শুরু করে অন্য দেশে গিয়ে তা সমাপ্ত করলে ওই দেশের চাঁদের হিসাবে রোযার সংখ্যা কমে বা বেড়ে গেলে তখন ঐ রোযাদার ব্যক্তির করণীয় কী?
এ প্রশ্নের জবাবের আগে একটি বিষয় জেনে রাখা দরকার যে, চান্দ্রমাসের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সময়কাল হল যথাক্রমে ২৯ ও ৩০ দিন। একটি হাদীসে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্পষ্টভাবে এ ঘোষণা দিয়েছেন। এরই আলোকে সমস্যাটির সমাধান হল- যে ব্যক্তি ২৭ বা ২৮ রোযা পূর্ণ করার পরই তার (সফর করে আসা) দেশে ঈদের চাঁদ ওঠে যায় সে ওই দেশবাসীর সঙ্গে ঈদ করবে এবং পরবর্তী সময়ে একটি বা দুটি রোযা রেখে ৩০টি পূর্ণ করবে। তবে ওই জায়গায় যদি ২৯ রোযার পরই ঈদের চাঁদ দেখা গিয়ে থাকে তাহলে ২৯টি পুরো করলেই চলবে।
আর যে ব্যক্তির রোযা ৩০টি পুরো হয়ে যাওয়ার পরও ওই দেশের মুসলমানদের রমযান মাস পূর্ণ হয় না সে ওই দেশের লোকজনের সাথে রমযান শেষ হওয়া পর্যন্ত রোযা রেখে যাবে। যাতে রমযানের পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ না হয়। অতপর সকলের সাথে একত্রে ঈদ করবে।
ওষুধের মাধ্যমে মহিলাদের মাসিক নিয়ন্ত্রণ
কোনো কোনো মহিলা রমযানের রোযা রমযান মাসেই পুরো করার উদ্দেশ্যে ওষুধের মাধ্যমে মাসিক বন্ধ রেখে থাকে। এ ব্যাপারে শরীয়তের মাসআলা হচ্ছে, যে পর্যন্ত একজন মহিলার মাসিক দেখা না দিবে ওই পর্যন্ত সে নিয়মিত নামায-রোযা করে যাবে; যদিও কৃত্রিম পদ্ধতিতে মাসিক বন্ধ রাখা হোক না কেন। তবে এ ধরনের পদ্ধতি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কি না সে বিষয়েও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত নেওয়া উচিত।
রমযানে ডাক্তারি পরীক্ষা ও ওষুধ ব্যবহার
এন্ডোস্কপি
এ পরীক্ষা করার সময় লম্বা চিকন একটি পাইপ রোগীর মুখ দিয়ে পাকস্থলীতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়; যার মাথায় বাল্বজাতীয় একটি বস্ত্ত থাকে। নলটির অপর প্রান্ত থাকে মনিটরের সাথে। এভাবে চিকিৎসকগণ রোগীর পেটের অবস্থা নির্ণয় করে থাকেন।
যেহেতু এন্ডোস্কপিতে নল বা বাল্বের সাথে কোনো মেডিসিন লাগানো হয় না, তাই এর কারণে সাধারণ অবস্থায় রোযা ভাঙ্গার কথা নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থেকে জানা গেছে এবং প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে যে, এন্ডোস্কপির সময় টেস্টের প্রয়োজনে চিকিৎসকগণ কখনো কখনো নলের ভেতর দিয়ে পানি ছিটিয়ে থাকেন; যা সরাসরি রোযা ভঙ্গের কারণ। সুতরাং যদি কারো ক্ষেত্রে পানি বা ওষুধ ভেতরে প্রবেশ করানো ছাড়াই টেস্টটি সম্পন্ন হয় তাহলে তার রোযার কোনো ক্ষতি হবে না। অন্যথায় রোযা নষ্ট হয়ে যাবে।
এন্ডোস্কপি করা হয় খালি পেটে, তাহলে একজন রোযাদার রোযা অবস্থায় এ টেস্টটি না করাতে পারলে কীভাবে তা করাবে? এ প্রশ্নের জবাবে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বললেন, এক্ষেত্রে রোগীর পানি পান করতে বাধা নেই। তাই রোগী ইচ্ছা করলে শুধু পানি দ্বারা ইফতার করে টেস্টটি করিয়ে নিতে পারে।
এন্ডোস্কপির মতোই মলদ্বার দিয়ে নল ঢুকিয়ে আরেকটি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও একই হুকুম প্রযোজ্য হবে।
এনজিওগ্রাম
সাধারণ পদ্ধতির এনজিওগ্রামের কারণে রোযা নষ্ট হয় না।
ইনজেকশন ও ইনসুলিন
ইনজেকশনের কারণে রোযা ভাঙ্গে না। এমনিভাবে একজন রোযাদার ইফতারের আগেও ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে পারে। অবশ্য যেসকল ইনজেকশন খাদ্যের কাজ দেয় জটিল ওজর ছাড়া তা নিলে রোযা মাকরূহ হবে।
স্প্রে জাতীয় ওষুধ
বর্তমানে এ্যারোসল জাতীয় বেশ কিছু ওষুধ দ্বারা বক্ষব্যাধি, হার্টএ্যাটাক ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা করানো হয়ে থাকে। গ্যাস জাতীয় এ সকল ওষুধ রোগীর মুখের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। নিম্নে রমযানে এ ওষুধগুলো ব্যবহারের হুকুম বর্ণনা করা হল।
নাইট্রোগ্লিসারিন
এ্যারোসোল জাতীয় ওষুধটি হার্টের রোগীরা ব্যবহার করে থাকে। জিহবার নিচে ২/৩ বার ওষুধ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখা হয়। ডাক্তারদের মতে সাথে সাথে ওই ওষুধ শিরার মাধ্যমে রক্তের সাথে মিশে যায়। এ হিসেবে এ ওষুধ ব্যবহার করলে রোযা নষ্ট হবে না। তবে রোগীর কর্তব্য হল, জিহবার নিচের ওষুধটি দেওয়ার পর সাথে সাথে তা গিলে না ফেলা।
ভেন্টোলিন ইনহেলার
বক্ষব্যাধির জন্য এ ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। রোগীদেরকে মুখের ভেতর এমনভাবে ওষুধটি স্প্রে করতে বলা হয়, যাতে তা সঙ্গে সঙ্গে ভেতরের দিকে চলে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে খাদ্যনালী হয়ে ওষুধটি ফুসফুসে গিয়ে কাজ করে থাকে। সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের সচিত্র ব্যাখ্যা থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে বোঝা গেছে, ওষুধটি স্প্রে করার পর এর কিছু অংশ খাদ্যনালীতেও প্রবেশ করে। সুতরাং এ ধরনের ইনহেলার প্রয়োগের কারণে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। চিকিৎসকগণ বলেছেন যে, মারাত্মক জটিল রোগী ছাড়া অন্য সকলেরই সাহরীতে এক ডোজ ইনহেলার নেওয়ার পর পরবর্তী ডোজ ইফতার পর্যন্ত বিলম্ব করার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং রোগীর কর্তব্য হল বিষয়টি তার চিকিৎসক থেকে বুঝে নেওয়া এবং সম্ভব হলে রোযা অবস্থায় তা ব্যবহার না করা।
অবশ্য যদি কোনো রোগীর অবস্থা এত জটিল হয় যে, ডাক্তার তাকে অবশ্যই দিনেও ওষুধটি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে ওই রোগীর এ সময়ে ইনহেলার ব্যবহার করার অবকাশ রয়েছে। পরবর্তী সময়ে রোযা কাযা করে নিবে।
প্রসঙ্গ যাকাত
-------------
শেয়ার
বর্তমানে দুই ধরনের শেয়ারহোল্ডার লক্ষ্য করা যায় : ক. যারা আইপিও-তে অংশগ্রহণ করে শেয়ার খরিদ করে থাকে কোম্পানির বার্ষিক ডিভিডেন্ড (লভ্যাংশ) পাওয়ার উদ্দেশ্যে। খ. যারা ক্যাপিটাল গেইন করে অর্থাৎ শেয়ার বেচা-কেনাই এদের মুখ্য উদ্দেশ্য থাকে; কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ নেওয়া এদের মূল উদ্দেশ্য থাকে না।
শেয়ারের যাকাতের ক্ষেত্রে উপরোক্ত দুই গ্রুপের হুকুম ভিন্ন। যারা শুধু ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে শেয়ারের কারবার করে থাকে তারা যাকাত আদায় করবে শেয়ারের মার্কেট ভ্যালু হিসাবে। তাদের যাকাতের বছর যেদিন পূর্ণ হবে ঐ দিন শেয়ারবাজারে ওই শেয়ারের যে মূল্য থাকে সে মূল্য হিসাব করেই যাকাত আদায় করবে।
আর যারা কোম্পানির ডিভিডেন্ট (লভ্যাংশ) হাসিলের জন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে থাকে তারা ওই কোম্পানির ব্যালেন্সশীট দেখে যাকাত পরিশোধ করবে।
এক্ষেত্রে ব্যালেন্সশীট দেখে কোম্পানির ফিক্সড এসেট্স (স্থায়ী সম্পদ) এ শেয়ার অনুযায়ী তার যতটুকু অংশ রয়েছে তত টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বাদ দিতে পারবে। অবশিষ্ট মূল টাকা ও কোম্পানি ঘোষিত লভ্যাংশ (নগদ, বোনাস শেয়ার ইত্যাদি) এর যাকাত প্রদান করতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, এখানে শুধু শেয়ারের যাকাতের হুকুম বলা হয়েছে, শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের শরয়ী হুকুম এখানে বর্ণনা করা হয়নি। কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনতে হলে সে সম্পর্কে কেনো বিজ্ঞ মুফতীর নিকট আগেই জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে। বর্তমান স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের উপর তাত্ত্বিক ও বিশ্লেষণধর্মী এবং শরয়ী হুকুমসহ দুটি প্রবন্ধ মাসিক আলকাউসারএপ্রিল ২০১০ ও ২০১১-এর ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল সংখ্যায় ছাপা হয়েছে। যা পরবর্তীতে মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হয়েছে। তা দেখা যেতে পারে।
ব্যাংক একাউন্ট
ব্যাংকের ব্যক্তি মালিকানাধীন সকল প্রকার একাউন্ট যাকাতযোগ্য। একাউন্ট হোল্ডার নেসাবের মালিক হলেই তাকে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকাগুলোর যাকাত প্রদান করতে হবে। চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, দীর্ঘ মেয়াদী ও ডিপিএস হিসাবসহ সকল একাউন্ট এ হুকুমের আওতাভুক্ত হবে। ব্যাংক হিসাবের স্ট্যাটমেন্ট দেখে যাকাত প্রদান করা যেতে পারে। যাকাতদাতার হিসাব-বর্ষের শেষে স্ট্যাটমেন্টে যত টাকা পাওয়া যাবে তার যাকাত সে প্রদান করবে।
কোনো এক একাউন্ট থেকে সরাসরি ট্যাক্স বা সার্ভিস চার্জ কাটা গেলে যাকাতের হিসাবে এ টাকা অন্তর্ভুক্ত হবে না।
একাউন্ট হোল্ডারের জমাকৃত টাকা ছাড়া ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত যদি সুদ (বা মুনাফা নামের সুদ) জমা হয় তবে তা যাকাতযোগ্য নয়; বরং সুদ ও হারামের মাল হস্তগত হলে তা পুরোটাই সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য যাকাত দেওয়ার সাথে পুরো টাকার হিসাব করে নিলে এ নিয়ত করে নিবে যে সুদের অংশের ২.৫% যাকাত হিসাবে দিচ্ছে না; বরং ঐ অংশের ২.৫% দায়িত্বমুক্তির জন্য আদায় করছে। এরপর যখন সে হারাম টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করবে তখন যাকাতের সাথে প্রদানকৃত ২.৫% বাদ দিয়ে বাকিটা সদকা করতে হবে।
ব্যাংক গ্যারান্টি মানি
বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিকিউরিটি হিসেবে ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান ও গ্রহণের রেওয়াজ চালু আছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা একাউন্ট হোল্ডারের মালিকানাধীন থাকে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সে এর সুদ/লাভও পায়। তবে গ্যারান্টির মেয়াদ-কালে সে ওই টাকা উত্তোলন করতে পারে না। এ কারণেই অনেকে এ টাকার যাকাত আসবে কি না সে বিষয়ে দ্বিধায় ভোগে। অথচ ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা সন্দেহাতীতভাবে যাকাতযোগ্য। যতদিন এ টাকার উপর একাউন্ট হোল্ডারের মালিকানা থাকবে ততদিন অন্যান্য টাকার মতোই এ টাকার যাকাত প্রদান করতে হবে।
ব্যাংক লোন
সাধারণত যাকাতযোগ্য কোনো কর্জ থাকলে তা যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু শিল্পবিপ্লবের এ যুগে কর্জের ধরনই বদলে গেছে। এখন বড় বড় ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি ঋণী। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মোটা অংকের ঋণ দেওয়ার জন্য তাদেরকেই বাছাই করে থাকে। তারা বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিশাল বিশাল অট্টালিকা নির্মাণের জন্য কোটি কোটি টাকার লোন গ্রহণ করে থাকে। পরিভাষায় এগুলো হল ডেভেলেপমেন্ট বা উন্নয়নমূলক লোন। যাকাতের হিসাবের সময় ডেভেলপমেন্ট লোন বিয়োগ হবে না।
বায়নানামার টাকা
জমি, ফ্ল্যাট বা অন্যকিছু কিনে প্রাথমিকভাবে যে আংশিক টাকা প্রদান করে বায়নানামায় চুক্তি হয় সে টাকার মালিক বিক্রেতা। সুতরাং এর যাকাত বিক্রেতা প্রদান করবে।
ব্যবসায়িক পণ্যের কোন মূল্য ধর্তব্য
টাকা-পয়সা ও স্বর্ণাংলকারের মতো ব্যবসায়িক পণ্য এবং ব্যবসার মূলধনেরও যাকাত দিতে হয়। ব্যবসায়ী যাকাত দেওয়ার সময় তার অবিক্রিত পণ্যের কোন মূল্যটি হিসাব করবে, খরিদমূল্য, পাইকারি মূল্য, খুচরামূল্য নাকি অন্য কোনো মূল্য?
এ প্রশ্নের জবাব হল, লোকটি তার অবিক্রিত পণ্যের বর্তমান বাজার দর হিসাব করে যাকাত আদায় করবে। অর্থাৎ যেদিন তার যাকাত-বর্ষ পুরো হয়েছে সেদিন তার ব্যবসায়িক পণ্যগুলো একত্রে বিক্রি করে দিলে যে দাম পাওয়া যেত সে মূল্যের হিসাবে যাকাত প্রদান করবে।
বিক্রিত পণ্যের বকেয়া টাকার যাকাত
ব্যবসায়ীরা তাদের যে সকল পণ্য বাকিতে বিক্রি করে থাকে সে বকেয়া টাকার যাকাতও তাদেরকে আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে তারা এ টাকার যাকাত বিক্রির পর থেকে নিয়মিত আদায় করতে পারে অথবা টাকা হস্তগত হওয়ার পর পেছনের বছরগুলোর যাকাত একত্রেও পরিশোধ করতে পারে। অবশ্য যদি কোনো পাওনা টাকার ব্যাপারে এমন আশঙ্কা প্রবল হয় যে, ওই টাকা আর পাওয়া যাবে না তবে সে টাকার যাকাত দিতে হবে না। এরপর যদি ওই টাকা হস্তগত হয়ে যায় তাহলে তখন থেকে তা যাকাতের নেসাবভুক্ত হবে।
ঋণ দিয়ে পরে তা যাকাত বাবদ কর্তন করা
কোনো যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিকে ঋণ দেওয়ার পর সে তা আদায়ে গড়িমসি করলে বা আদায়ে অক্ষম হলে কেউ কেউ যাকাত হিসেবে তা কর্তন করে দিতে চায়। এটা সঠিক পন্থা নয়। এভাবে যাকাত আদায় করা যায় না। এ ব্যক্তি বা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে যাকাতের টাকা প্রদান করে পরে তার থেকে ওই টাকা নিজ পাওনা বাবদ নিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
যাকাতের টাকা দ্বারা কর্মসংস্থান করে দেওয়া
কেউ কেউ অল্প পরিমাণে যাকাতের টাকা বণ্টন না করে কোনো এক বা একাধিক দরিদ্র ব্যক্তিকে স্বাবলম্বী করার জন্য মোটা অংকের টাকা দেওয়া পছন্দ করে। আবার কেউ ঘর বা দোকান ইত্যাদি নির্মাণের খরচেও যাকাতের বড় অংকের টাকা দিয়ে থাকে। এভাবেও যাকাত আদায় হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে একত্রে অনেক টাকা না দিয়ে তার প্রয়োজনীয় মালামাল কিনে দেওয়া উচিত। যেন সাথে সাথেই সে যাকাতের নেসাবের মালিক না হয়ে যায় এবং তার প্রয়োজনও পুরো হয়। যদিও একজনকে যাকাতের এত অধিক টাকা দেওয়া সাধারণত মাকরূহ। আর এ ধারাটি খুব ব্যাপক হওয়া উচিত নয়। কারণ যে দেশে যাকাত গ্রহণকারী দরিদ্রের সংখ্যা অনেক বেশি সেখানে অল্প কিছু লোককে যাকাতের বড় অংকের টাকা দিয়ে দিলে অন্যদের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসা খরচে যাকাত
মাঝে মাঝেই এমন মাসআলা জিজ্ঞাসা করা হয় যে, একজন রোগী যাকাতের নেসাবের মালিক, তার জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা (উদাহরণস্বরূপ) প্রয়োজন। লোকটির নিকট আছে ২ লক্ষ টাকা। অবশিষ্ট ৩ লক্ষ টাকা তাকে যাকাত দেওয়া যাবে কি না? এ যুক্তিতে যে, চিকিৎসা শুরু করলে তো এক পর্যায়ে সে যাকাত গ্রহণ করার উপযোগী দরিদ্র হয়ে যাবে।
এ প্রশ্নের জবাব হচ্ছে, বিত্তবান লোকদের উচিত এ সকল খাতে যাকাত ছাড়া সাধারণ অনুদান প্রদান করা। যাতে যাকাতের বড় অংকের টাকা সীমিত খাতে লেগে না যায়। অবশ্য যদি এক্ষেত্রে যাকাতের টাকাই কেউ দিতে চায় তবে সে ওই রোগীর নিজস্ব টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার পর (সে দরিদ্রের অন্তর্ভুক্ত হলে) তাকে প্রদান করবে অথবা রোগীর এমন কোনো অভিভাবককে প্রদান করবে যে যাকাত গ্রহণের উপযোগী। পরে লোকটি ওই টাকা স্বেচ্ছায় উক্ত রোগীর চিকিৎসায় ব্যয় করতে পারবে।
যাকাত ট্যাক্স নয়
এ কথা স্মরণ রাখা জরুরি যে, যাকাত কোনো ট্যাক্স নয়; বরং ইসলামের অন্যতম একটি রোকন, ধনীর উপর গরীবের হক। তাই সরকার কোনো মালের ট্যাক্স (শরীয়তের দৃষ্টিতে ওই ট্যাক্সের হুকুম যাই হোক) নিয়ে নিলেও অবশিষ্ট মাল নেসাব পরিমাণ হলে তার যাকাত দিতে হবে।
টিভি চ্যানেলে যাকাত
কেউ কেউ ধর্মভিত্তিক টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনার জন্যও যাকাত চেয়ে থাকে, অনেক লোক আবার তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে তাদেরকে যাকাতের অর্থ প্রদানও করে থাকে। মনে রাখতে হবে এটি যাকাতের কোনো খাত নয়। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম যাকাত। তা আদায় করা যেমন ফরয তেমনি যথাস্থানে উপযুক্ত পাত্রে দেওয়াও ফরয। কেউ কোনো আহবান করলেই তাতে সাড়া দেওয়ার আগে বিজ্ঞ আলেমদের থেকে মাসআলা জেনে নেওয়া খুবই জরুরি। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি যাকাত বোর্ড, দাতব্য সংস্থা ইত্যাদির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
যাকাত থেকে বাঁচার অপকৌশল
অনেকে যাকাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন অপকৌশল (নাজায়েয হীলা) গ্রহণ করে থাকে। শরীয়তের দৃষ্টিতে তা সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং আল্লাহ তাআলাকে ধোঁকা দেওয়ার শামিল।
চিকিৎসাবিজ্ঞান, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তিত বর্তমান প্রেক্ষাপটে রোযা ও যাকাতের আরো বহু নতুন মাসআলা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। এখানে শুধু উপস্থিত লেখার সময়ে যা মনে পড়েছে সেগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। আরো নতুন কোনো মাসআলার সম্মুখীন হলে মুসলমান ভাইবোনেরা কোনো নির্ভরযোগ্য দারুল ইফতা থেকে তার উত্তর জেনে নিবেন। মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকার ফতওয়া বিভাগেও যোগাযোগ করা যেতে পারে।
[ মাসিক আলকাউসার, শাবান-রমযান ১৪৩৫. জুন-জুলাই ২০১৪ ]
#রমাযানুল_মুবারক_মাসিক_আলকাউসার

Address

GOBINDAGANJ
Gobindaganj
5747

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন জুয়েল posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন জুয়েল:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram

Category