30/08/2025
৪৮টি শূক*রের র*ক্ত দিয়ে যে কা*লোজাদু সম্পূর্ণ হয়, তার ৪৮ দিন পরেই সপরিবারের মৃ*ত্যু ঘটে। কিন্তু কেন?
একদিন ভোরে, শহরের এক ফ্ল্যাটের নিচে র*ক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেল এক তরুণী মেয়ের মৃ*তদেহ। তার দৃশ্য এতটাই ভয়ংকর ছিল যে, লোকজন একবার দেখে আর চোখ ফেরাতে পারছিল না।
মেয়েটির বুক দু’ভাগ করে চামড়ার সাথে সমান করে সেলাই করা। পেট ক'রাত দিয়ে টেনে টেনে চি'রে ফেলা হয়েছে। ভেতরের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। উরুতে অসংখ্য ছু/রির আঘাত। আর ভয়*ঙ্করতম দৃশ্য— তার শরীরের ভেতর অর্ধেকের বেশি ঢুকানো আছে দুই ফিট লম্বা কাঠের লাঠি। দেখে মনে হচ্ছিল, মেয়েটিকে শেষ করার আগে অকথ্য যন্ত্রণা দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ এসে লা*শ নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য। ডোম লা*শ কা'টতে বসে— নেশায় গলা ভিজে আছে তার। হঠাৎ ছু/রির ব্লে*ড আটকে যায়। সে খেয়াল করে, মেয়েটির গলার ভেতরে একটা ঝকঝকে ডায়মন্ড আটকে আছে।
ডোম সেটি হাতে নিয়েই খুশিতে আ*ত্মহারা হয়ে যায়। এত দামী জিনিস সে বহুদিন ধরে দেখেনি। কিন্তু খেয়াল করেনি সেই ডায়মন্ডই তার জীবনে নামাবে অন্ধকার।
ডায়মন্ড হাতে নিয়েই হঠাৎ কানে ভেসে আসে চিকচিক এক নারীকণ্ঠ— “যেখান থেকে নিলে… সেখানে রেখে দাও…যেখান থেকে নিলে…সেখানে রেখে দাও…”
প্রথমে সে ভাবে নে*শার ঘোরে হ্যা*লুসিনেশন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পাশের ঘর থেকে ভেসে আসে মায়াবী কান্নার আওয়াজ। সেই কান্নায় যেন বুক হিম হয়ে যায়।
পোস্টমর্টেম শেষে ডাক্তার নির্দেশ দেয় লা*শ গ্রামে পাঠাতে। কিন্তু কেউ রাজি হয় না। কারণ, প্রথমত— লা*শের ভয়*ঙ্কর চেহারা। দ্বিতীয়ত— ডোমের অদ্ভুত অভি*শপ্ত বয়ান। তৃতীয়ত— গ্রাম শহর থেকে অনেক দূরে।
অবশেষে একজন ভ্যানগাড়ি চালক রাজি হয়। সঙ্গে যায় এক ওয়ার্ডবয়। রাত গভীর হয়, এম্বুলেন্স গ্রামের পথে চলতে থাকে। হঠাৎই ভেতর থেকে শোনা যায় মেয়েটির অশ্রুসিক্ত কণ্ঠ— “যে যাই বলুক, গাড়ি থামিও না… যে যাই বলুক, গাড়ি থামিও না…”
প্রথমে ড্রাইভার শোনে, পরে ওয়ার্ডবয়ও স্পষ্ট শুনতে পায়। দু’জনেই স্তম্ভিত। মৃ*ত লা*শের কন্ঠস্বর মনে হয়!
হঠাৎই রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা দুজন ভদ্রলোক হাত তুলে গাড়ি থামায়। তাদের একজন এগিয়ে এসে অনুনয় ভরা কণ্ঠে বলে—
“ভাই, আমার শাশুড়ি মা*রা গেছেন। খুব জরুরি ভিত্তিতে স্ত্রীকে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু রাত গভীর হওয়ার কোনো গাড়ি পাচ্ছিনা। প্লিজ, যদি আমার স্ত্রীকে সামনে একটু এগিয়ে দেন, তাহলে খুবই উপকৃত হবো।”
ড্রাইভার কিছুটা দ্বিধায় পড়লেও শেষে সম্মতি দেয়— পেছনে বসুন। তবে জায়গা নেই, লা*শের সাথেই বসতে হবে।
ভদ্রলোক মাথা নেড়ে সায় দেয়। তার স্ত্রী উঠে বসে লা*শের পাশে।
কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো— ওই মহিলার সাজগোজ। নীল শাড়ি, কানে দুল, ঠোঁটে মুচকি হাসি। এমন কারো মাকে হারানো মানুষ কি এভাবে সাজতে পারে? ড্রাইভারের মনে সন্দেহ হয়। ঠিক তখনই আবার লা*শের কান্না শোনা যায়— তোমাদের না বলেছিলাম, গাড়ি না থামাতে…কেন থামালে?
কিছুক্ষণ পর এম্বুলেন্সের ভেতর ধুপধাপ শব্দ হয়। যেন ভেতরে কেউ মারামারি করছে। ড্রাইভার আঁতকে ওঠে। হঠাৎ নীল শাড়ি পড়া মহিলার চোখ লাল হয়ে যায়। রাগান্বিত স্বরে বলে— “গাড়ি থামাও!”
এরপর নেমে ধানক্ষেতের ভেতর অদৃশ্য হয়ে যায়।
অবশেষে তারা গ্রামে পৌঁছে। লা*শ নামাতে গিয়ে সবাই অবাক হয়ে যায়, লা*শের শরীর থেকে তখনও রক্ত গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে। সাদা কাপড়ের ভেতর থেকে মাঝখানের একটি আঙুল কে যেন কে/টে নিয়ে গেছে!
ড্রাইভার কেঁপে ওঠে। বুঝতে দেরি হয় না— এই কাজ সেই নীল শাড়ি পড়া মহিলারই।
লা*শ দা*ফন শেষে সবাই যখন ফিরে আসে, তাদের চোখে ভেসে ওঠে মেয়েটির প্রতিচ্ছবি। মনে হয় সে কাঁদছে, কিছু বলতে চাইছে— কিন্তু কেউ সেই ভাষা বুঝতে পারে না।
মেয়েটির নাম ছিল সুমাইয়া। কলেজ পড়ুয়া, সুন্দরী আর মেধাবী। হঠাৎ একদিন এক অচেনা বড়ভাই প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রথমে সুমাইয়া ছেলেটির এসব আচরণ ইগনোর করার চেষ্টা করেছিল। ভেবেছিল, হয়তো সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ধীরে ধীরে বিষয়টা জটিল হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনই নতুন করে ভয় আর হুমকিতে ঘিরে ধরে তাকে। লজ্জায়, অপমানে কারো কাছে কিছুই বলতে পারেনি সুমাইয়া। মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিত— আমি তো গ্রাম থেকে শহরে এসেছি স্বপ্ন নিয়ে, বড় কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু আমার স্বপ্নগুলো কি কেবল স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে?
বাস্তবায়নের পথ যেন বন্ধ হয়ে গেল তার সামনে। এমন সময় ছেলেটি কুটিল হাসি দিয়ে বলে উঠল— “আমি চাইলে তোমার জীবন ন*ষ্ট করে দিতে পারি। তবে একটা শর্ত মানলে তোমাকে ছেড়ে দেব।”
সুমাইয়া ভ্রূ কুঁচকে বলে— “বলুন, কি শর্ত?”
ছেলেটি ঠোঁটে শয়*তানি হাসি মেখে বলে—
আমার সাথে এক রাত থাকতে হবে। বিনিময়ে টাকা পাবে।
কথাটা শুনেই সুমাইয়া ফুঁসে ওঠে—
কখনোই সম্ভব নয়! দরকার হলে আমি আত্মহত্যা করব, কিন্তু এ রকম নোংরা কাজ আমাকে দিয়ে হবে না।
ছেলেটির চোখ লা*ল হয়ে ওঠে। গর্জে বলে— তুমি চাইলে বা না চাইলে, এটা ঘটবেই। তুমি জানো না আমি কে, আর আমি চাইলে কি করতে পারি।
পরবর্তীতে ছেলেটি সুমাইয়ার বান্ধবীর কাছ থেকে নাম্বার জোগাড় করে নেয়। এরপর শুরু হয় বাজে বাজে মেসেজ আর হুমকি। বিরক্ত হয়ে সুমাইয়া রাগান্বিত কণ্ঠে সরাসরি অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়। কিন্তু অধ্যক্ষ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিলেন না।
তবে ব্যাপারটা এখানেই থেমে থাকেনি। অবশেষে বিষয়টি পুলিশের কাছে পৌঁছায়। তদন্তে দেখা যায়, ছেলেটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং সমস্ত প্রমাণ মিলিয়ে তাকে সাত মাসের কা*রাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায় শুনে সুমাইয়া স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। মনে হলো, অবশেষে মুক্তি পেলো সে। কিন্তু সুমাইয়া বুঝতেই পারেনি, এরপর আরও অন্ধকারময় অধ্যায় তার জীবনে অপেক্ষা করছে…।
প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার পর সুমাইয়া কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। আসার পর থেকেই সে লক্ষ্য করে, শরীরটা যেন ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
প্রথমে হালকা ব্যথা, তারপর ধীরে ধীরে পিঠের বেশিরভাগ জায়গায় অসহ্য যন্ত্রণা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চমকে ওঠে সে— গলার পিছনে লালচে দাগ, যেন খামচি বা কামড়ের মতো স্পষ্ট চিহ্ন!
তার ভেতরে ভেতরে এক অদৃশ্য আতঙ্ক জন্ম নেয়। মনে হতে থাকে, আশেপাশে কেউ যেন অদৃশ্যভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে।
রাতগুলো তার কাছে পরিণত হয় ভয়ের ঘরে। ঘুমানোর চেষ্টা করলেও ভয়ে কাটাতে হয় প্রায় জাগ্রত অবস্থায়। তবুও ভোর হওয়ার আগেই কিছু না কিছু ঘটেই যায়।
কখনো বুকের ভেতর তীব্র জ্বালাপোড়া,
কখনো বিছানার পাশে নীল শাড়ি পরা এক রহ*স্যময়ী নারীকে শুয়ে থাকতে দেখা,
আবার কখনো গভীর রাতে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে এক কালো কাপড়ে ঢাকা অপরিচিত মহিলা।
সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো— সাধারণত প্রতিমাসে একবার মা*সিক হওয়ার কথা থাকলেও, সুমাইয়ার ক্ষেত্রে তা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। মাসে তিন থেকে চারবার পর্যন্ত হতে শুরু করে!
এতকিছুর পর সুমাইয়া বুঝতে পারলো—এর পেছনে কোনো ভয়ংকর রহস্য আছে। না হলে এমন হওয়া সম্ভব নয়…।
___________________°_______________
ওদিকে ডোম মদের নেশায় তৃপ্ত হয়ে মূল্যবান ডায়মন্ডটি সাড়ে সতেরো হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। বিক্রির পরই সে ভয়ঙ্কর স্বপ্নের সম্মুখীন হয়। স্বপ্নে এক ড্রাইভার এসে কণ্ঠ কম্পমান করে বলে— “তুমি ডায়মন্ডটি যেখান থেকে নিলে, সেখানে ফিরিয়ে রাখো।”
এরপর উপস্থিত হয় নীল শাড়ি পরা এক রহস্যময়ী মেয়ে, হুমকির স্বরে বলে— তুমি ডায়মন্ডটি আমাকে দাও, না হলে আমি তোমার পরিবারের ওপর কালোজাদু করবো।
ডোম সম্পূর্ণ বিভ্রান্ত। বুঝতেই পারছে না, এগুলো কী ঘটছে। আমার কাছে যে ডায়মন্ড আছে, তারা কিভাবে জানল? সে নিজেকে প্রশ্ন করছে। সেই সঙ্গে তার মনে একটি আতঙ্ক জাগে— এই ড্রাইভার কে? আর নীল শাড়ি পরা রহ*স্যময়ী নারীটা কে?
সকালে ঘুম থেকে ওঠে, দেখলো ডায়মন্ডটি তার পাশে পড়ে আছে। দারুণ বিস্ময়ে সে বললো, আমি তো এটি দোকানদারের কাছে বিক্রি করেছি। কিন্তু এখানে কীভাবে এসে পৌঁছালো?
এই ঘটনা ডোমের সঙ্গে তিনবার ঘটে। প্রতিবারই ডায়মন্ড বিক্রি করা সত্ত্বেও, ড্রাইভার ভয়ং*কর রূপ নিয়ে আসে, দোকানদারকে মারধর করে এবং ডায়মন্ডটি ডোমের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
একদিন, দোকানদার ক্ষিপ্ত হয়ে ডোমকে তীব্রভাবে মারধর করে বলে— তুমি বাটপার আর চো*র। এই জিনিসটি তোমার কাছে রাখো, আমি আর নিতে পারবো না।
তার এক সপ্তাহ পরে, ভয়*ঙ্কর এক ঘটনা ঘটে— ডোমের স্ত্রী ভয়াবহ রোড এক্সি*ডেন্টে মারা যায়।
চলবে...??
গল্প_কা*লোজাদু [সিজন_২]
পর্ব_০১
এটি একটি হরর ফিকশন গল্প। বাস্তবের সাথে মিলে গেলে তা নিছক কাকতালীয়।
Arman Hossain Stories৪৮টি শূক*রের র*ক্ত দিয়ে যে কা*লোজাদু সম্পূর্ণ হয়, তার ৪৮ দিন পরেই সপরিবারের মৃ*ত্যু ঘটে। কিন্তু কেন?
একদিন ভোরে, শহরের এক ফ্ল্যাটের নিচে র*ক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেল এক তরুণী মেয়ের মৃ*তদেহ। তার দৃশ্য এতটাই ভয়ংকর ছিল যে, লোকজন একবার দেখে আর চোখ ফেরাতে পারছিল না।
মেয়েটির বুক দু’ভাগ করে চামড়ার সাথে সমান করে সেলাই করা। পেট ক'রাত দিয়ে টেনে টেনে চি'রে ফেলা হয়েছে। ভেতরের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। উরুতে অসংখ্য ছু/রির আঘাত। আর ভয়*ঙ্করতম দৃশ্য— তার শরীরের ভেতর অর্ধেকের বেশি ঢুকানো আছে দুই ফিট লম্বা কাঠের লাঠি। দেখে মনে হচ্ছিল, মেয়েটিকে শেষ করার আগে অকথ্য যন্ত্রণা দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ এসে লা*শ নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য। ডোম লা*শ কা'টতে বসে— নেশায় গলা ভিজে আছে তার। হঠাৎ ছু/রির ব্লে*ড আটকে যায়। সে খেয়াল করে, মেয়েটির গলার ভেতরে একটা ঝকঝকে ডায়মন্ড আটকে আছে।
ডোম সেটি হাতে নিয়েই খুশিতে আ*ত্মহারা হয়ে যায়। এত দামী জিনিস সে বহুদিন ধরে দেখেনি। কিন্তু খেয়াল করেনি সেই ডায়মন্ডই তার জীবনে নামাবে অন্ধকার।
ডায়মন্ড হাতে নিয়েই হঠাৎ কানে ভেসে আসে চিকচিক এক নারীকণ্ঠ— “যেখান থেকে নিলে… সেখানে রেখে দাও…যেখান থেকে নিলে…সেখানে রেখে দাও…”
প্রথমে সে ভাবে নে*শার ঘোরে হ্যা*লুসিনেশন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পাশের ঘর থেকে ভেসে আসে মায়াবী কান্নার আওয়াজ। সেই কান্নায় যেন বুক হিম হয়ে যায়।
পোস্টমর্টেম শেষে ডাক্তার নির্দেশ দেয় লা*শ গ্রামে পাঠাতে। কিন্তু কেউ রাজি হয় না। কারণ, প্রথমত— লা*শের ভয়*ঙ্কর চেহারা। দ্বিতীয়ত— ডোমের অদ্ভুত অভি*শপ্ত বয়ান। তৃতীয়ত— গ্রাম শহর থেকে অনেক দূরে।
অবশেষে একজন ভ্যানগাড়ি চালক রাজি হয়। সঙ্গে যায় এক ওয়ার্ডবয়। রাত গভীর হয়, এম্বুলেন্স গ্রামের পথে চলতে থাকে। হঠাৎই ভেতর থেকে শোনা যায় মেয়েটির অশ্রুসিক্ত কণ্ঠ— “যে যাই বলুক, গাড়ি থামিও না… যে যাই বলুক, গাড়ি থামিও না…”
প্রথমে ড্রাইভার শোনে, পরে ওয়ার্ডবয়ও স্পষ্ট শুনতে পায়। দু’জনেই স্তম্ভিত। মৃ*ত লা*শের কন্ঠস্বর মনে হয়!
হঠাৎই রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা দুজন ভদ্রলোক হাত তুলে গাড়ি থামায়। তাদের একজন এগিয়ে এসে অনুনয় ভরা কণ্ঠে বলে—
“ভাই, আমার শাশুড়ি মা*রা গেছেন। খুব জরুরি ভিত্তিতে স্ত্রীকে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু রাত গভীর হওয়ার কোনো গাড়ি পাচ্ছিনা। প্লিজ, যদি আমার স্ত্রীকে সামনে একটু এগিয়ে দেন, তাহলে খুবই উপকৃত হবো।”
ড্রাইভার কিছুটা দ্বিধায় পড়লেও শেষে সম্মতি দেয়— পেছনে বসুন। তবে জায়গা নেই, লা*শের সাথেই বসতে হবে।
ভদ্রলোক মাথা নেড়ে সায় দেয়। তার স্ত্রী উঠে বসে লা*শের পাশে।
কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো— ওই মহিলার সাজগোজ। নীল শাড়ি, কানে দুল, ঠোঁটে মুচকি হাসি। এমন কারো মাকে হারানো মানুষ কি এভাবে সাজতে পারে? ড্রাইভারের মনে সন্দেহ হয়। ঠিক তখনই আবার লা*শের কান্না শোনা যায়— তোমাদের না বলেছিলাম, গাড়ি না থামাতে…কেন থামালে?
কিছুক্ষণ পর এম্বুলেন্সের ভেতর ধুপধাপ শব্দ হয়। যেন ভেতরে কেউ মারামারি করছে। ড্রাইভার আঁতকে ওঠে। হঠাৎ নীল শাড়ি পড়া মহিলার চোখ লাল হয়ে যায়। রাগান্বিত স্বরে বলে— “গাড়ি থামাও!”
এরপর নেমে ধানক্ষেতের ভেতর অদৃশ্য হয়ে যায়।
অবশেষে তারা গ্রামে পৌঁছে। লা*শ নামাতে গিয়ে সবাই অবাক হয়ে যায়, লা*শের শরীর থেকে তখনও রক্ত গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে। সাদা কাপড়ের ভেতর থেকে মাঝখানের একটি আঙুল কে যেন কে/টে নিয়ে গেছে!
ড্রাইভার কেঁপে ওঠে। বুঝতে দেরি হয় না— এই কাজ সেই নীল শাড়ি পড়া মহিলারই।
লা*শ দা*ফন শেষে সবাই যখন ফিরে আসে, তাদের চোখে ভেসে ওঠে মেয়েটির প্রতিচ্ছবি। মনে হয় সে কাঁদছে, কিছু বলতে চাইছে— কিন্তু কেউ সেই ভাষা বুঝতে পারে না।
মেয়েটির নাম ছিল সুমাইয়া। কলেজ পড়ুয়া, সুন্দরী আর মেধাবী। হঠাৎ একদিন এক অচেনা বড়ভাই প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রথমে সুমাইয়া ছেলেটির এসব আচরণ ইগনোর করার চেষ্টা করেছিল। ভেবেছিল, হয়তো সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ধীরে ধীরে বিষয়টা জটিল হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনই নতুন করে ভয় আর হুমকিতে ঘিরে ধরে তাকে। লজ্জায়, অপমানে কারো কাছে কিছুই বলতে পারেনি সুমাইয়া। মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিত— আমি তো গ্রাম থেকে শহরে এসেছি স্বপ্ন নিয়ে, বড় কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু আমার স্বপ্নগুলো কি কেবল স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে?
বাস্তবায়নের পথ যেন বন্ধ হয়ে গেল তার সামনে। এমন সময় ছেলেটি কুটিল হাসি দিয়ে বলে উঠল— “আমি চাইলে তোমার জীবন ন*ষ্ট করে দিতে পারি। তবে একটা শর্ত মানলে তোমাকে ছেড়ে দেব।”
সুমাইয়া ভ্রূ কুঁচকে বলে— “বলুন, কি শর্ত?”
ছেলেটি ঠোঁটে শয়*তানি হাসি মেখে বলে—
আমার সাথে এক রাত থাকতে হবে। বিনিময়ে টাকা পাবে।
কথাটা শুনেই সুমাইয়া ফুঁসে ওঠে—
কখনোই সম্ভব নয়! দরকার হলে আমি আত্মহত্যা করব, কিন্তু এ রকম নোংরা কাজ আমাকে দিয়ে হবে না।
ছেলেটির চোখ লা*ল হয়ে ওঠে। গর্জে বলে— তুমি চাইলে বা না চাইলে, এটা ঘটবেই। তুমি জানো না আমি কে, আর আমি চাইলে কি করতে পারি।
পরবর্তীতে ছেলেটি সুমাইয়ার বান্ধবীর কাছ থেকে নাম্বার জোগাড় করে নেয়। এরপর শুরু হয় বাজে বাজে মেসেজ আর হুমকি। বিরক্ত হয়ে সুমাইয়া রাগান্বিত কণ্ঠে সরাসরি অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়। কিন্তু অধ্যক্ষ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিলেন না।
তবে ব্যাপারটা এখানেই থেমে থাকেনি। অবশেষে বিষয়টি পুলিশের কাছে পৌঁছায়। তদন্তে দেখা যায়, ছেলেটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং সমস্ত প্রমাণ মিলিয়ে তাকে সাত মাসের কা*রাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায় শুনে সুমাইয়া স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। মনে হলো, অবশেষে মুক্তি পেলো সে। কিন্তু সুমাইয়া বুঝতেই পারেনি, এরপর আরও অন্ধকারময় অধ্যায় তার জীবনে অপেক্ষা করছে…।
প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার পর সুমাইয়া কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। আসার পর থেকেই সে লক্ষ্য করে, শরীরটা যেন ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
প্রথমে হালকা ব্যথা, তারপর ধীরে ধীরে পিঠের বেশিরভাগ জায়গায় অসহ্য যন্ত্রণা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চমকে ওঠে সে— গলার পিছনে লালচে দাগ, যেন খামচি বা কামড়ের মতো স্পষ্ট চিহ্ন!
তার ভেতরে ভেতরে এক অদৃশ্য আতঙ্ক জন্ম নেয়। মনে হতে থাকে, আশেপাশে কেউ যেন অদৃশ্যভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে।
রাতগুলো তার কাছে পরিণত হয় ভয়ের ঘরে। ঘুমানোর চেষ্টা করলেও ভয়ে কাটাতে হয় প্রায় জাগ্রত অবস্থায়। তবুও ভোর হওয়ার আগেই কিছু না কিছু ঘটেই যায়।
কখনো বুকের ভেতর তীব্র জ্বালাপোড়া,
কখনো বিছানার পাশে নীল শাড়ি পরা এক রহ*স্যময়ী নারীকে শুয়ে থাকতে দেখা,
আবার কখনো গভীর রাতে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে এক কালো কাপড়ে ঢাকা অপরিচিত মহিলা।
সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো— সাধারণত প্রতিমাসে একবার মা*সিক হওয়ার কথা থাকলেও, সুমাইয়ার ক্ষেত্রে তা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। মাসে তিন থেকে চারবার পর্যন্ত হতে শুরু করে!
এতকিছুর পর সুমাইয়া বুঝতে পারলো—এর পেছনে কোনো ভয়ংকর রহস্য আছে। না হলে এমন হওয়া সম্ভব নয়…।
___________________°_______________
ওদিকে ডোম মদের নেশায় তৃপ্ত হয়ে মূল্যবান ডায়মন্ডটি সাড়ে সতেরো হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। বিক্রির পরই সে ভয়ঙ্কর স্বপ্নের সম্মুখীন হয়। স্বপ্নে এক ড্রাইভার এসে কণ্ঠ কম্পমান করে বলে— “তুমি ডায়মন্ডটি যেখান থেকে নিলে, সেখানে ফিরিয়ে রাখো।”
এরপর উপস্থিত হয় নীল শাড়ি পরা এক রহস্যময়ী মেয়ে, হুমকির স্বরে বলে— তুমি ডায়মন্ডটি আমাকে দাও, না হলে আমি তোমার পরিবারের ওপর কালোজাদু করবো।
ডোম সম্পূর্ণ বিভ্রান্ত। বুঝতেই পারছে না, এগুলো কী ঘটছে। আমার কাছে যে ডায়মন্ড আছে, তারা কিভাবে জানল? সে নিজেকে প্রশ্ন করছে। সেই সঙ্গে তার মনে একটি আতঙ্ক জাগে— এই ড্রাইভার কে? আর নীল শাড়ি পরা রহ*স্যময়ী নারীটা কে?
সকালে ঘুম থেকে ওঠে, দেখলো ডায়মন্ডটি তার পাশে পড়ে আছে। দারুণ বিস্ময়ে সে বললো, আমি তো এটি দোকানদারের কাছে বিক্রি করেছি। কিন্তু এখানে কীভাবে এসে পৌঁছালো?
এই ঘটনা ডোমের সঙ্গে তিনবার ঘটে। প্রতিবারই ডায়মন্ড বিক্রি করা সত্ত্বেও, ড্রাইভার ভয়ং*কর রূপ নিয়ে আসে, দোকানদারকে মারধর করে এবং ডায়মন্ডটি ডোমের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
একদিন, দোকানদার ক্ষিপ্ত হয়ে ডোমকে তীব্রভাবে মারধর করে বলে— তুমি বাটপার আর চো*র। এই জিনিসটি তোমার কাছে রাখো, আমি আর নিতে পারবো না।
তার এক সপ্তাহ পরে, ভয়*ঙ্কর এক ঘটনা ঘটে— ডোমের স্ত্রী ভয়াবহ রোড এক্সি*ডেন্টে মারা যায়।
চলবে...??
গল্প_কা*লোজাদু [সিজন_২]
পর্ব_০১
এটি একটি হরর ফিকশন গল্প। বাস্তবের সাথে মিলে গেলে তা নিছক কাকতালীয়।
Arman Hossain Stories