01/12/2024
ডায়রিয়া কি ও ডায়রিয়ার প্রতিকার??
ডায়রিয়া হলো একটি সাধারণ পেটের সমস্যা, যেখানে মল খুব পাতলা বা তরল অবস্থায় বারবার নির্গত হয়। এটি সাধারণত এক বা দুই দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়, তবে কখনো কখনো গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। ডায়রিয়া শিশু ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এটি শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি (ডিহাইড্রেশন) তৈরি করতে পারে।
ডায়রিয়ার কারণ:
1. ভাইরাস: রোটা ভাইরাস, নোরো ভাইরাস ইত্যাদি।
2. ব্যাকটেরিয়া: দূষিত খাবার বা পানীয়র মাধ্যমে সালমোনেলা, শিগেলা বা ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
3. পরজীবী: আমিবা বা জিয়ার্ডিয়া।
4. খাবার অ্যালার্জি বা অসহনীয়তা: ল্যাকটোজ অসহনীয়তা বা নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি অ্যালার্জি।
5. ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: যেমন অ্যান্টিবায়োটিক বা ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ অ্যান্টাসিড।
6. অন্ত্রের রোগ: যেমন ইরিটেবল বাউল সিন্ড্রোম (IBS) বা ক্রনস ডিজিজ।
লক্ষণ:
বারবার পাতলা মলত্যাগ।
পেট ব্যথা বা ক্র্যাম্প।
বমি বা বমিভাব।
জ্বর (কখনও কখনও)।
ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ: মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক হওয়া, প্রস্রাব কম হওয়া।
প্রতিকার ও চিকিৎসা:
১. পানি ও ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহ:
ওরস্যালাইন: ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে লবণ ও পানি বেরিয়ে যায়, যা পূরণে ওরস্যালাইন সবচেয়ে কার্যকর। প্রতিবার মলত্যাগের পর এক গ্লাস ওরস্যালাইন পান করতে হবে।
লবণ-গুড়ের পানি: এক লিটার পানিতে ১ চা চামচ লবণ ও ৬ চা চামচ গুড় মিশিয়ে পান করা।
২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও হালকা খাবার:
সহজপাচ্য খাবার, যেমন ভাতের মাড়, কলা, দই, সেদ্ধ আলু খাওয়া যেতে পারে।
তৈলাক্ত বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা।
৩. চিকিৎসকের পরামর্শ:
যদি ডায়রিয়া ২ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, রক্তমিশ্রিত মল হয়, অথবা গুরুতর ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ব্যাকটেরিয়ার কারণে হলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।
৪. ঘরোয়া প্রতিকার:
ইসবগুল: এটি মল ঘন করতে সাহায্য করতে পারে।
আদার চা: পেট ব্যথা উপশমে কার্যকর।
প্রতিরোধ:
1. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা (খাবার আগে ও পরে হাত ধোয়া)।
2. নিরাপদ খাবার ও পানি গ্রহণ।
3. দূষিত বা বাসি খাবার এড়িয়ে চলা।
4. শিশুদের রোটা ভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করা।
ডায়রিয়া সাধারণত কিছুদিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়, তবে গুরুতর ক্ষেত্রে অবহেলা বিপদজনক হতে পারে। তাই সময়মতো চিকিৎসা ও প্রতিকার গ্রহণ করা জরুরি।