26/10/2025
আধুনিকতার প্রতীক #মেট্রোরেলের একটি ভারী বিয়ারিং প্যাড মাথায় পড়ে যে মানুষটি মা*রা গেলেন, তিনি কি সামান্যতম আভাসও পেয়েছিলেন যে তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তটি এভাবেই আসবে? তিনি তো রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছিলেন, আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতো। তাঁর ব্যক্তিগত কোনো ভুল ছিল না, কারও প্রতি বিদ্বেষ ছিল না। তাঁর একমাত্র অপরাধ, তিনি এমন একটি রাষ্ট্রে জন্মেছিলেন, যেখানে নাগরিকের জীবনের চেয়ে উন্নয়নের কাঠামো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে তিনি জানলেনই না, কী ভুলের মাশুল তাঁকে দিতে হলো! একটি রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের নির্মাণ ত্রুটি, সামান্য রক্ষণাবেক্ষণের অভাব অথবা ডিজাইনের দুর্বলতা ; এসবের সম্মিলিত ফল কেন একজন নিরপরাধ পথচারীর মৃত্যু হবে? আজ সে চলে গেল, কাল হয়তো আমি বা আপনি!
এই মৃত্যু নিছক একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি রাষ্ট্রের চরম উদাসীনতা ও দায়হীনতার এক জ্বলন্ত প্রমাণ। যেখানে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প হয়, সেখানে একজন সাধারণ মানুষের মাথার উপর ছিটকে পড়া একটি ধাতব টুকরোকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা থাকে না। এই ট্র্যাজেডি দেখিয়ে দিল, আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর।
কখনো রাষ্ট্রের বিরাট ভুলের বলি হতে হয়, আবার কখনো অন্যের সামান্য অবহেলার শিকার হতে হয় দেশের নাগরিকদের। আমরা কেবল শুনি - 'তদন্ত কমিটি হবে', 'দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে', কিন্তু ততদিনে একটি পরিবার তাদের প্রিয়জন হারায়, একটি জীবন নিভে যায়। যে ক্ষণস্থায়ী ভুলে মানুষটি মা*রা গেল, তার কাছে এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কী হতে পারে?
আফসোস হয়, এই দেশে পশুপাখিরও যেন সামান্য নিরাপত্তা নেই, সেখানে মানুষের জীবন অরক্ষিত। এই মাটিতে জন্ম নেওয়াটা যেন সত্যিই এক 'আজন্ম পাপ'। কারণ এখানে আপনার জীবনের মালিক আপনি নন, আপনার জীবনের ভাগ্য নির্ভর করে রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত নিরাপত্তার ওপর, যা চরমভাবে ব্যর্থ।
দায়িত্বশীলরা কি এই মৃত্যুর জবাবদিহি করবেন? নাকি আরও কিছু মানুষের জীবন ঝরে গেলে তবেই টনক নড়বে? যতক্ষণ না পর্যন্ত একজন নাগরিকের পথ চলার স্বাধীনতা, নিরাপদে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা রাষ্ট্র দিতে পারছে, ততক্ষণ এই প্রশ্ন বারবার উঠবে ; আমরা কি সত্যিই নিরাপদ?