12/11/2025
সংশোধিত ও পরিমার্জিত সংস্করণ:
গাইনী রোগী ও চিকিৎসা পরামর্শ সংক্রান্ত একটি স্পষ্টীকরণ
গাইনী রোগী যখন কোনো মেডিকেল সেন্টারে আসেন, তখন তার বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট, বর্তমান অবস্থা এবং পূর্ববর্তী ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর অবস্থা মূল্যায়ন করেন। রোগীর ডেলিভারির তারিখ ও শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চিকিৎসক প্রয়োজন হলে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।
এছাড়া, রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত দেন ডেলিভারি নরমাল হবে নাকি সিজার প্রয়োজন। তবে রোগী ও তার স্বজনদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কখনো জোর করে সিজার করা হয় না। বেশিরভাগ সময় রোগী বা তার পরিবার অন্যত্র যেতে চাইলে প্রতিষ্ঠান থেকে যথাযথভাবে রেফার করা হয়।
সম্প্রতি এক রোগীর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের হাসপাতালের নাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুকে) মানহানিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।
উক্ত ঘটনায় ইকবাল নামের একজন রোগীর স্বামী তার স্ত্রীর ডেলিভারির জন্য আমাদের হাসপাতালে আসেন। কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীর অবস্থা দেখে কয়েকদিন সময় থাকার কারণে বাড়িতে থেকে পর্যবেক্ষণ ও একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাম রিপোর্ট করে আনার পরামর্শ দেন।
পরে রিপোর্টটি সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্ট চিকিৎসক পর্যালোচনা করে লো-লাইং প্লাসেন্টা (ফুল নিচে) থাকার কারণে সিজারের পরামর্শ দেন, কারণ নরমাল ডেলিভারি করলে মা ও শিশুর উভয়ের ঝুঁকি থাকতে পারত।
তবে রোগীর স্বামী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে দেরি করেন, ফলে রোগী সেদিন ভর্তি হননি। পরদিন তারা আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সেখানে ডেলিভারি সম্পন্ন করেন। দুর্ভাগ্যবশত, নবজাতকটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
আমরা শিশুটির মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত এবং পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। তবে স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, গ্রীন হাসপাতাল-এ ওই রোগী ভর্তি ছিলেন না, কোনো চিকিৎসা চলেনি, এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক কর্তব্যনিষ্ঠভাবে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করেছেন।
পরবর্তীতে রোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা আবেগপ্রবণ অবস্থায় ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছেন। তারা স্বীকার করেছেন যে, হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কোনো দোষ ছিল না।
প্রতিষ্ঠান সর্বদা রোগীর সেবাকে অগ্রাধিকার দেয়। যদি কখনো কোনো ভুল বা অবহেলা প্রমাণিত হয়, কর্তৃপক্ষ অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু বিনা প্রমাণে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের মানহানি করা নৈতিক বা আইনগতভাবে সঠিক নয়।
আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাঁর পোস্টটি মুছে ফেলবেন এবং বিষয়টি বুঝে দায়িত্বশীল আচরণ করবেন।
সবশেষে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই — জীবন ও মৃত্যুর মালিক মহান আল্লাহ তায়ালা।
চিকিৎসক চেষ্টা করেন, কিন্তু হায়াত-মওত একমাত্র আল্লাহর হাতে। তাই আমাদের উচিত সত্যকে স্বীকার করা এবং অন্যকে দোষারোপ না করা।
— কর্তৃপক্ষ, গ্রীন হসপিটাল